ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ (ছোট গল্প) অর্থ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে

in hive-129948 •  last month 

আজ - বৃহস্পতিবার

৩০ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অক্টোবর ১৭, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

আজকের আমি আপনাদের মাঝে আমার দেখা একটা বাস্তব কাহিনী শেয়ার করবো। আজকের পোষ্টের প্রথমে এই টাইটেল দিয়েছি যে "অর্থ সম্পর্ক কে কে নষ্ট করে দেয়" আসলে এটা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের জীবনের সত্যি হয়ে যায়। এটা আমি নিজের চোখে অনেকবার দেখেছি এবং প্রমাণও পেয়েছি যার কারণে আজকে এই টপিকের উপরে পোস্টটি করতে বসলাম। আজকে আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আমার দেখা একটা বাস্তব ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আশা করি আপনাদের ঘটনাটি বেশ ভালই লাগবে। আজকে আমি যার জীবন কাহিনী শেয়ার করবো তার নাম হচ্ছে রাসেল। ও সম্পর্কে আমার কাকা হয় তবে আমার সম্পর্কে কাকা হলেও আমাদের বয়স প্রায় কাছাকাছি ও আমার থেকে দুই বছরের সিনিয়র কিন্তু আমরা এমন ভাবে মিশি যেনো দুইজন ভাই, ভাই অর্থাৎ আমি যখন বাড়িতে থাকি তখন বেশিরভাগ সময় ওর সঙ্গেই থাকি যার জন্য আমাদের মধ্যেও অনেক ভালো একটা বন্ডিং রয়েছে। ওর যদি কোন সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে ও আমার সঙ্গে শেয়ার করে এবং আমার যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে আমি ওর সঙ্গে শেয়ার করার চেষ্টা করি।

1000002489.jpg

source

অনেক সময় কিছু ,কিছু সমস্যা একে অপরকে শেয়ার করা উচিত। তা না হলে সমস্যাটা তো সমাধান হয় না তবে নিজে অনেক দুশ্চিন্তায় ভোগে যার কারণে যদি খুবই ব্যক্তিগত না হয় সে ক্ষেত্রে একে অপরকে শেয়ার করলে হয়তো বা কোন একটা ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হয়ে যেতেও পারে। ছেলেটা সত্যি বলতে খুবই পরিশ্রম করে বয়স খুব একটা বেশি না হলেও এই বয়স এ এসে বাস্তবতা বুঝে গেছে। আসলে এই বয়স থেকে নয় প্রায় ৭-৮ বছর ধরে সে এভাবেই কষ্ট করে আসতেছে এর মূল কারণ ছিল ওর বাবা-মার অসুস্থতা। আমি ক্লাস ৫ থেকেই দেখে আসছি যে ওর আম্মু অর্থাৎ আমার ফুফু সবসময় অসুস্থ থাকে। তার বিভিন্ন রকম রোগ লেগেই রয়েছে যার কারণে সে আর পড়ালেখা কন্টিনিউ করতে পারেনি কারণ সে জানতো যে আমার সংসারেই ঠিকমত চলে না এবার যদি আমি পড়ালেখার খরচ বাড়ি থেকে চাই তাহলে এটা বেশি হয়ে যাবে ওই কারণে ছোটবেলা থেকেই সে কাঠমিস্ত্রি কাজ শুরু করে। আমার যতদূর মনে আছে ওকে দিনে ৬০ টাকা করে দিত তবুও সে ওই টাকা নিয়ে খুশি থাকতো এবং কাজ করে যেত।

1000002491.jpg

source

সবচেয়ে কষ্টের বিষয় ছিল ও সাইকেল নিয়ে কাজে যেতে এবং প্রতিদিন সাইকেল নিয়ে আবার বাড়িতে আসত। অনেক সময় দেখা যেত যে বাড়ি থেকে প্রায় ১০-১৫ মাইল দূরে কাজ হতো সেখানে প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে যেতে হবে আবার ওখান থেকে ফিরে আসতো যার কারণে সে সত্যিই অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে যেত তবুও কাজ করার পাশাপাশি সে পড়াশোনাটা করত, কোনমতে শুধুমাত্র পরীক্ষার সময় আসলে পরীক্ষা দিত তবে একটা ভালো দিক কি ওর কোন পরীক্ষায়ও কোনদিন ফেল করে নাই যে পরীক্ষায় গ্রহণ করত কম রেজাল্ট অথবা মিডিয়াম রেজাল্টের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হতো যেটা খুবই ভালো একটা গুণ ছিল ওর। তো এভাবে সে কয়েক বছর কাজ করার পরে তার মাইনে কিন্তু একেবারেই বাড়লো না ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পেতে শুরু করলো কিন্তু তার মায়ের অবস্থা দিন, দিন খুবই অবনতির দিকে ধাবিত হলো। বিশেষ করে তার আম্মু অসুস্থ অন্যদিকে তার আব্বু কলার ব্যবসা করে কিন্তু তার আব্বার একটা খারাপ দিক হচ্ছে সে অনেক বেশি পান সিগারেট খায়।

1000002490.jpg

source

যার কারণে তেমন কিছু একটা পুঁজি করতে পারে না।যাই ইনকাম করে তার লভ্যাংশের বেশিরভাগই এসব ছাইপাশ খেয়ে নষ্ট করে ফেলে বাড়িতে তেমন কিছু একটা দিতে পারে না। এটা নিয়ে দেখতাম পরিবারের সঙ্গে উনার অনেক ঝগড়াঝাঁটি লাগতো কিন্তু তার এগুলো অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল তাই সে কোনভাবেই একটা ছাড়তে পারছিল না পরবর্তীতে রাসেল অসহায় হয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে দিল এবং একটা হার্ডওয়ারকে থাকা শুরু করল। তখন আর রাসেলকে ওই হার্ডওয়ার্কের মালিক প্রতিদিন ৩৫০ টাকা করে দিত এবং তার ডিউটি ছিল সকাল ৯ টা দিকে যাওয়া এবং সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাড়িতে আসা। তো এভাবে মোটামুটি রাসেলের সংসারটা ভালই চলছিল, সামান্য একটু আর্থিক স্বাবলম্বীতা দেখে আশেপাশের সমাজের মানুষ মনে করলো যে এখন রাসেলকে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে তাহলে হয়তোবা ওর আম্মুর কষ্টটা একটু কমবে কারণ এখন বর্তমানে ওর আম্মু আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায় এবং এমন একটা অবস্থা যে রান্না করতেও পারে না অনেক সময় রাসেল রান্না করে খেয়ে তারপরে রেখে যাই।

1000002492.jpg

source

কিন্তু রাসেল এ দিক থেকে আবার অনেক সৎ সে কোনভাবেই বিয়ে করতে রাজি না কারণ সে মনে করে যে যদি আমি এখন বিয়ে করি সেক্ষেত্রে পরিবারের সুখের চেয়ে দুঃখ টাই বেশি আসবে। ওই জন্য সে স্বাবলম্বী হয়ে তারপরে বিয়ে করতে চাই সত্যি বলতে আমিও তার সঙ্গে একমত কারণ বর্তমানে আর্থিক স্বাবলম্বী তা না থাকলে বিয়ে করার পরে কখনোই আশানুরূপ তেমন একটা সুখ পাওয়া যায় না। যার কারণে নিজের স্বাবলম্বী হয়ে তারপরে বিয়ে করা উচিত। যাইহোক গল্পটা বেশ বড় তাই আজকে এটুকুই শেয়ার করছি আগামী পর্বে বাকিটা শেয়ার করব ইনশাল্লাহ। ( চলবে)

ব্লগার@emonv
ডিভাইসTecno camon 20
শ্রেণী ‌লাইফস্টাইল পোস্ট
লোকেশনমেহেরপুর

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

বেশ অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার ছোট গল্প পড়ে। আসলে মানুষের জীবনে এরকমের চাহিদা থেকে আবার অনেক রকমের সমস্যা থাকে। অনেকে রয়েছে কঠোর সংগ্রাম করে কিন্তু সে সংগ্রামের মূল্য পায় না। ঠিক তেমনি রাসেলের জীবন কাহিনী আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশ ভালো লাগলো বাস্তব এই কাহিনী পড়ে।

কিছু কিছু বাস্তব জীবনের গল্প মানুষকে সজাগ করে। ঠিক তেমনি আজকে আপনি আমাদের মাঝে অসাধারণ একটি গল্প পোস্ট শেয়ার করেছেন। যে গল্প পোস্ট করলে অনেকেই জানতে পারবে এমন হাজারো রাসেলের জীবন কাহিনী এবং অনুভব করতে পারবে বাস্তবতা।