♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
source
আজ আপনাদের সাথে আমি একটি ঘটনা শেয়ার করব যেটা আমার জন্য অনেক বেশি মর্মান্তিক ছিল। শুধুমাত্র যে আমার জন্য তা নয় এটা আমার ফ্যামিলির জন্য অনেক বেশি দুঃখজনক ছিল। এই ঘটনাটা ঘটে আমি যখন ক্লাস থ্রিতে ছিলাম। আমার আম্মুর তখন পিত্তে পাথর হয়েছিল। এটা তখন অপারেশন করতেই হবে এমন অবস্থা। ছোটবেলায় আমি বেশিরভাগ সময় নানুর বাড়িতেই থাকতাম।
কারণ আমি যেহেতু পরিবারের একমাত্র নাতনি ছিলাম এবং আমার মামা আন্টি সবাই কিন্তু ছোট ছিল। তাদের কারোরই বিয়ের বয়স হয়নি তখন। সবাই আমার জন্যই অপেক্ষা করত কখন আমি সেখানে যাব। এমন হতো যে আমার স্কুলের সময় আমার মেজ মামা আমাকে সাইকেলে করে স্কুলে দিয়ে যেত আবার সেখান থেকে নিয়ে যেত। পথ কিন্তু অনেক দূরের ছিল তবুও তারা চাইতো আমরা সেখানেই থাকি।
এদিকে আমাদের বাড়িতে আমি, আম্মু, দাদু আর আব্বু ছাড়া কেউই নেই। সবাই কিন্তু আলাদাই থাকতো তখন। যেহেতু আমার আম্মু অসুস্থ সেই হিসেবে আমার ফুফুর কাছেই দাদু ছিল। আম্মু যেহেতু অসুস্থ বেশি সেই হিসেবে দাদুও চেয়েছিল আম্মু আমার নানুর বাড়িতে থাকুক এবং আমিও নানুদের কাছে থাকি। কারণ এদিকে দাদু অসুস্থ ছিল। দাদু যে আমাকে দেখভাল করবে বা আম্মুকে দেখভাল করবে এমন অবস্থা ওনার ছিল না। উনি নিজেই ছিলেন অনেক অসুস্থ,বিচানায় থাকতেন সবসময়। আম্মুর তো অপারেশন করাতেই হবে। সেজন্য দাদুকে ফুফুর বাড়িতে রেখে আমরা নানুর বাড়িতে চলে গেলাম।
নানুর বাড়িতে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম যাওয়ার প্রোগ্রাম হল। কারণ এদিকে আমার আম্মুর অপারেশনের ডেট কিছুটা পেছানো হয়েছে টেস্ট করাবে বলে। আর তার আগেই আমার আম্মুর চাচাতো বোনের বিয়ে ছিল। বিয়েতে কেউই যাবে না বলেছিল কিন্তু ওনার বাবা মা না থাকার কারণে কেউ না কেউ যেতেই হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমার বড় মামা তো চট্টগ্রাম থাকে। তখন বলল আমার নানুকে যেতে। কিন্তু নানু যাবেনা, এখন আমার মেঝো আন্টি যাবে। কিন্তু মেজো আন্টি একা ও যাবে না তাই ভাবলো আমাকে নিয়ে যাবে। তখন আমি তো ছোট, আমিও বিয়ের কথা শুনে চলে গেলাম। কারণ আমার আম্মুর অপারেশনের ডেট ছিল কিছুদিন পরে।
যাই হোক আমার কানে তখন স্বর্ণের কানের দুল ছিল। কানের মধ্যে স্বর্ণের কানের দুল থাকা সত্ত্বেও আমি চাইতাম পাথরের কানের দুল গুলো পড়তে।কারণ আমার কাছে স্বর্ণ পরতে ভালো লাগতো না। আম্মু বলেছিল সেগুলো লাগিয়ে যেতে কিন্তু আমি শুনিনি। যাইহোক আম্মু তখন আমার কানের দুলগুলো খুলে নিলে এবং পাথরের গুলো লাগিয়ে দিল। আম্মুর ব্যাগেই ছিল অপারেশনের সব টাকা। তখন আম্মু আমার কানের দুল গুলো সেখানে রেখেছিল। আর আম্মুর আগের কানের দুল এবং চেইন সেখানে রেখেছিল। যেহেতু আমরা তৎক্ষণাৎ বের হয়ে যাচ্ছি সেই হিসেবে আম্মু ব্যাগটা তার রুমের একটা জায়গায় রেখেছে। আম্মুর আর মাথায় নেই এই ব্যাগটা এখনই আলমারিতে রাখা উচিত ছিল।
টাকা এবং গয়না সহ এই ব্যাগ রুমের মধ্যেই রেখেছে। তখন আমার নানুর বাড়িতে অনেক লোক কাজ করত। ধানের সময় ছিল, প্রচুর ধান হতো। নানা নানু একা এগুলো করত না, লোকজন দিয়েই করাতো। সেই হিসেবে কিছু মহিলা কাজ করতো এবং তাদের ছেলেমেয়েরা এখানে কাজ করতো। পাশের বাড়ির একজন মহিলা তার ছেলে সহ কাজ করতো। সবাই তখন সেখানে উপস্থিত ছিল। আর এটাই যে আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে সেটা কেউই বুঝেনি।
যাইহোক আমরা তো বিয়েতে চলে গেলাম। এদিকে সবাই সবার মত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরাও বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে বাড়িতে ফিরে এলাম। এর মধ্যে কিন্তু কারোই খেয়াল নেই সেই ব্যাগের কথা। যেহেতু ঘরের মধ্যে নিজেরাই থাকে সে ক্ষেত্রে এখানে কারো প্রতি সন্দেহ রেখে ব্যাগটা রাখতেই হবে এরকম কোন মন মানসিকতা ছিল না আম্মুর।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | শৈশবের দুঃখজনক ঘটনা |
ক্যামেরা.মডেল | জে৫ প্রাইম |
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে কখন কোন বিপদ এসে আমাদের সামনে হাজির হয় তা আমরা কখনোই বলতে পারিনা।যেহেতু এই ব্যাগ আপনার আম্মুর অপারেশনের টাকা এবং স্বর্ণের গহনা ছিল ।তাই এই ব্যাগ টি আলমারিতে তুলে রাখা আমি মনে করি ভাল ছিল। যাইহোক আপনার আম্মু হযতো সব নিজেদের মানুষ মনে করে তুলে রাখার দরকার মনে করেনি। পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit