নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "ভূতের ছায়া"
(কলেজ মেকার দিয়ে তৈরি)
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে আজকের বলা শৈশবের অনুভূতিগুলি একটু ব্যতিক্রম।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার শরীর শিউরে ওঠে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
কনকনে শীত পড়তে শুরু করেছে, উত্তরের হাওয়া জমিয়ে বইছে শাঁ শাঁ শব্দে।ফসলের মাঠে নতুন ধানের চারা গাছগুলো গজিয়ে উঠেছে।সারা মাঠ নতুন করে চাষ করতে শুরু করেছে।দিনের মিষ্টি রোদ্দুর শেষ হয়ে কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে প্রকৃতি।মনে হয় যেন, জোনাকি পোকাগুলি শীতের রাতে লম্বা নিঃশ্বাসে ঘুম দিচ্ছে সাড়া-শব্দ ছাড়াই।
আমাদের বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে শশ্মান।শশ্মানের পাশে রয়েছে তাল বাগান, ভূতের দল যেন নৃত্য করে সেই তাল গাছের মাথায়।সন্ধ্যার পর খুব কম মানুষ চলাফেরা করে সেখান থেকে।অনেকেই ভয় পায় আবার অনেকেই পেটের দায়ে সাহস করে পাশ কাটিয়ে চলে।আমি কিন্তু ভূতের ভয় পাই না, কিন্তু হ্যাঁ, মানুষ নামের দুপেয়ে জন্তুর ভয় ঠিক করি।
একদিন জানতে পারলাম পাশের বাড়ির লোকটি কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় নাকি ভয় পেয়েছে।তাতে আবার তার জ্বর হয়েছে।এর কিছুদিন পর তাদের এক বুড়ি আত্মীয় মারা যায়,কয়েক দিন ধরে তার শ্রাদ্ধকাজের সমস্ত কিছু সম্পন্ন হয়ে যায়।ওই লোকদের সঙ্গে কারোর-ই তেমন পড়ে না, আমাদের সঙ্গেও কথা হয় না।যাইহোক সেই লোকের বউকে দেখলাম হঠাৎ একজন ঝাড়াতে এসেছে,আত্মীয়ের বাড়ি শ্রাদ্ধের খাওয়া খাওয়ার পর নাকি ভয় পেয়েছে পেটে ব্যথা শুরু হয়েছে।জল পরা ,ঝাড়-ফুঁক ইত্যাদি করলো টানা তিন দিন ধরে, যদিও আমি ছোটবেলায় এগুলো খুব বিশ্বাস করতাম।
এখন আর এতটা করিনা,যাইহোক বাইরে চাঁদের আলো।তাই আমি লাইট না জ্বালিয়ে উঠানে গেলাম,গাছের ডাল ও পাতার ছায়া উপচে পড়ছে উঠানের কোণে কোণে।ওই বাড়ির উঠানে আলো জ্বলছে।আমি ওদিকে তাকাতেই দেখলাম আমাদের ঘেরার গা ঘেঁষে একটি বড় কালো ছায়া নিমেষের মধ্যে বাড়ির ভিতর থেকে রাস্তার দিকে দৌড়ে চলে যাচ্ছে।যেমন দমকা হাওয়া নিমেষের মধ্যে বয়ে চলে তেমনি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ছায়া চলে গেল চোখের পলক পড়তে না পড়তেই ।ব্যাপারটি কি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি ভালোভাবে ঘেরার গা ঘেঁষে লক্ষ্য করলাম স্থির দাঁড়িয়ে গাছের ছায়াতে।প্রথমবার মনে করলাম,হয়তো আমি ভুল দেখেছি।কিন্তু আবার দেখলাম একটি বড় কালো ছায়া বাড়ির ভিতর থেকে দৌড়ে রাস্তার দিকে ছুটে যাচ্ছে ঘেরার গা ঘেঁষে, যেটা অনেকটা বড় মানুষের ছায়ার প্রতিবিম্বের মতোই।আমি ভাবলাম না আমি ভুল দেখিনি,ওটা আসলে কি ছিল!ওটা কি ভূতের ছায়া ছিল?
এইসব আজগুবি চিন্তার মধ্যে মনে পড়লো দুইদিন আগে ওই বাড়ির বউ ভয় পেয়েছে, কিছু তো একটা গন্ডগোল আছে।তখন রীতিমতো আমার দুই পা কাপতে শুরু করেছে, মনে অফুরন্ত সাহস।কিন্তু শরীর শিউরে উঠছে বারেবারে ছায়াটির চিন্তায়।তখন আমি অনুভব করলাম, আমি কি ভয় পেতে শুরু করেছি!সেদিনের পর থেকে এখনো আমার মন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় ওই কালো রঙের বড় ছায়াটির জন্য।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং: "শৈশবের গল্প" |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টাস্ক প্রুফ:
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার শৈশবের এই গল্পটি সত্যিই ভয় ও কৌতূহলের মিশ্রণ ঘটেছে। কালো ছায়ার উপস্থিতি, শশ্মানসংলগ্ন বাগান, এবং সেই রহস্যময় মুহূর্তগুলো মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। আপনার বর্ণনা পড়তে পড়তে যেন সেই শীতের রাতে আমরা নিজেও সেই অদৃশ্য ছায়ার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। খুব সুন্দরভাবে আপনার অনুভূতি শেয়ার করেছেন, ধন্যবাদ দিদি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit