সুন্দরবন ভ্রমণ( অষ্ঠম পর্ব)।

in hive-129948 •  2 years ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ মঙ্গলবার,২০ ই, সেপ্টেম্বর,২০২২।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



deer-g0489873ce_1920.jpg

Source



সপ্তম পর্বের পর



মংলাপোর্টের ঐ জায়গাই অসংখ্য দোকান রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সামদ্রিক মনিহারী মানে ঝিনুকের মালা, দুল এসবের দোকান এছাড়া বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকান এবং বিভিন্ন কাঠের তৈরি জিনিস। তো সব দোকান ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম একটা মনিহারির দোকানে। আমরা তিনজন ছিলাম একসঙ্গে আমি তুহিন এবং ইব্রাহিম। ঐ দোকানো সামদ্রিক ঝিনুকের তৈরি মালা ছিল, দুল ছিল, আরও অনেক কিছু। তো ঐ দোকানে সবকিছু দেখতে দেখতে আমার বন্ধু ইব্রাহিম একটা ঝিনুকের মালা পছন্দ করে। ইব্রাহিম বলে এটা আমি নিব। আমি বললাম কার জন্য নিবি ও বলে আছে একজন। আমি ভাবলাম থাকতেই পারে কেউ। কিন্তু মালাটা দেখে আমারও বেশ পছন্দ হয়ে গেল। এইরকম জিনিস এদিক ছাড়া পাওয়া যাবে না। আমি দোকানদার কে জিজ্ঞেস করি এই মালা আর আছে। উনি বলেন হ‍্যা আর একটা আছে। আমি বললাম ঠিক আছে দেন তাহলে ঐটা আমি নিব। তখন ওরা প্রশ্ন করে কী রে তুই কার জন্য নিবি। সত্যি বলতে তখন আমার কেউ ছিলনা কিন্তু দেখে ভালো লেগে গেছিল। আমি বললাম না ভাই কেউ নেই কিন্তু আমি নিব।।

দুইটা একসঙ্গে নিয়েছিলাম বলে দামটা কম রেখেছিল। সত্যি কথা তারপরে প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় চলে গেছে কিন্তু মালাটা আমার কাছে এখনো আছে। এখন পযর্ন্ত মালাটা দেওয়ার মতো কাউকে পাইনি হি হি সযত্নে রেখে দিয়েছি। মালা কেনা শেষ হলে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এরপর আমরা একটা শুটকির দোকানে যায়। ঐদিকে আবার মোটামুটি শুটকির প্রচলন আছে যেহেতু সামদ্রিক এলাকা। আমার অনেক বন্ধু খাওয়ার জন্য শুটকি কিনেছিল কিন্তু আমি কিনি নাই। কারণ শুটকি টা আমার খুব একটা পছন্দ না এবং আমার বাড়ির কেউ খাই না। যাইহোক এভাবে ঘুরতেছি প্রতিটা দোকান অন‍্যরাও তাই। একটা দোকান থেকে আমার বন্ধু ইব্রাহিম একটা ছুরি নিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম এটা কী করবি। ইব্রাহিম জবাব দিল এটার কাজ আছে। এরপর গেলাম একটা খাবারের দোকানে। ওখানে বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় দ্রব‍্য বিক্রি করছে। ওখান থেকে আমরা ছানার মিষ্টি এবং সন্দেশ কিনেছিলাম। যদিও বাড়ি এসে দেখি লোকটা আমাদের ঠকিয়েছে। ছানার কোনো চিহ্ন ছিল না পুরোটাই তৈরি চিনি দিয়ে 🤐।।


boat-gb1a316e38_1920.jpg

source


এরপর দেখি আমাদের সঙ্গে যারা ছিল ওরা সবাই একটা আচারের দোকানে ভীড় করেছে। ওখানে বড়ই, তেঁতুল এসবের আচার বিক্রি করছে। তবে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে বার্মিজ মিষ্টি তেঁতুল। আমরা যেতে যেতে বার্মিজ মিষ্টি তেঁতুল সাবার হয়ে গেছে। আমার এক বন্ধুর থেকে কিছুটা নিয়ে খেয়ে দেখলাম দেখি সত্যি ঐ তেঁতুল মিষ্টি। বার্মিজ মিষ্টি তেঁতুল কেনা হলো না। দেখি আমাদের দেশী পাকা তেঁতুল বিক্রি করছে। বেশ কিছু পাকা তেঁতুল কিনলাম এবং এক কৌটা বড়ই এর আচার। না আচারটা বেশ ভালো ছিল। মজা পেয়েছিলাম খেয়ে। আর মাএ অল্প কিছুক্ষণ কেনাকাটা যা করার করে ফেলেছি। এখন সময় বিদায়ের। শেষ বিকলে গেলাম মংলাপোর্টের পশুর নদীর তীরে। মন চাইতেছিল না কিন্তু বিদায় তো বলতেই হবে। এক মূহুর্ত্তের জন্য মনে হচ্ছিল এখানেই সারাজীবন থেকে যায়।। যেতে নাহি মন চাই তবু চলে যেতে হয়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম আর তখনি ভেবে রেখেছিলাম আবার ফিরে আসব এখানে আবার আসব ঘুরতে।।।

এবার আস্তে আস্তে বাসে উঠে পড়লাম। সবাই ছিটে বসে পড়েছি। কিন্তু সমস্যা হলো অন‍্য জায়গাই। আমার সিট ছিল একটু পেছনে। কিন্তু আমার বন্ধু গালিব বাইনা ধরলো ও যাওয়ার সময় পেছনে আমার সিটে বসবে এবং আমি সামনে ওর সিটে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিন্তু সিট পরিবর্তন করার কারণটা আমি তখন বুঝতে পারিনি। যদিও কয়েকদিন পরে জেনেছিলাম। যাইহোক সামনে গিয়ে বসলাম তবে জানালার ধারের সিট টা পাই নাই। ততক্ষণে সন্ধ‍্যা হয়ে গেছে স‍্যার বাসে উঠে বললেন সবাই দেখ পাশের জন আছে কীনা। কেউ না থাকলে বলো। সবাই বলল না স‍্যার সবাই আছে। সবাই বেশ ক্লান্ত কাল সারারাত কেউ ঘুমাই নাই তারপর আজ সারাদিন অনেক পরিশ্রম গেছে। অনেক ঘুরাঘুরি হয়েছে সেজন্য সবাই চুপ। আসার সময় সবাই অনেক উচ্ছসিত ছিল বাসের মধ্যে চিল্লাচিল্লি হচ্ছিল কিন্তু এখন সবাই নিশ্চুপ। এবং নিশ্চুপ ভাবটা যেন মনটা আমাদের আরও খারাপ করে দিচ্ছে। যাইহোক সঠিক সময়ে আমাদের বাস ছাড়লো। আমরা মংলাপোর্ট থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাএা শুরু করলাম।।।





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_-akkhy.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

তারপরে প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় চলে গেছে কিন্তু মালাটা আমার কাছে এখনো আছে। এখন পযর্ন্ত মালাটা দেওয়ার মতো কাউকে পাইনি হি হি সযত্নে রেখে দিয়েছি।

রেখে দেন, কেউ না কেউ তো আপনার ওই মালা পরতে অবশ্যই কোন সময় আসবে। তখন ওটা দিয়ে দেবেন আর আপনার এই কাহিনী খুলে বলবেন। আপনার আগের পর্বগুলো দেখা হয়নি তবে এই পর্বটা বেশ ভালো লাগলো। যদিও এই পর্বটা কেনাকাটা বিষয়ক ছিল তবে ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু বেশ সুন্দর হয়েছিল।

যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

এ কথাটা অনেক জায়গায় অনেক বার শুনেছি। তবে কথাটা কিন্তু বেশ মূল্যবান।

জী দাদা অপেক্ষায় আছি তার। ধন্যবাদ আপনাকে।। এবং কথাটা সত্যি অনেক মূল‍্যবান এবং সত্য।।

ভাইয়া মংলাপোর্টের দোকান গুলোতে আমারও ঘুরেছি,আমি অবশ্য কয়েকটি ছোট ছোট কাঠের খেলনার জিনিষ কিনেছিলাম। এখনো আছে সেগুলো। যায়হোক আপনারা সবাই সেইফলি গাড়িতে বসতে পেরেছেন সেটাই অনেক বড় বিষয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।।

আরেহ তেতুলের গল্প পড়তে পড়তে তো মুখে পানি চইলা আসলো ভাই😀।যাইহোক মালটা কাউকে দিতে না পারলে বিক্রি করে দিয়েন আবার😂।আর আপনার যে ফ্রেন্ড পিছে বসেছিল ঐটার কারণ না হয় না বলাই থাক।পাবলিক বুঝলেই হইছে😅

হি হি এখানেও ব‍‍্যবসা হা হা। ধন্যবাদ ভাই।।

আপনার সুন্দরবন ভ্রমণের গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে বন্ধুরা কয়েকজন মিলে এভাবে ঘুরতে গেলেই বেশ আনন্দ হয়। আপনি বিভিন্ন ধরনের দোকানে গিয়েছিলেন ।তার মধ্যে একটি মালা পছন্দ হয়েছিল এবং কিনে রেখেছিলেন এবং কাউকে এখন পর্যন্ত দিতে পারেননি বিষয়টি বেশ ভালো লাগলো ।এভাবেই রেখে দিন হয়তো কোন একদিন কাউকে দিতে পারবেন ।কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে সেই জায়গাটা ভালো লেগে গেলে আসলেই মনে হয় যেন আরো কিছুদিন থেকে যাই। বেশ ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। ধন্যবাদ।

জী আপু দেখি আর কতদিন রেখে দেওেয়া লাগে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।।

আপনার সুন্দরবন ভ্রমণে আগের পর্বগুলো পড়তে পারিনি। কিন্তু আজকে অষ্টম পর্বটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি সুন্দরবনের অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এবং সেটি আমাদের সাথে অনেক সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।।

ভাইয়া, আপনার বন্ধু তো তার প্রিয়জনের জন্য মালাটা নিয়েই নিল, কিন্তু আপনিও যখন নিয়েছেন তখন আমাদের হবু কোনো ভাবীর জন্য রেখে দিন যত্ন করে।বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা।আপনার সুন্দরবন ভ্রমনের গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।আমি ও আমার পরিবার শুটকি মাছের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারি না ভাইয়া।ভাইয়া আপনার বন্ধু ছুরি কি জন্য কিনেছিল?
আর আপনার বন্ধু তার প্রেমিককে দেখার জন্য আপনার সিটটা কি দখল করেছিল?

হি হি। কী আর করার বলুন দিদি। ধন্যবাদ আপনাকে।।

কি বলছেন ভাইয়া পাঁচ বছর পর্যন্ত একটা মালা কিনে সেটা সযত্নে রেখে দিয়েছেন দেওয়ার মতো কাউকে পাননি। আমি তো জানতে পারলাম আপনার জীবনে কেউ তো একজন এসেছে। যাইহোক বিষয়টা বেশ ভালো লাগলো। তারপর দেখলাম আবার শুটকি কিনতে গিয়েছেন। সামুদ্রিক এলাকায় শুটকি প্রচলন একটু বেশি থাকে। কিন্তু আপনি তো শুটকি কিনলেন না শুধুমাত্র আপনার বন্ধু কিনলো। আপনার বন্ধু আবার একটা ছুরিও কিনেছে। আসলে এরকম জায়গায় গেলে সত্যিই অনেক কিছুই কেনা যায়। আপনার এই পর্বটাও বেশ ভালো লাগলো।

এসেছে আপু কিন্তু উপহার দেওয়ার পর্যায়ে এখনো যায় নি। গেলে অবশ‍্যই দেব। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।।