সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
পোস্টের শুরুতেই সকলকে জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনঈদ মোবারক। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, দেখতে দেখতে আমাদের মাঝ থেকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ রমজান মাস চলে গেল। ফজিলতপূর্ণ রমজান মাস যে ব্যক্তি যথার্থভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে সেই প্রকৃত সফল। যাহোক একমাস সিয়াম সাধনার পরে আজকে আমরা মহা আনন্দের সাথে ঈদুল ফিতর অর্থাৎ ঈদের দিন উদযাপন করছি। আর ঈদের দিনের সকাল বেলা থেকে শুরু করে পুরো দিনটাই অত্যন্ত আনন্দের ও মধুর হয়। তবে ঈদের দিনের সবচাইতে আনন্দের ও উপভোগ্যের মুহূর্ত হলো ঈদ গাহে সকলে একত্রিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায়ের মুহূর্তটি।
আজকে খুব ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। আমাদের গ্রাম ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সকাল ৮ঃ০০ টায়। তাই খুব দ্রুত নিজেকে প্রস্তুত করে গ্রামের অন্যান্য মানুষের সাথে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলাম। পুরো একটি বছর পরে ঈদগাহে গ্রামের সকল মানুষের সাথে একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করতে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। বিশেষ করে অনেক মানুষ চাকরি করার কারণে ও লেখাপড়া করার কারণে গ্রামের বাইরে থাকে। ঈদ উপলক্ষে আজ ঈদগাহে সকল পরিচিত মানুষের সাথে দেখা করতে পেরে আমার আনন্দের কোন সীমা ছিল না। আসলে ঈদগাহ যেন হয়ে উঠেছিল মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মিলন মেলা।
আজকে আমাদের ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ের সময় আমাদের পরস্পরের মধ্যে কোন ভেদাভেদ ছিল না, ছিল না কোন হিংসা-বিদ্বেষের রেষ, ছিল না ধনী গরীবের পার্থক্য। উপস্থিত গ্রামের সকল মানুষের মুখে ছিল ঈদের আনন্দের হাসি। আসলে পুরো রমজান মাস থেকে আমরা সংযত থাকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার শিক্ষা লাভ করি। এবং এই শিক্ষা লাভের বাস্তব রূপ ফুটিয়ে তুলি সকলে একত্রিত হয়ে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করার মধ্য দিয়ে। ঈদের নামাজ আদায়ের শেষে আমরা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করার মধ্য দিয়ে আমাদের ভালোবাসা একে অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিই। সত্যিই পবিত্র মাহে রমজান মাস আমাদের সর্বোত্তম শিক্ষাটি দিয়ে থাকে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় রমজান মাস থেকে প্রাপ্ত সর্বোত্তম শিক্ষাটি আমরা পরবর্তীতে আর ধরে রাখতে পারি না। অল্প দিনের মধ্যেই খুব সহজে লোভ-লালসা, অন্যায়, মিথ্যা, আত্মঅহংকার-দাম্ভিকতা, জুলুম ইত্যাদি খারাপ বিষয়গুলো আমাদের মনের মধ্যে বাসা বেঁধে ফেলে এবং চাপা পড়ে যায় সংযত হয়ে থাকায় শিক্ষাগুলো। কিন্তু সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে আমাদের এমনটা হতে দেওয়া একেবারেই উচিত না। পবিত্র মাহে রমজানের পুরো একমাসের শিক্ষা যদি আমরা বাকি ১১ টি মাস যথার্থভাবে কাজে না-ই লাগাতে পারি--তাহলে আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে লাভ কি? আমাদের যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি তো কখনোই আমাদের সাথে উঁচু-নিচুর পার্থক্য করেন না, আমাদের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ করেন না। কিন্তু আমরা মানুষ হয়ে কেন অন্য মানুষের সাথে ভেদাভেদ করি? সত্যিই আমরা ঈদের দিন শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমাদের সংযত হয়ে থাকার শিক্ষাটি ভুলে যায়।
আমরা যদি একটু খেয়াল করি দেখি তাহলে দেখবো যে, মহান সৃষ্টিকর্তার ইশারায় প্রতিদিন পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠে আমাদের সকলের মাঝে সমানভাবে কিরণ দেয়। সূর্যের আলো আমাদের সমাজের ধনী মানুষেরা বেশি পায়, আর গরিব মানুষেরা কম পায়-- এমনটি কিন্তু নয়। আবার মহান সৃষ্টিকর্তার ইশারায় প্রতিদিন অফুরন্ত শীতল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সকলেই সেই শীতল বাতাস প্রাণ ভরে অনুভব করি। এখানে কিন্তু কারো কোন কমবেশি শীতল বাতাস পাওয়ার অভিযোগ নেই। আবার মহান সৃষ্টিকর্তা রাত্রের বেলায় সুন্দর জোসনার আলো চারিদিকে সমান ভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা জোসনার আলো উপভোগে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, জাতি-ধর্ম-বর্ণ কোন শ্রেণীর মানুষের কোন প্রকারের পার্থক্য করে দেননি।
কিন্তু আমরা মানুষ জাতি দিন দিন এতটাই নিচে নেমে যাচ্ছি যে, আমাদের মনুষ্যত্বকে বিসর্জন দিয়ে পশুত্বকে জাগ্রত করতে যেন আমরা মেতে উঠেছি। কিন্তু এমনটা হতে দেওয়া উচিত না। আমাদের সকলকে চেষ্টা করতে হবে পবিত্র মাহে রমজানের পুরো এক মাসের শিক্ষা এবং পবিত্র ঈদের দিনের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক পুরো বছর বজায় রাখতে। তাহলে আমরা নিঃসন্দেহে সফল হবো এবং শান্তিতে বসবাস করতে সক্ষম হবো। যাহোক ঈদের নামাজ শেষ করে আমরা সকলেই একই অন্যের হাত ধরে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলাম এবং নিজ নিজ গৃহে প্রবেশ করেছিলাম। মহান সৃষ্টি করতে যেন ঈদের দিনের এই ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক এবং ঈদের দিনের আনন্দ পুরো বছর যেন আমাদের মনের মধ্যে অটুট রাখার শক্তি দান করেন,আমিন।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই জানাই আপনাকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আপনার লেখা পোস্টটি এক কথায় অসাধারণ ছিল ভাই । সকলে মিলে ঈদগাহে খুশির সহিত একত্রিত হয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। অনেক মানুষের সাথে দেখাও হয়েছে যারা কাজের সূত্রে বাইরে থাকে। তবে ধনী - গরিবের বাস্তবে যে কোনো ভেদাভেদ নেই এটি আপনি দারুন কিছু উদাহরণের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে আমরা মানুষেরাই এই ভেদাভেদ সৃষ্টি করে ফেলেছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই ঠিক বলেছেন এই রমজান মাসের মতো প্রতিনিয়ত নিজেকে সচেষ্ট রাখা যেতো ৷ কিন্তু দেখবেন আর কদিন পর সব ভুলে গিয়েছে ৷ যা হোক দুই ভাইয়ের ঈদগাহ মাঠে যাওয়ার মুহুর্ত সাথে বেশ ভালো অনুভুতি শেয়ার করেছেন ৷সবশেষে বলবো আপনাদের এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধন চির অটুট থাকুক এমনটাই প্রতার্শা ৷ ভালো থাকবেন ভাই
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit