আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বৃহস্পতিবার রাত যথারীতি অন্যদিনের মতোই হ্যাংআউটে আছি। তবে এই হ্যাংআউট টা বিশেষ ছিল। কারণ আমার বাংলা ব্লগের ১০০ তম হ্যাংআউট এটা। যাইহোক তখন কুইজ সেগমেন্ট চলছে। হঠাৎ আমার বন্ধু ইকরার ফোন আসলো ইকরা বলল স্যার নাকী আমাকে দ্রুত ফোন দিতে বলছে। আমি আর দেরী করলাম না স্যারকে ফোন দিলাম। স্যার বললেন আগামীকাল শুক্রবার উনার পরীক্ষা আছে। সেজন্য সকাল ৮ থেকে ১১ টা পযর্ন্ত তিনটা ব্যাচ আমাকে পড়াতে হবে। আমার টিউশনি করার খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু স্যার কোনো কথা বললে আমি না করতে পারি না। আমার জীবনে উনি অনেক সাহায্য করেছেন। যাইহোক আমি বললাম ঠিক আছে স্যার আগামীকাল আমি সময় মতো চলে যাব। বৃহস্পতিবার রাতে দেরীতে ঘুমিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে দ্রুতই উঠে পড়ি।
ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে বের হয়ে যায়। হাইওয়ে তে দাঁড়িয়ে আছি গাড়ির জন্য। প্রথমত শুক্রবার তার উপর একেবারে সকাল সেজন্য গাড়ি নেই বললেই চলে। এমন সময় দেখি আমার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বন্ধু শিমুল আসছে। শিমুলের সঙ্গে প্রায় চার বছর পর দেখা। এসএসসির পর আমরা আলাদা কলেজে ভর্তি হয়। এবং শিমুলের বাড়ি আমাদের এলাকা থেকে বেশ দূরে সবমিলিয়ে আর দেখা হয়নি এই কবছরে। শিমুল ছেলেটা মোটামুটি শান্ত স্বভাবের ছিল তবে কিছুটা বদমাইসও ছিল। মনে আছে ক্লাসে শেষের বেঞ্চের দিকে বসত। স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলে কথা বলত না। আমাদের সঙ্গে কথা বললেও স্যার ম্যামদের সঙ্গে একেবারেই কথা বলত না। আমরা একই স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম ওখানেও একই অবস্থা ছিল ওর। কিছু না বুঝলে পেটে বোমা মারলেও প্রশ্ন করত না।
তো আমি কথা বলার আগেই শিমুল বলল কী রে ইমন কেমন আছিস এখন কী করছিস। যদিও মনমানসিকতা খুব একটা ভালো ছিল না তবুও সৌজন্যতার খাতিরে বললাম হ্যা ভালো আছি। তোর কী অবস্থা কেমন আছিস। এখানে কোথায় এসেছিস। জবাবে শিমুল যেটা বলল সেটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। শিমুল বলল এই পাশের এলাকায় আমার শ্বশুরবাড়ি আমি শ্বশুরবাড়িতে এসেছি। বললাম না আমার মনমানসিকতা অনেক খারাপ ছিল। কিন্তু কথাটা শুনে মনে মনে হেসে উঠি ওর সামনে হাঁসলে মন খারাপ করবে সেজন্য চেপে যায়। এই শিমুল বিয়ে করে ফেলেছে। কতই বা বয়স হবে ওর এই ২১-২২। তখনই একটা গাড়ি আসলো আমি উঠে পড়লাম। এবং বেশ কিছুক্ষণ হাসলাম। কিন্তু ঠিক পরের মূহুর্তে আমার একটা কথা মনে পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে হাসিটা বিলীন হয়ে গেল।
মনে পড়লো যখন স্কুলে পড়তাম তখন শুনেছিলাম শিমুলের মায়ের রক্ত শূণ্যতার সমস্যা আছে। অধিকাংশ সময় অসুস্থ থাকত। এবং প্রতিমাসে রক্ত দেওয়া লাগত। অনেক বার স্যার রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছে। মা অসুস্থ ছিল সেজন্য ছেলেটা মাঝে মাঝে না খেয়ে স্কুলে আসতো। তখন ভাবলাম হয়তো ওর মা এখনো অসুস্থ। আর ও বাড়ির বড় ছেলে। সংসারের একটা কাজের মানুষ দরকার সেজন্যই হয়তো ওর বাবা ওকে বিয়ে দিয়েছে। অথবা ওর মা আর পৃথিবীতে নেই। ওদের রান্না করার জন্য হলেও একটা মানুষ দরকার সেজন্য হয়তো ও বিয়ে করছে। বিষয়টি চিন্তা করে আমার বেশ খারাপ লাগছিল। মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। আমরা মানুষ সবসময় অন্যদের ভুল নিয়ে মজা করতে পছন্দ করি। কিন্তু তার সেই ভুল বা তার সেই কাজের পেছনে কারণ জানতে চাই না।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit