সরস্বতী পূজা। shy-fox 10%

সরস্বতী পূজা হিন্দু বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠেয় একটি অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। উত্তর ভারত, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, নেপাল ও বাংলাদেশে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। শ্রীপঞ্চমীর দিন অতি প্রত্যুষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছাত্রছাত্রীদের গৃহ ও সার্বজনীন পূজামণ্ডপে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি দিয়ে পড়ালেখা শুরু হয়।

প্রতিবার এই দিনে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া হয় কিন্তুু এবার এখানেই মেয়ের স্কুলের পূজায় যাওয়া হয়েছিলো।স্কুলের প্রতিটি সনাতন ধর্মাবলম্বী মেয়েদের কাছে চাঁদা তুলে পূজার আয়োজন করেন টিচাররা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল রায় আর পন্ডিত শিক্ষক তাপস দেবনাথ স্যার মিলে পূজার সব দায়িত্ব পালন করেন এবং মেয়েরা তাদের সাহায্য করেছে।

খুব সকালে গায়ে হলুদ মেখে স্নান করে মেয়েরা স্কুলে চলে যায়। সরস্বতী পূজার দিন জলে নিমপাতা তুলসীপাতা দেওয়া ও কাঁচা হলুদ মাখার কারন হলো, স্নানের জলে নিমপাতা ও তুলসী পাতা দিয়ে স্নান করা হয় তার তার কারন বলা হয়, এতে জলের শুদ্ধিকরণ ঘটে। এছাড়াও স্নান করার আগে মুখে এবং গায়ে নিম ও কাঁচা হলুদ বাটা মাখতে হয়। এতে আমাদের দেহের শুদ্ধিকরণ ঘটে এবং শরীরের কোনও রকম সংক্রমণ থেকেও এই মিশ্রণ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তাই সবাই কাঁচা হলুদ মেখে স্নান করে।

১১.৩০ মিনিটে পূজা শুরু হয়।পূজার ভোগ রান্না থেকে শুরু করে সব কাজ স্কুলের আয়া দিদি করেন এবং মেয়েরা তাকে সাহায্য করে।পূজার সামনে এতো বেশি ভিড় ছিলো তাই আমি আর সামনে গেলাম না মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকলাম মেয়েরা সামনেই ছিলো।সব মেয়েরা হাতে হাতে পূজার কাজ করে দিচ্ছিলো এক পর্যায়ে সকল নিয়মকানুন মেনে পূজা শেষ হয় তারপর শুরু হয় অঞ্জলি প্রথমে সব মেয়েরা অঞ্জলি দেয় যজ্ঞের ফোঁটা নেয় তারপর আমরা বড়রা অঞ্জলি দিয়ে যজ্ঞের ফোঁটা নিয়ে চরণামৃত নিয়ে উপোস ভঙ্গ করি।

ভোগের পাশাপাশি আরও খাবারের ব্যবস্থা করেছিলো খিচুড়ি,সবজি রান্না হচ্ছিলো টিচারা বার বার সবাইকে বলছিলো কেই খাবার নক খেয়ে যাবেন না সবাই খেয়ে তারপর যাবেন। রান্না হতে একটি দেরি হয়ে গেছিলো তাই আমরা সবাই অপেক্ষা করতে লাগলাম।

সবাই একটা ক্লাস রুমের মধ্যে গিয়ে বসি প্রথমে সব রকমের ফল হাতে হাতে দেয়,তারপর লুচি পায়েস দেয় এবং ভোগের খিচুড়ি হাতে দেয় সবাইকে।তারপর আমরা খেতে বসি ক্লাস টেনের মেয়েরা এবং কয়েকজন টিচার মিলে খাবার পরিবেশ করেন।খাবারে ছিলো ভুনা খিচুড়ি মিক্সড সবজি,টমেটো সালাদ।খিচুড়ি সবজি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো তাই বেশ ভালোই খেয়েছি। টিচারা বার বার জিজ্ঞেস করছিলো যে আপনাদের কারো আরও কিছু লাগবে কি না, প্রথম বারেই এত পরিমাণে দিয়েছিলো যে পরে আর নেওয়ার মতো অবস্থা ছিলো না।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে স্কুলের মেয়েরা সব নাচ, গান,খেলাধুলা করে তারপর সবাই যার যার মতো বাসায় চলে আসি আজকের দিনটি খুবই ভালো কেটেছে। সরস্বতী দেবীর কাছে আমাদের প্রার্থনা একটিই—‘মা গো, তুমি বিদ্যা দাও সকলেরে।🙏🙏

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।ধন্যবাদ সবাইকে।