নাটক রিভিউ // "মিস্টার বেক্কল"।

in hive-129948 •  15 days ago 



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।





আজ বুধবার। ২৯ ই জানুয়ারি, ২০২৫ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট "মিস্টার বেক্কল" নাটকটির রিভিউ উপস্থাপন করছি। আশা করি নাটকটির রিভিউ আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।

Screenshot_20250129-111759.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।


নাটকটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:-

নাটকটির নামমিস্টার বেক্কল।
পরিচালকAdi basi Mizan।
অভিনয়েনিলয় আলমগীর, জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি, শামিমা নাজনীন ও অন্যান্য জন।
ভাষাবাংলা।
দৈর্ঘ্য৩৬.৫৭ মিনিট।
দেশবাংলাদেশ।


নাটকটির সারসংক্ষেপ।

Screenshot_20250129-104036.jpg

Screenshot_20250129-104056.jpg


youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

"মিস্টার বেক্কল" নাটকটির শুরুতেই দেখা যায় যে, সুজন নামের একজন ব্যক্তি কৈ মাছ চিপে কৈ মাছের তেল বের করছে। এতে তার স্ত্রী বাধা দিলে, সুজন তার স্ত্রীকে বলে যে, কৈ মাছের তেল দিয়ে কৈ মাছ ভেঁজে সবাইকে খাওয়াবো। তারপর সুজনের শাশুড়ি এসে জামাইয়ের এই কান্ড দেখে হতবাক হয়ে যায়। এরপর স্ত্রী ও শাশুড়ি মিলে সুজনকে বাধা দেয়।

Screenshot_20250129-104110.jpg

Screenshot_20250129-104152.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তারপর সুজনের স্ত্রী সুজনের হাতে কুড়ি হাজার ৪০০ টাকা দেয় বিকাশ করে তার ছোট ভাই শান্তর কাছে পাঠানোর জন্য। এদিকে সুজন বিকাশের কাছে টাকা দেওয়ার জন্য বিকাশ নামের ব্যক্তিকে খুঁজতে থাকে। এদিকে সুজনের শাশুড়ি সুজনকে নিয়ে ভয় করতে থাকে, যে সুজন ঠিকঠাক ভাবে টাকা গুলো শান্তর কাছে পাঠাতে পারবে কি-না। এদিকে সুজনের মতিগতি একজন চিটার বুঝতে পারলো, ঠিক এই সুযোগে সেই চিটার সুজনের কাছে বিকাশ নামের ব্যক্তি হয়ে আসে এবং সুজের কাছ থেকে কুড়ি হাজার দুইশ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবং সেই চিটার সুজনকে বলে দিলো শান্ত আমার ক্লাস ফ্রেন্ড, এই টাকা শান্তর কাছে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে।

Screenshot_20250129-105321.jpg

Screenshot_20250129-105404.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তারপর সুজন যখন বাড়ির দিকে আসছিল তখন সুজনকে দেখে সুজনের শাশুড়ি এবং স্ত্রী তাকে টাকা পাঠানোর কথা জিজ্ঞেস করলো। তখন সুজন তার শাশুড়ির কাছে বাকি ২০০ টাকা ফেরত দিয়ে বাকি কথাগুলো বললো। বেক্কল জামাইয়ের কথাগুলো শুনে শাশুড়ি একেবারে হতাশ হয়ে গেল। এদিকে সুজনের স্ত্রীও বুঝতে পারলো যে, তার স্বামী টাকাগুলো একজন চিটারের কাছে দিয়ে এসেছে। কিন্তু স্ত্রী তার স্বামীকে বাঁচিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলো এবং বললো আমারই দোষ, সুজনকে ঠিকঠাক ভাবে বুঝিয়ে বললে এমনটা হতো না। তারপর সুজন সহ সুজনের শাশুড়ি ও তার স্ত্রী একজন ধনী মানুষের কাছে টাকা ধার করার জন্য গিয়েছিল। কিন্তু সেই ধনী মানুষটি তাদেরকে টাকা ধার না দিয়ে বরং কথার মাধ্যমে অপমান করেছিল। অপমানিত হয়ে এসে সুজন বুক ভার করে বসে ছিল। তখন তার শাশুড়ি বলেছিল, যতই দুঃখ থাক, মুখে হাসি রাখতে হবে। একই সাথে সুজনের শাশুড়ি আরো বলেছিল, বড়লোকের ধন পিঁপড়ায় খাবে।

Screenshot_20250129-105441.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এই কথা শোনার পরে, সুজন এক কৌটা চিনি নিয়ে সেই ধনী মানুষের বাড়ির চারিদিকে ছিটাতে লাগলো। ঠিক এমন সময় সেই ধনী মানুষের মেয়ে দেখে ফেললো এবং তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হলো। তারপর সুজন সেই ধনী মানুষকে এবং তার মেয়েকে বললো সকাল হলেই দেখবে যে, তোমাদের সম্পদ সব পিপড়ায় খেয়ে গেছে। তারপর সুজন সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।

Screenshot_20250129-110230.jpg

Screenshot_20250129-110240.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পরের দিন সুজনের স্ত্রী সুজনকে ১০০০ টাকার নোট ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসতে বললো। সুজন তখন ঐ ১০০০ টাকার নোটটি ইট দিয়ে বারবার আঘাত করেও ভাঙতে পারলো না। তারপরে সুজন বুদ্ধি বের করে ১ হাজার টাকার নোটটি জড়ো করে ভাঁজ করলো। তারপরে তার বউকে নোট টাকাটি দিয়ে বললো, এখন থেকে এভাবেই টাকা ভাঙিয়ে নিবে। বেক্কল জামাইয়ের কান্ড দেখে তার শাশুড়ি ও স্ত্রী একেবারেই হতবাক হয়ে গেলে।

Screenshot_20250129-110256.jpg

Screenshot_20250129-110305.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এবার পরের দিন সুজন ঘরের সব জালানা, দরজা খুলে ঘুমানো শুরু করেছে। এমন কান্ড দেখে সুজনের শাশুড়ি বেশ উত্তেজিত হয়ে গেল। তখন সুজন বললো যে, চোর ডাকাত এসে যেন ঘরের দরজা ভাঙতে না পারে, সেজন্যই সে ঘরের দরজা খুলে রেখেছে। সুজনের কথা শুনে তার শাশুড়ি ও স্ত্রী ঘরের দরজা দিতে চাইলেও সুজন ঘরের দরজা বন্ধ করতে দিল না। তখন বাধ্য হয়েই সুজনের শাশুড়ি এবং সুজনের স্ত্রী রাত জেগে বাড়ি পাহারা শুরু করলো। ঠিক সেই মুহূর্তে দুইজন চোর তাদের বাড়িতে চুরি করতে এসেছিল। কিন্তু বাড়ির মানুষের জাগ্রত দেখে তারা চুরি করা বাদ দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেল।

Screenshot_20250129-110322.jpg

Screenshot_20250129-110401.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পরের দিন সকালে সুজনদের বাড়িতে দুইজন আত্মীয় আসলো। সুজনদের বাড়িতে আত্মীয়রা এসে অনেক ভালো খাবারের আশা করেছিল। কিন্তু সুজন দুইটি থালায় চারটি করে ভাত দিল আত্মীয়দের খেতে। একই সাথে দিল কিছু ডাল। সুজনের এই দৃশ্য দেখে আত্মীয়-স্বজনরা সহ সকলেই হতবাক হয়ে গেল। তখন আত্মীয়রা চলে যাওয়ার পূর্বে বলে গেল, এবার আমরা এসে লক্ষ লক্ষ ভাত খাব। এই কথা শুনে সুজন পুনরায় ভাত গোনা শুরু করলো। এরপর বেক্কল স্বামীর কান্ড দেখে সুজনের স্ত্রী খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে গেল। তারপর সুজনের স্ত্রী তার মায়ের সাথে অর্থাৎ সুজনের শাশুড়ির সাথে কিছুটা মেজাজ হারিয়ে কথা বললো।

Screenshot_20250129-111759.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এরপর একদিন সুজনকে বাড়ি পাহারা করতে রেখে সুজনের স্ত্রী ও শাশুড়ি একজন আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে তারা দেখলো যে সুজন একটি ফাঁকা স্থানে দাঁড়িয়ে আছে। তখন তারা সুজনকে জিজ্ঞেস করলো, বাড়ি থেকে এতো দূরে এসে দাঁড়িয়ে আছে কেন, একই সাথে তারা বললো বাড়ির জিনিসপত্র যে চোরে চুরি করে নিয়ে যাবে। স্ত্রী ও শাশুড়ির কথা শুনে সুজন হেসে বললো, চোর কিচ্ছু নিয়ে যেতে পারবে না তাদের বাড়ি থেকে। কারণ জানতে চাইলে সুজন আরো বললো, আমার কাছ থেকে বাড়িতে আগুন লেগে গিয়েছিল, তারপর সেই আগুনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বেক্কল জামাই এর কথা শুনে শাশুড়ি পুরোই হতাশ হয়ে গেল। এবং বেক্কল স্বামীর কথা শুনে স্ত্রী রাগান্বিত হয়ে থাকে মারতে তাড়লো। আর এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে গেল।

নাটকটি সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত।

Screenshot_20250129-111759.jpg

youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

"মিস্টার বেক্কল" নাটকটি একটি হাস্যরস বিশিষ্ট নাটক। নাটকটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি অংশ চমৎকার হাসির ঘটনায় পরিপূর্ণ। একই সাথে নাটকের অভিনয় অত্যন্ত নিখুঁত হয়েছে। আসলে এই নাটকের অভিনয় গুলো অত্যন্ত আনন্দদায়ক ছিল। এরকম নাটক দেখলে মনটা কিছুক্ষণের জন্য হলেও আনন্দে সজীব হয়ে উঠবে। যাহোক, এই নাটকের দুইটি শিক্ষাগত দিক রয়েছে, প্রথমটি হলো কোন বেক্কল মানুষকে বিশ্বাস করা যাবে না এবং তার হাতে কোন প্রকারের টাকা পয়সা দেওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে, আর দ্বিতীয়টি হলো কখনোই অর্থ সম্পদের অহংকার করা যাবে না।


ব্যক্তিগত রেটিং

আমি নাটকটিকে ৯/১০দিচ্ছি।



নাটকটি দেখার লিংক।





আমার পরিচয়।

IMG_20231201_170343_362.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আজকের কাজ সম্পন্ন।


Screenshot_20250129-171748.jpg

Screenshot_20250129-171943.jpg

Screenshot_20250129-171907.jpg

নিলয় আলমগীর আর হিমির নাটকগুলো আমি খুব পছন্দ করি। বর্তমান বাংলাদেশের সেরা মানের নাটকগুলোতে তাদের অভিনয়। এরা এত সুন্দর ভাবে অভিনয় করে থাকে প্রত্যেকটা নাটকে হাসি আনন্দ লেগে থাকে। ঠিক তেমন কিন্তু আজকের এই নাটকটা। চমৎকার এই ভালোলাগা নাটকটা আপনি রিভিউ করছেন দেখে খুশি হলাম ভাইয়া।

দুইটি থালায় চারটি করে ভাত দিল আত্মীয়দের খেতে।

নাটকটির এই লাইনটি পড়ে ব্যাপক বিনোদন পেলাম ভাই হা হা হা। ব্যাক্কল হলেও মানুষ যে এতটাই ব্যাক্কল হয় সেটা এই নাটকটির রিভিউ না পড়লে বুঝতে পারতাম না। ব্যক্তিগতভাবে নিলয় আলমগীর এবং হিমি দুজনেই আমার পছন্দের এক্টর। মিস্টার ব্যাক্কল নামের নাটকটির রিভিউ পড়ে আমার খারাপ মনটা ভালো হয়ে গেল ভাই। খুবই সুন্দর করে রিভিউ করেছেন ধন্যবাদ।

অনেক সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকের রিভিউ পড়ে আমি তো হাসতে হাসতে একেবারে শেষ। নাটকের কাহিনীটা সত্যি অনেক বেশি দারুন ছিল। বিনোদনের জন্য মাঝেমধ্যে এরকম নাটক গুলো দেখতে কিন্তু ভালোই লাগে। মিস্টার বেক্কল নাটকটা এখনো পর্যন্ত যদিও দেখেনি, তবে ভাবছি সময় পেলে নাটকটা দেখবো।

নাটকের মজাদার একটি ক্লিক আমি দেখেছিলাম এবং সেই ক্লিপ দেখে আমি অনেক হাসাহাসি করেছিলাম৷ তবে আজকে আপনার কাছ থেকে এই নাটকের পুরো রিভিউ দেখে খুব ভালোই লাগছে৷ এখানে নাটকটি পড়ে মনে হচ্ছে যে নাটকটি সুন্দর হবে এবং অনেক মজাদার হবে ৷ অবশ্যই আমি সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷