অনুভূতির গল্প- হৃদয়ের টানে কোলকাতা (পর্ব-০৯)

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন এবং সুস্থ্য আছেন। আমি বেশ আছি কারন কোলকাতার অনুভূতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার সুযোগ পাচ্ছি। সত্যি বলতে কিছু অভিজ্ঞতা কিংবা অনুভূতি দারুণভাবে হৃদয়ের গভীরে জায়গা করে নেয় এবং সেগুলো কল্পনা করলেই হৃদয় আবার চঞ্চল হয়ে যায়। আমাদের কোলকাতা ভ্রমণটি ছিলো সেই রকম কিছু। আমরা মুহুর্তগুলো বেশ দারুণভাবে উপভোগ করেছি এবং চমৎকার কিছু স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরে আসছি। যদিও সময়টা আমাদের জন্য খুবই কম ছিলো, তাই পরবর্তীতে কোলকাতা গেলে অবশ্যই আরো বেশী সময় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো, যাতে আশে পাশের সকল সৌন্দর্য দারুনভাবে উপভোগ করতে পারি।

আজকে শেয়ার করবো অনুভূতির নবম পর্ব, ভিআইপি চলে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা পুনরায় হাঁটা শুরু করলাম। একটা কথা অবশ্য বলা হয় নাই, ভিআইপি চলাচলের কারনে সড়ক আটকে দেয়া হয়েছিলো শুধুমাত্র অপর পাশের বাসগুলোর জন্য কিন্তু আমাদের চলাচলে মানে হাঁটার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হয় নাই। তবে দৃশ্যটা সুন্দরভাবে দেখার জন্য আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম, ঐ যে আমাদের দেশের অভ্যেসটা রয়েগেছে আমাদের মাঝে। তারপর আমরা পুনরায় হাঁটা শুরুকরলাম কিংপ্রস ভাইয়ের ডাকে কারন উনি তখনও হাঁটতেছিলেন যেহেতু এই রকম দৃশ্য উনার কাছে একদমই সাধারণ ব্যাপার। কিছুটা হাঁটার পর আরো একটা দৃশ্য দেখলাম হিজড়াদের দল আমাদের সম্মুখে, তবে কাউকে তারা আটকালেন না শুধু আরিফ ভাইকে ধরলেন, আরিফ ভাইতো তাদের দেখে ভেবাচেকা খেয়ে গেলেন মুহুর্তের মাঝে।

IMG_20230326_140847.jpg

আমি আর সুমন ভাইতো সেই লেভেলের হাসি দেয়া শুরু করলাম, সবাই থাকতে কেন তারা আরিফ ভাইকে ধরলেন মানে আরিফ ভাইকে পছন্দ করলেন হা হা হা। তাৎক্ষনিকভাবে কিংপ্রস ভাই এগিয়ে আসলেন এবং আরিফ ভাইকে উদ্ধার করলেন। আমি আর সুমন ভাই ততোক্ষনে বেশ মজা নিচ্ছিলাম দূরে দাঁড়িয়ে, আরিফ চলে আসার পর হিজড়াগুলো কি যেন বক বক করে বলতে লাগলো আর কিংপ্রস ভাই বললেন চলুন তো। আমরা আবার হাঁটা শুরু করলাম এবং তার সাথে সুন্দর দৃশ্য উপভোগের সাথে সাথে ফটোগ্রাফি। সেখানে একটা সরকারী হাসপাতাল ছিলো, কিংপ্রস ভাই সেটা দেখিয়ে বললেন বেশ ভালো হসপিটাল এটা, সময় বেশী লাগলেও সুন্দর সেবা পাওয়া যায় সেখানে। না শুধু হসপিটাল না বরং গুরুত্বপূর্ণ যে কোন স্থাপনাই সম্মুখে আসলে কিংপ্রস ভাই সেটা সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

IMG_20230326_135837.jpg

IMG_20230326_135901.jpg

IMG_20230326_135945.jpg

IMG_20230326_135949.jpg

তারপর আমরা চলে আসলাম কোলকাতা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল বা পার্ক, বেশ আগ্রহ ছিলো এটা দেখার। তাই সম্মুখে আসার পরই দারুণ একটা অনুভূতি কাজ করতেছিলো। ইউটিউব কিংবা পত্রিকায় নানা বর্ণনায় এর স্থাপত্য শৈলী কিংবা সৌন্দর্য দেখেছি, তখন হতেই এটা ভিজিট করার দারুণ একটা ইচ্ছা হৃদয়ে পোষণ করতে থাকি। আজ সেটা সত্য হতে যাচ্ছে, দারুণ একটা উত্তেজনা সেই সময়ে অনুভব করতে লাগলাম। আমাদের যে দুপুরে লাঞ্চ করা হয় নাই সেই কথা বেমালুম ভুলে গেলাম। কিংপ্রস ভাই সেটা স্মরণ করিয়ে দিলেন কিছু হালকা খেয়ে নিতে হবে কারণ ভিতরে অনেক সময় লাগবে। আমরা এটু লক্ষ্য করে দেখলাম সেখানে কি কি আছে? তারপর ভারি কিছু না পেয়ে হালকা কিছু খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রথমে আমরা গরম গরম লুচি গেলাম ডাল দিয়ে, যদিও তখন পরিবেশটা বেশ গরম ছিলো হি হি হি।

IMG_20230326_140043.jpg

IMG_20230326_140057.jpg

IMG_20230326_140510.jpg

IMG_20230326_140623.jpg

IMG_20230326_140631.jpg

না লুচি খেলে মন ভরলো না যদিও হালকা পেট ভরেছে হি হি হি। কিন্তু যেহেতু পরিবেশ গরম তাই বেশী লুচি খাওয়া যাবে না কিংপ্রস ভাই আগেই সেটা বলে দিলেন। তাই পাশে থাকা মিক্সড ফ্রুটের দিকে গেলাম আমরা, বেশ কৌতুহল জাগলো কারন এখানকার সিস্টেমটা একটু ভিন্ন। অর্থাৎ এখানে একাধিক ফল থাকে এবং সবগুলো হতে একটু একটু করে কেটে দেয়, দামও খুব একটা বেশী না। কিন্তু ভিড় আছে দেখলাম ভালোই। বিক্রেতা বেচারা ফল কেটে অবসর পাচ্ছে না। আমরা সেখানে গেলাম এবং আমাদের জন্য অর্ডার করলাম। গরম গরম লুচির পর মিক্স ফলের স্বাদ দারুণ ছিলো সত্যি, পরিবেশের সাথে স্বাদটা বেশ মানানসই ছিলো। আমাদের কাছে বেশ ভালো লাগলো এবং আমরা এরপর যখনই সুযোগ পেয়েছি এই মিক্সড ফলের স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করেছি।

IMG_20230326_140847.jpg

IMG_20230326_142125.jpg

IMG_20230326_142128.jpg

IMG_20230326_142454.jpg

IMG_20230326_142505.jpg

যাইহোক, ফল খাওয়ার পর একটু প্রশান্তি অনুভব করলাম হৃদয়ে, তারসাথে উত্তেজনাটা একটু সতেজ হলো। আমরা কিছুটা সময় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং চারপাশের ফটোগ্রাফিগুলো ক্যাপচার করলাম। কিংপ্রস ভাই অবশ্য চলে গেছেন টিকেট কাটতে কারন আমরা বাংলাদেশী বুঝতে পারলে টিকেটের মূল্য রকেটের গতিতে বেড়ে যাবে হি হি হি। সুমন ভাই তার অস্ত্র বের করতে লাগলেন, আরে এই অস্ত্র সেই অস্ত্র না, এটা হলো ক্যামেরা, বিশাল সাইজের একটা ক্যামেরা বেশ কষ্ট করে এতোদূর পর্যন্ত নিয়ে আসছেন এখন এটার সঠিক ব্যবহার না করলে কেমনে হয়? কিংপ্রস ভাই টিকেট কেটে চলে আসলেন, আমরাও বেশ ভালোভাবে প্রস্তুত হয়ে গেলাম। কারণ এখন ভিতরে প্রবেশ করবো, সুন্দর স্থাপনার সাথে সুন্দর কিছু মুহুর্ত এবং তার সাথে থাকবে ফ্রি ফটোগ্রাফি হি হি হি।

IMG_20230326_142618.jpg

IMG_20230326_142624.jpg

IMG_20230326_143426.jpg

তারিখঃ মার্চ ২৬, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ কোলকাতা শহরের বিভিন্ন স্পট।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হায় হায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ঢোকার আগেই তো পর্ব শেষ হয়ে গেল হাফিজ ভাই।

কিছুটা হাঁটার পর আরো একটা দৃশ্য দেখলাম হিজড়াদের দল আমাদের সম্মুখে, তবে কাউকে তারা আটকালেন না শুধু আরিফ ভাইকে ধরলেন, আরিফ ভাইতো তাদের দেখে ভেবাচেকা খেয়ে গেলেন

কি আর বলবো দুঃখের কথা ভাই, আমার অবস্থাও অনেকটা আরিফ ভাইয়ের মত। হিজড়ারা আমাকে দেখলেই চারিদিক থেকে পাকড়াও করে ধরে। কাউকে ধরবে না শুধু আমাকে ধরে। যাই হোক পোস্টটা পড়তে বেশ ভালো লাগছিল হাফিজ ভাই।

আরে না ভাই শেষ হয় নাই, টিকেট কেটে সিরিয়ালে দাঁড়াইলাম মাত্র, ভিতরে ঢুকি তারপর সব দেখতে পাবেন। হি হি হি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দারুন লাগলো কোলকাতা ভ্রমনের আজকের পর্বটা। হিজড়ার দল আরিফ ভাইকে ধরেছে 😄 কারন তারা আরিফ ভাইকে সবথেকে ইনোসেন্ট ভেবেছে আর পয়সা বের করতে পারবে ভেবেছে। যাক কিংপ্রোস ভাই ছিল বলে রক্ষা। গরমে লুচি খেলে বেশ অস্বস্তি হবার কথা তবে ফলগুলো খাওয়ার ফলে সবাই চাঙ্গা হয়ে উঠেছিলেন আবার। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের পরিবেশটা অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। টিকিট কাটা হয়েছে, আশাকরি ভেতরের সৌন্দর্য আমরা উপভোগ করতে পারবো।

হুম শুধু কি ইনোসেন্ট সাথে কিউটও কিন্তু হা হা হা।

লুচি খাওয়ার পর মিক্স ফ্রুট খেলেন আপনারা।ওখানকার নিয়মটা একটু অন্যরকমই দেখছি।ঠিকই তো আপনারা সবাই থাকতে আরিফ ভাইকে ধরেছিল, পছন্দই করেছিল তাহলে হাহা।যাক অবশেষে কিংপ্রস ভাই উদ্ধার করলেন তাকে এবং টিকেট কেটে দিলেন।তারপর ফটোগ্রাফি করলেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

হুম, সত্যি বলতে গরমের কথা চিন্তা করে লুচি বেশী খেতে পারি নাই তাই সেটা ফলের উপর দিয়ে গেছে ।

আরিফ ভাইকে তাদের মনে হয় অনেক পছন্দ হয়েছে। আরিফ ভাইয়ের বেহাল দশার কথা শুনে সত্যিই হাসি পাচ্ছে😅😅। শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছে এটাই অনেক। যাইহোক ভাইয়া এবারের পর্বের মাধ্যমে আরো অনেক কিছু তুলে ধরেন জেনে ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

হুম সেটাই তো দেখলাম, কেমনে যে বুঝলো আরিফ ভাই অবিবাহিত সেটাই চিন্তা করছি হা হা হা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

হিহিহি,হিজড়াদের দেখলে আমারও যেনো কেমন লাগে। সবাইকে বাদ দিয়ে আরিফ ভাইয়াকে ধরেছে, আহারে বেচারা।ফল খেয়ে ভালোই করেছেন।যাক শেষ মেষ টিকিট কাটা হলো। খুব ভালো লাগলো পর্বটি পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

সত্যি, কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করা শুরু করে, ঢাকায় তো এখন রীতিমতো আংতকের নাম এরা।

আমি শুধু আরিফ ভাইয়ের মুখের অবস্থাটা মনে করার চেষ্টা করছি 😅😅😅😅। আর আপনারা নগদে মজা নিয়ে নিলেন 🤪। হিহিহিহি। হালকা খাবার খেয়ে না ঢুকলে বেশ অসুবিধা হতো। কারণ অনেকটা বড় জায়গা আর ঘুরতেও অনেক সময় লাগে। তবে আজ টিকিট কেটেও আমাদের ঢোকালেন না ভেতরে 😉😉। এটা কিন্তু ঠিক হলো না। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

হুম, জানেনই তো ব-তে বোকা আর ন-তে নগদ হা হা হা। আমরা সেই কাজটা তাই নগদেই করে ফেললাম। আসলেই বিশাল এড়িয়া ভাই বেশী খেলে খবর হয়ে যেতো। আপনাদের কাল ঢোকাবো।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

ভাইয়া আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম অস্ত্রের কথা শুনে। যাক শেষ পর্যন্ত অস্ত্রটা ক্যামেরায় মিশে গেল। সুমন ভাইয়া নিশ্চয় আপনার মত কলকাতা শহর ক্যামেরা বন্দি করতে শুরু করেছিল। ভাইয়া হৃদয়ের টানে কলকাতার নবম পর্বে সবই হলো শুধুমাত্র কোলকাতা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পার্কে ঢুকা হলো না। আফসোস নিয়েই আপনার পরবর্তী পর্বে অপেক্ষায় রইলাম।

ভেবেছিলাম কি নাকি অস্ত্র বের করতে চলেছে সুমন ভাইয়া। একেবারে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম পর অবশ্য বুঝতে পেরেছি এটা কোন অস্ত্র। আসলে মনে হয় হিজড়ার দল আরিফ ভাইয়াকে পছন্দ করেছে যার কারণে তাকে আটকে ধরল। এটা কিন্তু ঠিক না লোকটা বিপদে পড়েছে আপনাদের দূর থেকে দেখে দেখে মুচকি মুচকি হাসছেন আর মজা নিচ্ছেন🤭কলকাতায় আপনারা বেশ ভালো সময় উপভোগ করেছেন।