টিবি টেস্টের জন্য ঢাকা যাওয়া।

in hive-129948 •  last year 

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।

IMG-20230919-WA0006.jpg
টিবি টেস্ট,আগষ্ট মাসের ২৮ তারিখ ছিল আমাদের টিবি টেস্ট করার দিন।ইউকেভিআই এর জন্য টিবি টেস্ট হয় ঢাকাতে। আর একটাই মেডিকেলে করতে হয় সেটা।সারা বাংলাদেশে মনে হয় ২জায়গায় এই মেডিকেল রয়েছে,ঢাকা আর সিলেট।যদিও সিলেটের ব্যাপারটা আমি নিশ্চিত নই।তা যাইহোক, আমরা ঢাকা যাওয়ার জন্য ট্রেন বুক করে রেখেছিলাম ৫ দিন আগেই। কিন্তু ট্রেনে করে অনেক দেরীতে পোছালেও জার্নিটা ভালো ছিল। সেটা কেন, ট্রেনে করে যেতে কোনো জ্যাম নেই,অন্য গাড়ির তেল পোড়ানো ধোয়ার গন্ধ নেই, আর সেই সাথে আমার অস্বস্তি বা মাথা ব্যাথাও নেই। সেজন্যই আমার কাছে ট্রেনে জার্নি করতে ভালো লেগেছিল, যদিও টাইমটা বেশি লেগেছিল।৯:২০ এ ট্রেন ছাড়ে আর আমরা ঢাকা রেলস্টেশনে পোঁছাই ৪টায়।

IMG-20230919-WA0009.jpg

IMG-20230919-WA0008.jpg

আমরা সেদিন আমার হাজব্যন্ড এর এক ছোট ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলাম। কারণ তার বাসা থেকে মোটামুটি কাছে ছিল বাকি রিলেটিভদের তুলনায়। তার বাসা ছিল বনশ্রীতে। সেদিন বাসায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে রেস্ট নিলাম। যাইহোক পরদিন যেহেতু গুলশান যেতে হবে তাই আমরা রেস্ট নিলাম, কোথাও আর বেরোলাম না। রাত টা ১১ঃ০০ টার দিকে খাবার খেলাম কারণ আমরা যাদের বাসায় গিয়েছি তারা আবার সন্ধ্যেবেলায় তার ভাইকে দেখতে হসপিটালে গিয়েছিল। ওনারও কিন্তু পিত্তে পাথর হয়েছিল। তাই সেটা অপারেশনের জন্যই সবাই হসপিটালে গিয়েছিল। রাত মনে হয় তিনটের দিকেই তার ভাইকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও অপারেশন ক্রিটিকাল ছিল, তবে আলহামদুলিল্লাহ উনি সুস্থ ভাবে বাসায় ফিরেছেন।

IMG-20230919-WA0007.jpg
তো যাই হোক পরদিন ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে গেলাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আর যেহেতু ভাইয়ারা অনেক রাত করে বাসায় ফিরেছে সেই হিসেবে আমরা তাদেরকে ডাকিনি। প্রায় সাড়ে ছয়টার পর নিভৃত ঘুম থেকে উঠেছিল। ও ঘুম থেকে না ওঠার কারণে একটু লেটে বের হতে হয়েছে। আর ওকে যদি আগে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিতাম তাহলে সে বেশি কান্নাকাটি করতো। কারণ ওর ঘুম যদি ভালোভাবে না হয় তাহলে সে কান্নাকাটি করে সব সময়। যাই হোক সাতটার দিকে আমরা বেরোবো, এমন সময় পাসপোর্টগুলো বের করলাম। বের করে দেখি আমার এবং নিভৃতের পাসপোর্ট আছে কিন্তু আমার হাজবেন্ডের পুরনো পাসপোর্ট গুলোই রয়েছে। নতুন পাসপোর্ট যেটা রিনিউ করা হয়েছিল সেটা আনা হয়নি।
IMG-20230919-WA0002.jpg

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ই পাসপোর্ট গুলো নিয়েছিলাম সে ক্ষেত্রে নতুন টা আমার চোখে পড়েনি বা ভুল করেই রেখে এসেছিলাম। এই নিয়ে বাঁধলো বিপত্তি। তারপর আমার হাসবেন্ডের আর এক ছোট ভাই সেদিন ঢাকায় আসবে একটা কাজে। সেজন্য আমি বাড়িতে কল দিলাম কল দিয়ে বললাম যে পাসপোর্ট ব্যাগে আছে কিনা। তখন আম্মু দেখলে পাসপোর্ট ব্যাগেই রয়ে গিয়েছে। তারপর তাড়াহুড়ো করে ছোট ভাইকে ঘুম থেকে উঠিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে ফেনিতে আসতে বললাম। এর মাঝে আবার রকি ভাইয়া ও ছিল। তারা দুজনে মিলে ফেনীতে ওই ভাইয়ার কাছে পাসপোর্টটা পৌঁছে দিল।যদিও হসপিটালে কল করেছিলাম, পিডিএফ বা ফটোকপি দিয়ে হবে কিনা।তারা বললো মেইনটাই লাগবে।তাই নিরূপায় হয়ে পাসপোর্ট আনাতেই হলো।

IMG-20230919-WA0005.jpg

তা না হলে আমাদের বাড়ি এসে তারপর আবার পাসপোর্ট নিয়ে গিয়ে করতে হতো। যদিও আমি আর নিভৃত আগে করতে পেরেছি। কিন্তু আমার হাজবেন্ডেরটা পরে করতে পারতো। যাইহোক পরবর্তীতে তো ওই ভাইয়াটা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিল পাসপোর্ট নিয়ে।তাই আমাদের টেস্ট আগে করলাম, এবং তাদের সাথে কথা বলে রাখলাম ২টার মধ্যে পাসপোর্ট নিয়ে আসলে আজকে হবে কিনা।তারা বললো হবে,তাই কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম।আসলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করে বেরিয়েছিলাম,আম্মু শাশুড়ী ২জনই অসুস্থ ছিল।কাজ সেরে বেরোতেই দেরি হয়েছিল।

IMG-20230919-WA0003.jpg

যাইহোল সব কিছু সেরে ৭টার মধ্যেই আমরা বের হয়ে গেলাম। ভাবলাম ভাইয়াকে ডাকবো না কিন্তু নিচের গেটে তো তালা লাগানো। তাহলে ভাইয়াকে তো ডাকতেই হবে। তারপর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তাকে দিলাম এবং চাবি নিয়ে নিলাম। এরপর আমরা বের হয়ে গেলাম। অবশ্য ভাইয়া আমাদের সাথে নিচে গিয়েছিল। কারণ গেট এর তালা আবার লাগিয়ে দিতে হবে, সেখানে দারোয়ান ছিল না নতুন বাসা হিসেবে।

IMG-20230919-WA0004.jpg
সেখান থেকে বের হয়ে আমরা একটি সিএনজি ধরলাম গুলশান যাওয়ার জন্য। সেখান থেকে গুলশানে যাওয়ার ভাড়া ৪০০ টাকা নিল। ভোরবেলা কোন গাড়িও পাচ্ছিলাম না তাই নিরুপায় হয়ে তাড়াতাড়ি চলে গেলাম। কারণ আমাদের টিবি টেস্ট ছিল ৮ঃ২০ থেকে। যাই হোক গাড়িতে করে সেখানে পৌছে গেলাম। পৌঁছানোর পর ওই জায়গাটাতে দাঁড়িয়েছিলাম। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করলাম। কারণ ভেতরে যেহেতু টেস্ট নেয়ার লোক আসেনি সেই হিসেবে অপেক্ষা করতেই হলো। তাই বাইরে বসেই অপেক্ষা করলাম। তবে এর মাঝে আবার পাসপোর্ট এর ফটোকপির পেছনের অংশে আমি দরকারী কিছু লিখা লিখে নিলাম। যাইহোক আজকে এতোটুকুই, বাকি মুহূর্তগুলো শেয়ার করব অন্য পোস্টে।কারণ সেদিন সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম, আর প্রতিটা মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণটিবি টেস্ট এর দিন
ক্যামেরা.মডেলজে৫ প্রাইম
ফটোগ্রাফার@bristy1
লোকেশনফেনী

images (4).png

20211121_200134.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আসলে একটু কোনো কাজের জন্য তারাহুরো করলে কোন না কোন জিনিস নিতে সরন থাকে না। যাক আপু আপনি ভাইয়ার পাসপোর্ট নতুন টা নেন নি আবার বাসায় ফোন করে নিয়েছেন খুব ভালো হয়েছে। টিবি টেস্টের জন্য ঢাকা এসে বেশ ঝামেলার পরতে হয়েছে। পরের পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।

এই জন্যই আপু কোথাও যাওয়ার জন্য প্লান প্রগ্রাম করলে দুই একদিন আগেই ব্যাগ গুছিয়ে রাখা ভালো। কপাল ভালো যে জানতেন যে একজন ভাইয়া ঢাকা আসবে। তাই সে পাসপোর্টটা নিয়ে আসলো। এখন ঠিক ভাবে পৌছতে পারলো কি না আর আপনারাও পাসপোর্ট হাতে পেলেন কি না সেটা তো জানা হলো না। ধন্যবাদ।

আসলে কোথাও যেতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে থেকে ব্যাগে ভরে রাখতে হয় ।না হলে এ ধরনের বিপত্তি ঘটে থাকে। যাই হোক যেহেতু একজন ঢাকায় আসবে তার মাধ্যমে আপনাদের পাসপোর্ট আনাতে পারবেন তাহলে আর অসুবিধায় পড়তে হবে না ।

কোথায় গেলে একটা না একটা ভেজাল হয়ে যাই আপু। যতই আমরা চেক করে বের হয় না কেন কিন্তু এরকম একটি ঘটনা ঘটে যায়। যেটা আমার ক্ষেত্রে প্রায় সময় ঘটে যায়। যখন গ্রামের বাড়িতে যাব খুব ভালো করে দেখে শুনে বের হয়। সেখানে যেয়ে দেখি কিছু না কিছু একটা রেখে যাই। আবার যখন সেখান থেকে শহরে ফিরে একই ঘটনা হয়ে যায়। যাক পাসপোর্টটা অবশেষে পৌঁছে দিয়েছেন শুনে ভালো লাগলো। না হয় আপনাদের কাজের মধ্যে অনেক বিপত্তি ঘটে যেত।

পাসপোর্ট না নেওয়াতে ভালোই পেরেশানি হয়েছিল তখন। তবে তাহের যদি না আসতো তাহলে হয়তো তখন আর টিভি টেস্ট আমারটা করানো হতো না। যাই হোক ভালো একটি অভিজ্ঞতা হলো ধন্যবাদ।