হার না মানা যোদ্ধা।

in hive-129948 •  last year 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শুক্রবার,২৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


ronaldo-1997300_1280.jpg

Source


গতবছরের ১১ ডিসেম্বর। দিনটা হয়তো বিশেষ কোন দিন না। তবে ফুটবল ফ‍্যান রোনালদো ফ‍্যানদের কাছে দিনটার আলাদা একটা গুরুত্ব আলাদা একটা তাৎপর্য আছে। ঐদিন সর্বকালের অন‍্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কান্না করতে করতে মাঠ ত‍্যাগ করেছিল। এর কারণ ছিল তার দলের কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে পরাজয়। দিনটা যেকোন ফুটবল ফ‍্যান ভুলে যেতে চাইবে। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয় কোথায়। প্রায়ই ফেসবুকে রোনালদোর সেই কান্নাভেজা চেহারার ছবি সামনে চলে আসে। সেটা দিয়ে অবশ‍্য আর্জেন্টাইন মেসি ফ‍্যানরা ট্রল করতে ছাড়েন না। রোনালদো বুড়িয়ে গেছে রোনালদো ফুরিয়ে গেছে। বয়স তো তার তখন ৩৭ বছর। সেজন্য পর্তুগালের তৎকালীন কোচ ফার্নান্দো সান্তোস রোনালদো কে বেঞ্চে বসিয়ে রেখে শুরুর একাদশ নামালেন মাঠে। মাঠে পুরো পর্তুগাল দল অথচ সব ক‍্যামরাম‍্যান এর ক‍্যামেরা রোনালদোর দিকে তাক করানো। সেদিন এটা অবাক করেনি এতটুকু। কারণ মানুটা যে রোনালদো।

রোনালদোর জায়গাই সেদিন মাঠ নামে তার আগের ম‍্যাচে হ‍্যাট্রিক করা গঞ্জালো রামোস। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সেদিন পর্তুগালের সেরা একাদশ কিছুই করতে পারেনি। মরক্কোর কাছে গোল খেয়ে বসে আগে। কোনভাবেই সেই গোলটা পরিশোধ করতে পরছিল না পর্তুগাল। অবেশেষে হাফ টাইমের পর মাঠে নামে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মাঠে নামার পরে রোনালদোর চেষ্টার কমতি ছিল না। কিন্তু সেদিন ভাগ‍্যটা সহায় ছিল না রোনালদোর এবং পর্তুগালের। ফলাফল ম‍্যাচ হারতে হয় পর্তুগালকে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় পর্তুগালের। ঐসময়ে রোনালদো কান্নাভেজা চেহারা ভুলে যেতে চাইবে যেকোনো ফুটবল ফ‍্যান। পরবর্তীতে অবশ‍্য রোনালদো কে শুরুর একাদশে না রাখার জন্য ফ‍্যানদের তোপের মুখে পড়ে পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। ফলাফল তিনি পর্তুগালের কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।


cristiano-ronaldo-8373364_1280.jpg

source


তারপর আরেকটা চমক আসে। সবাইকে চমকে দিয়ে ম‍্যান ইউনাইটেড ছেড়ে সৌদি পাড়া জমান রোনালদো। নাম লেখান আল নাসের ক্লাবে। রোনালদো নিজেকে ইউরোপে প্রমাণ করেছে প্রায় ১৭ বছর। এখন তার ইচ্ছা এশিয়ায় তিনি নিজেকে প্রমাণ করবেন। তখন অনেকেই বলেছিল না রোনালদো শেষ। এই রোনালদো বুড়িয়ে গেছে এই রোনালদো ফুরিয়ে গেছে আর কত। সত্যি তো আর কত খেলবেন রোনালদো। বয়স তো তার ৩৮। কিন্তু সবাই ভুল প্রমাণ করে দিলেন রোনালদো। পর্তুগালের নতুন কোচ রবার্তো মার্টিনেজ বুড়ো রোনালদো কে দলে ডাকলেন শুরুর একাদশে রাখলেন। রোনালদো যেন তার কাজটা ঠিকভাবে করে গেলেন। ইউরো বাছাই, ফ্রেন্ডলি ‍ম‍্যাচে একের পর এক করে গেলেন গোল। পাশাপাশি নিজের ক্লাব আল নাসেরের হয়ে একের পর এক গোল করে যেতে থাকলেন। আল নাসেরে অসাধারণ সময় অতিবাহিত করতে থাকে রোনালদো। সবমিলিয়ে ৩৮ বছর বয়সী রোনালদোর ২০২৩ সালটা এককথায় অসাধারণ কাটে।

বছর শেষে সেই পরিসংখ্যান আপনাকে রীতিমতো অবাক করবে। হ‍্যা ২০২৩ সালে মোটামুটি অফিশিয়ালি সব ম‍্যাচ শেষে সবচাইতে বেশি গোল করেছেন রোনালদো। বুড়ো রোনালদোর কাছেও পারেননি তরুন আরলিং হ‍্যালান্ড, কিলিয়ান এমবাপ্প, হ‍্যারি কেন রা। বছর শেষে রোনালদোর গোলসংখ্যা ৫৩। রোনালদোর পরে রয়েছে ইংলিশ এবং বতর্মান বায়ার্ন মিউনিখ এর তারকা খেলোয়ার হ‍্যারি কেইন। এবং তার পরে রয়েছে আরলিং হ‍্যালান্ড এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে। এই রোনালদো হয়তো বুড়িয়ে গিয়েছেন কিন্তু ফুরিয়ে যান নি। মানুষ টা ফুটবল ইতিহাসে সবচাইতে বেশি গোল করা খেলোয়ার। মানুষ টা আন্তর্জাতিক ফুটবলেও সবচাইতে বেশি গোল করা খেলোয়ার। আমি তার একজন অনেক বড় ভক্ত বলতে পারেন। জানি প্রকৃতির নিয়মে হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যেই অবসরে চলে যাবেন তিনি। কিন্তু তাকে আজীবন মনে রাখবে সমস্ত ফুটবল ফ‍্যান। আর যুগ যুগান্তর ধরে চলতে থাকবে তার সেই ঐতিহাসিক সেলিব্রেশন "সুইইইইই"।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

  ·  last year 

@tipu curate

  ·  last year (edited)

রাজার রাজা! বারবার ফিরে আসার জেদ, অদম্য ইচ্ছে। যদিও ফুটবল তাকে সন্মান দেয়নি। ফিফার কিছু মাথা পক্ষপাতী হয়ে একজন খেলোয়াড়কে সেরা বানাতে গিয়ে সব ধরনের ম্যানিপুলেশন করে চলেছে! কিন্তু মাঠে তো তারা গোল আটকাতে পারবে না।

সিঊঊঊঊ...

ঠিক বলেছেন দাদা। রোনালদো সবসময় সেরা ফুটবল মাঠে। ❣

Posted using SteemPro Mobile

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আমার খুব প্রিয় একজন ফুটবলার। মরক্কোর সাথে সেই ম্যাচটি হারার পর, রোনালদোর অশ্রুমাখা চেহারাটা এখনো চোখে ভাসে। সেই ম্যাচ হারার পিছনে একমাত্র কোচ ই দায়ী ছিলো। সবাই শুধু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো রোনালদোর দিকে, যখন তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পুরো ম্যাচটি আমি দেখেছিলাম। যদি রোনালদোকে প্রথমার্ধে নামানো হতো, তাহলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকমও হতে পারতো। সেই ম্যাচটি দেখে মেজাজ একেবারেই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আসলে বয়স যতই হোক না কেনো,রোনালদোর মতো এমন হার্ডওয়ার্কিং ফুটবলার খুব কমই রয়েছে পৃথিবীতে। যাইহোক আমি মনে করি অবসরে যাওয়ার পরও ফুটবল প্রেমীরা, আজীবন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile