হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ রবিবার। ২৪ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
Source
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, প্রতিটি মানুষের জীবনে অসংখ্য স্মৃতি জড়িত থাকে। বিশেষ করে প্রতিটি মানুষের জীবনের সবচাইতে মধুর স্মৃতি হয় তার শৈশব জীবনের স্মৃতি গুলো। ঠিক তেমনি আমার জীবনে আমার শৈশব মুহূর্তের অনেকগুলো মধুর স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান স্মৃতি হলো ছোটবেলার মাছ ধরার স্মৃতি। আমাদের গ্রাম ছোট্ট একটি গ্রাম হলেও আমাদের গ্রামে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিল রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে একটি খাল। যে খাল দিয়ে আমার গ্রামের প্রতিবছরের বর্ষার অতিরিক্ত পানি গুলো বের হয়ে যায়। আমাদের গ্রামের মাঠের প্রধান ফসল হলো ধান। বর্ষার মৌসুমে ধানের জমিতে এবং বিলে প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যেত। আর আমার শৈশবের একটি বিশেষ মুহূর্ত কেটেছে মাছ ধরার মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে বছরের চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এবং মাঘ ও ফাল্গুন মাসে যখন বিলের পানি শুকিয়ে যেত তখন আমি আমার শৈশবের বন্ধুদের সাথে প্রায় প্রতিদিনই বিলে মাছ ধরতে যেতাম। মাছ ধরার সেই মধুর স্মৃতি আজ আমি আপনাদের নিকট উপস্থাপন করছি।
সময়টা ছিল ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাস, প্রাইমারির ছাত্র ছিলাম আমি। বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেছে। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য প্রায় সকল ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে এসেছি। আমিও আমার শৈশবের বন্ধুদের সাথে স্কুলে গিয়েছিলাম। তখন আমার বন্ধু বকুল হঠাৎ বলে উঠলো, আমাদের মাঠে প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে শোল মাছ এবং চ্যাং মাছ উল্লেখযোগ্য। এখানে চ্যাং মাছ বলতে টাকি মাছকে বোঝায়। আমরা অবশ্য ছোটবেলা থেকে চ্যাং মাছ বলে থাকি। যাহোক পাশাপাশি অন্যান্য মাছও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আনন্দ রেলি বাদ দিয়ে বন্ধুর কথা মতো আমরা চারজন রওনা হলাম মাঠের বিলের দিকে। আর সেই দিন ছিল আমার জীবনে প্রথম বিলে মাছ ধরতে যাওয়া। আর জীবনে প্রথম দিন মাছ ধরতে যাওয়ার সব থেকে মজার একটি দিক হলো-- মাছ ধরতে গেছি বিলে কিন্তু মাছ রাখার কোন জায়গা আমাদের সাথে ছিল না। এমনকি বিলের পানি ছেঁকে ফেলার জন্য কোন থালা বা গামলা আমাদের কাছে ছিল না।
সম্পূর্ণ শূন্য হাতে বিল থেকে মাছ ধরার জন্য আমরা চার বন্ধু বিলে পৌঁছে গেলাম। প্রথমে আমাদের শরীর থেকে শীতের পোশাক গুলো খুলে চারজনের পোশাক একটি উঁচু স্থানে রেখেছিলাম। তারপর আমার অভিজ্ঞ বন্ধু বকুলের পরামর্শ মতো একটি জায়গা নির্বাচন করেছিলাম। জায়গাটিতে পানি মোটামুটি ছিল এবং জায়গাটি পুরো কচুরিপানায় আবৃত ছিল। আমরা সকলেই বুঝতে পারলাম এই জায়গায় প্রচুর পরিমাণে মাছ পাবো। কারণ কিছু মাছ কচুরিপানার মধ্যেই নড়ে উঠছিল। মাছ ধরার জন্য নির্বাচন করা জায়গায় চারপাশ দিয়ে প্রথমে কাদা দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দিয়েছিলাম। তারপরে আমরা চার বন্ধু চার জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজেদের দুই হাত দিয়ে পানি ছেকার কাজ শুরু করেছিলাম। একটি বাটিতে যে পরিমাণ পানি ওঠে আমাদের দুই হাত একত্রিত করে তার থেকেও একটু বেশি পানি ছেঁকে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম।
পানি ছেকার কাজ শেষ করতে করতে যোহরে আজান হয়েছিল। তারপরে সম্পূর্ণরূপে পানি ছেকা শেষ করে আমরা চারজন একত্রে দাঁড়িয়ে মাছ ধরা শুরু করেছিলাম। জীবনে প্রথম বিলের পানি ছেঁকে মাছ ধরার মুহূর্তটা আমার জন্য যেমন আনন্দের ছিল ঠিক তেমনি অত্যন্ত ভয়ও করেছিলাম। বিশেষ করে সব থেকে বড় ভয় ছিল সাপের ভয়। কারণ ছোটবেলা থেকেই সাপ দেখে অত্যন্ত ভয় পেতাম আমি। যাহোক, আমরা চারজন এক পাশ থেকে কচুরিপানা পরিষ্কার করতে লাগলাম আর মাছ ধরতে লাগলাম। মাছ ধরার শুরুতেই পেয়েছিলাম মাঝারি সাইজের চ্যাং মাছ, পুটি ও খোলসী মাছ, কয়েকটা কৈ মাছ এবং কয়েকটা ছোট জিওল মাছ। মাছ ধরার শুরুতে যখন এরকম মাছগুলো পেয়েছিলাম তখন আমরা সকলেই অত্যন্ত আনন্দিত ছিলাম। আমি অবশ্য জিওল মাছ বাদে সব মাছগুলোই ধরায় ব্যস্ত ছিলাম। জিওল মাছ ধরায় আমার বন্ধু বকুল সব থেকে বেশি দক্ষ ছিল। মাছগুলো রাখার জন্য পাশের একটি উঁচু স্থানে গর্ত করেছিলাম। আর সেই গর্তের ভিতরে মাছগুলো রেখেছিলাম।
মাছ ধরতে ধরতে মাছ ধরা জায়গার ঠিক মাঝখানে যখন আমরা পৌছালাম সেই স্থানে পরিমাণে কাদা ছিল বেশি এবং হালকা পানিও ছিল। মাঝখানের কচুরিপানা পরিষ্কার করতেই বের হয়ে আসলো বিশাল মোটা আকৃতির একটি কুঁচিয়া। আর আমরা সবসময় কুঁচিয়াকে সাপ হিসেবেই জানি। কুচিয়া সাপটি যখন কাদার ভিতরে মাথা ঢুকিয়ে নিজের দেহটা ঢুকিয়ে নিতে লাগলো তখন কাঁদার দুই পাশ এমনিতেই সরে যেতে লাগলো। কুচিয়া সাপের এরকম ভয়ংকর দৃশ্য দেখে আমার পুরো শরীর শিহরিত হয়ে উঠলো। ভয়ে পুরো শরীরের লোমের গোড়াগুলো ফুলে উঠলো। তারপরে দেরি না করে খুব দ্রুত একটু উঁচু স্থানে গিয়ে দাঁড়ালাম।
আমার শৈশব জীবনে খালে ও বিলে মাছ ধরার স্মৃতিময় মুহূর্তের বাকি কথাগুলো দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করা হবে।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের মাছ ধরার অনুভূতি জানতে পেরে ভালো লাগলো। আসলে পানি ছেকতে ছেকতের আপনাদের আজান দিয়ে দেয়। আর আজান পরে আপনারা চার বন্ধু মিলে মাছ ধরা শুরু করেন। আসলে বিলে মাছ ধরার অনুভূতি অসাধারণ। অনেক ধরনের মাছ ধরতে ছিলেন।আর সাপের ভয়ে একটু ভীতু ছিলেন। কারণ সাপ যদি কামুড় দেয় তাহলে খবর রয়েছে।যাই হোক আপনারা অনেক ধরনের মাছ ধরেছেন। আর আপনার বন্ধু জিয়াল মাছ ধরার এক্সপার্ট ছিল। আসলে স্মৃতিময় এই গল্পটি মনে করতে পেরে। আমরা মিলে থেকে মাছ ধরেছি সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মাছ ধরার জন্য যেরকম সাহসের প্রয়োজন তেমনি মাছ ধরতে গেলে একজন এক্সপার্ট এর প্রয়োজন৷ আপনাদের একজন বন্ধু মাছ ধরতে একেবারে এক্সপার্ট ছিল৷ তার জন্য আপনাদের তেমন একটা বেশি বেগ পোহাতে হয়নি৷ মাছ ধরতে গেলে অনেক সাহসেরও প্রয়োজন হয়৷ কেননা সেখানে অনেক কিছুই থাকে এবং অনেক ভয়ানক জীবজন্তুও থাকে৷ আর আপনারা সাপের ভয়ে একটু ভীতু ছিলেন৷ তবুও সাহস করে মাছ ধরেছিলেন এবং অনেকগুলো মাছ পেয়েছেন শুনে খুবই ভালো লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম স্মৃতিময় একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷ আশা করি পরবর্তীতে আরো অনেক কিছু জানতে পারবো৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্টটিও আমার অনেক ভালো লেগেছে৷ পরবর্তী পর্বে আরো অনেক কিছু দেখার ও জানার আশায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছোটবেলায় খালে বিলে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা আমারও অনেক আছে ভাই। তবে বিজয় দিবসের আনন্দ র্যালি বাদ দিয়ে বন্ধুর কথা মতো সবাই মিলে একসাথে মাছ ধরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার একদমই নেই। আমি অবশ্য যখন বিলে মাছ ধরতাম তখন ওই একটাই ভয় পেতাম, সেটা হলো সাপ। যদিও জলের ভিতর যে সাপগুলো থাকে, সেগুলো বেশিরভাগ বিষাক্ত হয় না। তাছাড়া জিওল মাছ ছাড়া আমিও প্রায় সব মাছ ধরতাম। জিওল মাছ ধরতে আমারও প্রচন্ড ভয় করতো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit