হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগবাসী সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
নিজের যত্ন নিয়ে গতকাল আমি একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম আপনারা অনেকেই সেই পোস্টটি পড়েছেন এবং ভালো ভালো মন্তব্য করেছেন।আসলে অসুস্থ হয়ে হোক বা সুস্থ থাকার জন্য নিজেকে ফিট রাখাটা খুবই জরুরী।আমি ছোটবেলা থেকেই বেশ রোগা পাতলা ছিলাম।বিয়ের পর খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।বড় মেয়ে হওয়ার পরও বেশ ভালোই ছিলাম।ছোট মেয়ে হওয়ার পরপরই আমার রিমাটেড আর্থ্রাইটি শনাক্ত হয়।তখন আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ি তাই সংসারের কাজকর্ম করা হতো না।খাওয়া দাওয়া করা এবং সারাদিন শুয়ে বসেই দিন কাটাতাম।অতিরিক্ত শুয়ে-বসে থাকা এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়াতে দিনদিন ওজনটা খুবই বেড়ে গেলো।
খাবার খুব একটা বেশি না খেলেও ওষুধের প্রভাবে শরীর মোটা হয়ে গেছে।অনেকবার চেষ্টা করেছি ওজন নিয়ন্ত্রণ করার কিন্তু তারপরও কিছুতেই ওজন কমাতে পারছিলাম না।আর এখন তো সংসার সামলানো বাচ্চাদেরকে সময় দেওয়া সবমিলিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকি তাই নিজের দিকে নজর দেওয়ার মতো কোন সময় নেই।কিছুদিন আগে শরীর খারাপ হওয়ার কারণে ডাক্তারের কাছে যাই।ক'দিন ধরেই পায়ে খুব ব্যাথা প্রতিবারের ন্যায় ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন তারপর বললেন হাঁটুতে ইনজেকশন দিতে হবে।এই কথা শুনেই তো আমি ভয় পেয়ে গেলাম কিন্তু কিছুই করার নেই তার কারণ হলো ওষুধ খেয়ে কিছুতেই ব্যাথা কমছিলো না তাই ইনজেকশন দিতে হবে।
ইনজেকশন দেওয়ার জন্য আমাকে বেডে শোয়ানো হলো।তারপর পাঁচজন মিলে আমার পা চেপে ধরে রাখলেন,আমি তো ভয়ে সেই চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলাম।আমার হাজব্যান্ড পাশেই ছিলেন এবং আমার হাত ধরে আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।তারপর এক পর্যায়ে ডাক্তার সাহেব আমার হাঁটুতে ইনজেকশন পুষ করলেন মাঝে একটা দুই সাইডে দুইটা মোট তিনটা ইনজেকশন পুষ করেছেন।তারপর হাঁটুতে ব্যান্ডেজ করে দিলেন এবং বললেন বাসায় গিয়ে বরফের সেখ দিতে।ইনজেকশনের ব্যাথা কয়েকদিন ছিলো।
ইনজেকশনের ব্যাথার কষ্টে সিদ্ধান্ত নিলাম।না যে করেই হোক ওজন কমাতে হবে।আগে একজন পুষ্টিবিদ দেখিয়েছিলাম তার ডায়েট চার্ট আছে সেই চার্ট অনুযায়ী গত মাসের ২৮ তারিখ খাওয়া শুরু করলাম।গত মাসে ওজন মেপে সেটা লিখে রাখলাম। তারপর নিয়ম অনুযায়ী খাবার খেতে থাকলাম।২১ দিন পর আবার ওজন মাপলাম মেপে দেখি ২ কেজির বেশি ওজন কমেছে প্রায় আড়াই কেজি এটা আমার জন্য খুবই খুশির ব্যাপার।আগে অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সফল হতে পারিনি।কিন্তু এবার কিছুটা হলেও পেরেছি আর ইচ্ছা আছে এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাবো।
আমার একদিনের ডায়েটের মেনু নিচে দিলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আদা,লেবু শসা দিয়ে শরবত। কখনো কখনো সিয়াসিড গরম জল খেয়েছি সাথে লেবুর রস যোগ করে।
সকাল ৮ টায় একটা রুটি সবজি,শসা।
সকাল ১১ টায় এক কাপ ব্ল্যাক কফি,বাদাম সাথে একটা ডিম সিদ্ধ।
দুপুর ১-২ টার মধ্যে এক কাপ ভাত শাকসবজি, মাছ বা মাংস সালাদ লেবু।
বিকাল ৪-৫ টার মধ্যে টকদই,অল্প কিসমিস,কলা।সাথে গ্রিনটি।
সন্ধ্যা ৭ টায় রাতের খাবার একটা রুটি সবজি মাছ বা মাংস সালাদ।
এই ছিলো আমার একদিনের খাবারের মেনু।নিজের পছন্দসই একেক দিন একেক রকমের খাবার খেয়েছি।তবে পরিমাণ মতো।সাথে ছিলো দেশীয় ফল।
আগে আমি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দুধ চা রুটি অথবা মুড়ি দিয়ে দিনের শুরু করতাম এটা শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর ছিলো।দুপুরের খাবার খেতে খেতে সেই বিকেল হয়ে যেতো।রাতের খাবারের কোনো ঠিক ঠিকানা ছিলো না,মন চাইলে খেতাম না চাইলে খেতাম না এরকম একটা অবস্থা।ঘুমাতে যাওয়ার সময় তখন শরীরে অস্বস্তি বোধ হতো তাই রাতে ঠিকঠাক মতো ঘুমাতে পারতাম না।এখন সারাদিন রুটিন মাফিক টাইম মেইনটেইন করে খাবার খাচ্ছি।সারাদিনে পুষ্টিকর ও পরিমাণমতো খাবার খাচ্ছি এতে করে শরীর বেশ ভালোই লাগে এবং রাতের ঘুমও ভালো হচ্ছে বলা চলে।ওজন কমার কারণে শরীরটাও বেশ হালকা মনে হচ্ছে এবং ব্যাথা কিছুটা হলেও কম অনুভব হচ্ছে।সব মিলিয়ে বেশ ভালো একটা অনুভূতি কাজ করছে।আমি এতোদিনে বুঝতে পারলাম যে শরীরের প্রতি একটু হলেও যত্ন নেওয়া উচিত।এতোদিন ধরে যা করে আসছি সবই ভুল ছিলো।আরো আগে যদি নিজের প্রতি একটু যত্নশীল হতাম তাহলে হয়তোবা ওষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে জীবন কাটাতে হতো না অনেক সুখের জীবন যাপন করতে পারতাম।আমি আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সময় থাকতে নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া একান্তই জরুরী,তা না হলে আমার মত সারা জীবন পস্তাতে হবে।সবাই সচেতন হোন এবং নিজের যত্ন নিন এই প্রত্যাশায় আমি আমার আজকের ব্লগ টি এখানেই শেষ করছি।
সবাই ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন এবং নিজের যত্ন নিন।
আমাদের সকলের উচিত নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো দিদি। আপনি যে ডায়েট চার্ট ফলো করে প্রায় আড়াই কেজি মত ওজন কমিয়েছেন এবং এখন নিজেকে অনেকটা ভালো ফিল করছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু অল্প হলেও ওজন কমেছে এবং মানসিকভাবে অনেকটা আরাম বোধ করছি তাই হয়তো শরীরও ভালো লাগছে।আমাকে সাপোর্ট দেওয়ার মতো একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। ❤️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit