তেঁতুলতলায় ভুত।গল্প-১

in hive-129948 •  2 years ago 

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমার বাংলা ব্লগ এর প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে বেশ আনন্দ নিয়েই এই পোস্টটি শেয়ার করতে যাচ্ছি।আশা করি ভালো লাগবে।

আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তবভিত্তিক ভৌতিক গল্প শেয়ার করার জন্য এসেছি। এই গল্পটি বাস্তবভিত্তিক বলার কারণ হলো এটি আমার দাদার এবং আব্বুর সাথে ঘটেছিল। যে কাহিনীটা আমি আমার আব্বুর কাছে শুনেছিলাম। যদিও খুব ছোটবেলায় এই কথাটা শুনেছিলাম। তারপর আবার ফুফুদের কাছেও শুনেছিলাম।

halloween-4582988_1280.jpg

Source

বর্ষাকালের সময়, সেদিন আমার দাদা আব্বু সহ বিকেল বেলা বাজারের দিকে গিয়েছিল কিছু বাজার করার জন্য। আব্বুর বয়স তখন ১২/১৪ হবে। সেই দিনটা সে সময়কার হাটের সময় ছিল। কারণ তখন সপ্তাহের একদিন বা দুদিন হাট বসত। যেদিন তাজা মাছ, মাংস, কাঁচা সবজি উঠতো বাজারে। আর সেদিন বিভিন্ন রকম বাজার করার জন্য আমার দাদা বিকেলে গিয়েছিল। কারণ সে সময় বিকেলের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই বাজার বসতো। যেহেতু বিভিন্ন রকম বাজার করবে সেই হিসেবে একটা বাজারের ব্যাগ হাতে করে নিয়ে গিয়েছিল।

সেদিন আমার আব্বুও গিয়েছিল দাদার সাথে। তারপর আমার দাদা এবং আব্বু মিলে কিছু বাজার সদাই করলো। তার পাশাপাশি কিছু মাছ নিয়ে নিল কারণ সেদিন মাছগুলো তাজা পেয়েছিল। ছোট ছোট কিছু মাছ এর সাথে একটা বড় মাছও নিয়েছিল। যাইহোক বাজার করতে করতে অনেকটা সন্ধ্যা হয়ে এলো এবং বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত নেমে এলো। আর সেই সময় তো রাস্তায় আলো ছিল না। কারো হাতে মোবাইল ছিল না। রাতের বেলা হয়তোবা চাঁদের আলো নয়তোবা এমনি অন্ধকারে চলে আসতে হতো। কেউ আবার তখন টর্চ লাইট ব্যবহার করত।

দুর্ভাগ্যবশত আব্বু এবং দাদা কোন কিছুই নিয়ে যায়নি, তাই রাতের অন্ধকারে হেঁটে হেঁটে আসছিল। যদিও কিছুটা চাঁদের আলো দেখা যাচ্ছিল সেই আলোতে তারা পথ এগোচ্ছে। বাড়ির কাছাকাছি প্রায় চলে এসেছে কিন্তু সেখানেই ঘটলো অঘটন। বাড়ি থেকে বাজারের পথে একটা কবরস্থানের পাশে বিশাল আকারের একটা তেঁতুল গাছ ছিল। যদিও সে তেঁতুল গাছ এখন নেই। তখনকার কথিত কথা সেখানে নাকি সন্ধ্যার পর কোন আত্মা দেখা যেত গাছের মধ্যে। সেই গাছের নিচ দিয়ে যে হেটে আসতো সে খুব ভয়ে আসতে। আর রাত্রিবেলা হলে তো আরো বেশি ভয়ঙ্কর লাগে।

সেদিন আমার আব্বু আর দাদা আসছিল এবং হঠাৎ করে দাদা হাটতে হাটতে বাড়িতে চলে আসে আর আব্বু একটু পিছনের দিকে পড়ে যায়। মাছের ব্যাগটাই আব্বুর হাতে ছিল। তখন সেই তেতুল গাছটার নিচ থেকেই একটি বড় কালো বিড়াল আব্বুর পিছন পিছন হাঁটতে শুরু করল এবং পায়ে পায়ে লাগছে। বিড়ালটি বারবার ব্যাগটাকে টানার চেষ্টা করছে। আর বারবার আব্বু পা দিয়ে তাকে সরানোর চেষ্টা করছে। অনেকবার তাকে সরানোর পর যখন সে যাচ্ছে না তখন এক প্রকার ভয় পেয়ে আব্বু মাছের ব্যাগটা সেখানে রেখেই দৌড় দেয় বাড়ির দিকে।

তারপর আমার দাদা সহ একটি হারিকেন নিয়ে আবার সেই জায়গায় যায়।ভেবেছিল ততক্ষণে মাছগুলো বিড়ালে খেয়ে ফেলেছে।কিন্তু তখন দেখে মাছের ব্যাগের মধ্যে ছোট মাছগুলো আছে কিন্তু বড় মাছটা সেই তেতুল তলার নিচেই নিয়ে গিয়েছে।যখন মাছটা হাতে নিল তখন সেই মাছটা পূর্বের তুলনায় অনেক গুণ বেশী ভারী হয়ে গিয়েছিল।২ জনে মিলেও তুলতে পারছিলনা।পরে কোনোরকমে সেই তেঁতুলগাছটা পার হতেই আগের মত মাছ হালকা হয়ে গেল। আমার দাদা তো খুব সাহসী ছিলেন, সেই হিসেবে তিনি আব্বু সহ হারিকেন নিয়েই তেঁতুল গাছ তলা থেকে বড় মাছটা নিয়ে এবং ছোট মাছগুলো নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। তারপর থেকে তারা চেষ্টা করতেন বিকেল বেলার মধ্যেই বাজার করে ফিরে আসতে। যাই হোক সেই রাতের ঘটনাটা এখনো শুনি মাঝে মাঝে।যেহেতু স্থান, কাল ভেদে সেই সময়টা খুব ভয়ঙ্কর ছিল।আমি যতবারই শুনেছি ততবারই গা শিউরে উঠে।

যাইহোক এই ভুতুড়ে গল্পটায় সেই তেঁতুলগাছটায় থাকা ভুত বা আত্মা যেটার কথা বলা হতো সেটা আসলে কতটা বাস্তব তা আমার জানা নেই।তবে এই নিয়ে অনেক কাহিনি শুনেছি, সবগুলোই শেয়ার করার চেষ্টা করব।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️
ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণভুতুড়ে গল্প
ক্যামেরা.মডেলM12
ফটোগ্রাফার@bristy1

images (4).png

20211121_200134.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই গল্পটা একদিন আমিও শুনেছিলাম নানুর কাছে।সেই গাছটা নাকি বিশাল বড়,যদিও আমি কখনো দেখি নি।হয়তোবা আমার জন্মের আগেই কেটে ফেলেছিল।তবে এই গাছ নিয়ে নাকি অনেক ঘটনা আছে,এক এক করে সব গল্পে জানা হবে এবার।যাইহোক খুব ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে।

আসলে সেটাই হবে হয়তোবা আপনার জন্মের আগেই কেটে ফেলেছিল।

আমিও সেটাই ভাবছি হয়তোবা আমার জন্মের আগেই কেটে ফেলেছিল।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

যথা নিয়মে সব সময় সাপোর্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

খুব ভয়ংকর ঘটনা পড়লাম আপু। একে ত রাত তার উপর কবর স্থানের পাশে তেতুল গাছ আসলেই ভয়ের বেপার। আপনার আব্বু ছোট ছিল তাই হয়ত ভয়ে ব্যাগ রেখেই চলে এসেছে কিন্তু আপনার দাদা সাহসী ছিলেন বলে আবার গিয়ে মাছের ব্যাগ নিয়ে এসেছেন। তবে মাছের ওজন কিভাবে বেড়ে গিয়েছেন সেটাই খটকা বাঁধছে মনে। ধন্যবাদ আপু।

ধন্যবাদ ভাইয়া খুব চমৎকার একটা মন্তব্য করার জন্য,, ভালো থাকবেন সর্বদায় এই কামনা করি।।

এই একই গল্পটা আমি আমার ঠাকুর মা এবং ঠাকুরদার মুখে শুনেছি। এটা আসলেই একটা গল্প, এরকম ঘটনা কারো সাথেই ঘটেনি। আমি যখন এই গল্প শুনেছিলাম তখন আমার বয়স সাত কিংবা আট।

বাজার থেকে মাছ কিনে নিয়ে এসেছে এবং অন্ধকার রাস্তা দিয়ে আসছে তারপর একটা বিড়াল পিছু নিয়েছে এইসব আর কি। এই গল্পটা একসময় আমার মুখস্ত ছিল, তবে অনেকদিন পর গল্পটা শুনলাম। এই গল্পের আরো কিছু অংশ রয়েছে যেটা আপনি শেয়ার করেন নি।

আসলে এই ঘটনাটি আমার আব্বু এবং দাদার সাথে ঘটেছিল।আর আমার আব্বুর মুখে শুনেছিলাম তাহলে এটি যে একটা গল্প হতে পারে এটা আমার সত্যি জানা ছিল না। আর এটি আসলেই কিন্তু বাস্তবিক ঘটনা।

ঘটনাটা বেশ শিহরণ জাগানো ছিল। এবং এটা যেহুতু আপনার বাবা এবং দাদার সঙ্গে ঘটেছে সেজন্য একটু বেশি কৌতূহলী ছিলাম। আগের সময়টা এইরকমই ছিল। যাইহোক ঘটনাটা বেষ দারুণভাবে উপস্থাপন করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।।

অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য ভাইয়া ভালো থাকবেন।।