♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
আজ আপনাদের মাঝে আমার শৈশবস্মৃতির একটা মুহূর্ত শেয়ার করব।গত পরশুদিন একটা মুহূর্ত শেয়ার করেছিলাম আপনাদের মাঝে।আসলে সেই পর্বের বাকি অংশটা আজকে শেয়ার করব।কারণ পর্ব আকারে বেশি দেরী হয়ে গেলে পোস্ট করতে যেমন মনে থাকে না ঠিক তেমনি অনেকের কাছে আকর্ষণও থাকে না। যাইহোক শুরু করি পরবর্তী অংশ।
সেদিন বিকেল বেলা খেলতে চলে গেলাম মামা সহ।তখন অবশ্য সকাল, বিকেল বা দুপুর কোনো সময়ই ছিল না খেলার বাঁধা হওয়ার।যখন ইচ্ছে তখন চলে যেতাম। কারণ ঐ যে স্কুল নেই,পড়ালেখা নেই, প্যারা নেই। তা যাইহোক আমার সাথে আমার মেঝো মামা,খালামনিরা ছিল। আর আশেপাশের বাড়ির কিছু বাচ্চারা ছিল আমাদের বয়সী বা আমাদের বড়। তবে বড় ছোট ব্যাপার না।বড়দের থেকে ছোটরাই বিচ্ছু ছিল,হাহাহা।
আমাদের বিকেলের খেলা ছিল গোল্লাছুট, ক্রিকেট, ফুটবল,কাঁনামাছি,লুকোচুরি আরও কত কি। আর রাতের খেলা ছিল লুডু, কেরাম, চোর-পুলিশ খেলা।এসব খেলায় মেতে ছিলাম সারাদিন রাত। যাইহোক কথা বলতে বলতে অন্যদিকে চলে যাই, কত কথাই না মনে পড়ে।এরপর বিকেলে চলে যাই সেদিন গোল্লাছুট খেলতে।আমার নানার বাড়ির সামনে একটা বিশাল জমি ছিল। শীতের সময়ে সেই জমি শুকনো থাকতো আর সেটাকে সবাই মিলে একদম মসৃণ মাঠ বানিয়ে ফেলত।
আমরা তো রীতিমত হাজির হয়ে যাই,কোনোরকমে ভাত খেয়ে।গিয়ে দেখি বাকিরা এখন মায়েদের পাশে থেকে চুপিসারে উঠে আসতে পারে নি। তাই আমরা অপেক্ষা করলাম কিছুক্ষণ,কারণ খেলা শুরু করে দিলে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাব আর তাদের সাথে খেলতে পারবো না। তারা এলেই দল ভাগ করে খেলা শুরু করলাম।এদিকে আমার ভাগ্য ভালো যে আমি মামার দলে পড়েছি।না হয় মামা আমায় হারিয়ে দেয়। আর আমি মামার দলে থাকলে অলওয়েজ জিতে যেতাম।
অন্যদিকেও বেশ ভালো ভালো খেলোয়াড় ছিল সেদিন। যাক দল বেঁধে ভালোই খেলা চলছে।এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামবে তখনই সবার মায়েরা এসে হাজির।আমার তো নানুও চলে আসে ডাকাডাকি করে।কে শুনে কার কথা,খেলা যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে ততক্ষণ খেলবোই।যতই বকা খাই,দৌড়ানি খাওয়ার আগে কেউই মাঠ ছেড়ে পালাই না।তবে মজার বিষয় হলো আম্মু নানু সবাই-ই কিন্তু আমাদের খেলা এনজয় করত।যদিও বকা দিত সন্ধ্যা হয়ে যেত তাই।
অবশেষে প্রায় মাগরিবের আযান দিবে,খেলাও প্রায় শেষ ২দলে মাত্র তিনজন আছে।আমাদের দলে আমি আর মামা, অন্যদলের লিডার।লিডার হেরে গেলে খেলা শেষ।আর আমি তখন ক্রস করছি লিডারকে,এদিকে মামাও ক্রস করবে। তাই দুজনে এদিক সেদিক দৌড়াচ্ছি।দৌড়াতে গিয়ে এক পর্যায়ে আমি খেলার মাঠের আউটে লাফ দিয়ে দিলাম,সেদিকে মামাও পার হয়ে গেল।আমরা জিতেও গেলাম,কিন্তু ঘটনা ঘটল খেলা শেষ হতেই।
পায়ে বিধলো খেজুর কাটা,আহ!কি যন্ত্রণা। আমি আর সেখান থেকে নড়তে পারছি না কান্না করছি খুব।এদিকে সবাই ভেবেছে আমার পা কাটা গেছে। আর আমিতো কান্না করেই যাচ্ছি, এদিকে অন্ধকার হতে চললো। তখন মামা কোলে করে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে।তখন পা দিয়ে রক্ত যাচ্ছে,খালি পায়ে খেলেছিলাম। এরপর কোনোমতে লতাপাতা দিয়ে রক্ত বন্ধ করে পা পরিষ্কার করলো। এবার হলো কাটা খোলার পালা।কাটা বিঁধলো পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে। আর আমি তো ব্যথায়ই কান্না করতেছিলাম,কিভাবে আবার কাটা তুলবে।
এই নিয়ে বিশাল কান্ড,কান্নাকাটি। কেউ পারে না কাটা খুলতে। এদিকে আবার সবাই পরামর্শ করছে যে আমি ঘুমালে তখন খুলবে।তখন আমি শুনে গেলাম,আর বললাম আজ আমি ঘুমাবোই না।পরে তো ব্যাথা আরও বাড়তে লাগলো,তখন অনেক কষ্টে সবাই মিলে কিভাবে যেন কাটাটা খুলেছে। যেন কলিজা ছিড়ে যাচ্ছিলো।তারপর তো ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিল,মাঝে মাঝে ওয়াশ করে ড্রেসিং করে দিত।আহা কটা দিন খেলতে পারিনি বাইরে। কি যে একটা দুঃখের সময় গিয়েছিল।কিন্তু ঘরের খেলা বাদ রাখিনি,হাহাহা।সেই স্মৃতি মনে পড়ে এখনো ইচ্ছে করে ফিরে যাই সেই দিনগুলোতে।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা শুনে অনেক খারাপ লাগলো আপনার পায়ে খেজুরের কাটা ফুটেছিল 😑। আসলে এর আগে আমার একবার এমন হয়েছিল খুবই যন্ত্রনা লাগে। আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো সত্যি ই অনেক মজার এবং সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপু আপনাকে আপনার শৈশবের অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খেজুরের কাঁটা খুবই ভয়ঙ্কর জিনিস। যার পায়ে হিনেছে সেই জানে এর ব্যথা। এমন একটা ঘটনা আমার ভাইয়ের সাথে ঘটেছিল পুকুর থেকে। সেজে কত কষ্ট পেয়েছিল তা একমাত্র আমি জানি। ঠিক তেমনি একটা বিষয় আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পায়ে খেজুরের কাঁটা ফুটলে যে কি পরিমান কষ্ট হয় আপু, এটা আমি নিজেও দেখেছি। ছোটবেলায় খেলা করতে গিয়ে একবার আমার পায়ে খেজুরের কাঁটা ঢুকে গেছিল এবং ভেতরেই ভেঙ্গে থেকে গেছিল। এরপর তো রীতিমতো আমাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। আপু, আপনার ছোটবেলার সাথে আমার ছোটবেলার কিন্তু অনেকটাই মিল রয়েছে। আমরাও বিকেল বেলা এরকম বন্ধুবান্ধবরা দল ভাগ করে বিভিন্ন খেলাধুলা করতাম। আপনার পোস্ট পড়ছিলাম আর সেই কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছোটবেলা সবাই খেলাধুলা করতে অনেক পছন্দ করে। আপনার মত আমরাও নানার বাড়িতে গেলে একসাথে দলবেঁধে খেলা করতাম। কিছু কিছু খেলা আছে জিতলে এতই ভালো লাগে বলার বাইরে। তবে খাজুরের কাঁটা খুব মারাত্মক। যার পায়ে একবার লাগে খুব যন্ত্রণা করে। আর খাজুরের কাঁটা গুলো অনেক বড় তাই কষ্ট বেশি হয়। আমার পায়ও কয়েকবার খেজুরের কাঁটা লেগেছিল। তবে আপনি খুব সুন্দর মজার এবং দুঃখের মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুব সুন্দর করে পোস্টটি করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার ছেলেবেলার নানার বাড়ির স্মৃতি গুলো পড়ছিলাম আর আমিও নিজে সেই ছেলেবেলায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা ও নানু বাড়ি গেলে দল বেঁধে খেলতাম।খুবই আনন্দময় দিনগুলো ছিল।তবে আমার পায়ে কখনো খেজুরের কাঁটা বিঁধেনি।আপনার পায়ে কাঁটা বিঁধেছিল। তবে তো খুব কষ্ট ই পেয়েছিলেন।অনেক কষ্ট করে কাঁটাটা বের করেছিল সবাই।আসলে আপু সেই দিনগুলো কষ্টের হলেও আজ ও স্মৃতিতে কিন্তু ভালো লাগা ই কাজ করে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit