মুভি রিভিউ :সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সিনেমা "অশনি সংকেত "।

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

Screenshot_20211108-002241__01.jpg

Taken from hoichoi OTT while watching

হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় একটি অসাধারণ সিনেমা "অশনি সংকেত" এর রিভিউ শেয়ার করতে চলেছি।সত্যজিৎ রায় শুধু ভারতীয় উপমহাদেশের নয় সারা পৃথিবীর মধ্যে তিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক।প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা এবং পরিকাঠামোগত অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা শর্তেও তিনি যেসব সিনেমা তৈরি করেছেন সেগুলো এক একটি মাস্টারপিস।
Screenshot_20211108-002418__01.jpg

Taken from youtube while watching

এ কথা স্বীকার করতেই হয় যে তার সময়ে যেসব অভিনেতা অভিনেত্রী এবং কলাকুশলী তিনি পেয়েছিলেন তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ছিলেন অসাধারণ।তাই হয়তো তিনি একটু বেশি সুবিধা পেয়েছিলেন এই ব্যাপারে।কিন্তু আবার তিনি একদম আনকোরা কে নিয়েও দেখিয়ে দিয়েছিলেন গুপী গাইন বাঘা বাইন সিনেমা তে পরিচালনা কাকে বলে।

এ কথা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই যে সত্যজিৎ রায় যে সিনেমাতেই হাত দিয়েছে তাতে সোনা ফলেছে।বিখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের" অশনি সংকেত "উপন্যাস অবলম্বনে তিনি এই সিনেমাটি তৈরি করেছিলেন এবং এটিই তার প্রথম রঙিন সিনেমা।এই সিনেমায় তিনি তেতাল্লিশের মন্বন্তর এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন।মানুষের সৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষ কিভাবে নতুন গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে নিদারুণ প্রভাব ফেলেছিল তাই সিনেমার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।

সিনেমার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী

পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার ও সুরকার:সত্যজিৎ রায়
প্রযোজক :শ্রাবণী ভট্টাচার্য
চিত্রগ্রাহক:সৌমেন্দু রায়
প্রযোজনা কোম্পানি: বলাকা মুভিজ
পরিবেশক: নন্দা ভট্টাচার্য
ভাষা: বাংলা
দেশ: ভারত
মুক্তি :১৯৭৩
পুরস্কার:রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক ,গোল্ডেন বিয়ার, গোল্ডেন হিউগো।
Screenshot_20211108-002423__01.jpg

Taken from youtube while watching

অভিনেতা ও অভিনেত্রী

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়: গঙ্গা চরণ চক্রবর্তী
ববিতা :অনঙ্গ বউ
সন্ধ্যা রায় :ছুটকি
গোবিন্দ চক্রবর্তী:দিনোবন্ধু এবং প্রমূখ

সিনেমার প্লট

প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস "পথের পাঁচালী" অবলম্বনে পথের পাঁচালী শিরোনামে জীবনের প্রথম সিনেমা বানিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে সিনেমা এমন ও হতে পারে।সিনেমা এত বাস্তব এবং একেবারে জীবনের কছাকাছি সেটা পথের পাঁচালী সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পরেই মানুষ বুঝতে পেরেছিল।

তেমনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম আরেকটি অসাধারণ উপন্যাস" অশনি সংকেত" নিয়ে তিনি তৈরি করেছিলেন জীবনের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র "অশনি সংকেত"।সাল উনিশশো তেতাল্লিশ- চুয়াল্লিশ তখন সবে শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।এ যুদ্ধ চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর জন্য দরকার প্রচুর খাদ্য সামগ্রীর।ব্রিটিশ সরকার সকল বাজার থেকে সকল খাদ্য দ্রব্যাদি মজুদ করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী দের জন্য।এর ফলে বাংলার গ্রামে গ্রামে দেখা দেয় ভীষণ খাদ্যের অভাব।
Screenshot_20211108-002429__01__01.jpg

Taken from youtube while watching

মানুষ সৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষকে বাংলায় মারা যায় প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ।এর থেকে রক্ষা পায়নি নতুন গ্রামের মানুষেরা।কিছু বছর আগে এসেছিলাম গঙ্গাচরণ চক্রবর্তী নিজের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এই গ্রামে।একটি টোল খোলেন এবং এই ব্রাহ্মণ হীন গ্রামে পুজো অর্চনার সমস্ত দায়িত্ব ও তিনি নেন।নিজের স্বল্প জ্ঞান আর ভীষণ চাতুরটা নিয়ে তিনি গ্রামে বেশ ভালো অবস্থানে থাকতে শুরু করেন।সুখে-দুঃখে বেশ আরাম আয়েশে দিন কেটে যাচ্ছিলো গঙ্গাচরণ এর।

সত্যজিৎ রায় সিনেমায় দেখিয়েছেন গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের শিক্ষার অভাব নিয়ে কিভাবে চতুর শ্রেণীর মানুষরা তাদেরকে ঠকিয়ে দেয়।এই সিনেমায় গঙ্গাচরণ চক্রবর্তী চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।তাকে গ্রামের এক সরল সহজ যুবক প্রশ্ন করলে, পন্ডিত মশাই আপনি কি পুজো করাতে পারবেন?এই প্রত্যুত্তরে গঙ্গাচরণ একটি সংস্কৃত মন্ত্র পাঠ করেন যেটা সম্পূর্ণ ভুল ছিল কিন্তু যেহেতু সে গ্রামের কেউ সংস্কৃত সম্পর্কে কোনো রকম কোনো জ্ঞান ছিল না তাই তাকে ধরতে পারে না কেউ।

এভাবেই চলছিল হঠাৎ করে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্বের দরুন দেখা দেয় দারুন খাদ্যাভাস।গঙ্গাচরণ চক্রবর্তী চরিত্রে প্রচুর খাদ্য সামগ্রী মজুদ করেন কিন্তু তা দিয়ে শেষ রক্ষা হয় না।অবশেষে তাকে খাদ্যের জন্য হাহাকার করতে হয়।এরই মধ্যে আবার দেখা দেয় ওলাওঠা নামক অসুখ আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণ হয়েও নীচু জাতের সৎকার্যে মানবতার খাতিরে এগিয়ে আসে গঙ্গা চরণ চক্রবর্তী।সত্যজিৎ রায় মানবতাকে বড় করে দেখিয়েছেন এই ছবিতে।অভাব মানুষকে কতটা নিচে নামিয়ে দেয় অভাব এর জন্যই মানুষ আবার কি ভাবে নিজের সঙ্গে আপস করে নেয় সেই শিক্ষা আছে এই চলচ্চিত্রে।

Screenshot_20211108-002436__01.jpg

Taken from youtube while watching

কে বিরক্ত করতে গ্রাম্য যুবক যদু বারবার লাঞ্ছিত হয়েছে অনঙ্গ বউ ও ছুটকি দ্বারা।সেই ছুটকি পেটের দায়ে যদুর সঙ্গে পালিয়ে যায়।গভীর রাতে গ্রাম ছেড়ে তারা চলে যায়। এক কঠিন বাস্তবতা ফুটে উঠেছে এই সিনেমায়।গাঁয়ের লোকেরা যে গঙ্গাচরণ কে অত্যন্ত সম্মান করতো তারা এই দুর্দিনে তাকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে। আসলে নিজের

জীবন বাঁচানোর থেকে বড় কোন দায় নেই।এমনিই মানবিক গুনাবলী ফুটে উঠেছে এই মুভিটিতে।অবশেষে এই গ্রামে খাদ্যের অভাব এতটা ভয়ংকর হয় যে বেঁচে থাকার জন্য গ্রামের সবাই একটি সিদ্ধান্ত নেয়।কি সেই।সিদ্ধান্ত জানতে হলে দেখতে হবে এই চলচ্চিত্রটি।

চলচ্চিত্র সম্পর্কে ব্যক্তিগত মতামত

সত্যজিৎ রায় এই সিনেমায় গ্রাম বাংলার সুন্দর রূপ কে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।গ্রামের মানুষের পোশাক-পরিচ্ছেদ তাদের ব্যবহার তাদের অলংকরণ প্রত্যেকটি তিনি অত্যন্ত সুক্ষভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।কিন্তু সমালোচকরা বলেন যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কে নাকি গ্রামে সঙ্গে ঠিকমতো মানিয়ে নেয়া হয়নি।গ্রাম্য চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি সৌমিত্র বাবু।

তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় তিনি দারুণ অভিনয় করেছেন এবং গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে মিশিয়ে ফেলেছিলেন এই চলচ্চিত্রে। সত্যজিৎ রায় গ্রামীণ জীবনের নানা টানাপোড়েনের সূক্ষ্ম বিষয় গুলো ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর অনবদ্য এই চলচ্চিত্রে।একমাত্র সত্যজিৎ রায়ের পক্ষেই সম্ভব এমন সিনেমা তৈরি করা। বাকি যে সব অভিনেতা ও অভিনেত্রী গণ ছিলেন প্রত্যেকে অসাধারণ অভিনয় করেছেন।রমেশ মুখোপাধ্যায় ,গোবিন্দ চক্রবর্তী, ননী গাংগুলি প্রত্যেকে অসাধারণ ছিলেন।

এক কথায় আমার মতামত

৭০ দশকের সিনেমা হলেও এই সিনেমাটি সকল দশকে সমান প্রাসঙ্গিক। চলচ্চিত্রের গুনাগুন এর পরিপ্রেক্ষিতে সিনেমাটি স্বয়ংসম্পূর্ণ।

আমার ব্যক্তিগত রেটিং

কাহিনীর বিচারে দশে দশ
অভিনয দশে দশ
পরিচালনা দশে দশ
সম্পাদনা ও কলাকৌশল দশে নয়।

ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

png_20211106_204814_0000.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে সিনেমাটি দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। সত্যি ভাইয়া পুরনো সিনেমা গুলোয় মানুষের বাস্তব জীবন কাহিনী ফুটে উঠে। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

দাদা,সত্যজিৎ রায়ের মুভি আমি কয়েকটি দেখেছি। ভারতীয় বাংলা মুভি গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। সামাজ এবং সামাজিক অন্যান্য দিকে নিয়ে মুভি গুলো তুলে ধরে।তবে বিশেষ করে সত্যজিৎ রায়ের মুভি অনেক দারুন হয় বাস্তবিক মুভি।সত্যজিৎ রায়ের এই মুভিটি আমার দেখা হয়নি। দাদা, মুভির রিভিউ পরে মনে হচ্ছে অনেক কারণ একটি মুভি ।

  • গ্রামের এক সরল সহজ যুবক প্রশ্ন করলে, পন্ডিত মশাই আপনি কি পুজো করাতে পারবেন?এই প্রত্যুত্তরে গঙ্গাচরণ একটি সংস্কৃত মন্ত্র পাঠ করেন যেটা সম্পূর্ণ ভুল ছিল কিন্তু যেহেতু সে গ্রামের কেউ সংস্কৃত সম্পর্কে কোনো রকম কোনো জ্ঞান ছিল না তাই তাকে ধরতে পারে না কেউ।

দাদা আপনার লেখার এই অংশটি খুব ভালো লেগেছে আমি কালকেই ইউটিউবে সত্যজিৎ রায়ে এই মুভি দেখব।
ধন্যবাদ দাদা,এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

আসলেই একটি দারুন ছবি।অবশ্যই সময় করে দেখবেন।আশা করি ভালো লাগবে ।ধন্যবাদ আপনাকে।

এই সিনেমাটি আমার দেখা হয় নি কিন্তু আমার সত্যজিৎ রায় খুবই পছন্দের আমার। যেই চলচ্চিত্রগুলোতে গ্রামীণ পরিবেশ, গ্রামের ঐতিহ্য গুলো ফুটে ওঠে সেই চলচ্চিত্রগুলো আমার সবসময়ই ভাল লাগার এবং পছন্দের তালিকার উপরে থাকে। আপনার রিভিউটি পড়ে মনে হচ্ছে একবার এই চলচ্চিত্রটি দেখা উচিত। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আসলে গ্রামাঞ্চলের এসব জিনিস গুলো অথবা পুরনো সবকিছু দেখতে আমার খুব বেশি ভালো লাগে। আর রিভিউটি তো খুব বেশি সুন্দর হয়েছে।

দাদা খুবই চমৎকার ভাবে মুভি রিভিউ করেছেন।৭০ দশকের সিনেমা হলেও এই সিনেমাটি সকল দশকে সমান প্রাসঙ্গিক। চলচ্চিত্রের গুনাগুন এর পরিপ্রেক্ষিতে সিনেমাটি স্বয়ংসম্পূর্ণ।কথাটি যথার্থই বলেছেন।♥♥

এই মুভি আমার এখনো দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ পড়ে দেখার আগ্রহ বেড়ে গেল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আমার খুব পছন্দের একজন অভিনেতা। চমৎকার রিভিউ দিয়েছেন দাদা।

যদিও মুভি তেমন একটা দেখা হয় না। কিন্তু দেখা না হলেও এই মুভিটার নাম আমি আগেও শুনেছি। এখন আপনার রিভিউ দেখে আমার এই মুভি দেখার ইচ্ছাটা বেড়ে গেলো। ধন্যবাদ আপনাকে মুভিটার এত সুন্দর একটা রিভিউ দেওয়ার জন্য।

দাদা অশনিসংকেত মুভিটা আমি দেখেছি অসাধারণ 43 এর দুর্ভিক্ষের বাস্তব চিত্র গুলো তিনি এ ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন এছাড়াও সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসার বিভূতিভূষণ উপন্যাস অবলম্বনে পথের পাঁচালী সিনেমা তিনি অসাধারণভাবে ফটো তুলেছেন ।মানুষের প্রত্যাহিক জীবনে তিনি মুভির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আরেকটি দিক তিনি তুলে ধরেছেন ব্রিটিশ সরকারের শেষ সময়ে বিভিন্ন নীতির কারণে ভারতবর্ষে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় মানুষের অসহায়ত্ব প্রকাশ কিভাবে করেছিল মানুষ কিভাবে না খেয়ে দিনযাপন করেছে কুকুর মানুষ একসাথে তাদের খাবার ভাগ করে খেয়েছে ।সবকিছু ছিল ভয়ঙ্কর একটি ব্যাপার। সত্যজিৎ রায়ের প্রতিটি ছিনেমায় গ্রামীণ মানুষের সহজ সরল জীবন ফুটে উঠেছে। তিনি এত সুন্দর ভাবে মানুষের জীবনধারণ তার সিনেমার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন সত্যি তা প্রশংসার দাবিদার । তবে একটা জিনিস সব থেকে খারাপ লাগে ওই সময়ে যে গ্রামে বা গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষিত মানুষও ছিল একটু জানাশোনা ছিল তারা কিভাবে গ্রামের গরীব অসহায় মানুষদের ঠকিয়ে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছিল । অনেক সুন্দর একটি মুভিররিভিউ দিয়েছেন দাদা আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অশনি সংকেত উপন্যাসটি আমি অনেক আগেই পড়েছি এবং এটি আমার প্রিয় উপন্যাস গুলোর মধ্যে অন্যতম। আমার কাছে মনে হয় বিখ্যাত উপন্যাস গুলোকে চলচ্চিত্রায়িত করতে গেলে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মূল উপন্যাসটি কে সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড় এর কথা। এটিও আমার প্রিয় উপন্যাস গুলোর মধ্যে একটি কিন্তু এর চলচ্চিত্রায়িত রূপটি দেখে দুঃখে আমার কান্না পেয়েছিল। যাই হোক সত্যজিৎ রায় নিঃসন্দেহে একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি ছিলেন। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর একটি রিভিউ দেয়ার জন্য।

দাদা আমি এই মুভিটির নাম শুনেছি , কিন্তু দেখা হয়নাই কখনো ,তবে আপনার মুভি রিভিউ পরে মনে হচ্ছে দেখার মতো একটা মুভি এটা , আর নায়িকা আছে ববিতা , যাকে আমার খুবই ভালো লাগে , অনেক কষ্ট করে আপনি পুরু মুভি রিভিউ লিখেছেন দাদা , অনেক ভালো লাগলো পড়ে।

সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সিনেমা "অশনি সংকেত মুভিটি গ্রাম বাংলার সামজিক কাহিনী নিয়ে গঠিত।এই ধরনের মুভি আমার খুবই প্রিয়।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মূভি রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

ছবিটি দেখা হয়নি ।তবে ছবিটির কাহীনি এরপ্রেক্ষাপট পরে ভালোই লাগলো । সত্তুর এর মন্বন্তর এর যে দৃশ্য তা পুরোটাই ফুটিয়ে তুলেছে এই মুভিতে পরিচালক।আপনার বিষদ বর্ননা সুন্দর ছিলো ।ধন্যবাদ ভাই।

সত্যজিৎ রায় পরিচালিত কয়েকটি মুভি আমি দেখেছিলাম, কিন্তু "অশনি সংকেত "এই মুভিটি দেখা হয়নি। আপনার মুভি রিভিউ টি পড়ে জানতে পারলাম যে এই মুভিটি গ্রাম বাংলার প্রেক্ষাপট এবং খাদ্যাভাসের দুর্ভিক্ষ নিয়ে মূলত নির্মিত। মুভি রিভিউ টি পড়ে মুভিটি দেখার খুব আগ্রহ জাগল কারণ এই ধরনের মুভি গুলো সব সময়ই দর্শকপ্রিয় হয়ে থাকে। আমি অবশ্য এই মুভিটি দেখব। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

পথের প্যাচালী যতবার দেখেছি ততোবারই কেঁদেছি। দুর্গার মৃত্যুর জন্য বিভূতিভূষণকে আমি দোষারোপ করা যাই। আসলেই এটাই সাহিত্য এবং সত্যজিৎ দেখিয়েছেন কিভাবে করে জীবনকে একেবারে কাছ থেকে খুব গভীর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে হয় সিনেমাতে। সেই সময়ের এত কম প্রযুক্তি নিয়ে সত্যজিৎ আমাদেরকে যত সুন্দর সুন্দর ক্রিয়েটিভিটি উপহার দিয়েছেন সেটা বর্তমান সময় এত উন্নত প্রযুক্তির পরেও অনেকেই করতে পারছে না। সত্যজিৎ রায়ের মেধা এবং ক্রিয়েটিভিটি দেখে বারবারই মুগ্ধ হই এত ক্ষেত্রে একটা মানুষের এত দক্ষতা কিভাবে থাকে। অসাধারণ লাগে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকারভাবে রিভিউটি দেওয়ার জন্য। বিভূতিভূষণ এবং সত্যজিৎ দুজনের জন্য শ্রদ্ধা রইল।