"বেরিয়ে পড়লাম একটু গ্রাম ঘোরার উদ্দেশ্যে"

in hive-129948 •  3 months ago  (edited)

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।আজ আমি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।আশা করি অনুভূতিগুলি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে।

বেরিয়ে পড়লাম একটু গ্রাম ঘোরার উদ্দেশ্যে:

GridArt_20240701_184632861.jpg

বন্ধুরা,প্রতিনিয়ত আমি ভিন্ন ভিন্ন পোষ্ট করতে ও লিখতে ভালোবাসি।তাই আজ আমি আপনাদের সামনে আবারো উপস্থিত হয়েছি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি অনুভূতি নিয়ে।আসলে অনেক দিন হলো বাড়ি থেকে কোথাও যাওয়া হয় না।শুধুই বাড়ির মধ্যে নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা হয় আর নয়তো কলেজ কিংবা টিউশনি পড়ার সুবাদে মাঝে মাঝেই বাইরে যাওয়া হয় প্রয়োজনে।তো আজ শেষমেষ বেরিয়েই পড়লাম গ্রাম ঘোরার উদ্দেশ্যে।আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে অনুভূতিগুলি।তো চলুন শুরু করা যাক---

IMG_20240701_184700.jpg

আসলে নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে অন্যের বাড়ি গিয়ে বসে বসে গল্প করাটা ততটা পছন্দ নই আমাদের।তবুও মাঝে মাঝেই ঘোরার প্রয়োজন রয়েছে, এতে শরীর ও মন যেমন ভালো থাকে তেমনি সুসম্পর্কও বজায় থাকে।যাইহোক অনেকদিন থেকেই একটু ইচ্ছে ছিল একজন প্রতিবেশীর বাড়ি যাবো।সেখানে যাওয়ার অবশ্য একটি উদ্দেশ্য রয়েছে।উদ্দেশ্যবিহীন ঘোরাফেরা করা আমাদের পছন্দ।নয়।কিন্তু আমার সময় হলে মায়ের সময় হয় না,আবার মায়ের সময় হলে আমার হয়ে ওঠে না।এইভাবে সময় পেরিয়ে যেতে যেতে-ই আজই সময় হলো অবশেষে বৃষ্টির দিনে।

IMG_20240701_184719.jpg

বন্ধুরা, কয়েকদিন আগে আমি আমার একটি পোস্ট আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম।যেখানে একজন প্রতিবেশী বৌদির পায়ে চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছিল।আজ সেই বৌদিকেই দেখতে যাবো বলে বেরিয়ে পড়লাম।যদিও আমাদের বাড়ি থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব এক কিলোমিটার।আসলে এখন যেহেতু মাঠ শুকনো তাই মা আর আমি একটু রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম।কিন্তু কিছুক্ষণ হাঁটার পর আমার জুতা স্লিপ করতে লাগলো,কারন গত দুইদিন বৃষ্টি হওয়ার জন্য ঘাসে জমা জলের বিন্দুগুলি এখনো শুকায়নি।যাইহোক আমরা পৌঁছে গেলাম সেই বৌদির বাড়ি।

IMG_20240701_184838.jpg

বৌদির বাড়ি গিয়েই দেখলুম রান্না করছে আর তার বড় মেয়ে স্কুলে যাবে বলে ভাত রেডি করছে।তার শরীরের অবস্থা জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম, বেশ দুর্বল শরীর এখনো ।অবশ্য তার পায়ে বাইট করেছিলো কিন্তু হাতে বড় ক্ষত দেখতে পেলুম।জিজ্ঞাসা করতেই বললো,ইনজেকশন ও ঔষুধের প্রভাবে এখানে ফুলে ফেঁপে উঠছিল হাতে।যাইহোক প্রথম দিকে হাসপাতাল থেকে তারা তার ননদের বাড়ি ছিল কয়েকদিন।তারপর বাড়ি এসে কাজ করতেই পা ফুলে যাচ্ছিলো বেশি হাঁটলেই।তাই অনেক কষ্টে কাজ করতে হয়, আসলে বেঁচে ফিরেছেন বৌদি এটাই বড় ব্যাপার।

IMG_20240701_184734.jpg

রান্না শেষ করে বৌদি টাইম কল থেকে কিছু বোতলে জল তুলে নিলেন।তারপর আমাদেরকে বার বার ভাত খেতে বলছিলেন, কিন্তু আমরা বাড়ি থেকে ভাত খেয়েই গিয়েছিলাম।তারপর বৌদি কাঁঠাল খেতে দিয়েছিল আমাদের আর বললো পেয়ারা নামিয়ে খেতে।কয়েকটি পেয়ারা নামিয়ে নিলাম,তবে দেখলাম গাছে অনেক ডালিম ধরে রয়েছে।ডালিমের ঝটপট কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম, বৌদি বললেন কেন জানি, সমস্ত ডালিম পোকা হচ্ছে ভিতরে।তাই তুমি পেড়ে ভেঙে দেখো।কিন্তু আমরা বাড়ির জন্য দুটি নিয়ে নিলাম, আসলে বৌদির মন খুবই ভালো।অনেককেই ফলমূল খেতে দেয় ,যাইহোক তারপর বৌদি ভাত খেতে বসলে আমরা চলে এলুম পাশের বাড়ি।আর সেখানেও বিনা প্রয়োজনে যায়নি,অবশ্যই একটি কারণ ছিল।অন্য কোনো পোষ্টে অবশ্যই বলবো আপনাদের সঙ্গে।আসলে একবারে দুই কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা আরকি!

IMG_20240701_113905.jpg

এরপর এক জেঠুর বাড়ি দেখা করে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম, অনেকেই তাদের বাড়িতে ডাকছিলো।কিন্তু দুপুর হয়ে যাচ্ছিলো, মায়ের রান্নার কাজ ছিল বাড়ি ফিরে তাই পিচের রাস্তা ধরলাম।হাঁটতে হাঁটতে মুড়ি কলকারখানার সামনে দুইটি গাছ দেখতে পেলুম।যেগুলো অদ্ভুত সুন্দর দেখতে লাগছিলো।বাতাসে এতটাই দোল খাচ্ছিলো যে অনেক চেষ্টা করেও ঝাপ্সা ছবি।যদিও মাকে ধরতে বলেছিলাম ফুলটি তবুও স্পষ্ট ছবি তুলতে পারিনি।তারপর দেখলাম এমন একটি গাছ,যার ডালে কাধী কাধী সবুজ রঙের ফল ধরে রয়েছে।ফলগুলো দেখতে কখনোখেজুর, কখনো আঙুর,কখনো বা ভিটামিন -ই ক্যাপসুলেরমতো দেখতে লাগছিলো।গাছের পাতা দেখে পাম গাছের মতো লাগলেও ফল দেখে মনে হলো না আমার।ফলগুলো অনেক সুন্দর দেখতে লাগছিলো।সবশেষে কিছু পথ বড় রাস্তা ধরে এসে তারপর আবার মাঠ দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরে এলাম।বাড়ি এসে ডালিম ভেঙে সত্যিই পোকা দেখতে পেলুম।।

IMG_20240701_184852.jpg


আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটা আপনাদের সকলের কাছেই ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Thanks.

আপনি ঠিক বলেছেন আপু অযথা কারো বাসায় গিয়ে গল্প করা মোটেও উচিত নয়। তবে মাঝে মাঝে একটু খোজ খবর নেবার জন্য যেতে হয় আরকি। যাইহোক আপনি বেশি ভালো ঘোরাঘুরি করেছি। আর সাথে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি। নিশ্চয় বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

হ্যাঁ আপু,ভালো একটা সময় পার করেছি।ধন্যবাদ আপনাকে।

একটা সময় ছিল যখন বর্ষায় আমরা গ্রামের ভেতর বেড়াতে যেতাম। আসলে তখন প্রচুর বৃষ্টি হতো কোথায় পানি বেশি জমেছে কোথায় কি হয়েছে এগুলো জানার আগ্রহ থাকতো। তাই বর্ষা থমার সাথে সাথে বেরিয়ে পড়তাম। আর এটা বেশ আনন্দ দিত আমাদের। আপনি আজকে গ্রামে ঘোরার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছেন। সময় কাটিয়েছেন বর্ষাকালে ডালিম এবং পেয়ারা কিন্তু বেশি দেখা যায়। এই সুন্দর সময়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া, ছোটবেলায় গ্রামে আমরাও বেড়াতে যেতাম।এখন আর ভালো লাগে না, ধন্যবাদ আপনাকে।

আপু আপনার মত আমিও কাজ ছাড়া অন্যের বাসায় গিয়ে অযথা সময় কাটানো পছন্দ করি না।তারপরও ঘোরার একটু প্রয়োজন রয়েছে এতে মন ও সম্পর্ক ভালো থাকে। শুধু ডালিমে না আপু এখন আমের ভেতরেও প্রচন্ড পোকা হচ্ছে কেন জানি।আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ আপনাকে।

আপু,প্রচন্ড গরমের জন্য মনে হয় এমন পোকা ধরে যাচ্ছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

মাঝে মাঝে এইরকম গ্রামে ঘোরাঘুরি এর দরকার আছে। এতে করে মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাত হয় এবং নিজের মধ্যে একটা আলাদা ভালোলাগা কাজ করে। আমরা তো অধিকাংশ সময় নিজের ব‍্যস্ততা নিয়েই থাকি। এইরকম কোন মূহূর্ত পায় না। আপনার পোস্ট টা দেখে খুবই ভালো লাগল দিদি।

আসলেই ভাইয়া, ব্যস্ততার জন্য সুন্দর সম্পর্কগুলি নষ্ট হয়ে যায়।ধন্যবাদ আপনাকে।

গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি ঘোরাঘুরি করে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছন। ডালিম ফল গুলো দেখতে দারুন লাগছিলো। আসলে মাঝে মাঝে গ্রামের বিভিন্ন আনাচে কানাচে ঘুরলে ভালোই লাগে। যায়হোক বিভিন্ন জেঠাজেঠুর বাড়ি ঘুরে ভালোই তথ্য শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ।

গ্রামের আনাচে কানাচে ঘুরতে যাবো কেন ভাইয়া,সবই প্রতিবেশীদের বাড়ি যাওয়া হয়েছিল ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।

সবাই আজকাল এতো ব্যস্ত সময় কাটায় যে শুধু শুধু কারো বাসায় যাওয়ার সময় হয় না।তবে আপনারা শত ব্যস্ততার মাঝে জরুরী প্রয়োজনে প্রতিবেশীর বাড়ি গেলেন।এতে করে সম্পর্কের উন্নতি হয়।একজন অন্যজনের সুখ-দুঃখে পাশে থাকা ভীষণ জরুরী।আপনার বৌদিকে দেখতে গিয়ে কুশল বিনিময় করে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি করলেন।ফটোগ্রাফি গুলো দারুন লেগেছে।ডালিম অনেক হলেও তাতে পোকা হয়েছে আপনাকে আপনার বৌদি বলল।আপনি দুটো নিয়ে বাসায় এসে সত্যি ই পোকা দেখতে পেলেন।সুন্দর বর্ননা ও ফটোগ্রাফিতে চমৎকার লেগেছে দিদি আপনার ব্লগটি।

হ্যাঁ আপু,আসলে বৌদি প্রথমেই বলেছিলেন যে ডালিমের মধ্যে পোকা হবে যতই বাইরে সুন্দর দেখতে হোক।যাইহোক আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার সাপ তো খুবই ভয়ংকর। আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। যাইহোক আপনার পরিচিত সেই বৌদি এই সাপের কামড় খাওয়ার পরেও বেঁচে আছে, এটা কিন্তু বিরাট একটা ব্যাপার। আপনার মায়ের সাথে গ্রামে ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন। আপনার সেই বৌদির বাড়ি থেকে ডালিম এবং পেয়ারাও এনেছেন দেখছি। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এবং পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাইয়া, আমাদের বর্ধমানে প্রচুর পরিমানে সাপের উপদ্রব।শুধু চন্দ্রবোড়া নয়, কালাচ,রাজ সাপ ,কেউটে ,পদ্ম গোখরো ইত্যাদি আমাদের ঘরেও মাঝে মাঝেই দেখা যায়।আর বৌদির শরীর এখনো দুর্বল দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার পরও।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, সুন্দর মতামতের জন্য।