শৈশবের ফেলা আসা দিনগুলির স্মৃতি।ছোট ভাই একা একা পুকুরে যাওয়ার ঘটনা।

in hive-129948 •  last year  (edited)

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।

দাদার একটা পোস্টে পড়েছিলাম শৈশবের স্মৃতিগুলোকে সবার মাঝে তুলে ধরার বিষয়ে।সেখানে তিনি নিজের এক মধুর মুহূর্ত সবার মাঝে তুলে ধরেছিলেন। খুব ভালো লেগেছিল সেটা পড়ে।আর তাই ভাবলাম আজ আমি আমার শৈশবের একটা মুহূর্ত শেয়ার করি।একদিন একটা সময়ের কথা শেয়ার করেছিলাম,আজ অন্য একটা বিষয় শেয়ার করব।

pond-4109750_1280.jpg

source

একদিন সকাল বেলা আমরা সবাই মিলে নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার আগের দিন আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। আমি বোধহয় ক্লাস টু তে ছিলাম। আমার ভাই তখন একদম ছোট হবে হয়তো দু বছর বয়স। পরীক্ষা শেষে সবাই নানার বাড়ি যাওয়ার আনন্দ অনেক বেশি ছিল। ছোটবেলায় শুধুমাত্র এই অপেক্ষায় থাকতাম কখন স্কুলের পরীক্ষা শেষ হবে আর কখন নানুর বাড়ি চলে যাব।ছোটবেলার মুহূর্তগুলো খুব বেশি ভালো লাগে আর মনে পড়ে। যদিও তখনকার সময়গুলো অনেক বেশি আনন্দময় ছিল।ছোট বড় সকলে মিলে বেশ মজা হতো।আমার বড় মামারা আর খালামণিরা মিলে পিকনিকের আয়োজন করতাম।তারাও আমরা যাওয়ার অপেক্ষায় থাকতো।আর যেহেতু তাদের ভাগিনা ভাগনি শুধুমাত্র আমরা ২জন ছিলাম সেই হিসেবে আদরও বেশি পেতাম।নানা তো আমাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যেত।

সেদিন সকাল বেলা গিয়েই চেঞ্জ করে দোড় দিলাম পাশের বাড়িতে,কারণ সেখানে আমার এক ফ্রেন্ড ছিল।আর যেহেতু আমি আমার খালামণি সমবয়সী সেক্ষেত্রে তার ফ্রেন্ডরা আমার ফ্রেন্ড হয়ে যেত।ওখানে গিয়ে আগে তার সাথে দেখা করতাম আর খেলার টাইম ফিক্স করে আসতাম।কি মজার ব্যাপার ছিল,তখন তো এমন মোবাইল ছিল না,যে বসে বসে মোবাইল দেখব।তাছাড়া সবাই মিলে দিনের বেলা খেলেই কাটিয়ে দিতাম।খেলার মাঝে ছিল গোল্লাছুট, ক্রিকেট, ফুটবল,কানামাছি, পাতাখোঁজা আরও কত কি।আর আমার নানুর বাড়ি বড় থাকায় সবাই মিলে খুব আনন্দে খেলা করতাম।

যাইহোক ফ্রেন্ডকে খেলার জন্য ইনভাইট করে আবার নানুর বাড়ি চলে গেলাম।যেহেতু সকালে গিয়েছি সেক্ষেত্রে পুরো দিন বাকি।সবাই যার যার মত করে কাজ কর্ম সেরে নিল। আর দুপুরের খাওয়ার পর ঘটলো আসল ঘটনা।মানে যে বিষয়টা আজকে শেয়ার করতে এসেছি সেটাই।আমরা সবাই খাওয়ার খেয়ে চলে গেলাম ড্রয়িং রুমে।নানুদের তখন নতুন ঘর দিয়েছিলো,বড় আকারের ঘর হওয়ার কারণে খাওয়ার রুম আর ড্রয়িং রুমের ব্যবধান ছিল অনেক।যাইহোক সবাই তো ড্রয়িং রুমে,যে যার মতো শুয়ে বসে আছে।তখন আবার আমরা আলাদা আলাদা রুমে না গিয়ে সবাই মিলে বসে গল্পগুজব করতাম, তার বেশ কিছুক্ষণ পর বিকেলের ঘুমের জন্য যেত সবাই।যদিও আমরা আবার ঘুমের ফাঁকিবাজ ছিলাম,সবাই ঘুম আমরা খেলার মাঠে।

টো সেদিন তো আড্ডা দিচ্ছে সবাই,এর মাঝে আমার ভাইটা গুটিগুটি পায়ে কখন যে ঘর থেকে বেরিয়ে রান্নাঘরের পাশের পুকুরে চলে গিয়েছে সেটা কেউ টেরই পায়নি।কারণ সবাই সেখানে একসাথে ছিল আর সেও খেলছিল।সবার কথার মাঝে ফাঁকি দিয়ে সে চলে গেল।২.৫ লিটার পানির ২টো খালি বোতল ছিল পুকুরের সিড়ির পাশেই।সেগুলো দিয়ে সে আগে খেলেছিল। এখন তার সেই বোতলের কথা মনে পড়ল,আর সে বোতলগুলো নিয়ে সোজা পুকুরে নেমে গেল। তখনো পর্যন্ত কারো খেয়াল হয়নি।এরপর মনে হয় সে বোতলে পানি ভরতে চেয়েছিল কিন্তু বোতলে ঢাকনা বন্ধ থাকায় সেগুলো ভেসে ভেসে মাঝের দিকে চলে যেতে লাগলো।পুকুরে পানি কম ছিল কিন্তু ভাইয়ের তুলনায় পানি অনেক।

যখন দেখলো সে অনেক দূরে এসেছে তখন চিৎকার দিচ্ছিলো।আর ঠিক তখনই আমার নানু কোনো এক কাজে খাওয়ার রুমের দিকে আসছিলো, তখন চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি এসে দেখে আমার ভাই পানিতে,দূরে চলে গিয়েছে,ভাগ্যিস তার হাতে বোতলগুলো ছিল। তখন নানু দোড়ে এসে আগে ওরে পানি থেকে উঠিয়ে নেয় তারপর সবাইকে ডাক দিল।মানে তখন তো সবাই হতবাক, মাত্র কিছু সময়ের মধ্যে এত কান্ড হয়ে গেল।সেদিন থেকেই পুকুর পাড়ে বেড়া দিয়ে রাখা হয়, যাতে কোনো বাচ্চা একা একা পুকুরে যেতে না পারে।তবে আজ যারা যারা আমার পোস্ট পড়েছেন সবাইকে অনুরোধ করবো আপনারা শিশুদের নজরে রাখবেন।এখন আশেপাশে পুকুরগুলোতে অনেক পানি,আর শিশুরা কিন্তু পানির প্রতি আসক্ত বেশি।যেকোনো সময় যেকোনো দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।সবাই সচেতন থাকুন,শিশুদের রক্ষা করুন এটাই সবার উদ্দেশ্যে বলা।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণশৈশব স্মৃতি
ক্যামেরা.মডেলএম ১২
ফটোগ্রাফার@bristy1
লোকেশনফেনী

images (4).png

20211121_200134.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ছোটবেলার স্মৃতিগুলো কখনোই ভুলে যাওয়ার নয়।এইরকম ঘটনা আমার দাদা যখন ছোট ছিল তখন ওর সঙ্গেও ঘটেছিল।যদিও একটু ব্যতিক্রম ছিল।যাইহোক ভাগ্যিস আপনার ভাই বোতলগুলি ধরে ছিল নাহলে সে ডুবে গিয়ে অঘটন ঘটতে পারতো।আপনার বলা খেলাগুলো আমরাও ছোটবেলায় খেলতাম,ধন্যবাদ আপনাকে।

জি আপু ঠিক বলেছেন।ও বোতলগুলো ধরে না রাখলে হয়তো ডুবে যেত।

আপনার নানুর বাড়িতে গিয়ে ছোট ভাইয়ের পানিতে পড়ার গল্পটি পড়ে আমার জীবনের গল্প ভেসে উঠলো। আমিও ছোট্ট বেলায় পানিতে ডুবে গিয়েছিলাম আপনার মতই পাশের বাড়ির আপু দেখে আমাকে উদ্ধার করেছিল। আসলে ছোট্টবেলায় নানুর বাড়িতে যাওয়ার অনুভূতিগুলো এখন খুবই মিস করি। এখন মন চায় না কোথাও যেতে কিন্তু সেই দিনগুলো আর কখনো ফিরে পাবো না শুধুই স্মৃতি।

Posted using SteemPro Mobile

আমার ভাইকে আমার নানু পুকুর থেকে তুলেছিল ভাইয়া,পাশের বাড়ির আপু নয়।ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য।

আপু আপনার ছোটবেলার স্মৃতি মায়ের গল্পটি পড়ে সত্যি আমার নিজেরও একটি গল্পের কথা মনে পড়ে গেল। আসলে আমিও ছোটবেলায় পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুবে গিয়েছিলাম সেই সময় আমার একজন কাকা আমাকে বাঁচিয়ে ছিল। আপনার নানুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ছোট ভাই পানিতে পড়ে গিয়েছিল জানতে পারলাম। আপনিও দেখছি ছোটবেলায় পানির মধ্যে ডুবে গিয়েছিলেন পাশের বাড়ির আপু আপনাকে উদ্ধার করেছিল জেনে বেশ ভালো লাগলো আপ। আসলে ছোটবেলার এই রকম গল্পগুলো যদি এখন মনে পড়ে বেশ ভালই লাগে আপু। ধন্যবাদ গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভাইয়া ওটা আমার ছোট ভাই ছিল, আমি না।আর ওকে আমার নানু পুকুর থেকে তুলেছিল।