সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, বর্তমান সময়ের তীব্র গরম আর সূর্যের প্রখর তাপের কারণে আজ আমরা সকলেই হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেরেছি যে গাছ আমাদের জন্য কতটা উপকারী বন্ধু। বিশেষ করে গাছের উপকারিতা আমরা সকলেই জানি এবং এর উপকারিতা আমরা মুখে স্বীকার করলেও বৃক্ষরোপন করে সবুজ বনায়ন তৈরিতে আমরা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করি না। কিন্তু আমরা যখন প্রকৃতির বিরূপ আচরণের সম্মুখীন হয় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে নাজেহাল হয়ে উঠি, ঠিক তখনই গাছ লাগানোর জন্য বিভিন্ন প্রকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করি। কিন্তু যখনই প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যায় ঠিক তখনই আবার গাছ লাগানোর সমস্ত পদক্ষেপ গুলো অকার্যকর হয়ে যায়। ঠিক যেমন মাঘ মাসের শীতের রাত্রে শিয়াল মামা শীতের তীব্রতায় কাঁপতে থাকে আর বলতে থাকে, রাত পোহালে কাঁথা তৈরি করবো, কিন্তু দিনের বেলায় রোদের তাপে কাঁথা তৈরি করার কথা মন থেকে হারিয়ে যায়। আমাদের অবস্থা ঠিক এরকমই হয়েছে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, বর্তমান সময়ের প্রচন্ড তাপদহের মাঝে আমাদের প্রশান্তির জায়গা হলো গাছের ছায়া। এখন আমরা ছোট বড় সকলেই গাছের ছায়ায় বসে গাছের গুরুত্ব শতভাগ বুঝতে পারছি। তাই এই গ্রীষ্ম ঋতুতেই গাছ লাগানোর উদ্যোগ আমাদের সকলের মুখে মুখে। অথচ দুইটা সময় গাছ লাগানোর এবং গাছকে রক্ষা করার কার্যকারী পদক্ষেপ আমরা দেখতে পারি না। সেটা হলো বর্ষা ঋতুতে এবং যখন নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করি ঠিক সেই মুহূর্তে। আজ আমার আমার নিজ এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটা আমার মেহেরপুর জেলার জন্য বিগত বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। একই সাথে আমার ৩০ বছর বয়সে এই প্রথমবার ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রার স্বাদ অনুভব করলাম। আমাদের এলাকার অনেক বিজ্ঞ মানুষেরাই মনে করছেন, মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া সড়ক পুনরায় নির্মাণ করার নামে উক্ত সড়ক থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার বড় মোটা গাছ নির্বিচারে নিধন করা হয়েছে। যে গাছগুলো সড়ক পুন:নির্মাণে কোন বাধাই সৃষ্টি করবে না, কিন্তু সেই গাছগুলোকেও বিবেকহীনভাবে নিধন করা হয়েছে। যার কারনে আমাদের মেহেরপুর এলাকার মানুষেরা সর্বোচ্চ তাপমাত্রার স্বাদ অনুভব করছে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজ আমাদের কারণেই প্রকৃতি আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। আজ আমরা যে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছি এটা সম্পূর্ণরূপে আমাদের উপার্জনের ফসল। আজ আমরা কিছু টাকার লোভ পরিত্যাগ করতে না পেরে আমাদের পরম বন্ধু গাছপালাকে নির্বিচারে কেটে ফেলেছি। যে গাছপালাগুলো নিঃস্বার্থভাবে আমাদের প্রতিদিন মহামূল্যবান অক্সিজেন, ছায়া ও শীতল পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে, আমরা সেই পরম বন্ধু গাছপালার জীবনকে তুচ্ছ করে দিয়েছি কাগজের তৈরি নিষ্প্রাণ টাকার কাছে। আসলেই আমরা অন্ধ, আমরা অজ্ঞ, আমরা পা ফাটা মূর্খ। আমরা যতই লেখাপড়া শিখছি, আমরা যতই বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করছি, আমরা যেনো দিন দিন ততোই বিবেকহীন এবং মানবতা বিরোধী হয়ে যাচ্ছি। আমরা যদি প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানীই হতাম তাহলে আমরা কখনোই আমাদের পরম বন্ধুকে হত্যা করে কাগজের তৈরি নিষ্প্রাণ টাকাকে পকেটে ঢুকাতাম না।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, কথায় আছে--"নিজের ভালো পাগলেও বোঝে।" তাই আজ আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথার্থভাবে শতভাগ সচেতন হতে হবে, আমাদের প্রকৃত জ্ঞানীর পরিচয় দিতে হবে, আমাদের বিবেকবান হতে হবে এবং আমাদের মানবতাকে বিস্তৃত করতে হবে। এখন থেকেই আমাদের সকল প্রকারের বৃক্ষ নিধন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। বৃক্ষ নিধন করে বড় বড় দালানকোঠা তৈরি, শিল্প কলকারখানা তৈরি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য দালান বাড়ি কিংবা শিল্প কলকারখানার এগিয়ে আসবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য একমাত্র আমাদের পরম বন্ধু গাছপালায় নিঃস্বার্থভাবে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের সকলের কাছে সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত যে, একমাত্র গাছপালায় পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে। তাই বর্তমান সময়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করার কোন বিকল্প নেই আমাদের।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, বৃক্ষ নিধন করা খুবই সহজ কিন্তু একটি গাছ লাগিয়ে সেটা যথার্থভাবে বড় করা বেশ কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ। তাই আমাদের নিজেদের কল্যাণে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং গাছ লাগানো শুরু করতে হবে। আমরা যদি সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেদের জায়গায় গাছ লাগায় এবং গাছগুলোকে সঠিকভাবে পরিচর্যা করি, তাহলে আমরা সবুজ প্রকৃতি গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। অধিক গাছ লাগিয়ে আমরা যদি সবুজ প্রকৃতি গড়ে তুলতে পারি, তাহলে সেটা আমাদের জন্য যেমন কল্যাণকর হবে ঠিক তেমনি আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্যও মঙ্গলজনক হবে। তাই আসুন প্রাকৃতিক ভয়ঙ্কর দুর্যোগের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য এবং আমাদের আগামী প্রজন্মকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষ রোপনের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। একই সাথে আসুন আমরা সকলে নিজ নিজ উদ্যোগে গাছ লাগাই, সঠিকভাবে গাছের যত্ন নিই এবং আমাদের জীবনকে বাঁচায়।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের এই পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য অবশ্যই সকলে উদ্যোগ নিয়ে গাছ লাগানো অত্যন্ত জরুরি। গাছ না থাকলে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় আর পরিবেশ আস্তে আস্তে গরম হয়ে উঠে। এই তাপদাহ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গাছ আমাদের পরম বন্ধু। একথা আমরা ভুলে বসে থাকি।এই গাছ আমাদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে।গাছ পৃথিবীতে শীতলতা দান করে।আজ এই উত্তপ্ত তাপদাহ হওয়ার পেছনে দায়ী আমরাই।গাছ কেটে কেটে আমরা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলেছি।তাই এখনই সময় সবাই মিলে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেয়া।এতে করে আমি,আপনি,আমরা সবাই সুন্দর একটি দেশ পাবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। আসলে আমরা প্রকৃতির উপর অনেক অত্যাচার করেছি। তাই প্রকৃতি আমাদের উপর চরম প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা যদি প্রচুর পরিমাণে গাছ না লাগাই,তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও বিপদের সম্মুখীন হবে। আর শুধুমাত্র বৃক্ষরোপণ করলেই হবে না, বরং বৃক্ষের পরিচর্যাও করতে হবে। যাইহোক এমন সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit