||| খেজুরের রস ||

মানুষের বয়স বাড়ে না কমে বলেন তো। সাধারণ দৃষ্টিতে আমরা বলব মানুষের বয়স বাড়ে। হ‍্যা কথাটা ঠিক তবে যতই দিন যায় মানুষের বয়স কমে। মানুষ ক্রমেই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। মানুষ একবার যে বয়স পার চরে আসে সেই সময়ে আর ফিরে যেতে পারে না। পরবর্তীতে শুধু আফসোস করে এবং ঐ সময় টার স্মৃতিচারণ করে থাকে। কৈশোর সময় টা অধিকাংশ মানুষের ছিল রঙিন। বন্ধুদের সাথে মারামারি খেলাধুলা ফল চুরি সবমিলিয়ে দারুণ কাটত কিন্তু। আমি ছোটবেলা থেকে মোটামুটি বেশ শান্তশিষ্ট চুপ চাপ থাকি। তবে বলে না ঐ যে শান্ত শিষ্ট লেজ বিশিষ্ট আমি ঐ দলের। নিজে কোনো অকাজ করে অন‍্যের উপর দোষ চাপানোই আমার তুলনা ছিল না হি হি। আসল ঘটনায় যাওয়া যাক।।

ঘটনা টা ২০১১ সালের। আমি তখন তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করি। আমার বয়স মোটামুটি এই ৯ বছর। আমার বাড়ি থেকে আমার স্কুলের দূরত্ব ছিল দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার মতো। আমি এবং আমার এলাকার বন্ধুরা একসঙ্গে যেতাম স্কুলে। মূলত আমরা চারজন একসঙ্গে যাওয়া আসা করতাম এর মধ্যে ছিল আমি,আকাশ, কাকলী এবং আনিকা। যাইহোক আমাদের বাড়ি পাশাপাশি সেজন্য অনেক ছোট থেকে সবাই সবাইকে চিনতাম। তখন শীতকাল। সবেমাএ নতুন ক্লাসে উঠেছি। আমাদের বাড়ি থেকে একজনের কাছে প্রাইভেট পড়তে দেয়। তখন বাড়ি গিয়ে পড়ে আসা লাগত। আমরা চারজন আমাদের পাশের এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছে পড়তাম। তো শীতের সকালে ঐ কুয়াশার মধ্যে কনকনে ঠান্ডায় যেতাম পড়তে বেশ কষ্ট হতো। যেতে চাইতাম না। তবে একদিন আমরা এমন একটা মজা খুজে পাই পরে আর আমাদের পড়তে যাওয়ার জন্য বলা লাগত না।।

---

---

Source

---

---

আমরা যেই রাস্তা দিয়ে পড়তে যেতাম রাস্তাটা ছিল মাটির। যদিও এখন পিচ ঢালায় রাস্তা করে ফেলেছে। রাস্তার দুপাশ দিয়ে সারি সারি খেজুর গাছ। খেজুর গাছে গাছিরা গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে। এবং গাছ গুলোর উচ্চতা খুব একটা বেশি না। আকাশ একটু বেশি চঞ্চল ছিল। আকাশই প্রথম কথাটা তুলল এই খেজুরের রস খাবি। আমরা বললাম কীভাবে। আকাশ বলল শোন ঐ গাছে দেখ। আমরা যখন যায় তখন এখানে কেউ থাকে না। আর যার খেজুর গাছ উনি পরে আসে রস নিতে। তো আমরা যাওয়ার সময় রস খাব। আমি বললাম কীভাবে। আকাশ বলল আমি গাছ থেকে রসের হাঁড়ি নামিয়ে নিয়ে আসব। সাথে সাথে কাকলি বলল আমি বাড়ি থেকে ছাকনি নিয়ে আসব এবং আনিকা বলল আমি গ্লাস নিয়ে আসব। বাহ তাহলে তো হয়েই গেল আমার কিছু করা লাগল না। আমি বললাম ঠিক আছে কাল থেকেই হোক তাহলে।।

পরেরদিন সকাল সকাল উঠে চলে গেলাম পড়তে। সেদিন যেন বেশি কুয়াশা পড়েছে। চার পাঁচ দুরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। তো সবাই সবকিছু নিয়ে প্রস্তুত। আকাশ উঠে গেল গাছে হাড়ি নামিয়ে আনলো। প্রথম দিনের রস অভিযান শেষ। খেজুরের রস খেলাম একেবারে টাটকা। আকাশ আবার হাঁড়ি গাছে ঝুলিয়ে রেখে আসলো। তবে পড়তে যেতে হয়ে গেল দেরী। শীতের সময় সকালে পড়তে যেতে দেরী হলে ভাইয়া কিছু বলত না। কারণ আমরা ছোট ছিলাম ঐ সময়ে বড় রাই ঘুম থেকে উঠত না। এভাবে বেশ কয়েকদিন আমাদের রস অভিযান চলে। বেশ মজায় ছিলাম আমরা। তবে এরপর একদিন হঠাৎ খবর পাই ভাইয়া সকালে আর আমাদের পড়াবে না। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলল আমি সকালে পড়াবো ক্লাস ফাইভের ব‍্যাচের। এবং তোদের পড়াব বিকেলে। ব‍্যাস আর সকালে বাড়ি থেকে বের হতে পারতাম না খেজুরের রস খাওয়াও হতো না😶। কথাগুলো বেশ মনে পড়ছিল আজ। তাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিলাম।।

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

---

---

---

---

---

---

---

---