বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প:"সাঁকো পার"

in hive-129948 •  last month  (edited)

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।এইজন্য আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি শৈশবের বাস্তব গল্প শেয়ার করতে।

বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প:"সাঁকো পার"

pexels-photo-14022178.jpeg
সোর্স

আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে শৈশবের ঘটনাটি আমার সঙ্গে ঘটেনি ঘটেছিল আমার ছোট কাকার ছেলের সঙ্গে।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার হাসি পায়।তাই সেই ছেলেটির শৈশবে ঘটা ঘটনাটি শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক এই গল্পের মূল কাহিনীতে--

সময়টা ছিল বর্ষাকাল।বৃষ্টি হলেই গ্রামে কাঁদা জমে।মানুষ যাতায়াতের জন্য সাঁকো তৈরি করে ছোট -বড়।তো এক বিকেলে কাকাদের বাড়ি খেলতে গিয়ে দেখলাম।আজ কেউ খেলবে না কারন আজ কাকার ছেলেমেয়ে তার মায়ের সঙ্গে পাশের এক দাদার বাড়ি যাবে গল্প -গুজব করতে।আসলে গ্রামে বিকেল হলেই এমন হয়েই থাকে।তো আমিও বললাম চল, আমিও যাবো তোমাদের সঙ্গে।তারপর আর কখনো যাওয়া হয়নি তাদের সঙ্গে কোথাও।তো সম্পর্কে আমার দাদা হলেও ওই দাদার বয়স কিন্তু আমার বাবার থেকে বড়।আর তার দুটি ছেলেমেয়েরাও আমাদের থেকে অনেক বড়।আসলে আমরা একই গোষ্ঠীর হলেও আলাদা ডালের আরকি!

তো কাকিমা গিয়ে সেই বাড়ির বৌদির সঙ্গে গল্পের আসর বসালো।আমরা ছোটরা উঠানে সময় কাটাচ্ছিলাম খেলাধুলা করে।এভাবে কখন জানি বিকেল ফুরিয়ে এসেছে।পাখিরা ঘরে ফিরে যাচ্ছে আর গরুরা ফিরছে তার নিজস্ব বাসস্থান মালিকের গোয়ালঘরে।তো কাকিমা কথা শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে উঠে পড়েন সঙ্গে আমরাও।তখন ওদের যাতায়াত করা সাঁকোর কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।আমি প্রথমে পার হয়ে ক্যানেলের ওপাশে চলে যাই।আসলে ওই ক্যানেলের উপর দিয়েই ওরা চলাচল করে।

আমাদের বাড়ির সাতটা মেয়ের মধ্যে যেমন আমি ছোট তেমনি ছেলেদের মধ্যে ছিল ওই কাকার ছেলে ছোট।আমি সাঁকোটি খুব ভালোভাবে পার হয়েছি।যদিও সাঁকোর গায়ে কাঁদা ছিল আর তা পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিলো।তখন কাকার ছেলে বললো আমিও সাঁকো পার হতে পারি।তার একটু আগেই কাকীর ফোনে কে জন্য কল দেয় আর কাকিও সেখানে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যায়।এটা বলেই সাঁকোর উপর উঠে পড়লো কিন্তু যদি পড়ে যায় তাই তার দিদি ওকে নীচে নামিয়ে নিলো।কিন্তু কোনোকথায় কাকার ছেলে না শুনে আবারো সাঁকোর উপর দাঁড়িয়ে পার হওয়ার বাহানা করলো--ততক্ষনে কাকীর কথা বলা শেষ।

আমরা অনেকবার তাকে মানা করছি তুই পারবি না ,পারবি না।ও ততবারই বলছে ,এই দেখ আমি সাঁকো পার হওয়া শিখে গেছি।এভাবে অনেকক্ষন চেষ্টার পর যখন কাকার ছেলে সাঁকোর মাঝ অব্দি পৌঁছে যায় তখন হাত ছাড়িয়ে পা পিছলে সরাসরি ধপাস করে ক্যানেলে গিয়ে পড়ে।যেহেতু ও অনেক ছোট তার উপরে সাঁতার জানে না।তাই সঙ্গে সঙ্গে জলের মধ্যে ভুট হয়ে ভেসে ওঠে।যেই না কাকার ছেলে ক্যানেলে পড়ে যায় অমনি কাকিমা লাফ দিয়ে পড়ে তাকে বাঁচাতে।তারপর কাকার মেয়েও একই সঙ্গে জলে লাফ দেয়।সবাই মিলে ছেলেটাকে তুলে উপরে তার পেট চেপে জল বের করে দেয়।তারপর ছেলেটি কান্নাকাটি শুরু করে,কাকিমাও ফের ওকে পিঠে দুই ঘা বসিয়ে দেয়।ছেলেটি যাতে আর কখনো এমন জেদ না করে সাঁকো পার নিয়ে, তা সতর্ক করে দেয়।তবে বেশ উৎসাহ নিয়ে যে ও সাঁকো পার হচ্ছিলো সেটা বলাই যায়।সেই জলে পড়ার স্মৃতিটি এখনো আমার মনে ভাসে।।


আশা করি আমার আজকের গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং: শৈশবের গল্প
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Thanks.

অনেক দিন পর মনে হলো নিজের শৈশবের সেই আনন্দময় স্মৃতিতে ফিরে গেলাম, ভালো লেগেছে আমার কাছে আপনার আজকের শৈশবের গল্পটি। ধন্যবাদ

আসলেই ভাইয়া,যদিও আমি আপনার থেকে অনেক ছোট তবুও আমাদের মধ্যে গ্রামে বেড়ে ওঠার শৈশবের হাজারো মিল খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।যেটার লক্ষণ এখনকার সময়ে বিন্দুমাত্র চোখে পড়ে না, যেটা ভাবলেই কান্না পায়।আপনার কাছে ভালো লেগেছে আমার লেখা গল্পটি এতে আমার লেখা সার্থক ভাইয়া,অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।।

সুন্দর হয়েছে

ধন্যবাদ।

ছোটবেলায় আমি যখন গ্রামে থাকতাম তখন এরকম প্রচুর সাঁকো পার হয়েছি। আসলে ওই সময় গ্রামের রাস্তা কাঁচা থাকত এবং বৃষ্টির সময় কাদা কাদা হয়ে যেত, তখন যারা সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করতো তারা যেহেতু ঐ কাদা পায়ে উঠতো এজন্য অনেকটা পিচ্ছিল হয়ে যেত সাঁকো। আর এই কারনে প্রচুর এক্সিডেন্ট হয়েছে। আমি অনেকবার দেখেছি যে সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেকে পা পিছলে জলের ভিতর পড়ে গিয়েছে। তারপর সে এক ঝামেলার কাণ্ড ঘটে যেত। যাই হোক, তোমার গল্পটা পড়ে আমার সেই কথাগুলোই মনে পড়ে গেল বোন আজকে।

হ্যাঁ দাদা,আগে অনেক সাঁকো ব্যবহার করতো মানুষ।এখন রাস্তা অনেকটা উন্নত হওয়ার সাঁকোর পরিমাণ কমেছে।তোমার অনুভূতি পড়ে ভালো লাগলো, এমনটাই ঘটতো আমাদের সঙ্গে ও।