আমার পুকুরের মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি // পর্ব-০২.

in hive-129948 •  4 months ago 



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ রবিবার। ২৬ ই মে, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20240419_134829_755.jpg



ছেলেরা জাল থেকে মাছ ধরার পরে মাছগুলো তাদের বড় বড় হাঁড়ির মধ্যে রেখে দিল। সকল জেলেরা পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ ধরার পরে নিজ নিজ হাড়ির মাছগুলো যত্ন নিতে শুরু করলো। হাঁড়ির ভিতরের পানি গুলো বের করে দিয়ে পুনরায় হাঁড়ির মধ্যে পুকুরের পানি ঢুকিয়ে পানিগুলো থাবাতে শুরু করলো। যাতে মাছগুলো বেশিক্ষণ পর্যন্ত জীবিত থাকে। আর জীবিত মাছের দাম বাজারে সব সময় বেশি হয়। আসলে যারা মাছ ধরার কাজ করে অর্থাৎ জেলে, তারা তাদের হাড়ির ভিতরের মাছগুলো বাঁচিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। মাছ ধরার পরে জেলেদের হাড়ির ভিতরের মাছগুলো যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়াটি দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল।


IMG_20240419_134107_197.jpg

IMG_20240419_134246_157.jpg



মাছের যত্ন নেওয়া শেষ করে যখন মাছগুলো তরতাজা হয়ে উঠলো তখন ছেলেরা নিজ নিজ দায়িত্বে তাদের বড় জালটি পুকুর থেকে তুলে ফেললো। এবং জালটি আমার পুকুর পাড়ে শুকানোর জন্য রেখে দিল। এরপর সকল জেলেদের হাড়ির মাছগুলো সঠিকভাবে ওজন দেওয়ার জন্য আমার ডিজিটাল স্কেলটি সমান জায়গায় বসিয়ে নিলাম। পুকুরের মাছ ক্রয় এবং বিক্রয়ের সময় আমি ডিজিটাল স্কেল ব্যবহার করি। কারণ ডিজিটাল স্কেলে নির্ভুলভাবে ওজন দেওয়া সম্ভব হয়। এতে জেলেরাও প্রতারণা শিকার হয় না, এবং জেলেরাও পুকুর মালিককে ঠকানোর সুযোগ পায় না। যাহোক মাছের ওজন দেওয়ার জন্য প্রথম জেলে এসে তার হাঁড়ির কিছু মাছ ডালির মধ্যে ঢেলে দিল।


IMG_20240419_134829_755.jpg

IMG_20240419_134921_555.jpg

IMG_20240419_134924_544.jpg


মাছগুলো ডালিতে ঢালার সাথে সাথে মাছগুলো দেখে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। কারণ যে জেলেটি মাছ ধরেছে তার হাঁড়িতে অধিকাংশ মাছ ছিল মৃগেল মাছের পোনা। অথচ ওই ছোট পোনাগুলো কিছুদিন আগেই পুকুরে ছেড়েছিলাম বড় করার জন্য। শেষ পর্যন্ত জেলের নিকট থেকে জানতে পারলাম যে, উনি বাটা মাছ মনে করে মৃগেল মাছের ছোট পোনা ধরে ফেলেছে। আসলে উনি জেলে হিসেবে নতুন, তাই এখন পর্যন্ত সকল মাছগুলো সঠিকভাবে চিনতে পারিনি। তাই শেষ পর্যন্ত যে মৃগেল মাছের পোনা গুলো বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল সেই মাছগুলো পুকুরে পুনরায় ছেড়ে দেওয়া হলো। বাকি মৃগেল মাছের পোনাগুলো তেলাপিয়া মাছের সাথে বিক্রয় করে দেওয়া হলো। সকল জেলেদের মধ্যে এই একমাত্র জেলে ভুল করে মৃগেল মাছের পোনা ধরেছিল।



IMG_20240419_134931_875.jpg

IMG_20240419_134932_834.jpg

IMG_20240419_134931_875~2.jpg


মাছের ওজন দেওয়ার সময় তেলাপিয়া মাছ গুলো দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। কারণ খুবই ছোট ছোট সাইজের তেলাপিয়া মাছের পোনা পুকুরে ছাড়া হয়েছিল। প্রচন্ড তাপদহের মাঝেও তেলাপিয়া মাছগুলো বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পুকুরের অন্যান্য মাছের তেমন একটা বৃদ্ধি হয়নি। তেলাপিয়া মাছগুলোর ওজন বেশ সন্তুষ্টজনক হয়েছিল। ছয় থেকে সাতটি তেলাপিয়া মাছে এক কেজির বেশি ওজন হয়েছিল। অন্যান্য মাছ তুলনামূলক বড় না হওয়ার কারণে কয়েকজন জেলে বলেছিল, তুলনামূলক বেশি পরিমাণে তেলাপিয়া মাছ থাকার কারণে অন্যান্য মাছগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেতে পারেনি।



প্রথম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আপনার এই অনুভূতিটা পড়ে এবং দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমিও পুকুরে এভাবে অনেকবার মাছ বিক্রি করেছি তাই এই অভিজ্ঞতা আমারও আছে। আর যখন জালগুলো পাড়ের দিকে আসে তখন দেখতে খুবই ভালো লাগে। আর আপনার পুকুরে দেখছি তেলাপিয়ার সাথে পাঙ্গাস চাষ হচ্ছে এতে বেশ লাভ হবে আপনার। আর পাঙ্গাশ মাছ আমার খেতে খুবই ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার এই অনুভূতিটি শেয়ার করার জন্য।

মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার নিজ পুকুরে মাছ বিক্রয় করার অনুভূতি। আসলে একজন মাছ চাষি যখন সারা বছর মাছগুলো পালন করে বিক্রয় করে তখন বেশ ভালই লাগে। তবে আপনার পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতের মাছ রয়েছে দেখে বেশ ভালো লাগলো। আমার কাছে সব থেকে বাটা মাছ খেতে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ মামা মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বাহ্ ,আপনার পুকুরের মাছগুলো দেখে সত্যি খুবই ভালো লাগলো। আসলে জেলেটা নতুন হওয়ার কারণে, মনে হয় মৃগেল মাছের পোনাগুলো চিনতে পারিনি। তবে যেগুলো জীবিত ছিল সেগুলো আবারো পুকুরে ছেড়ে দিয়ে ভালোই করেছেন। তেলাপিয়া মাছগুলো দেখতেও বেশ তর তাজা মনে হচ্ছে। আসলে নিজের পুকুরে এরকম মাছ ধরার অনুভূতিটাই অন্যরকম। আমার কাছে তো বেশ ভালো লাগলো।

আপনার মাছ বিক্রির প্রথম পর্ব টা আমি দেখেছিলাম। সেদিন অবশ্য শুধু মাত্র জেলেদের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছিলেন। আজকে মাছের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। এরকম তাজা মাছের ফটোগ্রাফি দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগে। আপনি ডিজিটাল স্কেল মাপার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে এতে করে জেলেরা প্রতারণা শিকার হয় না। নিজের পুকুরের মাছ বিক্রয়ের মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

মাছগুলো বেশিক্ষণ জীবিত রাখার পদ্ধতির কথা শুনে সত্যি অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক সময় পুকুরের মাছ খুব দ্রুত মরে যায়। আর তখন কেমন জানি লাগে। তবে আপনাদের পুকুরে চাষ করা বিভিন্ন রকমের মাছ দেখে অনেক ভালো লেগেছে। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।

আপনার শেয়ার করা মাছ বিক্রির অনুভূতির পোস্ট অনেক ভালো লেগেছে পড়ে। ঠিক বলছেন বেঁচে থাকা মাছগুলোর দাম অনেক বেশি বাজারে। আর যারা জেলেরা মাছ ধরে তাদের বেশ ভালো অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে মাছগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হয়। অনেক সুন্দর একটি অনুভূতি শেয়ার করলেন। আপনার শেয়ার করা মাছের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লেগেছে।