এবার সে আগের থেকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে থাকে। তার মাথায় সবসময় একটা চিন্তা কাজ করতে থাকে। যতো দ্রুত সম্ভব পরিবারকে তার কাছে নিয়ে আসতে হবে। এভাবেই দিনকাল কেটে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে একদিন দুপুর বেলায় নসু মিয়ার মামা তাকে ফোন দিয়ে জানায় তার মেয়েটা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে তাড়াতাড়ি গ্রামে ফিরতে বলে। মেয়েটার অসুস্থতার কথা শুনে নসু মিয়া অস্থির হয়ে পড়ে। সে দ্রুত অটো রিক্সা তার মালিকের কাছে জমা দিয়ে বাড়িতে রওনা দেয়। যখন সে বাড়ির কাছে পৌঁছেছে তখন সে খেয়াল করে দেখে তার বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এতো মানুষ দেখে তার বুক অজানা আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে। নসু মিয়া দ্রুত পা চালিয়ে বাড়ির দিকে যেতে থাকে। বাড়িতে পৌঁছে যে দৃশ্যটা সে দেখে সেটা দেখার জন্য সে একেবারেই প্রস্তুত ছিলো না। বাড়িতে পৌঁছে দেখে তার উঠোনে তিনটে লাশ। তার স্ত্রী, তার এক ছেলে আর মেয়ের নিথর দেহ উঠোনে পড়ে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখে নসু মিয়া সাথে সাথে জ্ঞান হারায়। প্রতিবেশীরা তার জ্ঞান ফেরানোর পর সে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে থাকে। আর তার পরিবারের কি হয়েছিল সেটা সবার কাছে জানতে চায়? তখন নসু মিয়ার মামা তাকে জানায় তার বড়ো ছেলেটা দুপুরবেলায় কল পাড়ের দিকে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে বিদ্যুতের তার ছিড়ে তার গায়ের উপরে পড়ে। তখন ছেলেটাকে বাঁচাতে নসু মিয়ার মেয়ে এগিয়ে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সন্তান দুজনকে এই অবস্থায় দেখে নসু মিয়ার স্ত্রী এগিয়ে গেলে তিনজন ই মারা যায়।
লাশগুলোর গায়ে রীতিমতো আগুন ধরে গিয়েছিলো। পরে নসু মিয়ার এক প্রতিবেশী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে তারা লাইন বন্ধ করার পরে আগুন নিভে যায়। এই কথা শুনে নসু মিয়া হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে থাকে আর বলতে থাকে আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো?, আমার তো এই দুনিয়াতে আর তেমন কিছুই রইলো না। এর বিচার আমি কার কাছে দেবো? নসু মিয়া বিলাপ করতে থাকে আর কান্নাকাটি করতে থাকে। তার বেঁচে থাকার অবলম্বন বলতে রইলো তার বাবা আর ছোট ছেলেটি। সেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে নসু মিয়া কান্নাকাটি করতে থাকে। (শেষ)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
লেখাটি পড়ে খুবই কষ্ট লাগলো। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট নসু মিয়ার ছেলে,মেয়ে, স্ত্রী মৃত্যুবরণ করে। বিদ্যুৎস্পৃষ্টের বিষয়গুলো নিয়ে মানুষদেরকে সচেতন করা উচিত। তাদের অজ্ঞতার কারণে একজনের পাশাপাশি অন্য দুই জনও মারা গেল। সত্যি বিষয়টা খুবই দুঃখজন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit