প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আসলাম। আজকে আপনাদের মাঝে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো। আজকে আপনাদের সাথে হাজারো বন্ধু না থাকুক, এক জনের মতো একজন থাকুক শেয়ার করবো। পূর্ববর্তী সময়ে আমি আপনাদের মাঝে অনেক জেনারেল রাইটিং শেয়ার করেছিলাম যা আপনাদের অনেক ভালো লেগেছিল৷ তাই আজকে আরো একটি জেনারেল রাইটিং আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।

Source

আপনারা হয়তো আমার এই পোস্টের টাইটেলটি দেখে বুঝে গিয়েছেন যে আমি কি সম্পর্কে কথা বলতে যাচ্ছি৷ আসলে এমন অনেক বন্ধু আছে যারা সবসময়ই তাদের স্বার্থ নিয়ে থাকে এবং আমাদের জীবনে অনেক বন্ধু এসেছে আবার অনেক বন্ধু চলেও গিয়েছে৷ প্রাইমারি স্কুলে যখন আমরা ছিলাম তখন আমাদের যে বন্ধু-বান্ধবরা ছিল তারা হাই স্কুল পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে একেক জন একেক স্কুলে চলে গিয়েছে৷ আবার হাই স্কুল শেষ করার পরে যখন আমরা কলেজে উঠে গেলাম তখন সেই কলেজে ওঠার পরেও কিছু বন্ধুবান্ধব বিভিন্ন কলেজে চলে গিয়েছে৷ এক এক বন্ধু এক এক কলেজে চলে গিয়েছে৷ একইসাথে তারা অনেকজন অনেক দূরেও চলে গিয়েছে৷ তাদের সাথে বছর কিংবা মাসের পর মাস গেলেও এখন দেখা হয় না৷ তাদের সাথে একটা সময় সারাদিন হাঁটাচলা করা হতো এবং সারাদিন তাদের সাথে সময় অতিবাহিত করা হতো৷ তাদেরকে এখন এক পলকের জন্যও দেখা যায় না৷

যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাড়ির ভিতরেই বন্ধুত্ব সীমাবদ্ধ ছিল৷ আমাদের বাড়ির যে সকল বন্ধু-বান্ধব রয়েছে এবং আশেপাশে যারা রয়েছে তাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক বেশি ছিল৷ এরপর যখন আমরা প্রাইমারি স্কুলে প্রবেশ করলাম তখন আমাদের বন্ধুত্বের পরিসর আরো একটু বড় হতে লাগল। তখনকার বন্ধুত্ব আর এখনকার বন্ধুত্ব একেবারে ভিন্ন৷ তখন যে বন্ধু-বান্ধবরা ছিল তারা একে অপরের জন্য যা কিছু ছিল সব কিছু করার জন্য প্রস্তুত ছিল৷ তাদেরকে যা করার জন্য বলা হতো সবকিছু যারা করে নিত৷ আর ছোটবেলায় আমরা যে কোন খেলাধুলা করার সময় সকলে একসাথে বের হয়ে পড়তাম৷ সকলে মিলে একসাথে খেলাধুলা করার পরে আবার বাসায় চলে আসতাম এবং খেলার মধ্যে ঝামেলা হলে সেই ঝামেলা শুধু সেদিনই থাকতো৷ পরদিন আবারও আমরা সবাই একসাথে মিলে গিয়ে আবারো খেলা শুরু করে দিতাম৷ আসলে তখনকার বন্ধুত্ব একেবারে মধুর ছিল৷

এরপর আমাদের প্রাইমারি স্কুলের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সম্পর্ক ভালোভাবে গড়ে উঠলো। প্রাইমারি স্কুল জীবন হচ্ছে পাঁচ বছর৷ আবার কারো সাত বছর৷ আমার প্রাইমারি স্কুল জীবন ছিল সাত বছর৷ এই সাত বছরের ভিতরে আমাদের যে বন্ধু-বান্ধবরা ছিল তাদের সাথে সম্পর্ক একেবারে অন্যরকম ছিল৷ তাদের সাথে সাত বছর একসাথে কাটানোর মাধ্যমে তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তারাও আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছে। এই সম্পর্ক যখন অনেক গভীর হতে থাকে তখন তাদের সাথে আমরা বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতাম৷ তাদের সাথে সেই সম্পর্ক ছিল একেবারে অন্য ধরনের৷ এরপর হাইস্কুল জীবনে আমরা প্রবেশ করলাম। তখন সেখানে বিভিন্ন স্কুল থেকে অনেক ছাত্রছাত্রীরা হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে যায়। সেখানে অনেক ভিন্ন ভিন্ন স্কুলের মানুষদের সাথে প্রথমে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে একটু কষ্টই হয়৷ প্রথম প্রথম আমরা আমাদের যে স্কুলের বন্ধুবান্ধবরা থাকে তাদের সাথে হাঁটাচলা করার চেষ্টা করি৷ তবে একটা সময় যেতে যেতে আমরা আমাদের সেই বন্ধুবান্ধবদের সাথেও নতুন সম্পর্ক গড়ে উঠে। এভাবেই স্কুল জীবনেও পাঁচ বছর চলে যায় এবং এই স্কুল জীবনের পাঁচ বছরের মধ্যেও এমন অনেক বন্ধু আছে যারা আমাদের সাথে অনেক গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ৷ আবার এমন অনেকের সাথে অনেক ধরনের ঝামেলা হয়ে যায়৷ যা আর কখনো ঠিক হওয়ার নয়৷

ঠিক একইভাবে স্কুল জীবনের মতোই কলেজ জীবনে যখন আমরা প্রবেশ করি তখন কলেজে বিভিন্ন স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি হওয়ায় অনেকের সাথে আমাদের পরিচয় হয়ে যায়৷ এই পরিচয় হওয়ার পর যখন আমরা বন্ধু তৈরি করি তখন বন্ধু নির্বাচন করতে আমাদের একটু কষ্ট হয়ে যায়৷ কারণ এমন কিছু বন্ধু-বান্ধব থাকে যারা স্কুল জীবনে যেভাবে তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে প্রতারণা করে এসেছে, তারা এখনো কলেজ জীবনেও প্রতারণা করার জন্য চেষ্টা করে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে তারা সবসময় এগিয়ে থাকে৷ আবার অনেক মানুষ আমাদের জীবনে এসেছে যারা আমাদেরকে এত বেশি পরিমাণে ভালোবাসা দিয়েছে এবং এত বেশি পরিমাণে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে যা একেবারে বলাবাহুল্য । একটা সময় তারা যখন আমাদের সাথে শত্রুতা করে এবং আমাদেরকে ধোকা দেয় তখন তার থেকে খারাপ বিষয় আর কিছু হতে পারে না৷ আমাদের জীবনে হাজার হাজার বন্ধু আসবে এবং অনেক বন্ধু-বান্ধব চলেও যাবে৷ তবে আমাদেরকে এমন কিছু বন্ধুবান্ধব সাথে রাখতে হবে যারা সবসময় আমাদের পাশে থাকবে এবং যেকোনো ধরনের বিপদেই আমাদেরকে সাহায্য করবে৷ আবার এমন অনেক বন্ধু আছে যাদের নামও জানিনা তবে তারা আমার প্রতি অনেক আন্তরিক৷ একইসাথে আমিও অনেকের প্রতি অনেক আন্তরিকতা প্রকাশ করি৷ তবে তাদের সাথে হয়তো আমার কখনো ভালোভাবে কথাই হয়নি৷ আবার এমন অনেকে রয়েছে যাদের সাথে এই ৭ বছর এবং ৫ বছর মিলিয়ে ১২ বছর থাকার পরেও তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা যখন হঠাৎ করে আমাদেরকে ধোকা দিয়ে দেয় এবং আমাদের সাথে প্রতারণা করে তখন সে সম্পর্কে আর কখনো জোড়া লাগানোর মতো নয়৷ আসলে কিছু মানুষ আমাদের জীবনে আসবে এবং বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে তাদের স্বার্থ রক্ষা করে সেখান থেকে চলে যাবে৷ তবে এমন কিছু মানুষ থাকা দরকার যারা নিঃস্বার্থভাবে আমাদের পাশে থাকবে এবং কখনোই কোন ধরনের কোন বাধা আসলেও কখনোই আমাদেরকে ছেড়ে যাবে না৷ তাই আমাদের সকলের উচিত এমন কিছু বন্ধু নির্বাচন করা যারা সবসময় আমাদের পাশে থাকবে এবং যেকোনো ধরনের সমস্যায় আমাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবে এবং আমরাও তাদের বিপদে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব৷