ক্রিটিভ রাইটিং ( ছোট গল্প) || রাসেলের জীবন কাহিনী শেষ পর্ব

in hive-129948 •  29 days ago 

আজ - বৃহস্পতিবার

০৭, কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অক্টোবর ২৪, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

গত কিছুদিন আগে আমি আপনাদের মাঝে একটা গল্প শেয়ার করেছিলাম যে এই গল্পের রাসেলের জীবন কাহিনী নিয়ে প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে সেই ধারাবাহিকতাই দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি আগামী পর্বে যা শেয়ার করেছিলাম তো আগামী পর্বে রাসেলের বিয়ের কথা থেকে শেষ করে দিয়েছিলাম আসলে সত্যি বলতে রাসেল যখন একটা হার্ডওয়ার্কের দোকানে থাকা শুরু করে এবং মাস শেষে ১০-১২ হাজার টাকা ইনকাম করা শুরু করে তখন আশপাশের লোক ভাবল যে এবার রাসেলের বিয়েটা দিয়ে দেওয়া যাক। কিন্তু রাসেল বিয়ে করতে একেবারেই প্রস্তুত ছিল না এবং সে এখন বিয়ে করতে চায় না। তার কথা ছিল যে আমি নিজে স্বাবলম্বী হব এবং নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরে তারপরে বিয়ে করবো তা না হলে এটা হয়তোবা এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে। আসলে ওর কথাগুলো আমার অনেক ভালো লাগতো এবং ও অনেক প্র্যাকটিক্যাল ভাবে সবকিছু ভাবতো যেটা বাস্তব জীবনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। আমি নিজে দেখেছি ওর জন্য একটা সুন্দরী মেয়ের বিয়ে এসেছিল এবং মেয়ের বাবা মোটামুটি স্বাবলম্বী।

1000003252.webp

source

তারা চাচ্ছিল যে তাদের একটাই মেয়ে, একটা ভালো ছেলের হাতে তুলে দিতে এবং যদি ছেলেরা আর্থিকভাবে ডাউন থাকে সে ক্ষেত্রে তারা হেল্প করে তাদেরকে আরেকটু উঠিয়ে দিবে। তবে রাসেলের কথা ছিল যে সে কারোর দান নিতে ইচ্ছুক না সে কর্ম করে খেতে চাই এবং নিজেই তার জন্য সবকিছু করতে চাই। তারপর সে ঋণের উপর টাকা তুলে কয়েকটি গরু পালতে থাকে এবং প্রত্যেক মাসে, মাসে তার বেতন থেকে ঋণের টাকা দিতে থাকে। তো এভাবে করতে করতে প্রায় দুই বছর পর ও বড় বড় দুইটা গরু তৈরি করে ফেলে যার দাম ছিল মোটামুটি তিন লাখ টাকা। তবে আফসোসের বিষয় হচ্ছে তার ছোট বোন তাকে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের টিভি ফ্রিজ সবকিছুই এর উপরে ক্রয় করে দেয় এবং তারপরে রাসেলের যেই গরু বিক্রয় করার টাকা ছিল সেগুলো নিয়ে তার ছোট বোন তাদের ঘর নতুন করে আবার মেরামত করতে শুরু করে। তখন রাসেল কিছুই বলছিল না কারণ রাসেলকে তারা ভবিষ্যতে সুবিধা দিবে এটা বলেছিল এবং সেইসাথে রাসেলের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়েছিল এবং পরবর্তীতে তারা বলেছিল যে রাসেলকে তিন লক্ষ টাকার দুইটা গরু আবারও কিনে দিবে।

1000003253.webp

source

কিন্তু বাস্তবতাটা পুরোই ভিন্ন কারণ তারা যখন তাদের কাজ শেষ করে ফেলে তখন রাসেলের টাকা একেবারেই দিতে চায় না অর্থাৎ তারা তো মুখের উপরে টাকা দিব না এমন কথা বলে না তবে তারা টাকা দিতে গিয়ে অনেক রকম বাহানা তৈরি করে।তাদের কথাটা অনেকটা এমন ছিল যে এ বছরের ফসল আমাদের তেমন একটা ভালো হয় নাই আমরা আগামী বছর দিব। তো এভাবে যখন আসলে টাকাগুলো আটকে এভাবে ঘুরাতে থাকে তখন রাসেলের খুবই খারাপ লাগে এবং তার মন পুরোটাই ভেঙ্গে যায়। কারণ তার কাছে যদি ক্যাশ টাকা থাকতো তাহলে আজকে সে টাকা গুলোকে কাজে লাগিয়ে আরো বেশি তৈরি করতে পারত কিন্তু তার টাকাটা এভাবে তার বোন আটকে দিল সে একেবারেই এটা মেনে নিতে পারছিল না। আসলে সত্যি বলতে মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা এক জায়গায় হাতে আনা অনেক বড় একটা বিষয় এবং তখন ওগুলো দিয়ে যদি একটা বড় কিছু করা যায় এবং সেটি যদি নিয়মিত দেখাশোনা করা যায় তাহলে হয়তোবা ওই টাকা থেকে কিছুটা হলেও মুনাফা তারা পেতে পারে তাই সবসময়ই যারা বড় হতে চাই তাদের ব্যবসিক চিন্তাভাবনা তে তারা চিন্তিত থাকে। তবে এদিক থেকে রাসেলের কিছুই করা ছিল না কারণ নিজের বোন।

1000003254.webp

source

তাই সে কিছু বলতে পারছিল না কিন্তু পরবর্তীতে যখন তার বোন তার টাকাগুলো ফেরত দিল সে অনেকগুলো ধাপে এই টাকাটা ফেরত দিয়েছিল। তাই রাসেলের টাকাটা তার কাজে কোন ভাবে আসে নাই কারণ ধাপে, ধাপে যদি ছিটিয়ে, ছিটিয়ে টাকা দেওয়া যায় সে ক্ষেত্রে সে টাকাগুলো হাতে রাখাটা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। তো এভাবে রাসেল এবং রাসেলের বোনদের ভিতর একটা বিভেদ সৃষ্টি হয় এবং রাসেল আর্থিকভাবে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই আমার মনে হয় যে আর্থিকভাবে কাউকেই মিথ্যা আশা দেওয়া উচিত নয় এবং নিজের লেনাদেনার যদি ঠিক না থাকে তাহলে কখনোই কারো কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়া উচিত নয়। তাহলে হয়তো বা সম্পর্ক নষ্ট এভাবেই হয়ে যাবে। কারণ আমরা মধ্যবিত্ত আমরা এই আর্থিক জায়গাটাই অসহায় তাই এটা সুযোগ যদি কেউ নিতে চায় সেক্ষেত্রে এটা খুবই খারাপ একটা বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যাইহোক অবশেষে এখন রাসেল নতুন করে আরো কিছু করার চেষ্টা করছে দোয়া করি তার ব্যবসাতে যেন ভালো কিছু হয়। এখান থেকে আমি আমার জীবনে একটা শিক্ষা পেয়েছিলাম যে সব সময় নিজের মায়ের উপর ভরসা করা উচিত কারণ অনেক সময় নিজের মায়ের পেটের বোন ও এমন কাজ করতে পারে।

তবে সত্যি বলতে আমার বোনগুলো আমাকে অনেক বেশি সাপোর্ট করে তবে রাসেলের এই কাহিনী দেখে সত্যি আমার অনেক খারাপ লাগছিল। তাই আপনাদের মাঝে এই গল্পটা শেয়ার করলাম।আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে আশা করি কমেন্টে জানিয়ে যাবেন আর ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে এতক্ষন পাশে থেকে ব্লগটি উপভোগ করার জন্য আবারও খুব শীঘ্রই দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

ব্লগার@emonv
ডিভাইসTecno camon 20
শ্রেণী ‌ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট
লোকেশনসিরাজগঞ্জ মৎস্য ডিপ্লোমা

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

@tipu curate