দেশি কচুর ডাঁটা দিয়ে শুঁটকি মাছের টক চচ্চড়ি রেসিপি shy-fox 10% | abb-school 5%

in hive-129948 •  2 years ago 

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব। আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমি পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।

উত্তরবঙ্গের সবার প্রিয় একটি খাবারের নাম হচ্ছে শুঁটকি মাছ এমন কেউ নেই যে এটা পছন্দ করে না কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার হাসবেন্ড খেতে পারে না এমনকি এর গন্ধও সহ্য করতে পারে না।আমার হাসবেন্ড যখন চাকরিতে প্রথম যোগদান করে তার পোস্টিং ছিল রাজশাহীতে ওখানে গিয়ে এক বড় দাদার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক হয়। সেই দাদা তার সবসময়ই ভালো মন্দ খোঁজখবর রাখতো দুজন অবসর সময়ে একসাথে সময় কাটাতো এভাবেই তাদের ভালো সম্পর্ক হয়। দাদা একদিন তাকে প্রস্তাব দিলো যে তার একটা ছোট বোন আছে যদি চায় তাহলে সে দেখতে পারে তখন আমার হাসবেন্ড এর আর বোঝার বাকি রইল না যে সে কি বলতে চাচ্ছে। প্রায়ই তাকে তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলতো একদিন সে কথা দিলো যে দাদার বাড়িতে ঘুরতে যাবে। যেমন কাজ তেমন কথা একদিন সকালে দাদার সাথে সে বেড়িয়ে পড়লো তার বাড়ির উদ্দেশ্যে একটা সময় গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে গেলো,পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর বেলা হয়ে গেছে তাই অন্য কিছু খেতে না দিয়ে একবারে ভাত খাওয়ার জন্য বলেছে হাত-মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে বসেছে খাবার পরিবেশনের দ্বায়িত্ব পালন করছেন দাদার ছোট বোন। অনেক কিছুই আয়োজন ছিল তারমধ্যে কচুর শাক ছিল যা আমার হাসবেন্ড এর খুবই প্রিয় একটা খাবার তাই সে ভাবলো প্রথমে প্রিয় খাবারটি দিয়েই শুরু করা যাক প্রথম একবার মুখে দেওয়ার পর একটু কেমন কেমন জানি মনে হয়েছিল আবারও মুখে দিলো খারাপ লাগাটা আরও দ্বিগুণ হয়ে গেলো মুখে দিয়ে গিলতেও পারছে না ফেলতেও পারছেনা এমন অবস্থা। দাদা হঠাৎ করেই বলে উঠলো যে তোমার পছন্দের কচু শাক দিয়ে শুঁটকি মাছ রান্না করা হয়েছে, এতক্ষণ যাইহোক এরকম ছিল শুঁটকি মাছের নাম শোনার পর সাথে সাথেই অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেলো এক পর্যায়ে বমি করে দিয়েছে তারপর আর খাওয়া হলো না তার। আর দাদার বোনের কথা নাই-বা বললাম। ওখানে গিয়ে ওর এমন অবস্থা হয়েছিল যে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি এরকম অবস্থা।

আজকে কচু দিয়ে শুঁটকি মাছের চচ্চড়ি রান্না করতে গিয়ে সেই গল্পটা মনে পড়ে গেলো আর মনে মনে অনেক হাসলাম এটা ভেবে যে ভাগ্যিস শুঁটকি মাছ খেতে দিয়ছিল বলেই সে আজ আমার হাসবেন্ড। হা হা হা হা হাহাহা। আমার হাসবেন্ড বাসায় থাকাকালীন আমি কখনো শুঁটকি মাছ রান্না করি না।

আমি যেভাবে দেশি কচুর ডাঁটা দিয়ে শুঁটকি মাছের চচ্চড়ি রান্না করেছি সেই পদ্ধতি টি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
IMG_20220730_140933.jpg

উপকরণ
শুঁটকি মাছ
কচুর ডাঁটা
পেঁয়াজ
রসুন
কাঁচামরিচ
আদা বাঁটা
জিরাগুঁড়া
হলুদ গুঁড়া
লবন
সয়াবিন তেল
সামান্য তেঁতুল

photoCollageMaker_20220730_140838010.jpg

ধাপ-১

কচু শাক থেকে ডাঁটা গুলো আলাদা করে৷ একটু লম্বা লম্বা করে কেটে নিলাম।
photoCollageMaker_20220730_190924453.jpg

ধাপ-২

শুঁটকি মাছ গুলো একটা বাটিতে নিয়ে গরম জল দিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখেছি তারপর খুব ভালো করে কয়েকবার জল পাল্টিয়ে ধুয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140228012.jpg

ধাপ-৩

চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি তার মধ্যে শুঁটকি মাছ দিয়ে একটু লবন হলুদ গুঁড়া দিয়ে ভেজে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140504714.jpg

ধাপ--৪

কড়াইয়ে আরও তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি রসুন কুঁচি কাঁচামরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140541517.jpg

ধাপ-৫

এবার লবন হলুদ গুঁড়া আদা বাঁটা জিরাগুঁড়া গুলো দিয়ে সামান্য জল দিয়ে মসলা গুলো ভালো করে কষিয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140610659.jpg

ধাপ-৬

মসলা কষানো হলে কেটে রাখা কচু গুলো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়েছি চুলার আঁচ কমিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140636676.jpg

ধাপ-৭

আস্তে আস্তে নেড়েচেড়ে কচু গুলো ভেজে নিয়েছি তারপর ভেজে রাখা শুঁটকি মাছ গুলো দিয়ে সামান্য পরিমানে জল দিয়েছি একটু জ্বাল দিয়েছি তারপর তেঁতুল জলে গুলিয়ে চচ্চড়িতে দিয়ে নেড়েচেড়ে হালকা আঁচে জ্বাল দিয়ে জল শুকিয়ে গেলে চুলার আঁচ বন্ধ করে দিয়েছি।
photoCollageMaker_20220730_140723004.jpg

শেষ ধাপ

চুলা থেকে নামিয়ে একটা বাটিতে তুলে নিয়েছি। লেবু কেটে পাশে সাজিয়ে নিয়েছি ভাত দিয়ে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত দেশি কচুর ডাঁটা দিয়ে শুঁটকি মাছের টক চচ্চড়ি।
IMG_20220730_140933.jpg

সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার রেসিপি তৈরি দেখে আমার জিভে জল চলে এসেছে দেশি কচুর ডাঁটা দিয়ে শুঁটকি মাছের টক চচ্চড়ি খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। তাও আপনি সাথে আবার লেবুর ছবিসহ দিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হবে। এত সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ছোট ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন আমরা সকলেই শুটকি মাছ খেতে পছন্দ করি। কচুর ডাটা দিয়ে শুটকি মাছের রেসিপি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। দেখে খেতে ইচ্ছে করছে আপু। অনেক লোভনীয় এবং জিভে জল চলে আসার মত একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আমাদের এলাকায় সবাই খুব পছন্দ করে এই ধরনের রেসিপি আমি মাঝে মাঝে রান্না করি তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

কচুর ডাটা দিয়ে শুটকি মাছ খেয়েছি। কিন্তু কখনো টক করে খাওয়া হয়নি। আজকে প্রথম এই রেসিপি দেখতে পেলাম। রেসিপিটা আমার কাছে খুব ইউনিক মনে হলো। এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে এত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

শুটকি মাছ আমার অনেক পছন্দের, আজকে আপনি কচুর ডাটা দিয়ে শুটকি মাছ চচ্চড়ি করেছেন আসলে দেখতে এত লোভনীয় লাগছে খাবারটা কি বলবো বোঝাই যাচ্ছে যে খেতে খুবই মজার হয়েছিল। রান্নার পদ্ধতি অনেক সহজ করে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

শুটকি মাছের তরকারি আমারও খুব ফেভারিট মাঝে মাঝেই খাওয়া হয় আপনার প্রস্তুত করার রেসিপিটি দেখে লোভ হচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছিল

আপনি বরাবরি আমাদের মাঝে অনেক মজাদার মজাদার রেসিপি শেয়ার করে থাকেন। আপনারা আজকের এই রেসিপিটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে আরও বেশি সুস্বাদু ছিল কারণ ছোট মাছের চচ্চড়ি আমার কাছে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে। রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনি দেশি কচুর ডাঁটা দিয়ে শুঁটকি মাছের টক চচ্চড়ি রেসিপি করেছেন। রেসিপিটি দেখে আমার খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপু আপনার কি কোনো সমস্যা হয়েছে? গত তিনদিন ধরে আপনি কোন পোস্ট করছেন না। যদি আপনার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন।