গল্প :- ঢাকা যেতে টাকা লাগে নাকি।

in hive-129948 •  22 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমাদের আশেপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেই ঘটনা গুলো অনেক সময় শিক্ষনীয় হয়ে থাকে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা, আবার কখনো মর্মান্তিক ঘটনা। এজন্য আজকে আবার ও একটা কাহিনী নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আমার লেখাটা পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


money-5901808_1280.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে খুব সুন্দর এবং একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আসলে বাস্তব গল্পটি হচ্ছে আমার দূর সম্পর্কে এক দাদী শাশুড়ির মুখে শোনা। এবং ওই দাদী শাশুড়ির স্বামী ঢাকা গিয়েছিল তার কাহিনী। এবং দাদী শাশুড়ির হাজব্যান্ড ছিল খুব চালাক মানুষ। তার নাম ছিল কোরবান আলী। লোকটির পড়ালেখা ছিল না তবে আউট নলেজ ভালো ছিল। আর ওই লোক যেই কাজ করতে ওই কাজের সফল হতেন। যদি ওই লোকটি এখন জীবিত নেই মারা গেল। তার ওয়াইফ সেই ঢাকা যাওয়ার কাহিনী কিছুদিন আগে আমাদের সাথে বললেন।

লোকটি চাকরি করার জন্য ঢাকা যাওয়ার টাকা চাইলেন কয়েকজনের কাছে। আর ওই সময় অভাব এতই বেশি লোক কেউ তাকে টাকা দেয় নাই ঢাকা দেওয়ার জন্য। যদিও ওই সময় কোরবান আলী বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুটো ছেলে মেয়ে ছিল। তখন তার ওয়াইফ কে সেই বলতেছে একটি বড় বল ও গামছা দাও। এবং বলতেছে আমি ঢাকা যাচ্ছি। তার ওয়াইফ বলতেছি কিভাবে তোমার কাছে তো গাড়ি ভাড়া নেই। তখন লোকটি কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে গেল। এবং বাজারে গিয়ে একটি দোকান থেকে সেই মুড়ি চানাচুর এবং তেল ও কাঁচা মরিচ পেঁয়াজ নিলেন। এবং অন্যান্য জিনিস নিলেন।

দোকানদারকে বলছে এখন আমার কাছে টাকা নেই আমি একদিন পরে টাকা দেব। এই বলে জিনিসপত্র গুলো নিয়ে চলে গেলেন। তারপর লোকটি গলার সাথে বল বেঁধে মুড়ি চানাচুর বিক্রেতা সেজে গেলেন। এরপর সেই এক এক গাড়ির মধ্যে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতেছেন। এক গাড়ির মধ্যে উঠে কিছুক্ষণ বিক্রি করে কিছুদূর গিয়ে আবার নেমে যেতেন। এভাবেই লোকটি ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে করতে ঢাকায় পৌঁছে গেলেন। এবং যাওয়ার সময় যে ঝাল মুড়ি নিয়েছিল সব বিক্রি করেছেন এবং অনেক লাভবান হয়েছেন।

তখন কোরবান আলী মিয়া চিন্তা করলো চাকরি না করে এইভাবে ঝাল মুড়ি বিক্রি করবে গাড়িতে। এরপর কোরবান আলী মিয়া এই ব্যবসা চালু করে দিলেন। দুই এক দিন পর সেই বাড়ি থেকে বাইর হয়ে যেতেন। তারপর দু এক দিন পর আবার বাড়িতে আসতেন। এবং আসার সময় সেই অনেক টাকা পয়সা নিয়ে আসতেন। এরপর তার ওয়াইফ চিন্তা করতে লাগলো তার কাছে কোন টাকা নেই সেই কিভাবে এতগুলো টাকা ইনকাম করতে লাগলো। তখন তার ওয়াইফ তাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো কিভাবে এই টাকা ইনকাম করতেছে।

পরে কোরবান আলী মিয়া তাকে বললেন যে আমি দুই এক দিন পরপর ঢাকা চলে যাই। এবং তার ওয়াইফ জিজ্ঞেস করতেছি গাড়ি ভাড়া কোথায় পাই। তখন কোরবান আলী বলতেছে আমি ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে করতে ঢাকা চলে যায়। আবার ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে করতে গ্রামে চলে আসি দুই এক দিন পর। এবং ঢাকাতে আমার আত্মীয়-স্বজন আছে রাত্রে বেলা গেলে ওখানে থাকি। এবং কোরবান আলী বলতেছে ঢাকাতেও সেই গাড়িতে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে।

এভাবে কোরবান আলী মিয়া গাড়িতে ঝালমুড়ি বিক্রি করে অনেক টাকা পয়সা ইনকাম করলেন। এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের অভাব দূর হয়ে গেল। এই কথাগুলো কোরবান আলীর ওয়াইফ আমাদেরকে বললেন। এবং লোকটি বলে ঢাকায় যেতে টাকা লাগেনা। আর এখন মানুষের ঢাকা যেতে অনেক টাকা লাগে। তার হাজবেন্ডের এই চিন্তাভাবনা দেখে তার ওয়াইফ অনেক বেশি মুগ্ধ করেছে। তাই সেদিন দাদী শাশুড়ি তার হাজবেন্ডের অনেক গুণের কথা বললেন। আর এখনকার সময় হলে আমাদের কি অবস্থা হতো ঢাকা যেতে। যাই হোক দাদু শাশুড়ির কাছে তার হাজবেন্ডের বুদ্ধি শুনে অনেক অবাক লাগলো। আশা করি আমার আজকের এই গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG-20211226-WA0000.jpg

আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

LUCYMssPjPkQyKHRURTK7UFCpZwbUcpYbBon9tsJZMPaTqYWhxu7BpzErSP2az8stMTtFHQDx92xRGMhL6EEVPgc94DuDwCFtzMMQX76HL...5CPsyVF8XK2xbNA2B9jAWapehHyLx58vc66RzpDqiVnNf4z6oxfVSShL97X1ZrBSQbNCgiC9kRxNccPVjMXu9yhCMQ9TAAE2BHDisuYLu9iDEaHKQvEywUnRQ.webp

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সময় পড়ালেখা না জানা ব্যক্তিও তাদের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে কাজে সফল হতে পারে।আসলে উনি যেহেতু লেখাপড়া জানতেন না সেহেতু ঢাকা গিয়ে কিভাবেই বা চাকরি করতেন!কিন্তু তার বুদ্ধি ও পরিশ্রম তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছে, আপনার লেখা গল্পটি খুবই শিক্ষনীয় ছিল।ধন্যবাদ আপু।

ঠিক বলেছেন অনেকেই এরকম পরিশ্রম করে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করে

হ্যাঁ ট্রেনের ভিতরে যারা ঝালমুড়ি বিক্রি করে অনেক সময় দেখা যায় তাদের ট্রেনের কোন ভাড়া দেওয়া লাগে না । তবে অনেক সময় আমি দেখেছি কিছু কিছু টিটি রয়েছে তাদের উপরে ভাড়া আদায় করতে জবরদস্ত করে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা কোন ভাড়া বিহীন সব জায়গায় ভ্রমণ করে। আপনার আজকের গল্পটা বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

আমার গল্পটা আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ধন্যবাদ