আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছবিটি Pixabay নিয়ে নেওয়া এবং Canva দিয়ে এডিট করা
কফির কাঁপে চুমুক দিতে দিতে বলল ম্রিয়মান তোমার বয়স কত মঞ্জু
একুশ বছর স্যার।
কতদিন রয়েছ এই জাহাজে।।
এই তো স্যার ৬ বছর।
লেখাপড়া করোনি তুমি। প্রশ্ন করে ম্রিয়মান
হ্যা স্যার করেছি। ক্লাস টেন পযর্ন্ত পড়েছি। কিন্তু ঐবছরই আমার বাবা মারা যায়। পরিবারের বড় কেউ ছিল না যে সংসারের হাল ধরবে। এইজন্যই লেখাপড়া ছেড়ে আমাকে এই চাকরি নিতে হয়। নিজের এমন দুঃখ কষ্টের কথাও ছেলেটা মুখে একটা অবর্ণনীয় হাসি নিয়ে বলল।
তোমার খারাপ লাগে না এইজন্য বলে ম্রিয়মান।
না স্যার খারাপ কেন লাগবে। আমার ভাগ্যে যা ছিল তাই হয়েছে। আর আমি যে আমার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছি এটা অনেক বড় পাওয়া আমার কাছে।
সত্যি ছেলেটার এমন সত্য সহজ কথার মাঝেও একটা অসাধারণ ব্যাপার লুকিয়ে ছিল। মানুষের জীবন ঠিক কতটা আজব। কেউ এতোদূরে এসে লক্ষ টাকা উড়িয়ে যায় । আর কেউ জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে ওদের টাই জীবন। জীবন ওদের থেকে যেমন সীমাহীন পরীক্ষা নিয়েছে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে কেড়ে নিয়েছে সবকিছু। ঠিক তার পরিবর্তে দিয়েছে শান্তি। এতোকিছুর পরেও ওর মধ্যে একটা শান্তি আছে। আর অন্যরা লক্ষ টাকা খরচ করে শান্তির জন্য ঘুরতে আসে।
আচ্ছা তুমি যে আমার সাথে কথা বলছ জাহাজের কেউ দেখলে তোমার সমস্যা হবে না।
না স্যার। আমাদের বলা থাকে পর্যটক রা চাইলে আমরা তাদের সাথে কথা বলব। তারা কিছু জানতে চাইলে তাদের সঠিক তথ্য দেব। এভাবে কী অন্য কেউ কখনও তোমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছে। প্রশ্ন করে ম্রিয়মান
না স্যার। আমাদের ব্যাপারে কেউ খুব একটা জিজ্ঞেস করেনি। জিজ্ঞেস করলে শুধু নামটা। এর বেশি কেউ কখনও জানতে চাইনি।
আসলে আপনারা শহরের মানুষেরা নিজের জীবন নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত একটু বেশিই চিন্তিত। অন্য কারো জীবন নিয়ে ভাবার সময় আপনারা খুব একটা পান না।
মঞ্জু এবং ম্রিয়মানের কথা চলছে। হঠাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হয় তৃপা। আস্তে হেঁটে ম্রিয়মানের সামনাসামনি একটা চেয়ারে বসে তৃপা। ওর মুখে একটা হাসির রেশ রয়েছে তবে মুখটা বেশ জীর্ণ।
কফি খাবে তৃপাকে জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান। নিজের মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয় তৃপা
তক্ষণাৎ গিয়ে তৃপার জন্য কফি নিয়ে আসে মঞ্জু। মঞ্জুকে দেখিয়ে ম্রিয়মান বলে ওর নাম মঞ্জু। ছেলেটা বেশ ভালো। ওর সাথেই কথা বলছিলাম।
আচ্ছা দুপুরের মেন্যু কী মঞ্জু। জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান
স্যার দুপুরে কয়েক প্রকার সামদ্রিক মাছ আছে এবং চিকেন আছে। আপনারা কী খাবেন।
কী খাবে তৃপা কে জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান। তোমার যেটা ইচ্ছা সেটা অর্ডার করো আমার খাওয়ার কোন রুচি নেই।
ঠিক আছে তোমাকে দুপুরে বলব মঞ্জু। স্যার আপনাদের আর কিছু লাগবে। লাগলে আমাকে জানাইয়েন, আপনারা কথা বলুন বলে চলে গেল মঞ্জু।
তোমার কী শরীর টা বেশি খারাপ? তৃপাকে জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান
হ্যা একটু
কক্সবাজার গিয়ে কী থাকবে না ঢাকা চলে যাবে। জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান।
না আমার আর এখানে থাকতে ইচ্ছা করছে না আজই ঢাকা চলে যাব। ঢাকা গিয়ে কী করবে কোথায় থাকবে । জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান।
এখন ও ঠিক করিনি। থাকব কোন হোটেলে।
কানাডা কবে ফিরবে?
আমি আর কানাডায় ফিরব না। একেবারে চলে এসেছি বাংলাদেশে। জীবনের অবশিষ্ট কয়েকটা দিন এখানেই কাটাব।
তাহলে আর দেরি করে কী লাভ। ফ্লাইটের টিকিট বুক দিয়ে দেয়। বলে ম্রিয়মান ফোন হাতে নিয়ে ফ্লাইটের টিকিট দেখতে থাকে।
হ্যা বিকেল ৫ টা ১০ এ একটা ফ্লাইট আছে এইটা বুক দিব।
হ্যা দাও। এমনিতেও কক্সবাজার গিয়ে কোন কাজ নেই। শুধু হোটেল থেকে চেক-আউট করব আর কী।
তখনই ফ্লাইটের দুইটা টিকিট বুকিং দেয় ম্রিঢ়মান।
আড়াইটার দিকে ওরা পৌছে যায় কক্সবাজার। সেখান থেকে সরাসরি হোটেল ইন্টার'কন্টিনেন্টালে।
চলবে.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই গল্পের শেষটা যে কি হবে তা জানার অপেক্ষায় আছি।আশাকরি খুব শীঘ্রই শেষটা জানতে পারবো।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit