পর্ব -১| শ্যামনগরে প্যান্টের খোঁজে (10% @shy-fox এবং 5% @abb-school এর জন্য বরাদ্দ )

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার

871f3088-e784-4e45-8f1d-03763218a6df.jpg

তারপর বন্ধুরা খবর কি সবার? আমার স্টীমিটের পাওয়ার শেষ হয়ে গেছিল তাই এইকদিন আসতে পারিনি। পাওয়ার বাড়লে তারপর আসলাম। আপনারা সবাই ভালো আছেন তো?

এই কদিন আগে শ্যামনগরের থেকে ঘুরে আসলাম। ঘুরতে গেছিলাম অবশ্য বলা ভুল‚ প্যান্ট কিনতে গেছিলাম। আমার প্যান্টগুলো সব ছিঁড়ে গেছে। নতুন কিনতে হত। তা এমন সময় খবর পেলাম আমার এক চেনাজানা দাদা অনেক সস্তায় প্যান্ট বিক্রি করছে। সরাসরি দিল্লির কারখানা থেকে যোগাযোগ করে প্যান্ট তুলছে। যেহেতু মিডলম্যানদের খরচ লাগছে না তাই অনেক কম দামে বিক্রি করতে পারছে। তাছাড়া ও নিজের বাড়িতেই বিক্রি করছে। দোকান চালাতে গেলে সেসব খরচখরচা হয় সেগুলো ওর হচ্ছেনা। এছাড়া বড় বড় মলগুলোতে এসি খরচ - ডেকরেশন খরচ - অতজন কর্মচারীর খরচ সবই তুলতে হয় জিনিস বিক্রির লাভ থেকেই। সেইসব সমস্যা ওর নেই। তাই শপিং মলে যে দামে জিনিস পাওয়া যায় ও নাকি তার অর্ধেক দামে বিক্রি করছে শুনলাম। আর যারা কিনেছে তাদের কাছেও খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম যে জিনিসের কোয়ালিটি খারাপ না বরং ভালোই। তাই আমিও আর দেরী না করে যোগাযোগ করলাম দাদাটার সাথে আর চল্ব গেলাম শ্যামনগর।

ac97ce8a-d33e-4daf-9d3a-6d85618b3c26.jpg
দূর……

এই মূহুর্তে আমি যেখানে আছি সেখান থেকে শ্যামনগর একটু দূরেই বলা যায়। দুবার ট্রেন পালটাতে হয়। প্রথমে দমদম ক্যান্টনমেন্ট এ নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে কল্যানী বা নৈহাটী বা ওইদিকের কোনো লোকাল ধরে শ্যামনগরে নামতে হবে। তা কয়েকজনকে বললাম যে অমুক জায়গায় সস্তায় ভালো প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে। তারা কিনতে যাবে কিনা। দেখলাম দূরত্ব দেখে কেউই উৎসাহ দেখাল না। তাছাড়া ওরা সব আমারই বয়সী। আমি ব্যতিক্রমী হয়ে নিজের উপার্জনে পরিবার চালালেও ওরা এখনো বাবার হোটেলেই খায়। খরচখরচা সব ওদের বাবারাই মেটায়। ফলে টাকাপয়সা সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর সেই বোধটা এখনো আসেনি।

অগত্যা কি আর করা যাবে? যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একটা চলোরে। কবিগুরু আমার জন্মের আগেই আমায় পথ দেখিয়ে গেছেন। তার দেখানো পথ ধরেই একা একাই বেরিয়ে পড়লাম শ্যামনগরে।

88cf543d-2a71-4100-86d5-916132201935 (1).jpg
কত্ত প্যান্ট

প্রথমে নামলাম দমদম। সেখানে দেখলাম এরপর আছে নৈহাটি লোকাল। মিনিট কুড়ি মতো দাঁড়ানোর পর নৈহাটি লোকাল ঢুকল আর আমিও তাতে উঠে পড়লাম। ট্রেন একদম ফাঁকা। শিয়ালদহ থেকে যেসব ট্রেন ছাড়ে তারমধ্যে এই লাইনটা সম্ভবত রাজা উজির টাইপের। বনগাঁ লাইনে যেখানে প্রায় আধঘণ্টা পরপর ট্রেন পাওয়া যায়। লালগোলা আর ডানকুনি লাইনে তো এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় ট্রেনের জন্য। সেখানে এই লাইনে দেখলাম মাত্র ৪ মিনিট অন্তর দুখানা ট্রেন। শান্তিপুর লোকাল আর নৈহাটি লোকাল। শান্তিপুর লোকাল আগে বেরিয়ে যাওয়াতে ওখানেই সবাই উঠল। নৈহাটি লোকাল তাই একেবারে ফাঁকা ছিলো।

967c73b5-747e-45ae-856b-4828c587569d.jpg
ওইইই যে শ্যামনগরের দুই নাম্বার প্লাটফর্ম

ট্রেনে উঠলাম। পুরো বগিতে দেখলাম হাতে গোনা ২০ জন মত আছে। অঢেল জায়গা। আমার সিটের রো তে আমি একা মাত্র বসে। আরামে হাত পা ছড়িয়ে বসলাম। একসিটে আমি‚ এক সিটে আমার ব্যাগ আর একসিটে আমার পা তুলে ( জুতো খুলে নিয়েছিলাম ) আরামে বসে আছি। এমন সময় দুটো স্টেশন পর এক ভদ্রলোক এসে ঠিক আমার উল্টোদিকে বসল আর সমানে ফোনে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কথা বলে যেতে লাগল। আমার শান্তির হয়ে গেল দফারফা। অভাগা যেদিকে চায়‚ সাগর শুকিয়ে যায়। কি আর করা যাবে? ওর ওই চিল্লানি শোনার থেকে অনেক ভালো হল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া। তাই ওখান থেকে উঠে গিয়ে দাঁড়ালাম দরজার সামনে। হুহু করে হাওয়া ঢুকছে। সাথে অতিরিক্ত পাওনা হিসাবে বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য।

হ্যাঁ মাঝে একটু সমস্যা হয়েছিল। চোখে কি একটা এসে ঢুকেছিল। ধুলোবালিই হবে বোধহয়। এইজন্যই চশমা বা সানগ্লাস পড়লে চোখ অনেক নিরাপদ থাকে।

84246dde-be50-48f6-86e2-15c5a716f773.jpg
আমি আর বিক্রেতা দাদা। ওনার পার্মিশন নিতে ভুলে গেছি বলে মুখ ঢেকে দিলাম।

তা যাইহোক‚ ভালোয় ভালোয় পৌঁছে গেলাম শ্যামনগর স্টেশনে। ঠিকানা বলাই ছিল। সেটা নিয়ে চাপ ছিলো না। গুগল ম্যাপ খুলে দেখলাম মাত্র দেড় কিলোমিটার। হুর! এর প্রায় তিন চারগুন হাঁটা তো আমি সকালে হাঁটি মর্ণিং ওয়াকে। তো আর কি? লাগাও হাঁটা।

চলবে....

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমি ভেবেছিলাম দাদা এখন আর করে না জিন্সের বিজনেস। সেদিন দেখলাম ছবি দিয়েছে ফেসবুকে। অনেকেই বলেছে যে কোয়ালিটি ভালো আর দাম অনেকটাই কম। অনলাইনে ডেলিভারি করার ব্যবস্থা থাকলে দূরের অনেকেই নিতে পারত। দাদা কে একবার বলে দেখিস।

মেয়েদের ড্রেস সম্ভবত তোলেনি। দেখলাম না তো।

ভাই আপনাকে একটু নিয়মিত হতে হবে। এভাবে পাঁচ ছয় দিন পর পর পোস্ট করলেই আপনি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি থেকে সাপোর্ট পাবেন না। আশা করি আপনার নিয়মিত হবেন।

না না। এই আজই আবার পোস্ট দিলাম। এখন থেকে রেগুলার দেব।