আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমার পোস্টের টাইটেল টা একটু অন্যরকম হয়ে গেল তাই না। হ্যা আজকে এটাই আমার পোস্টের টাইটেল এবং বিষয়। বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় লেখক রফিক আজাদের কবিতার নাম এটা"ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিএ চিবিয়ে খাব"। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দেখা দেয় বেশ ভয়াবহ এক দূর্ভিক্ষ। দূর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ খাবারের অভাবেই মারা যায়। তখন লেখক রফিক আজাদ এই কবিতা টা লিখেন ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিএ চিবিয়ে খাব। একজন লেখকের কাজই এটা সমাজ বা রাষ্ট্রের ভুলগুলো জুলুমগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা তার প্রতিবাদ করা। যেমনটা রফিক আজাদ তার এই কবিতার মাধ্যমে করেছিলেন। বাংলাদেশ এখন বেশ উন্নত একটা দেশ। এটা বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় রয়েছে। তবে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও জনগণের জীবন যাপনের মানের খুব একটা উন্নয়ন হয়নি বলাই যায়। এখনো অনেকাংশে জনগণ নিরাপদ না। জোর যার মুলুক তার এইরকম একটা পরিস্থিতি চলছে।
২০২২ সালে অন্যতম একটা দেশ শ্রীলঙ্কা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে। রীতিমতো তারা বিদেশী ঝণে জর্জরিত। জনগণ ঠিকমতো বিদ্যুৎ, তেল গ্যাস এগুলো পাচ্ছে না। এছাড়া মুদ্রাস্রিতি হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। ডলারের বিপরীতে কমেছিল শ্রীলঙ্কান রুপির মান। শ্রীলঙ্কার পর ঠিক ঐ একই পথে এগিয়ে যাচ্ছে উপমহাদেশের আরেকটা দেশ পাকিস্তান। কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন নিউজে স্যোসাল মিডিয়ায় দেখছি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। ডলারের বিপরীতে পাল্লা দিয়ে কমেছে পাকিস্তানি রুপীর মান। তারাও একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমনটা হয়তো খুব শীঘ্রই দেখা যাবে যে পাকিস্তানও নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে দিবে। তবে এরপর কী বাংলাদেশ??
শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের এমন অবস্থা দেখে অনেকেই বলছে তাহলে এরপর কী বাংলাদেশ। এটা বলার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গতবছর জুলাই-আগষ্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ এসে দাঁড়িয়েছিল মাএ ৩১ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশে জ্বালানি ঘাটতি থাকায় সমস্ত বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয় লোডশেডিং। তখন বেশ করুন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে বিদ্যুৎ ঘাটতি লোডশেডিং এর সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিন্তু এই বিগত কয় মাসে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। চাউল, তেল এগুলোর দাম তো আগে থেকেই উর্ধমুখী ছিল। তবে এখন আরও অন্য দ্রব্যের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। যেখানে ব্রয়লার মুরগী ১২০-১৩০ টাকা ছিল সেটা এখন ২০০-২৫০ টাকা। ৭০০ টাকার খাসির মাংস ১১০০-১১৫০ টাকা। ৩২ টাকার ডিম ৪৫-৫০ টাকা হালি। এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন প্রতিটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় একটুও বাড়েনি।
বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এখন থেকেই খাবারের অভাব বুঝতে পারছে। কারণ তাদের যে আয় সেটা দিয়ে এই বাজারে পরিবার নিয়ে টিকে থাকা কঠিনই না অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছি। তবে বাংলাদেশের রিজার্ভ আগের থেকে বেড়েছে এটা ভালো দিক। বাংলাদেশ অন্য সব দিক থেকে এগিয়ে গেলেও দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কোনোভাবেই কমিয়ে আনতে পারছে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সাধারণ জনগণ এগিয়ে যেতে পারছে না। এসব অবস্থা দেখে ৪৯ বছর আগে রফিক আজাদের কবিতাটা সেই কথাটা আমার মনে পড়ে গেল। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো জনগণ সত্যি বলে উঠবে ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিএ চিবিয়ে খাব।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।