আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছবিটি Pixabay নিয়ে নেওয়া এবং Canva দিয়ে এডিট করা
রাত সাড়ে এগারোটা। তখনও বেশ কিছু পর্যটক বাইরে। রিসোর্ট থেকে বেশ কিছুটা দূরে দুইটা পাশাপাশি নারিকেল গাছ। তার নিচে বসার জন্য একটা জায়গা। ওখানেই বসে রয়েছে দুজন। শীতের রাত হওয়াই ক্রমেই ঠান্ডা টা বাড়ছে এবং পর্যটকদের সংখ্যা কমছে। কিছু সময় পরে একেবারে জনশূণ্য হয়ে গেল। বাইরে সমদ্রের পাড়ে বসে দুইটা প্রাণী। জোৎস্না রাতের এক অসাধারণ সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে সমুদ্রের পাড়ে। ম্রিয়মান এবং তৃপা পাশাপাশি বসে। ওদের দেখে কে বলবে এই দুইটা মানুষের পরিচয় মাএ ৭২ ঘন্টা আগে। তাদের দেখলে মনে হবে দুজন দুজনকে চেনে অনেক বছর ধরে। হয়তো তাদের মধ্যে গভীর কোন সম্পর্ক রয়েছে। ওদের দুজনের দেখা এমন একটা সময় হয়েছে যখন দুজনেরই হৃদয় শাসন করছিল শূণ্যতা। এইজন্যই ওদের কাছাকাছি আসতে সময় লাগেনি খুব একটা।
আচ্ছা তোমাদের ডিভোর্স হয়েছে তো ২ বছর। এরমধ্যে নতুন করে আর শুরু করার ইচ্ছা হয়নি। নতুন কাউকে খোজেন নি। প্রশ্ন করে ম্রিয়মান।
"না"ছোট করে উওর দেয় তৃপা। আমি একই আঘাত দ্বিতীয়বার পেতে চাইনি। তাছাড়া মানুষের উপর থেকে আমার বিশ্বাস উঠে গিয়েছে বলতে পারেন। আর কাউকে বিশ্বাস করার মতো সাহস পাই না।
তাহলে আমাকে বিশ্বাস করলে যে? প্রশ্ন করে ম্রিয়মান।
তোমাকে বিশ্বাস করেছি বলতে তোমাকে দেখে আমার মনে হয়েছে তোমার ভেতরে একটা অন্য মানুষ লুকিয়ে আছে। একটা হৃদয় ভাঙা মানুষ দেখলে বুঝতে পারে মেয়েরা। সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের এই ক্ষমতা দিয়েছেন। কেউ একজন খুবই যত্ন নিয়ে তোমার হৃদয় ভেঙেছে। একটা কথা কী জানো ভালোবাসার মতো ভুল একটা মানুষের জীবনে দ্বিতীয় বার করা উচিত না।
তৃপার কথা শুনে চুপ করে রইল ম্রিয়মান। হয়তো তৃপা ঠিকই বলেছে। ভালোবাসা সত্যিই একটা ভুল। মানুষ কে ভালোবাসলে দুঃখ পেতেই হবে। এইজন্যই ভালোবাসতে হবে শুধু সৃষ্টিকর্তা কে। সৃষ্টিকর্তা কে ভালোবেসে কেউ কখনও কষ্ট পাইনি।
আমি তোমাকে দেখেই বুঝতে পেরেছি তোমাকেও কেউ করুণভাবে ঠকিয়ে গেছে। কীভাবে হলো এসব জিজ্ঞেস করে তৃপা
একটু হেসে ম্রিয়মান বলে আমি কথাগুলো কখনও কাউকে বলিনি। আর এই কথাগুলো কেউ জিজ্ঞেস করেনি কখনও।
আমি জিজ্ঞেস করছি আমাকে বলো।
অদিতি ছিল আমার ক্লাসমেট। ক্লাসমেট হলেও আমার থেকে বয়সে কিছুটা বড় ছিল। বন্ধুত্ব থেকে আমাদের সম্পর্কটা প্রেমে পরিণত হয়। আমার প্রতিটা মূহূর্ত ওর কথা ভেবে কাটত। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। কিন্তু সময় যতই যায় আমি যেন অদিতি কে নতুন করে চিনতে থাকি। ওর প্রতি আমার ভালোবাসা দিনে দিনে বাড়তে থাকে কিন্তু অদিতির কাছে আমার গুরুত্ব ক্রমেই কমতে থাকে। দেখতে দেখতে চারটা বছর কেটে যায় আমাদের জীবন থেকে। এরপর চুপ হয়ে যায় ম্রিয়মান
তারপর?
আস্তে আস্তে অদিতি আমার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। টেক্সট এর রিপ্লাই না দেওয়া আমার ফোন না ধরা এগুলো সাধারণ ব্যাপারে দাঁড়িয়ে যায়। ওকে কিছু জিজ্ঞেস করলে বলত আমাকে তুমি সন্দেহ করো। এরপর হঠাৎ একদিন জানতে পারি অদিতি অন্য একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে। কথাটা শুনে মেনে নিতে পারিনি। ওকে জিজ্ঞেস করলে অদিতি কোন উওর দেয়নি। কিন্তু ততদিনে ওকে জোর করার অধিকার আমি হারিয়ে ফেলেছি।
আমি বিশ্বাস করতে পারিনি ব্যাপার টা। কিন্তু আস্তে আস্তে ব্যাপার টা পরিষ্কার হয়ে যায় আমার কাছে। আমি কখনোই কারো জীবনে বোঝা হয়ে থাকতে চাইনি। এরপর পুরোপুরি অদিতির জীবন থেকে আমি চলি আসি। পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় আমাদের। চার বছর কেটে গিয়েছে কিন্তু আমি এখনও ওকে ভুলতে পারিনি।
চলবে......
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ম্রিয়মানের জীবনের ঘটনা খুবই কষ্টের।মানুষ ভালোবাসায় বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে আসলে নতুন করে আর ভালোবাসায় মাঝে জড়াতে চায় না।তারপরেও বেঁচে থাকতে হলে পাশে একজন বিশ্বাসী সঙ্গীর দরকার।এরপরে আসলে কি হলো?? আশাকরি দ্রুতই লিখে শেয়ার করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit