হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল আছেন। আমার পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। হাজির হলাম চেম্বার কথনের আরেকটা গল্প নিয়ে। এগুলো শুধু গল্প নয়, আমার চেম্বারে আগত রুগীদের দুঃখ বেদনার বাস্তব চিত্র। চলেন শুনি আজকে কাহিনী!
উনি একজন মধ্যবয়স্ক লোক। আমার কাছে আসার তিন দিন আগে দেশ থেকে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরেছেন। দেশে ছিলেন তিন মাস মত। দেশে উনার উল্লেখযোগ্য কোন সমস্যা ছিল না। সমস্যা শুরু হয়েছে ওমানে ফেরার দিন থেকেই।
রাতে ঘুম হয় না একেবারে। সারা রাত এপাশ ওপাশ করে পার করেন। দেশে যখন পরিবার পরিজনের সাথে ছিলেন, ঘুমের কোন সমস্যাই ছিল না। বিভিন্ন রকমে চিন্তা-ভাবনা এসে ভর করে উনার মনে। অনেক চেষ্টা করেও দূর করতে পারেন না উদ্ভব সব চিন্তা গুলো। মাঝে মাঝে বুক ধরপর করে, ভয় পেয়ে যান কি জানি কি হয়ে গেল উনার। রাত ছাড়াও যখন দিনের বেলাতেও যখন একা থাকেন তখনও ভাল বোধ করেন না। উল্লেখযোগ্য একটা পয়েন্ট ছিল উনার ইতিহাসে যেটা উনি নিজেই বললেন। তা হলো, যখন উনার সাথে কেউ থাকেন, কথা বার্তা বলেন অন্যদের সাথে, তখন উনি দিব্যি ভাল থাকেন!
শারিরীক পরীক্ষায় সব ভাল পাওয়া গেল। রক্তচাপ, রক্তের সুগারও ভাল। উনার আসলে অন্য কোন পরীক্ষারও প্রয়োজন ছিল না। উনার হিস্ট্রিই যথেষ্ট ছিল উনার রোগ ধরার জন্যে। এটা ছিল মানসিক সমস্যা বা এডজাস্টমেন্ট প্রবলেম। পরিবার পরিজন, বন্ধু সার্কেল থেকে হঠাত দূরে চলে গেলে অনেকের ক্ষেত্রেই এটা হয়। ওমানে আগত অনেক নতুনদেরও এমন হতে দেখা যায়। বাসা বাড়িতে কাজ করতে যে সব মহিলারা ছোট বাচ্চা রেখে বিদেশ আসেন, তাদের ক্ষেত্রে এটা বেশী পাওয়া যায়। আমি নিজেই পেয়েছি এরকম বেশ কিছু রুগী আমার চেম্বারে।
যাহোক। আজকে গল্পের রুগীকে যতটুকু সম্ভব কাউন্সেলিং করে দিলাম। ঘুমের সহায়তার জন্যে একটা ওষুধও লিখে দিলাম। আশা করি অতি দ্রুতই উনি এডজাস্ট করে নিবেন আবার!
আজকে এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আজকে লেখাটি তা অবশ্যই জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ভাল থাকুন সবাই।
ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
ওমান
১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪