গল্প :- প্রিয়জন // পর্ব - ১০

in hive-129948 •  last year 



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ মঙ্গলবার। ২৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

siblings-gc11837ab2_1280.jpg

Source



সাগর ও ঝর্ণা দু'জন দু'জনার বাড়িতে পৌঁছে গেল। সাগর তার বাড়িতে পৌঁছে দেখতে পেল যে, তার মা রিমা খাতুন মুখভার করে বসে আছেন। মায়ের মুখভার দেখে সাগর তার মাকে জিজ্ঞেস করলো যে, মা তোমার শরীর কি ঠিক আছে? রিমা খাতুন ছেলের প্রশ্নে কোন উত্তর না দিয়ে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর রিমা'র দুটি চোখ দিয়ে অঝরে জল ঝরতে লাগলো। হঠাৎ মায়ের চোখের জল দেখে সাগর বেশ আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়লো। তারপর রিমা খাতুন তার ছেলে সাগরকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো, মরণের আগে পর্যন্ত যদি একবার তোমার বাবার মুখটি দেখতে পেতাম তাহলে আমার জীবনে আর কোন কিছুই চাওয়ার ছিল না, সেই যে প্রবাসে গেল আর কোন সন্ধান হলো না তোমার বাবার।

মায়ের মুখের এমন বেদনামুখর কথাগুলো শুনে সাগরের বুকের মধ্যে হু হু করে উঠলো। সাগর অত্যন্ত মৃদু কন্ঠে বলতে লাগলো, বাবাকে আমার তো খুবই দেখতে ইচ্ছে করে। যদি একটিবার বাবাকে পেতাম তাহলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখতাম সারা জীবনের জন্য। তারপর সাগর তার মাকে আরো বললো, আমি বিশ্বাস করি, একদিন আমার বাবা আমাদের কাছেই ফিরে আসবে। সে দিন আর বাবাকে কোথাও যেতে দেব না। ছেলের কথা শুনে রিমা খাতুন সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করতে লাগলো যে, একজন দুঃখী মায়ের প্রার্থনা এবং একজন পিতৃহারা সন্তানের দোয়া যেন সৃষ্টিকর্তা কবুল করেন। তারপর সাগর তার মাকে নিয়ে নিজ ঘরে প্রবেশ করলো।

এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা আসতে লাগলো। সন্ধ্যার একটু পূর্ব মুহূর্তে ঝর্না নীল শাড়ি পরিধান করে নিজেকে প্রস্তুত করতে খুবই ব্যস্ত। সাগরের চোখে এক অপরূপ সৌন্দর্য চেহারায় নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য ঝর্না নিজেকে খুবই পরিপাটি করে তুলতে লাগলো। এমন সময় ঝর্ণা যখন নিজে আয়নার সামনে দাঁড়ালো তখন সে যেন চমকে উঠলো। কেমন যেন এক ধরনের ভয় তার মধ্যে বাসা বাঁধতে লাগলো। সে ভাবতে লাগলো যে, সাগর যদি তাকে দেখে অপছন্দ করে কিংবা তার ভালবাসা যদি ওখানে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে সেই বিরূপ পরিস্থিতি সে কিভাবে সামলে উঠবে? এরকম অদ্ভুত প্রশ্ন নিজের মধ্যে বারবার উদয় হতে লাগলো। তারপর ঝর্না তার স্বাভাবিক চেহারায় নিজেকে উপস্থাপন করলো। শুধুমাত্র নীল শাড়িতে পরিধান করে তাদের পুকুর পাড়ের কাঁঠাল তলায় সাগরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।

সন্ধ্যার পর পরই সাগর সেই কাঠালতলায় উপস্থিত হলো। একেবারে নির্জন একটি জায়গা আশেপাশে কেউ নেই। পরিবেশটি খুবই শান্ত, মাঝেমধ্যে দক্ষিণা ঠান্ডা বাতাস বইছে। শুধুমাত্র আশেপাশে কয়েকটা ঝিঝিঁ পোকা ডাকার শব্দ। এমন পরিবেশে নীল শাড়ি পরিধান অবস্থায় মাথায় ঘোমটা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে দেখে সাগর কিছুটা বিস্মিত হয়ে গেল। সাগর মেয়েটিকে কি বলেছে সম্বোধন করবে সে কোন ভাষা খুঁজে পারছে না। মেয়েটিও সাগরের দিকে একটিবারের জন্যও তাকাচ্ছে না। এমন মুহূর্তে সাগর মেয়েটির কাছে দুই পা এগিয়ে গিয়েই তিন পা পিছিয়ে আসলো। সাগর মেয়েটির সাথে কথা বলার স্থির সাহস সঞ্চয় করতে পারছে না। মেয়েটির সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে গেলেই সাগরের ঠোঁট কেমন যেন শুকিয়ে যাচ্ছে, এমনকি তার ঠোঁট শুকিয়ে দাঁতের সাথে লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় মেয়েটি বলে উঠলো--আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আমার, কিছু তো বলো। মেয়েটির কথা শুনে সাগরে বুকের ভিতর ধড়ফড় করে উঠলো। তারপর সাগর মেয়েটিকে না দেখেই তড়িঘড়ি করে বলে ফেললো, আমি তোমাকে আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি। তারপর সাগর একটু জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো।



গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির এগারো তম পর্ব আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।


গল্পের নমব পর্বটি পড়ার লিংক



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png