নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "ইফতার পার্টি"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।আবার কিছু মিষ্টি স্মৃতি ফিরে পেতে চাই বারেবারে।আবার কিছু স্মৃতি সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ দেয়,তেমনি একটি আমার শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
আমি তখন ছোট,একেবারেই ছোট তা ঠিক বলা চলে না।
আমার বাড়ির পিছনে হাইস্কুল।দিনের বেলা স্কুল শেষ করে বাড়ি ব্যাগ-বই রেখেই বিকেলে খেলাধুলা সেরে বাড়ি ফিরতাম।তারপর হ্যারিকেনের মধ্যে কেরোসিন ভরে কাঁচ পরিস্কার করে বইখাতা গুছিয়ে নিতাম।এবারে হাতে হ্যারিকেন ঝুলিয়ে বইখাতা নিয়ে চলে যেতাম স্কুলবাড়ি।যারা দূরে থাকতো তাদের যাওয়া আসার দৃশ্যটি ছিল দেখার মতো।কারন রাতে আমরা নাইট স্কুলে পড়তাম,গ্রামের দূর-দূরান্ত থেকে ছেলে-মেয়েরা পড়তে আসতো।
কিছুজন রাতেই পড়া শেষ করে বাড়ি ফিরে যেত তাদের বাবার সঙ্গে।আর কিছু ছেলেরা স্কুলের ক্লাস রুমে থেকে যেত।তারা বাড়ি থেকে আসার সময় ভাত ,বিছানা ও কাথা-বালিশ নিয়ে আসতো।অবশ্য কাঁথা-বালিশ একবার নিয়ে আসতো,আর সারাটা বছরই থাকতো একটি নির্দিষ্ট ক্লাসরুমে।যদিও ঠিক মতো সংখ্যা মনে নেই, তবুও আমরা প্রায় 50-60 জন ছেলেমেয়েরা পড়তাম এই নাইট স্কুলে। এর মধ্যে কয়েকজন ছিল মুসলিম ছেলে।
সন্ধ্যায় আমরা সকলের ধর্ম অনুসারে প্রার্থনা করে পড়তে বসতাম,তারপর টানা পড়া চলতো।বাড়ি থেকে সবাই লুন্ঠন হাতে করে নিয়ে আসতো, কারন কারেন্ট চলে গেলে ওটাই সম্বল।তাছাড়া গ্রামের মধ্যে স্কুলবাড়িতেই শুধুমাত্র কারেন্টের ব্যবস্থা ছিল তখন।তো রোজার সময় ওই ছেলেগুলো রোজা রাখতো, তাই সন্ধ্যার সময় তাদের রোজা ভাঙতে হতো।মাঝে মাঝেই আমরা সকলের কাছ থেকে টিফিনের টাকা জড়ো করে মুড়ি,চানাচুর এবং পেঁয়াজু কিনে নিয়ে আসতাম।তারপর একসঙ্গে মেখে সবাই মিলে জমিয়ে খাওয়া হতো স্কুলের মাঠে বসে,সকল ক্লাসের ছেলে-মেয়েরা সেখানে ছিল।কিন্তু রাতে পড়ার সময় আলাদা আলাদা ক্লাস ভাগ ছিল।আবার কখনো যিনি আমাদের পড়াতেন তিনি একাই টাকা দিয়ে ইফতার পার্টির ব্যবস্থা করে দিতেন।রাতের ফুরফুরে উত্তরের হাওয়ায় বসে আমরাও ইফতারে অংশ নিতাম তাদের সঙ্গে, খুবই মজা হতো সেই দিনগুলো।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টাস্ক প্রুফ:
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তুমিও পিঁয়াজু বলছো! আমরা ভারতীয়রা তো পেঁয়াজি বলে থাকি। হা হা হা। আর সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে থাকাই যেকোনো দেশের কাছে কর্তব্য। আমিও বহুবার ঈদের নিমন্ত্রণ রক্ষা করেছি বা বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার পার্টিতে গিয়েছি। আবার তারাও আমাদের সঙ্গে দুর্গাপূজায় আনন্দে বেঁধে উঠেছে। এভাবেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলে একসঙ্গে পথ চলা ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অঙ্গ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমিও পেঁয়াজি বলি দাদা,☺️তবে টাইপিং করার সময় ওই বানানটি সহজেই আসে দেখবেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামতের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
"ইফতার পার্টি" শৈশবের স্মৃতিতে একটি বিশেষ স্থান দখল করে। এই সময়টি পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সাথে একত্রে উপভোগ করার একটি সুযোগ ছিল। ইফতারের জন্য অপেক্ষা করা, বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের গন্ধে মন ভরে যাওয়া এবং সবাই মিলে ইফতার করার আনন্দ সত্যিই অতুলনীয়। এই স্মৃতিগুলো শুধু ধর্মীয় আনন্দই নয়, সামাজিক বন্ধনও মজবুত করে। ইফতার পার্টির মাধ্যমে আমরা শিখেছি কিভাবে ভাগ করে নেওয়া যায় এবং একে অপরের প্রতি যত্নশীল হতে হয়। এই স্মৃতিগুলো আজও হৃদয়ে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। ধন্যবাদ আপু আপনাকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য,ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের এখানে যদিও নাইট স্কুলের ব্যবস্থা নেই। তবে আপনি ছোটবেলায় নাইট স্কুলে পড়াশোনা করেছেন শুনে খুবই ভালো লাগছে। আর সেই সময়ে যারা মুসলিম ছিল তারা ইফতার করত এবং সবাই মিলে পার্টি করে ইফতার করতেন সেটা শুনে খুবই ভালো লাগছে। আসলে মধুর স্মৃতিগুলো হয়তো আর কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। স্মৃতির পাতায় এগুলো খুব সুন্দর ভাবে লিপিবদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কোন কোন স্মৃতি যেমন মনে করতে ইচ্ছে করে না তেমনই কিছু স্মৃতি মনে পরলেই মনে হয় আবার যদি ফিরে পেতাম সেই দিন গুলো। তেমনই হলো শৈশবের স্মৃতি গুলো। ছোটবেলায় নাইট স্কুলের স্মৃতি এবং সেই সাথে সকলে মিলে ইফতার খাওয়ার স্মৃতি গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আমরাও ছোট বেলায় সব বন্ধুরা মিলে পুজা দেখতে যেতাম। বেশ আনন্দ করতাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের ইফতার পার্টির গল্পটা দারুন লাগলো দিদি।আমরাও মাঝে মাঝে ইফতার পার্টি করে থাকি। আমি যেহেতু মেসে থাকি এখানে বেশিরভাগ সহপাঠীরাই মুসলিম। তারা রোজা রেখে সন্ধ্যার সময় রোজা ভাঙ্গে। সে সময় আমরা সবাই মিলে একসাথে বসে খাবার খাই। সবাই মিলে একসাথে বসে খাবার খেতে বেশ ভালো লাগে। আপনার শৈশবের রঙিন স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit