নাছোড়বান্দা!!

in hive-129948 •  10 months ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ মঙ্গলবার, ১৯ ই মার্চ , ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


IMG_20240227_205117.jpg


নাছোড়বান্দা শব্দটার সাথে আশাকরি আপনারা সবাই পরিচিত আছেন। যারা পরিচিত নেই তাদের উদ্দেশ্যে বলি নাছোড়বান্দা আমরা তাদেরকেই বলি যারা অতিরিক্ত জেদি হয়। কোন কিছু একবার মাথায় আসলে সেটা না করা পযর্ন্ত আর শান্ত হয় না। আমি নিজে কখনো নাছোড়বান্দার মতো আচরণ করিনি। সবসময় চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি টা বোঝার। ঘটনা টা তাহলে প্রথম থেকে বলি। আজ থেকে প্রায় মাসখানেক আগের কথা। আমার বন্ধু লিখনের সাথে আমার দেখা হয়নি প্রায় পনের দিনের মতো। আমি তখন বাইরে একটা কাজে আছি। হঠাৎ চার টার দিকে ফোন করে লিখন বলছে ইমন চল আজ বের হয়। অনেক দিন বাইরে যাওয়া হয় না। আমি বললাম ঠিক আছে চল যায়। কিন্তু যাবি কোথায়। কোথায় যাব কোথায় যাব ভাবতে ভাবতে দুজন সিদ্ধান্ত নেয় ঠিক আছে চল কুষ্টিয়া যাওয়া যাক।


IMG_20240227_165249.jpg

IMG_20240227_065158.jpg

IMG_20240227_065144.jpg

IMG_20240227_165252.jpg


যেমন কথা তেমন কাজ। ঐদিকে সন্ধ‍্যার সময় ট্রেনও ছিল। দুজন চলে গেলাম স্টেশনে। কিন্তু ঐ বরাবরের মতো ট্রেন লেট। প্রায় ৩০ মিনিট পরে ট্রেন আসলো। ট্রেনে ঐসময় সিট একেবারে ফাঁকা থাকে কারণ লোকাল ট্রেন। অবস্থা টা এমন টিটি পযর্ন্ত টিকিট চাইতে আসেনি। যদিও আমরা কেটেছিলাম না। কিন্তু নামার সময় দুজনের ভাড়া ১০ টাকা দিয়ে নেমে যায়। হ‍্যা আমাদের কুমারখালী থেকে কুষ্টিয়া স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এবং এই ১৫ কিলোমিটার এর ভাড়া লোকাল ট্রেনে মাএ পাঁচ টাকা। এইরকম কম ভাড়া হয়তো বাংলাদেশের কোথাও নেই। আমার সেরকম কোন কাজ ছিল না। আমি লিখনের কথায় গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি লিখন নিজের একটা কাজ নিয়ে এসেছে। লিখন ওর অ‍্যাকুরিয়ামর জন্য সাদা বালি কিনল। ঐ অ‍্যাকুরিয়ামে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগে গিয়েছিল আমাদের।


IMG_20240227_204035.jpg

IMG_20240227_205130.jpg

IMG_20240227_204028.jpg

IMG_20240227_204024.jpg


তারপর লিখন হঠাৎ বলে উঠল ইমন আজকে তুই ট্রিট দিবি। আমি কিছুই বুঝলাম না কেন ট্রিট চাচ্ছে। আমি বললাম কোন কারণে তোকে ট্রিট দিতে হবে। তার উওর জানি না দিতে হবে। ট্রিট ও চাইতেই পারে। কিন্তু সবচাইতে বড় কথা আমার কাছে কোন টাকা ছিল না। কী একটা অবস্থা চিন্তা করেন। আমার কাছে সেরকম টাকা নেই। এদিকে সে ছাড়ছেই না যাকে বলে একেবারে নাছোড়বান্দা। শেষমেশ কী আর করার। আমার এক জায়গা থেকে কিছু টাকা ধার করলাম ঐসময়। তারপর দুজন গেলাম মেহেরজান রেস্টুরেন্টে। ওখানে আমরা আগেও বেশ কয়েকবার গিয়েছি। ওখানে বিরিয়ানি আইটেম খুব একটা বেশি নেই। আর যেগুলো আছে ঐগুলো ট্রাই করেছি। সেজন্য লিখনের কথা মতো আজ ওদের গ্রীল এবং বাটার নান ট্রাই করলাম। অর্ডার করে দুজন বসে আছি।


IMG_20240227_205115.jpg

IMG_20240227_205113.jpg

IMG_20240227_205110.jpg


মোটামুটি ১৫ মিনিট পরে আমাদের অর্ডার টা দিয়ে গেল। এটাকে ঠিক গ্রীল ও বলা যায় না। তবে বেশ টেস্টি ছিল। এবং নানটাও মোটামুটি ভালো ছিল। আমি ওদের এই আইটেম টা প্রথম ট্রাই করলাম মোটামুটি ভালো লেগেছিল। খাওয়া যখন শেষ করে বিল মিটিয়ে দিলাম তখন ঘড়িতে প্রায় ১০ টা বাজে। বেশ অনেক রাত হয়ে গেছে। ওদিকে আমার বাড়ি থেকেও ফোন চলে এসেছে। আমি সাধারণত খুব একটা রাত বাড়ির বাইরে থাকি না। আজ কী পোস্ট করব ভাবছিলাম। সেজন্য গ‍্যালারিতে গিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করতেই এই ফটোগ্রাফি গুলো চোখে পড়ল। আর সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল। একটা সিক্রেট বলি ঐদিন লিখনকে ট্রিট দেওয়ার জন্য যার থেকে টাকা ধার করেছিলাম এখন পযর্ন্ত তার টাকা শোধ করিনি। কবে করব সেটাও জানি না। সেও চাই না আর আমিও আগবাড়িয়ে দিতে যায় না।

------------
ফটোগ্রাফার@emon42
ডিভাইসRedmi 12
সময়ফেব্রুয়ারি,২০২৪


সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার লেখনীর মাধ্যমে বন্ধুত্বের মূল্য এবং সাধারণ জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলি যেভাবে তুলে ধরেছেন, তা অত্যন্ত প্রাণবন্ত। আপনার ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহ এবং শিল্পীসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি আপনার পোস্টকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। আপনার এই সৃজনশীল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক, এই কামনা করি।

হাহাহ ভাই বিষয়টা বেশ ভালো লাগলো ৷ আসলে এমন কিছু কিছু মানুষ আছে এমনি তারা আসলে বোঝে না ৷ যা আপনার বন্ধু লিখন নাসোরবান্দা শেষ মেষ ট্রিট না নিয়ে ছাড়লো না ৷

হা হা হা 😄
এটা কিন্তু মহা অন্যায় কাজ হয়েছে। যে লোকটা সেদিন তোমাকে সহযোগিতা করেছিল, তার টাকা তুমি এখনো শোধ করোনি। যাইহোক বন্ধু বলে কথা সে এরকম ট্রিট চাইতেই পারে। তবে তোমার পরিস্থিতিটা একটু বোঝা উচিত ছিল তার। আমার কোন বন্ধু এরকম করলে আমি হয়তো দুচারটা কিল দিয়ে বসতাম। যাই হোক খাবারটা দেখতে কিন্তু ভীষণ লোভনীয় লাগছে। ভাগ্যিস ছবিগুলো ফোন গ্যালারিতে ছিল না হলে আমরা এই চমৎকার পোস্টটা কিভাবে দেখতাম। ধন্যবাদ তোমাকে চমৎকার অনুভূতি মেশানো পোস্টটি উপহার দেওয়ার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

বন্ধুবান্ধব ট্রিট চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তবে সিচুয়েশনও বোঝা উচিত, যে যার কাছে ট্রিট চাওয়া হচ্ছে তার কাছে আদেও যথেষ্ট টাকা রয়েছে কি না ট্রিট দেওয়ার জন্য। আমি যদি দেখতাম যে ধার করে ট্রিট দিতে হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই সেখানে না করতাম। এখন আপনাদের দুই বন্ধুর ভিতরে কি রকম সম্পর্ক, সেটা তো আমি জানিনা। তবে আপনি মনের দিক থেকে যথেষ্ট বড়, এটুকু প্রমাণ আমি পেলাম আর কি। এখন আপনি আপনার বন্ধুকে ট্রিট দিয়েছেন, অন্য সময় তার থেকে একটা ট্রিট নিয়ে নেবেন কোনো কারণ ছাড়াই। হা হা হা....🤭

বন্ধুসহ ট্রেনে করেই কুমারখালি থেকে কুষ্টিয়া গিয়েছেন। কিন্তু দুজনে ১০ টাকা দিয়ে নেমে গেলেন বেশ অবাক লাগলো। কারণ বর্তমান সময়ে এত কম ভাড়ায় ১৫ কিলোমিটার পথ যাওয়া একদম অসম্ভব ব্যাপার। যাইহোক আপনার বন্ধু যেহেতু আপনার কাছে ট্রিট চেয়েছে সেই হিসেবে দিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু শেষের লাইনটা পড়ে খুব হাসি পাচ্ছে। যাই হোক পাওনাদার চাওয়ার আগে কিন্তু টাকা দিয়ে দেয়া উচিত হাহাহা।