হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ১৩ ই মে, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
Source
পাকাল মাছটি কাদার মধ্যে ঢুকে পড়ার সাথে সাথে আমরা তিনজন বন্ধু মিলে খুব দ্রুত কাদা সরাতে লাগলাম। কিন্তু আমরা যতই কাঁদা তুলে অন্য স্থানে রাখি, পাকাল মাছটি ততই সামনের দিকের নরম কাদার মধ্যে ঢুকে যায়। আসলে সেদিনই প্রথম বন্ধুদের সাথে কাঁদার ভিতর থেকে পাকাল মাছ ধরেছিলাম। কাদা সরাতে সরাতে এক পর্যায়ে পাকাল মাছটি বেশ কষ্ট করেই ধরতে সক্ষম হয়েছিলাম। সব থেকে মজার বিষয় হলো, একটি পাকাল মাছ ধরার পরে আরো তিন-চারটি পাকাল মাছ ধরতে পেরেছিলাম। পাকাল মাছ গুলো মাঝারি সাইজের ছিল। পাকাল মাছগুলো ধরে আমরা সকলেই অত্যন্ত আনন্দ অনুভব করেছিলাম। আসলে পাকাল মাছ ধরতে হলে অনেকটা দক্ষ হওয়া লাগে।
কিন্তু জীবনে প্রথমবার বিলে মাছ ধরতে গিয়ে এতো সুন্দর সুন্দর পাকাল মাছ ধরতে পারবো, সেটা এর আগে কখনোই চিন্তাও করেছিলাম না। পাকাল মাছগুলো ধরার পরে মাছগুলো নিরাপদে রাখার জায়গা পাচ্ছিলাম না। কারণ আমরা মাছ ধরতে গিয়েছিলাম কিন্তু মাছ রাখার কোন জায়গা ছিল না আমাদের কাছে। যে বন্ধুর কাছে দুটি শোল মাছ রেখে দিয়েছিলাম তার প্যান্টের পকেটে পাকাল মাছ চারটি রেখেছিলাম। যাতে পাকাল মাছ গুলো অন্য কোথাও চলে যেতে না পারে। এদিকে পাকাল মাছগুলো যখন আমার বন্ধুর প্যান্টের পকেটে নড়াচড়া করছিল তখন আমার বন্ধু বলেছিল, আমার প্যান্টের পকেটে মনে হচ্ছে সাপ নড়াচড়া করছে। বন্ধুর কথা শুনে আমরা বাকি তিনজন হাসিতে মেতে উঠেছিলাম। যাহোক তারপর আমরা পুনরায় মাছ ধরা শুরু করেছিলাম।
শীতের সময়, সেই সকালবেলায় ভাত খেয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, তারপর বন্ধুর কথা শুনে জীবনে প্রথমবার বিলে এসেছিলাম মাছ ধরতে। মাছ ধরতে ধরতে পুরো বিকেল হয়ে গেছে। চারিদিকে আস্তে আস্তে সাদা কুয়াশার চাদর যেন আমাদের ঘিরে ধরেছিল। মাঝেমধ্যেই উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা শীতল বাতাস বয়েছিল। কিন্তু মাছ ধরার নেশায় ঠান্ডা বাতাস খুব সহজে আমরা সহ্য করেছিলাম। আর সারাদিনের খিদে যেন সুন্দর সুন্দর মাছ দেখেই দূর হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মাছধরা যখন প্রায় শেষ প্রান্তে ঠিক সেই সময় আছরের আজান হয়ে গেল। আছরের আজান হওয়ার সাথে সাথে আমার বন্ধু বকুল বলে উঠলো, এতো তাড়াতাড়ি বিকেল হয়ে বেলা হয়ে গেল। আসলে মাছ ধরার সময়টুকু যে এতো দ্রুত চলে যাবে আমরা কেউই বুঝতে পারিনি।
এদিকে দুপুর বেলায় বাড়িতে না যাওয়ার কারণে বাড়ির অভিভাবকের অর্থাৎ মা-বাবারা আমাদের খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে গেছে। অবশেষে আমাদের মাঠের পরিচিত মানুষের দ্বারা জানতে পেরেছিল যে, আমরা মাঠে মাছ ধরতে এসেছি। তাই আমাদের চার বন্ধুর বাড়ি থেকেই অভিভাবকরা মাঠের দিকে আমাদের খুঁজতে এসেছিল। চারজন অভিভাবকের মধ্যে ছিল আমার বন্ধু বকুলের মা। বকুলের মা, যখনই শুনেছে বিলে মাছ ধরতে গেছে তখনই তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, তারা হয়তো মাছ রাখার কোন জায়গা নিয়ে যায়নি। তাই বকুলের মা সাথে করে একটি মাঝারি সাইজের হাড়ি হাতে করে এসেছিলেন। আমাদের অভিভাবকেরা প্রথমেই দূর থেকে আমাদেরকে বকাবকি করতে করতে এসেছিলেন। এমনকি আমাদের গালাগালি করেছিল এবং মারার হুমকি পর্যন্তও দিয়েছিল।
কিন্তু আমাদের কাছে এসে আমাদের মাছধরা দেখে তারা সকলেই অবাক হয়ে গেল। বিশেষ করে আমরা যতগুলো মাছ ধরে রেখেছিলাম সেই মাছগুলো দেখেই তাদের গরম মেজাজ নিমিষেই ঠান্ডা হয়ে গেল। বিশেষ করে মোটা মোটা দুটি শোল মাছ এবং জিওল মাছ গুলো তাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল। কিন্তু তারপরও আমাদের অভিভাবকরা বলেছিল খুব দ্রুত কাঁদার ভিতর থেকে উঠে আসতে। কারণ আমাদের ঠান্ডা লেগে যাওয়া সম্ভাবনা হয়ে গিয়েছিল। তাই অভিভাবকের কথামতো আমরা মাছ ধরা দ্রুত শেষ করেছিলাম। মাছ ধরা শেষে আমার বন্ধু বকুল বললো, আমাদের মাছধরা স্থানে পুনরায় কচুরিপানা গুলো দিয়ে ঢেকে রেখে গেলে আশেপাশে থেকে পানি ও মাছ এসে পুনরায় এখানে জমা হবে।
পঞ্চম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক
আমার শৈশব জীবনে খালে ও বিলে মাছ ধরার স্মৃতিময় মুহূর্তের বাকি কথাগুলো পঞ্চম পর্বে শেয়ার করা হবে।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর স্মৃতিময় মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার চমৎকার একটি স্মৃতি জানতে পেরে ভালো লাগলো। আসলে ছোটবেলায় আমাদের সকলের জীবনে মধুর স্মৃতি থেকে থাকে। এই স্মৃতি পড়ার পাশাপাশি আমারও বেশ কিছু স্মৃতি মনে পড়ল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের স্মৃতি কখনো ভুলার মতো নয়। আপনারা সবাই মিলে বেশ আনন্দ করে মাছ ধরেছেন। আসলে মাছ যতই ভালো হোক না কেন বাবা মা এভাবে মাছ ধরা দেখলে রাগ করবে এটাই স্বাভাবিক। আপনার তাহলে বেশ ভালোই মাছ পেয়েছেন। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক অনেক ভালো লাগলো অতীতের মাছ ধরার বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করতে দেখে। আসলে আমাদের শৈশবটা ছিল বেশ মধুর। কত রকমের আনন্দ দিন কেটেছে। মাছধরা থেকে শুরু করে মাছ ছাড়া পুকুরের পানি নিষ্কাশন এমন অনেক ঘটনা আমাদের জীবনে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit