আপনার শিশুকে মানবতা শেখান। || সে ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।

আপনার শিশুকে মানবতা শেখান সে ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে

_{^{সংগ্রহশালা}}

প্রানীরা জন্মলাভ করে খুব তাড়াতাড়ি সাবলম্বী হয়ে ওঠার চেষ্টা করে তবে মানুষের ব্যাপারটা পুরোপুরি ভিন্ন। একটি মানব শিশুর মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে অনেক বছর সময় লেগে যায়। তবে কিছু মানুষ কখনোই মানবিক মানুষ হয়ে উঠতে পারে না।
মানবিক মানুষ হয়ে উঠতে মা-বাবা পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব এবং সমাজের অনেক বড় অবদান রয়েছে।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন একটা বাচ্চাকে মানুষ করতে এতো কিছুর কি দরকার?
দেখুন শিশুরা অনুকরণ প্রিয়, তারা প্রতিনিয়ত সবার কাছে শিখতে শিখতে এগিয়ে চলে। প্রথম শিক্ষাটা পায় পরিবার থেকে এরপর পাড়া প্রতিবেশী, শিক্ষক এবং বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে।

এখন ব্যাপারটা হচ্ছে সে কি শিখছে?

ধরুন আপনি ঘুম থেকে উঠে ঘরে স্ত্রীর সাথে তুলকালাম করে ফেললেন সামান্য আলু ভাজি হয়নি কেন?
তাহলে এখান থেকে আপনার শিশু শিখবে পরিবারের থেকে ঐ আলু ভাজি মূল্যবান। আবার ধরুন আপনি টিভি সিরিয়ালে এতোটাই মগ্ন হয়ে গেলেন যে আপনার সন্তান খাবার চাইছে দিলেন না, তাহলে সে বুঝবে একবার খাবার না খেলে কিছু হবে না কিন্তু সিরিয়ালটা দেখতেই হবে। 😕

ব্যাপারটা যদি এমন হতো রুটি পুরিয়ে ফেলেছে অথচ আপনি হাসি মুখে খেয়ে বললেন এটা কোন ব্যাপার না রুটি পুড়তেই পারে, তবে সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে যাতে হাতটা না পুরে যায়। তাহলে এই কথাটার মধ্যে আপনার সন্তান কি কি শিখবে?

এক - দূর্ঘটনা ঘটতেই পারে এটা মেনে নেয়া।
দুই - কাজের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
তিন - আপনি আপনার স্ত্রীর প্রতি কতটা মানবিক এবং ভালোবাসেন।

আবার ধরুন বাসায় ফিরেছেন সারাদিন কাজ শেষ করে আপনার বাসায় মাছ মাংস কিচ্ছু নেই। তখন আপনার স্ত্রী আপনাকে হাসি মুখে বললেন কি হয়েছে মাছ মাংস নেই?
কাল আমরা সবাই মিলে খিচুড়ি দিবস পালন করবো। সবাই বেশ হৈ হৈ করে উঠলো। এখানে শেখার কি আছে?

এক. আপনার সন্তান শিখবে কোন কিছু না থাকাটা দোষের কিছু নয় বরং সবকিছু সুন্দরভাবে সামলিয়ে নিতে পারাটা সবথেকে বড় বিষয়।

দুই. সে শিখবে আপনি আপনার স্বামীর প্রতি কতটা মানবিক, তাকে কিছুটা বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

তিন. খুব সামান্য কিছুর মধ্যেও আনন্দ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।

আপনার সন্তানকে মানুষকে সম্মান দিতে শেখান। তাকে বুঝিয়ে বলুন সম্মান পেতে হলে আগে সম্মান দিতে হয়।
দারিদ্র্যতার সাথে পরিচয় করাতে পারেন তাকে, যেন সে কখনো বিলাসীতাকে আপন করে না নেয়। বোঝান বিলাসীতা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়।

ভালোবাসা ভাগাভাগি করতে শেখান, বোঝান পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী জিনিস হচ্ছে ভালোবাসা। এটা মূহূর্তেই পৃথিবীকে স্বর্গ কিংবা নরকে পরিণত করতে পারে। আর সুন্দর জীবন যাপনের জন্য ভালোবাসা আর মমতা বিলিয়ে দিতে হবে।

আপনি গরিব এবং অসহায় মানুষের জন্য হাত বাড়িয়ে দিন যতটুকু সম্ভব। আপনার সন্তান বুঝে নেবে এটা একটা দায়িত্ব যা সমাজের মানুষকে ভালো রাখার জন্য যথেষ্ট।
আপনি আপনার বয়স্ক পিতা মাতাকে আগলে রাখুন, সে শিখে নেবে প্রবীন মানুষদের এভাবে আগলে রাখতে হয় এবং এতে তাদের দোয়া সবসময়ই মাথার উপর থাকবে।

দয়াকরে আপনার সন্তানকে মানবিকতা শেখান, এতে করে হয়তো কোটি অমানুষের মধ্যে অন্তত একটা অমানুষ কমে যাবে 🙏

---

---

শরীরের প্রচন্ড জ্বর নিয়ে পোস্ট লিখলাম, ভুল ত্রুটি থাকলে মার্জনা করবেন‌‌। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিদায় নিলাম।

---

---

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।