আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমাদের বাস ছিল রাত ১০ টাই কুমারখালীর কাজীপাড়া মোড় থেকে। মার্চ মাস কিছুটা ঠান্ডা কিছু টা গরম এ যেন অন্যরকম এক অনূভুতি। রাত ৮ টার সময় আমার বাড়িতে আমার বন্ধু ইব্রাহিম এবং আমার এলাকার ছোট ভাই মেহেদী আসে। মেহেদী আমার এক বছরের জুনিয়র। ও আমাদের সফরের একজন সদস্য। এরপর সবাই বেরিয়ে পড়লাম। মোটামুটি বাস ছাড়ার ঘন্টাখানেক আগে আমরা চলে গেলাম। গিয়ে দেখি এখনও অনেকে আসা বাকি। তখন হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ে গেল।
স্যার আমাদের সবাইকে পর্যাপ্ত খাবার পানি নিয়ে যেতে বলেছিল। ঐ এলাকায় নাকী খাবার পানির তীব্র সংকট। যাইহোক ঐমূহূর্তে মোটামুটি কয়েক লিটার ম্যানেজ করতে পেরেছিলাম। এরপর স্যার চলে আসলো সঙ্গে অন্য সবাই। কিন্তু ঠিক সময়ে যে বাস ছাড়বে না এটা একেবারে নিশ্চিত ছিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক করে বাস যখন ছাড়ল ঘড়িতে সময় তখন রাত ১১ টা ১০।
শুরু হয়ে গেল আমাদের যাএা। জানালার ধারের সিট খুবই সুন্দর একটা জায়গা। তবে এটা সবসময় পাওয়া যায় না। বিশেষ করে শিক্ষা সফরের মতো প্রোগ্রামে তো পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে আমি একটু কৌশল করে নিয়েছিলাম জানালার ধারের সিট। রাত তখন সাড়ে এগারো টা বাসের মধ্যে সবাই বেশ হাসিখুশি। যে যার মতো সময় টা উপভোগ করছে। আমার পাশে ছিল আমার বন্ধু লিখন। রাতের আঁধারে বাস এগিয়ে চলেছে। আমার মনের মধ্যে একটা উওেজনা কাজ করছে হ্যা আগামীকাল সেই বহু কাঙ্ক্ষিত সুন্দরবন দেখতে যাচ্ছি আমি এবং আমরা। প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা পথ অতিবাহিত করার পর আমরা যশোরে পৌছায়। ঘড়িতে রাত তখন রাত আড়াইটা। আমাদের বাস পার্ক করা হয় একটা হোটেলের সামনে।
তখন স্যার বলেন এখানে আমরা ঠিক ২০ মিনিট বিরতি নিব। সবাই নাস্তা করে ফ্রেশ হয়ে ঠিক সময়ে চলে আসবা আবার বাস ছাড়ব ঠিক রাত ৩ টার সময়। আমি এবং আমার বন্ধু সাঈদ বাস থেকে নেমে একটু হাঁটাহাঁটি করি চারিদিকে ঘোরাঘুরি করি। হোটেল টা ছল একেবারে হাইওয়ে এর ধারে। ঐ রাতে সেরকম কোন নাস্তা আমি করিনি। শুধুমাত্র একটা চা খেয়েছিলাম। রাত ৩ টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাস ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার আমাদের যাএা শুরু হয়। তবে এই রাতের আধারেই আমাদের আরেকটা স্পাপনা দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল। সেটা হলো খুলনার সেই বিখ্যাত রুপসা ব্রীজ। রাত তখন সাড়ে চারটা আমরা রুপসা ব্রীজে উঠলাম তখন আমার বন্ধু লিখন বলল ইমন এটাই রুপসা ব্রীজ।
বাইরে তাকিয়ে রোড লাইটের আলোয় কিছুটা দেখতে পারলাম। নদীর মধ্যে অনেক ট্রলার এবং নৌকা ভাসছিল । সেগুলোতে জ্বলছিল সামান্য আলো। আমাদের যাএা চলতে থাকে। যেহেতু মার্চ মাসের শুরু শেষ রাতে বেশ ভালো ঠান্ডা লাগতে শুরু করল। ঠান্ডা আমার একেবারেই সহ্য হয় না। আমি বাসের জানালা টা বন্ধ করে দেয়।
একটা মজার কথা বলি। যশোর থেকে শুরু করে খুলনা পর্যন্ত আমাদের বাস প্রায় ১৫-২০ টা চেকপোস্টেে থামে। এরমধ্যে কিছু চেকপোস্টে আমাদের ছেড়ে দেয় আমরা শিক্ষা সফরে যাচ্ছি এইজন্য কিন্তু কিছু চেকপোস্টে আমাদের টাকা দেওয়া লাগে। ব্যাপার টা একেবারে অনাকাঙ্খিত ছিল যদিও। কিন্তু তখন সময় টা ছিল খুবই অস্থির। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সময় তখন সাড়ে পাঁচটা। বাইরে অপরুপ সৌন্দর্য দেখার জন্য আমি জানাটা খুলে দেয়। আহ কী চমৎকার দৃশ্য। পথের দুপাশে শুধু মাইলের পর মাইল মাছের ঘের। যেখানে কৃএিম ভাবে বিভিন্ন মাছ চাষ করা হয়। তবে রাস্তা ভাঙা থাকায় ঐসময় আমাদের বাস খুবই আস্তে যাচ্ছিল। সকাল ৬ টা ১৫ মিনিটে আমরা বাগেরহাট পৌছায়।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দরবন ভ্রমন করেছিলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো।আমিও ভ্রমণ করতে খুবই পছন্দ করি কিন্তু সময়ের অভাবে করা হয় না।তবে সুযোগ পেলে ছাড়ি না।আপনি বেশ সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিজের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।আপনার পোস্টের মাধ্যমে আমরাও দারুন কিছু মুহূর্ত উপভোগ করতে পারলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাক শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দরভাবে পৌঁছে গেলেন জেনে ভালো লাগলো। আপনারা ১১ টায় রওনা হলেন আর পৌঁছাতে পারলেন ৬ টায়।আপনার ভ্রমন অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমরা সাতক্ষীরা শ্যামনগর হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ করেছি ভাই। তবে এভাবে শিক্ষা করে না। ভ্রমণ করেছিলাম তিন বন্ধু মিলে। যেন সেই দিনের সেই সুন্দর স্মৃতি এবং অনুভূতি আমাদের মাঝে ফুটে ওঠানোর সুযোগ করে দিয়েছেন এই পোস্টের দ্বারা। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit