ভূমিকাঃ
শিক্ষার কোন বয়স নেই। আবার শিক্ষা গ্রহণের জন্য একেবারে নির্দিষ্ট কোন মাধ্যমও নেই। আমরা আমাদের চারপাশের প্রকৃতি, মানুষজন, পরিবেশ থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি। বিশ্বজুড়া এই পাঠশালায় শিখার আছে অনেক কিছুই । কখন যে কার কাছ থেকে কত গুরুত্বপূর্ন বিষয় শিখে ফেলি সেটা বলা মুশকিল।
আমরা একেক জন একেক বিষয়ে পারদর্শী। তাই যদি আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের জানা কোন বিষয় সবার মাঝে শেয়ার করি তাহলে অনেকেই এই জ্ঞান থেকে উপকৃত হতে পারি। এই লক্ষ্য নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি শিক্ষামুলক
নামে একটি সিরিজ লিখছি যেখানে আমার জানা কোন বিষয় শেয়ার করছি। যারা এই বিষয়গুলো আগে জানতেন না, আশা করি তারা উপকৃত হবেন।
পর্ব ১১: স্টিমিট একাউন্টের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিস্তারিত
নিরাপত্তা নিয়ে কিছু কথাঃ
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যেহেতু প্রযুক্তির এই যুগে বাস করছি যেখানে আমাদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত পাসওয়ার্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেহেতু সকল অনলাইন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার গুরুত্ব সহজেই উপলব্ধি করতে পারছেন। আমরা অনেকাংশেই গ্যাজেটের প্রতি নির্ভরশীল এবং দৈনন্দিন কাজকর্মসহ অনেক লেনদেনের যাবতীয় বিষয় সমূহ অনলাইনে সম্পন্ন করে থাকি। এজন্য বিভিন্ন সাইটে আমাদেরকে স্ট্রং পাসওয়ার্ড দেওয়ার জন্য সাজেস্ট করে যাতে করে হ্যাকাররা হ্যাক করতে না পারে।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে ভবিষ্যতে দেখা যাবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, রেটিনা স্ক্যান, ফেস রিকগনিশন কিংবা পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হবে। আগের মত স্বাক্ষর কিংবা লেখালেখি অনেক কমে যাবে। আর স্টিমিট কিংবা ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যাপারটি আরো একটু জটিল কারণ এখানে পাসওয়ার্ড কেউ যদি পেয়ে যায় তাহলে আপনার জন্য কোন নির্দিষ্ট অথরিটি নেই যাদের কাছে আপনি কমপ্লেন করে আপনার সম্পদ গুলো বা আপনার অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন।
এখানে ব্লকচেইন টেকনোলজি হওয়াতে এবং ব্যাপারটা ডিসেন্ত্রালাইজ করে দেয়ার কারণে কোন কেন্দ্রীয় অথরিটি নেই যার কাছে আপনি অ্যাকাউন্টের মালিকানা কিংবা আপনার ওয়ালেট এর দাবী জানাবেন। তাই এক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
না জেনেবুঝে অল্প একটু ভুল করে ফেললে কিংবা সামান্য ভুলে আপনার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। হয়তোবা আপনি অনেক দীর্ঘ সময় ধরে আস্তে আস্তে অনেক কষ্ট করে আপনার অ্যাকাউন্টটি ডেভলপ করেছেন অথবা অনেকগুলো কারেন্সি জমা করেছেন কিন্তু সামান্য একটি ভুলের কারণে হয়তোবা হ্যাকাররা দখল করে নিতে পারে বা আপনি নিজেই হারিয়ে ফেলতে পারেন।
তাই যে কোন প্লাটফর্মে কাজ করার আগে সেই প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে জেনে নেয়াটা অনেক জরুরি। আর স্টিমিট হলে তো কোন কথাই নেই। চলুন আজকে স্টিমিট অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক যাতে করে যারা এ বিষয়টা জানেন না তারা অন্তত উপকৃত হতে পারেন।
একাউন্ট-এর কীঃ (Key)
আমরা যখন স্টিমিটে একাউন্ট করে থাকি তখন সেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় একটা পাসওয়ার্ড জেনারেট হয় বা আমরা একটা পাসোয়ার্ড দেই যেটিকে মাস্টার পাসওয়ার্ড বলা হয়। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ যা আমি নিচে আলোচনা করেছি। কিন্তু এর বাইরেও আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কী দেয়া হয় বিভিন্ন রকম কাজ সম্পাদনের জন্য।
কী-কে আমরা প্রথমে দুইভাগে ভাগ করতে পারি।
- পাবলিক কী ও
- প্রাইভেট কী
এগুলো আবার চার ধরনের
- পোস্টিং কী (Posting Key)
- অ্যাক্টিভ কী (Active Key)
- উনার কী (Owner Key)
- মেমো কী (Memo Key)
পাবলিক কীঃ
পাবলিক কী আসলে উন্মুক্ত কী যা আপনার জন্য সংরক্ষণ করার কোন দরকার নেই। ব্লকচেইনের ডাটা এনক্রিপ্ট করে দেখতে চাইলে এই কী প্রয়োজন হতে পারে আর এই কী সবার জন্য উন্মুক্ত যা আপনি স্টিম স্ক্যান (https://steemscan.com/) এ গিয়ে দেখে নিতে পারবেন।
প্রাইভেট কীঃ
প্রাইভেট কী আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাইভেট কী গুলোকে বিভিন্নভাবে লেয়ারিং করা হয়েছে। অর্থাৎ একেকটা কী এর কার্যক্রম একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে যাতে করে যে সকল কাজের জন্য যে কী দরকার সেই কী ব্যবহার করা যায়।
পোস্টিং কীঃ
এই কী আপনার কেবলমাত্র সোশ্যাল একটিভিটির জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি পোস্ট, কমেন্ট, ভোট দেওয়ার মত কাজগুলো এই কী দিয়ে করতে পারবেন। এর বাইরে কোন কাজ এই কী দিয়ে করা সম্ভব হবে না। যেহেতু ওয়ালেট এর কাজগুলো এই কী দিয়ে করা সম্ভব হচ্ছে কী-গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সেনসিটিভ কী। অর্থাৎ আপনি যে কোন ওয়েব সাইটে এই কী ব্যবহার করতে খুব বেশি দ্বিধা না করলেও হবে কারণ এই কী দিয়ে কেউ হয়তো আপনার একাউন্ট থেকে ভোট দিতে পারবে, কমেন্ট করতে পারবে কিন্তু আপনার ওয়ালেট সংক্রান্ত কাজগুলো করতে পারবে না।
অর্থাৎ আপনি যখন সোশ্যাল একটিভিটি করবেন তখন আপনি এই কী ব্যবহার করবেন এবং এই কী শুধুমাত্র সোশ্যাল একটিভিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ তারপরও এক পলক দেখে নেয়া যাক আপনি এই কী দিয়ে কি কি কাজ করতে পারছেনঃ
- পোস্ট ও কমেন্ট করা
- পোস্ট ও কমেন্ট এডিট করা
- আপভোট ও ডাউনভোট দেয়া
- কোন পোস্ট রিস্টিম (Resteem) করা
- কাউকে ফলো ও আনফলো করা
- কোন অনাকাঙ্ক্ষিত একাউন্ট মিউট করা
অ্যাক্টিভ কীঃ
এই কী দিয়ে আপনি আপনার আর্থিক কাজগুলো করতে পারবেন অর্থাৎ আপনি যদি কোনো লেনদেন করতে চান তাহলে এই কী আপনার অবশ্যই প্রয়োজন হবে। তাই বুঝতেই পারছেন এই কী সেনসিটিভ একটি বিষয়। কোন ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট ছাড়া যেকোনো জায়গায় এই কী ব্যবহার করা থেকে সবসময় বিরত থাকবেন কারণ কেউ যদি আপনার এই অ্যাক্টিভ কী পেয়ে যায় তাহলে তার পক্ষে মুহুর্তেই আপনার ওয়ালেট কে খালি করে দেওয়া সম্ভব। যদি আপনার ওয়ালেট এ লিকুইড কোন steem ও SBD থেকে থাকে তাহলে সেটাকে মুহূর্তেই এই কী থাকলে ট্রান্সফার করে নেয়া যাবে। পাওয়ার আপ করা থাকলে যেহেতু পাওয়ার ডাউন দিতে সময় লাগে (চার সপ্তাহ) সেক্ষেত্রে কেউ যদি আপনার কী ব্যবহার করে পাওয়ার ডাউন দিয়েও দেয় তাহলে আপনি দেখতে পারবেন এবং একাউন্ট রেকভারি ও পাসোয়ার্ড পরিবর্তনের সময় পাবেন। লিকুইডগুলো আপনি মুহুর্তেই হারাবেন। একবার দেখে নেয়া যাক এই কী দিয়ে আপনি কি কি কাজ করতে পারছেনঃ
- ট্রান্সফারের কাজ।
- পাওয়ার আপ ও পাওয়ার ডাউন।
- SBD Steem কনভার্সন
- উইটনেস ভোট দেয়া
- কোন এক্সচেঞ্জে ক্রয় বিক্রয় অর্ডার দেয়া
- প্রোফাইলের কিছু তথ্য পরিবর্তন
- নতুন ব্যবহারকারী তৈরি করা ইত্যাদি।
উনার কীঃ
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এটি একধরনের মালিকানা সংক্রান্ত কী অর্থাৎ এখানে ব্লকচেইনে আপনি যদি আপনার মালিকানা প্রমাণ করতে চান তাহলে এই কী আপনার দরকার হবে। যদি আপনার কী হারিয়ে যায় বা অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয় তাহলে আপনার পক্ষে আপনার একটি কী রিকভার করা বা একাউন্ট রিকভার করার ক্ষেত্রে এই কী আপনাকে সহযোগিতা করবে। এই কী যার কাছে থাকবে সেই কীন্তু একাউন্ট এর মালিকানা দাবি করতে পারবে। তাই অন্যান্য কী রিকভারির ক্ষেত্রে এই কী যেহেতু জরুরি তাই এই কী অবশ্যই অনেক বেশী সেনসিটিভ এবং এটিকে আপনার উচিত আলাদা জায়গায় অনেক যত্ন করে লিখে রাখা বা অনেক ভালভাবে ব্যাকআপ নিয়ে রাখা।
এতে করে আপনার একটিভ কী হারিয়ে গেলেও আপনি সেটাকে পুনরুদ্ধার করে কাজ করতে পারবেন। অন্যথায় আপনার পক্ষে আপনারা কী বা একাউন্ট ফিরে পাওয়া সম্ভব হবেনা। তাই মালিকানা দাবি করতে হলে দলিল যেমন প্রয়োজন সেরকমই এই কী আপনার দলিল। এক নজরে দেখে নেয়া যাক এই কী দিয়ে আপনি কি কি করতে পারবেনঃ
- উনার, এক্টিভ ও পোস্টিং কী রিসেট করতে পারবেন
- একাউন্ট রিকভার করতে পারবেন
- ভোটিং অধিকার প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন।
মেমো কীঃ
আপনি যদি কোনো প্রাইভেট মেসেজ পাঠাতে বা পেতে চান এবং যেটাকে কোন একটা সংকেতে পরিবর্তন করে পাঠাতে চান এবং পরবর্তীতে ওটা দেখতে চান তাহলে এই কী দরকার হবে। এটার ব্যবহার খুব সীমিত পর্যায়ে তাই বিস্তারিত আলোচনার দরকার নেই। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এই কী সম্বন্ধে খুব বেশি জানাটা জরুরী নয়।
- এনক্রিপ্ট করা মেসেজ পাঠাতে
- কোন এনক্রিপ্ট করা মেসেজ দেখতে
বিস্তারিত জানতে Steemit Wallet FAQ সেকশন ঘুরে আসতে পারেন।
মাস্টার পাসওয়ার্ডঃ
মাস্টার পাসওয়ার্ড আপনার অ্যাকাউন্টের সবচেয়ে সেনসিটিভ কী যেটি আপনি একাউন্ট খোলার সময় পেয়ে থাকেন অথবা আপনি নিজে জেনারেট করে থাকেন। আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড কখনোই কাউকে দিবেন না। উপরে আলোচিত সবগুলো কী মূলত তৈরি হয়েছে আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড এর ভিত্তিতে। তাই মাস্টার পাসওয়ার্ড দিয়ে সবগুলো কী এর কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব।
একটা ছোট্ট উদাহরণ দিচ্ছি তাহলে ব্যাপারটা বুঝতে সহজ হবে। দাবা খেলায় দেখতে পাবেন কিস্তি বা নৌকা দিয়ে সোজাসোজি ডানে-বামে যতদূর ইচ্ছা চলাফেরা করা যায় আবার হাতি দিয়ে কোনাকুনি যে কোন দিকে আপনি যত ইচ্ছা চলাফেরা করতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রী দিয়ে আপনি সব দিকে যতদূর ইচ্ছা ততদূর আগাতে পারেন।
এখানে যদি মাস্টার পাসওয়ার্ড এর কথা বলি তাহলে আপনি ঘোড়ার কাজও এটা দিয়ে করতে পারবেন অর্থাৎ এই মাস্টার পাসওয়ার্ড আপনার সবগুলো কী এর মাথা। তাই আপনার জন্য সবচেয়ে সেনসিটিভ এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড কে খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করা।
পূর্বে যেগুলো আলোচনা করেছি সেগুলো হচ্ছে কী আর এখন যেটা আলোচনা করলাম সেটা হচ্ছে পাসওয়ার্ড । আপনি বুঝতে পারছেন এই দুইটির মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে। সবগুলো কী আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ডের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে তাই আপনার জন্য মাস্টার পাসওয়ার্ড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি মাস্টার পাসওয়ার্ড দিয়ে সবগুলো কী এর কাজই করতে পারবেন।
কীভাবে আপনি আপনার কী গুলো খুজে পাবেনঃ
কী গুলো খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনি স্টিমিট-এ চলে যাবেন এবং স্টিমিট থেকে আপনার ওয়ালেটে যাবেন। আর আপনারা জানেন ওয়ালেটে অবশ্যই অ্যাক্টিভ কী দিয়ে লগইন করতে হয়।
যেহেতু উপরে steemit.com দেখতে পাবেন তার মানে হচ্ছে এটা একটা ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট এখানে আপনি যেকোন ধরনের কী দিতে পারেন যেগুলো সংরক্ষিত থাকবে না। যদি আপনার ব্রাউজার সংরক্ষন করে থাকে তাহলে সেটা আপনার ব্রাউজারের দায়িত্বে আপনি নিজে সেট করে নিবেন।
অ্যাক্টিভ কী দিয়ে লগইন করার পর আপনি যে ইন্টারফেস দেখতে পারবেন তাতে Keys and Permissions ট্যাবে ক্লিক করলেই সেখান থেকে আপনি আপনার কী গুলো একটা একটা করে রিভিল (মানে দেখতে) পারবেন।
চাইলে একটি পিডিএফ ফাইল নামিয়ে নিতে পারবেন যেখানে আপনার এই সবগুলো কী একসাথে দেয়া থাকবে।
আপনি কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেনঃ
অনেকে হয়তো এতক্ষণে খুব ঘাবড়ে গিয়েছেন যে এত এত সিকীউরিটির বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে? এত বিষয় মাথায় রেখে কীভাবে করে এখানে কাজ করব? আমার ওয়ালেট তো যে কোন সময় ফাঁকা হয়ে যেতে পারে। আসলে এখানে ঘাবড়ে যাওয়ার কোন ব্যাপার নেই বরং আপনাকে সাবধান হতে হবে। কিছু বিষয় সবসময় মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। আমি সেরকম কিছু বিষয়কে সংক্ষেপে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
প্রথমত, আপনি যে ব্রাউজার থেকেই আপনার ওয়ালেট-এ প্রবেশ করুন না কেন সব সময় আপনি আপনার পোস্টিং কী ব্যবহার করে কাজ করবেন। যেহেতু আপনি সোশ্যাল কাজগুলো সবসময় করবেন তাই আপনার জন্য পোস্টিং কী ব্যবহার করাই যথেষ্ট। আর যদি কখনো আপনার ওয়ালেট এর কাজ করতে হয় বা ট্রানজেকশন করতে হয় তাহলে আপনি যেকোন একটা স্পেসিফিক ডিভাইস থেকে একটা ট্রাস্টেড ব্রাউজার দিয়ে লগইন করবেন আবার কাজ শেষে লগআউট করে বেরিয়ে যাবেন। আপনি পারতপক্ষে কোথাও এক্টিভ কী ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। আপনার যাবতীয় প্রায় সব কার্যক্রম আপনি পোস্টিং কী দিয়ে সম্পন্ন করতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত, আপনার যে কী গুলো রয়েছে সেগুলোকে আপনি কখনোই আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে রাখবেন না। কারণ আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার যদি হ্যাক হয় অথবা কারো নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাহলে সে কিন্তু আপনার এই কী বা পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবে। মনে করুন, আপনি একটা পিডিএফ ফাইল হিসাবে এই কী-গুলো আপনার কম্পিউটারে কিংবা মোবাইল ফোনে রেখে দিলেন এবং আপনার মোবাইল ফোনটি কোন কারণে হারিয়ে গেল, চুরি হলো বা ছিনতাই হলো। তখন কিন্তু আপনার ফোনটা যার কাছে যাবে সে এই কীগুলো ব্যবহার করে যাবতীয় কাজ করে ফেলতে পারবে। তাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে আপনি অনলাইনে যেকোন ট্রাস্টেড জায়গায় একটি ব্যাকআপ রাখবেন পাশাপাশি আপনার বাসার খাতায় বা কোন একটা সুরক্ষিত জায়গায় আপনি এটাকে খুব ভালো ভাবে লিখে রাখবেন (যেমন আপনার ডায়েরিতে কিংবা অন্যকোন সুরক্ষিত জায়গায়)। আর খেয়াল করবেন সবগুলো পাসওয়ার্ড এক জায়গায় না লিখে রেখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্নটা (মাস্টার পাসওয়ার্ড) কে অনেক সুরক্ষিত জায়গায় রেখে তারপর উনার, তারপর অ্যাক্টিভ কী কে সুবিধা মত ব্যাকআপ রেখে রেখে সংরক্ষিত করবেন। আপনি সব সময় গুরুত্ব দেবেন মাস্টার পাসওয়ার্ড, উনার কী তে।
তৃতীয়ত, কোন সাইটে কী দেওয়ার সময় অবশ্যই অ্যাড্রেস বার একটু ভাল করে খেয়াল করবেন কারণ যারা ফিশিং(Phishing) করে কিংবা আপনার পাসওয়ার্ড চুরি করতে চায় তারা আপনাকে একই রকম একটা ইন্টারফেস দেখায় যেটা দেখতে একেবারে স্টিম লগ ইন এর মত। স্টিম লগইন (steemlogin) এ গেলে যেরকম ইন্টারফেস আপনার সামনে আসার কথা ছিল সেই রকম একই ইন্টারফেস তারা বানিয়ে আপনার সামনে দেখাবে এবং আপনার কাছে মনে হবে আপনি স্টিম লগইন এই পাসওয়ার্ড দিচ্ছেন। তাই আপনি অ্যাড্রেস বার অবশ্যই খেয়াল করে নিবেন যে আপনি যেই সাইটে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন সেই সাইটের এ্যাড্রেস কীনা।
চতুর্থত, ব্রাউজারের সেটিংস এ গিয়ে সব সময় আপনি দেখে নেবেন আপনার পাসওয়ার্ড জমা থাকছে কিনা। মাঝে মাঝে ক্যাশ অথবা কুকীজ এগুলো ডিলিট করে দিবেন এবং আবার নতুন করে কাজ শুরু করবেন। বিভিন্ন এক্সটেনশন বা প্লাগিন দিয়ে অনেক সময় পাসোয়ার্ড চুরি করা হয়। তাই কোন ট্রাস্টেড উৎস ছাড়া এক্সটেনশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। অপ্রয়োজনীয় এক্সটেনশন গুলোকে রিমোভ বা ডিজেবল করে রাখতে পারেন। এরপরেও যদি কোনো ফিশিং লিংক দেখতে পান সেখানে অবশ্যই ক্লিক করা থেকে বিরত থাকবেন। তারপরেও কোন স্পাই সফটওয়্যার অর্থাৎ স্পাইওয়্যার আপনার ব্রাউজিং অ্যাক্টিভিটি মনিটর করে থাকে তাহলে আপনার জন্য এটি দুর্ভাগ্য কারণ আপনার সমস্ত কার্যক্রম যেহেতু সে দেখছে সে তো আপনার পাসওয়ার্ড যেকোনো এক সময় দেখে নিতে পারবে। আর এজন্য অযাচিত সাইট এবং লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকলে এ অসুবিধা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। অপ্রয়োজনে ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ রাখবেন।
পঞ্চমত, স্টিম-লগইন এবং কীচেইন এই দুটি হচ্ছে ট্রাস্টেড সাইড যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারেন। এই সাইট গুলোতে আপনার পাসওয়ার্ড স্টোর থাকে না তাই এখানে আপনি নির্দ্বিধায় আপনার পাসওয়ার্ড বা কী দিতে পারেন। এখানে প্রথমবার আপনাকে শুধুমাত্র কী দিতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনি নিজের মতো করে একটা পাসওয়ার্ড করে সে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আপনার কাজগুলো চালিয়ে নিতে পারবেন। এই দুইটির ব্যবহার নিয়ে আমি বিস্তারিত টিউটোরিয়াল দেবো সেগুলো আপনারা দেখে নিলে আশা করি এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
ষষ্ঠত, আপনার রিকোভারি একাউন্টটা ঠিকঠাক আছে কীনা সেটি দেখে নেবেন। আমি রিকভারি এবং পাসওয়ার্ড পরিবর্তন নিয়ে একটি টিউটোরিয়াল দিব যেটি দেখলে আপনি এই বিষয়টা তে একটা ভাল ধারণা পাবেন, আশা করি।
সর্বশেষ, যে বিষয়টি তা হল, আপনি আপনার ওয়ালেট এ কোন লিকুইড steem বা SBD রাখবেন না বরং সেটাকে পাওয়ার আপ করে রাখবেন । যদি লিকুইড রাখতে চান তাহলে সেভিংস ওয়ালেটে রাখবেন যেখানে থেকে ইউথড্র দিতে তিন দিন লাগবে। কেউ যখন পাওয়ার ডাউন দেবে কিংবা সেভিংস থেকে সরাতে চাইবে তখন আপনি নোটিফিকেশন বা একটিভিটি চেক করে দেখে নিতে পারবেন। তাই আপনার পক্ষে জানা সম্ভব হবে আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ পেয়ে গেল কিনা।
এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে আপনি হয়তোবা আপনার যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন এবং আপনার অ্যাকাউন্ট ও কী সুরক্ষিত রাখতে পারবেন । তারপরও আপনাদের যদি নতুন কোনো পরামর্শ থেকে থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই এখানে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমি পোস্ট এডিট করে সেটা যুক্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করব।
শেষ কথাঃ
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে আমরা দিন দিন আধুনিক হচ্ছি এবং আমাদের কাছে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। আমাদের আসলে প্রযুক্তি থেকে ভয় না পেয়ে বরং প্রযুক্তির ভালো খারাপ দিকগুলো জেনে বুঝে প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। তাই আমরা টেকনোলজির সাথেই থাকব এবং কাজ করার ক্ষেত্রে জেনে-বুঝে সাবধান হয়ে কাজ করব যাতে করে আমাদের অনেক পরিশ্রম নিমিষেই ব্যর্থ হয়ে না যায়। সবার জন্য শুভকামনা রইল এবং আপনারা এখানে ভালোভাবে সুরক্ষিত থেকে কাজ করুন এই প্রত্যাশা রেখে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
শিক্ষামূলক সিরিজে আমার লিখা পূর্বের লিখাগুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ।
শিক্ষামূলক সিরিজে আমার লিখা পূর্বের পোস্টের তালিকাঃ
এই পোস্টের লিখা কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। কোন তথ্য বা ছবি অন্য কোন উৎস হতে নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য এখানে দিয়েছেন যেগুলো আমাদের জন্য অনেক জরুরী। যেটাকে আমরা অনেক সময় ধারণা থেকে হারিয়ে রাখি। এই সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একাউন্ট এর নিরাপত্তা নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর ভাবে পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন এটা সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।আপনি সকল কি গুলোর নিরাপত্তা নিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।আমাদের সকলের ব্যাক্তিগত কি গুলো নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।কেননা সতর্কতাই হলো হলো প্রধান সিকুরিটি🤖।
অনেক ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া, কখনো কেউ যদি স্টিমিটের "কী" গুলো জেনে যায়। তাহলে যে জেনে গেছে, তার আগে ওনার কী দিয়ে স্টিমিট একাউন্টের পুরো কীগুলো পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব।
আর বাকি সব তথ্যগুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালোবাসা অবিরাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
উপরে উনার কী সহ হারিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি। পরে উনার কী দিয়ে রিকভারির ব্যাপারটিও ব্যাখ্যা করেছি। আপনার জন্যও ভালবাসা ও ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বরাবরের মতই শিক্ষনীয় এবং অসাধারণ।
আমাদের সবার জন্যই পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আসলে বলা যায় অনেকটা অপেক্ষায় থাকি আপনার পোস্টের।
সত্যিই অসাধারণ। দোয়া রইলো এগিয়ে যান।
ঠিক পাশেই রয়েছি 💗
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পড়ে। আপনি আমার এই সিরিজের পোস্টের অপেক্ষা করেন, এটা অনেক বড় বিষয় আমার জন্য। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সবার পূর্বে আমাদের নিজের একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা অনেকেই এই বিষয়ে অজ্ঞ। না জেনে আমরা অনেক ভূল ভাল লিংকে ডুকে পড়ি যা আমাদের একাউন্টের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। খুব ভালো এবং আমাদের জন্য শিক্ষনীয় একটি টিউটোরিয়াল নিয়ে আজ আপনি লিখেছেন ভাই। আপনার জন্য শুভকামনা। এইরকম আরও টিউটোরিয়াল শেয়ার করতে থাকুন।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভবিষ্যতে আরো শেয়ার করার চেষ্টা করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন উদ্যোগ।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি মনে করি, যে কোনো বিষয়ে, আগে নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করা উচিত। স্টিমাইটের অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিয়ে আপনার আজকের পোষ্টটা আমাদের সবার জন্য,খুবই উপকারি এবং জেনে রাখা একটা পোষ্ট। আমার ব্যক্তিগত ভাবে পোষ্টটা থেকে অনেক কিছু ক্লিয়ার হলাম। আপনার সকল টিউটোরিয়াল পোষ্টগুলোই অসাধারণ হয়ে থাকে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।আর এভাবেই বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয় আমাদেরকে জানাতে থাকুন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে ক্লিয়ার করতে পেরে ভাল লাগছে। ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
You have been upvoted by @sm-shagor A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.
Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject
There are also various contest is going on in steemit, You just have to enter in this link and then you will find all the contest link, I hope you will also get some interest,
For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি সিকিউরিটির এর দিক থেকে নিজেই ভুক্তভোগী। আমার আগের একাউন্টের সব ডিটেইলস আমি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এর মধ্যে সেভ করে রেখেছিলাম। কিন্তু তা নষ্ট হওয়ার কারণে এখন আমি পূর্বের একাউন্টে কাজ করতে পারছিনা। খুব কষ্ট লাগছে কেননা এটি ২০১৭ এর দিকে চালু করেছিলাম। আর এখনকার মত তখন একাউন্ট এপ্রুভ করা অনেক টাফ ছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সম্পূর্ণ পস্টটি চার বার পড়েছি। এই পোস্ট থেকে অনেক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব ।প্রয়োজনে আরও পাঁচ বার পড়ব তাও শিখবো ইনশাআল্লাহ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ। আপ্নি খুব চমৎকার ভাবে জ্ঞানার্জন করছেন। আগামী ক্লাশে প্রশ্ন করিয়েন তাইলে অন্যদেরও ক্লিয়ার হয়ে যাবে। ধন্যবাদ। শুভকামনা ভাই। আপ্নি ভাল করবেন এখানে আশা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট ধন্যবাদ সাইফুল ভাইকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit