আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
চার বছরের বেশি সময় পরে দুজন আবার সামনাসামনি। কী বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম ওর দিকে। চার বছরের ব্যবধানেও অদিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। ওর কথা, হাঁটা, চোখের চাহনি সবকিছু আগের মতোই আছে। হ্যা ওকে অনেক ভালোবাসতাম সেজন্য সবকিছু এখনো মনে আছে। হ্যা পরিবর্তন অবশ্য হয়েছে কিছুটা। কিছুক্ষণ পর আমার অনুরোধে ও নিজের মুখের মাস্ক খুলল। নাকের পাশের ঐ কেটে যাওয়া চিহ্নটা এখনো আগের মতোই আছে ওটার জন্য ওকে আমার দারুণ লাগত। আপাতত দুইটা কোল্ড কফি অর্ডার দিলাম। একসময় অদিতি চকলেট কোল্ড কফি অনেক পছন্দ করত। কী জানি এখনো করে কীনা। এরপর অদিতি বলে উঠল
কী অবস্থা তোমার কেমন আছ? এখন কী করছ, এখনো বিয়ে করোনি কেন,আরও অনেক প্রশ্ন।
আমি সবকিছুই কোনোরকম না বলার মতো করে বললাম। পরে ওকেও জিজ্ঞেস করলাম কী অবস্থা তোমার? ততক্ষণে কফি টাও দিয়ে গেছে।
অদিতি একটু অন্যরকমভাবে বলে উঠল আমার অবস্থা শুনে কী করবা। এই তো আছি বেশ ভালো।
আমি একটু ইয়ার্কি মেরে বললাম তোমার স্বামী তোমাকে ঢাকা আসতে দিল। তাও আবার আমার সঙ্গে দেখা করতে। তোমার স্বামী তো অনেক মহৎ হৃদয়ের মানুষ বলে হেঁসে উঠলাম।
কিছুক্ষণ চুপ থাকল অদিতি। পরে অদিতি বলল তোমাকে আজ আমি বেশ কিছু কথা বলব। সেজন্যই ঢাকা এসে আর দেরী করি নাই তোমার সঙ্গে দেখা করতে চলে এসেছি। কথাগুলো ফোনেও বলা যেত। কিন্তু আমার মনে হয়েছে সামনাসামনি বলাই ভালো হবে। কথাগুলো চুপ করে শুনবা।
ওর কথাগুলো একেবারে স্টেটকার্ট হয়ে থাকে। আমি বললাম ঠিক আছে বলো।
তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসতে এটা আমি জানি। ঐসময়ে তোমাকে বার বার রিজেক্ট করেছি এখন আমি তার সাজা পাচ্ছি। বলে টিস্যু দিয়ে চোখ ঢেকে নিল। ওর চোখে পানি চলে এসেছে বিষয়টি আড়াল করার বৃথা চেষ্টা করল অদিতি।
কী হয়েছে অদিতি। সব ঠিক আছে তো?
সবই বলব সেজন্যেই এসেছি। তুমি বেশ কয়েকদিন আমার স্বামী সংসার বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করছ আমি এড়িয়ে গিয়েছি। তাহলে আজ শোন আমার সংসার বেশিদিন টেকেনি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আমাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। অনেক চেষ্টা করলেও পারিনি মানিয়ে নিতে। ঐ মানুষ টা কখনোই আমাকে বোঝার চেষ্টা করেনি। বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই আমাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। কথাগুলো বলে অদিতি কফিতে চুমুক দিল। এবং আবার চোখের পানি আড়াল করার বৃথা চেষ্টা করল।
কথাগুলো শুনে আমার নিজেরও মাথা ঠিক নেই। মাথা নিচু করে আছি আমি। আমার লাইফে আমি একটা মেয়েকেই পছন্দ করতাম ভালোবাসতাম। ওকে না পেলেও কখনো আমি অদিতির খারাপ চাইনি। ওর কথাগুলো শুনে কেন জানি আমার চোখের কোণেও পানি চলে এসেছিল।
আরে তুমি এমন করছ কেন। কান্না করবা নাকি,বলে হেসে উঠল অদিতি। আসলে কী জানো তোমার মতো আমাকে কেউই আর ভালোবাসেনি। আর আমি সেই ভালোবাসার মূল্য দেয়নি আমার সাথে তো এমনটা হবেই।
বিশ্বাস করো আমি কখনোই তোমার খারাপ চাইনি। চাইনি তুমি কষ্টে থাক।
আমি তোমাকে অনেক আগে থেকে চিনি। আমি জানি তুমি কেমন। এরপর বলো তুমি এখনো বিয়ে কেন করোনি? মেয়ে পছন্দ হয়না। মেয়ে দেখব আমি।
আমি বললাম না লাগবে না।
অদিতি বলল অনেকদিন পর তোমার সঙ্গে দেখা চলো আজ তোমাকে আমি ট্রিট দিব। পাশেই একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম ডিনার টা একসঙ্গে করলাম। সত্যি সত্যি বিলটা অদিতি পরিশোধ করল। যাওয়ার আগে বললাম আচ্ছা অদিতি আমাকে একবার সুযোগ দেবে। আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি। বিশ্বাস করো আমি তোমাকে অনেক খুশি রাখব।
কথাগুলো শুনে অদিতি বলল না অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এখন আমি তোমার যোগ্য না। যখন সময় ছিল তোমাকে পাওা দেয়নি। কিন্তু এখন তোমার সঙ্গে সম্পর্কে গিয়ে তোমার কোনো ক্ষতি আমি করতে চাই না। চলো আজ উঠি।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।