নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "স্বরস্বতী পূজা"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে আজকের বলা শৈশবের অনুভূতিগুলি একটু ব্যতিক্রম। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
ছোটবেলায় অনেক স্মৃতিই রয়েছে এই স্বরস্বতী পূজাকে ঘিরে।তো তার মধ্যে একটি হচ্ছে আমি তখন বেশ ছোট।গ্রামে একজন বৌদির নতুন বিয়ে হয়েছে, তাই তার অনেক শাড়ি রয়েছে।স্বরস্বতী পূজাতে শাড়ি পড়বো বলে গ্রামের একটি দিদি ও আমি গেলুম তার কাছে।তারপর নিজেদের পছন্দ মতো দুটি শাড়ি পছন্দ করে নিয়ে আসলাম, পূজাতে পড়বো বলে।আমার সঙ্গে যে ছিল সে আমার এক বছরের বড়।শাড়ি পড়তে পারি না তাই ওই দিদির মা আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবে বলেছিলো।তো পূজার যেন তর সইছিল না,কখন ভোর হবে সেই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
ভোর হলো,স্নান সেরে চলে গেলুম ওই মেয়ের বাড়ি।মেয়েটির মা তাকে শাড়ি পড়িয়ে দিচ্ছে।বাড়ির পাশেই আমাদের স্কুল।আর স্কুলের পূজা শুরু হয়ে তখন অঞ্জলী শুরু হবে হবে---।তখন পরিস্থিতি এমন হলো যে, তড়িঘড়ি করে নিজেকেই পড়তে হবে শাড়ি।আমার শাড়িটা বেশ ভারী ও সরসরে টাইপের।তাই একা পরা খুবই চাপের ছিল তবুও আমি নিজে কোনোরকমে পড়ে নিলুম।
শাড়ি পড়ে স্কুল মাঠে আসতেই আমার ক্লাসের একটি মেয়ের সঙ্গে দেখা হলো।সেও স্কুলের পূজাতে এসেছে,কয়েকদিন আগেই তার বিয়ে হয়েছে নতুন।আমার থেকে কিছুটা বড়-ই হবে,যাইহোক সে আমার শাড়িটা একটু ঠিক করে দিলো আগের চেয়ে।তখন ভাবলাম বাড়ি থেকে পরে আসলেই ভালো করতাম।যাইহোক আমাদের সঙ্গে আরো দুজন জুটলো, স্কুলের পূজা শেষ করে কয়েকজন মিলে ঠিক হলো কলেজের পূজা দেখতে যাবো।কলেজের খোলা মাঠে পূজা হয়,তাই প্রসাদ খেতে পাবো।তাছাড়া আমার জেঠুর প্রতিষ্ঠিত কলেজ তাই সবই চেনা।পূজার প্রসাদ খেতে কি যে ভালো লাগে আমার,বলে বোঝানো যাবে না।কলেজ আমাদের বাড়ি থেকে 15-20 মিনিটের রাস্তা।
সবাই মিলে সেখানে গিয়ে জানতে পারলুম পূজা শেষ,তখন আমার অন্য বান্ধবীরা প্রসাদ নিতে গেল।আমিও ওই গ্রামের দিদিকে বললাম ,চল আগে প্রসাদ নিয়ে আসি।কিন্তু ও বললো--আমার চেনাজানা রয়েছে পরে গিয়ে প্রসাদ নেব।তুই আমার সঙ্গে চলে আয়।আমি তো সহজ-সরলভাবে চলে গেলুম ওর সঙ্গে,তারপর ও আমাকে রাস্তায় দাঁড়াতে বললো।আমিও দূরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলাম।জানি,ওই মেয়েটি নয়া নয়া প্রেম করেছে কিন্তু পূজার দিনে ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করতে যাবে সেটা জানতুম না।বট গাছের নিচে দাঁড়িয়ে কথা বলতেই লাগলো,আমি তো বেশ দূরে রয়েছি তাই না বলে চলেও যেতে পারছি না।
মনে মনে ভাবলুম এর সঙ্গে এসে আমি ভুল করেছি অন্য বান্ধবীর সঙ্গে এতক্ষনে বাড়ি পৌঁছে যেতাম।কারন এই ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই আমার পছন্দ ছিল না, তার উপরে আমার পরিবারের ও বাড়ির আলাদা একটা রেপুটেশন রয়েছে। ছোট্ট মনটি অনেকখানি ভেঙে গেল নানা চিন্তায়,যদিও আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম না।তবুও দূর থেকে দাঁড়িয়ে থাকতে ও কেমন অস্বস্থিবোধ হচ্ছিলো।মনটা তখন ছটফট করতে লাগলো বাড়ির জন্য, কারন অনেকটা দূর পরিকল্পনা ছাড়াই চলে এসেছি বাড়িতে না বলেই।অনেকটা সময় কাটানোর পর মেয়েটি এসে বললো --চল বাড়ি যাই,এখন আর প্রসাদ নিতে যাবো না।কারন প্রসাদের প্যাকেট হাতে দেখিয়ে তবুও দেরিতে বাড়ি ফেরার কারন দেখানো যাবে,সেটাও সম্ভব হলো না।কতটা ধোকা খেলুম ভাবুন,, ছোট্ট মনটি একেবারেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল...।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টুইটার লিংক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Money is not everything. There is an old Arabic proverb that says: Travel a lot and you will live a long life.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টাস্ক প্রুফ:
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit