আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ স্বার্থের মানসিকতা ]

in hive-129948 •  3 years ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আমরা জানি কেমন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছি দিন দিন, আমাদের নিকট স্বার্থগুলো কেন জানি একটু বেশী প্রধান্য পাচ্ছে দিন দিন এবং সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে আমরা স্বার্থ ব্যতিত কিছু চিন্তা করতে পারছি না। আসলে স্বার্থের মানসিকতায় আমরা খুব বেশী লোভী হয়ে উঠছি। আমরা আধুনিক সভ্যতার উচ্চতায় প্রবেশ করেও নিজের মানসিকতার উন্নয়ন ঘটাতে দারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছি। কারন আমরা প্রকৃতপক্ষে কোন ব্যাপারে ছাড় দেয়ার মানসিকতা তৈরী করতে পারি নাই।

যার কারনে আমাদের বর্তমান এই অবস্থা এবং অবনতি। আমরা স্বীকার করি অথবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি না কেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই স্বার্থের মানসিকতা আমাদের নিম্নগামী করে দিচ্ছে দিন দিন। যদিও আমরা এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে চাই না, কারন আমাদের অতো সময় কই এসব নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার। বরং আমরা বেশী প্রাধান্য দেই হিসেব কষতে কতটা স্বার্থ হাসিল হয়েছে আমাদের কিংবা কতটা লাভবান হলাম আমরা বিভিন্ন ইস্যু হতে!

একটা বাস্তব উদাহরণ দেই, ধরুন কোন একটা রেস্টুরেন্ট এ আপনি খাবার খেতে গিয়েছেন, ওয়েটার খুব ভালো ব্যবহার করলো আপনার সাথে, খাবারগুলো যথাযথভাবে নিয়ে আসলো এবং আপনি তার ব্যবহারে মুগ্ধ হলেন কিন্তু তাকে কোন টিপস দিলেন না। এখন সে ওয়েটার কি চিন্তা করবে আপনার ব্যাপারে? এবং পরের বার যখন আপনি সেই রেষ্টুরেন্টে সেই টেবিলে গিয়ে বসবেন তখন ওয়েটার কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে আপনার কাছে আসবে না এবং পূর্বের ন্যায় ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে সবকিছু সম্পন্ন করবে না। আমাদের এখানে এমনটা হয়ে থাকে, আপনাদের ওখানে কি রকম হয় সেটা হয়তো আমি জানি না।

man-g252bb805f_1920.jpg

আবার ধরুন আপনার এলাকার ছোট এক ভাইকে ডাক দিলেন সে ভদ্রভাবে আপনার সম্মুখে আসলো এবং তাকে একটি কাজ ধরিয়ে দিলেন, সে কাজটি খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করলেন, আপনি তাতে খুশি হলেন কিন্তু কোন বকশিশ দিলেন না। সে কিন্তু মনে মনে আপনার উপর মনক্ষুন্ন হবে, এরপর অন্য কোজ কাজে তাকে ডাকলে পাবেন না বা আপনাকে দেখলে সেই ছোট ভাই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে, কাজের ভয়ে। ভাবতে আপনি যদি আবার ডাকে, অন্য কোন কাজ ধরিয়ে দেন।

এই উদাহরণগুলোকে আপনি কিভাবে গ্রহন করবেন? এখানে কি স্বার্থ কাজ করে নাই। এক পক্ষ সব ঠিকঠাক পেলেন মানে তার স্বার্থ ঠিক থাকলো কিন্তু অন্যপক্ষ নিরাশ হলো কারন তার দিক হতে কাংখিত প্রাপ্তি ঘটে নাই। আসলে আমরা যে কোন ক্ষেত্রে, কাজ কিংবা সার্ভিস সব কিছুতেই এখন স্বার্থ খুঁজি। অথচ রেষ্টুরেন্ট এর ওয়েটার মাস শেষে ঠিকই মালিকের নিকট হতে বেতন পান কিন্তু তবুও টিপস বা বকশিশ না পেলে ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করছেন না, বেতনের বাহিরেও কাজের বিনিময়ে অতিরিক্ত কিছু প্রত্যাশা করছেন।

morning-ga29d70499_1280.jpg

এলাকার ছোট ভাই হিসেবে সেও তার দায়িত্ব পালন করার কথা ছিলো, খুশি মনে এমনিতেই কিছু করে দেয়ার কথা থাকলেও আজকাল এই রকম কেউ কিছু করছেন না। আমার স্পষ্ট মনে আছে, এলাকার সিনিয়র ভাইদের যেমন সম্মান করতাম তারা ঠিক তেমনি আমাদের স্নেহ করতো, কখনো ব্যক্তি স্বার্থ চিন্তা করি নাই এখানে। যে কোন প্রয়োজনে সিনিয়র ভাইদের কল করলে সাথে সাথে রেসপন্স করতেন, এখন যেটা প্রত্যাশা দুষ্কর। কারন এখন স্বার্থের বিষয়টি সবাই আগে চিন্তা করে, ভালোবেসে কিংবা সম্পর্কের জন্য কিছু করার চাইতে।

স্বার্থটা আজ বড্ড বেশী নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে আজ দায়িত্ব পালন বাদ দিয়ে স্বার্থটা বেশী কার্যকর থাকছে যার কারনে সম্পর্কগুলো ঠিক মজবুত হচ্ছে না এবং আমরা যার যার অবস্থান হতে সন্তুষ্ট থাকতে পারছি না। কারন স্বার্থ যেখানে ক্রিয়াশীল থাকে আত্মতুষ্টি সেখানে অনুপস্থিত থাকে সব সময়, চিন্তা করে দেখেন বিষয়টি।

Image Taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break.png
Leader Banner-Final.pngbreak.png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break.png

banner-abb23.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি কথা বলতে এখনকার মানুষের স্বভাব এ বদলে গেছে, এক জনের সাথে যে আরেকজনের আন্তরিকতা সেই জিনিস টা আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে , এখন মানুষ শুধু ব্যস্ত অন্যের পার্সোনাল লাইফ নিয়ে , কে কি করছে , কার কত বেশি টাকা , কে আমাকে ঠেলে উপরে উঠে যাচ্ছে , আর ওই মানুষটাকে কিভাবে নিচে ফেলে দেয়া যাই শুধু সেই চিন্তা , লোভের বসে মানুষ নিজের আত্মসম্মানবোধ ধরে রাখতে পারছে না , যদিও আমি এই কথা বলছি তবে দিন শেষে আমরা ও এমন একটি মানুষে পরিণত হয়।

আন্তরিকতা আজ তো জাদুঘরে ঢুকে গেছে, মানুষের মাঝে আর খুজে পাওয়া যায় না। স্বার্থ থাকুক হতে সেটা হোক ভালোর জন্য। ধন্যবাদ

ভাইয়া স্বার্থহীন ব্যতীত বর্তমানে মানুষ পাওয়া খুবই দুষ্কর। বর্তমানে মানুষ স্বার্থ ছাড়া এক কদম পা বাড়াতে রাজি নয়। সেটা আপনার বেলায় হোক কিংবা আমার বেলায় হোক। যেইসব সম্পর্ক গুলোতে স্বার্থ নেই সেই সম্পর্ক গুলো মধুরই হয়। তবুও বোঝা বড় দায় মানুষের মন তো। আপনার উদাহরণটি একেবারে সত্য, আপনাকে ভালোভাবে খাওয়ানো ভালোভাবে পরিবেশন করলো কিন্তু আপনি কোন টিপস দিলেন না। ঠিক পরের দিন আপনি যাবেন আপনার সাথে ওই ব্যবহারটাই করবে যেটা আপনি ভাবতেও পারবেন না। ছোট ভাইয়ের আরেকটা উক্তি দেখিয়েছেন সেটাও সত্য, আপনি তাকে দিয়ে কোন একটা কাজ করিয়ে নিলেন তাকে কোন টিপস দিলেন না পরবর্তীতে সে আপনার ডাকে সাড়া দেবে না এটা স্বাভাবিক। মানুষ দিন দিন শুধু স্বার্থের পিছনে দৌড়াচ্ছে। আমাদের আগে আত্মীয় স্বজনের প্রতি এরকম একটা ভাব ভালোবাসা ছিল। বর্তমানে এরকম ভালোবাসা নেই বললেই চলে। তবে আমরা চাই আমাদেরকে সম্পর্কগুলো ভালো ভাবে সবাই কাঁধে কাঁধ রেখে সুন্দরভাবে চলতে। এবং ভালবেসে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করা। আমাদের সাথে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য এবং খুব সুন্দর করে বিশ্লেষণ করার জন্য আপনার প্রতি রাশি রাশি ভালোবাসা ভাইয়া।

জ্বী এটাও সত্য বলেছেন, আগে কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে গেলে তারা খুব অমায়িক ব্যবহার করতো কিন্তু এখন করে না বরং উল্টো চিন্তা করে কোন স্বার্থের জন্য তার বাড়ীতে গিয়েছি কিনা। বাবস্তবতা সত্যি আমাদের অনেক ঠিক করে দিচ্ছে দিন দিন। ধন্যবাদ

বর্তমান যুগে নিজের পরিবাররে মধ্যে স্বার্থ অন্তনির্হিত।ভাই ভাই স্বার্থের জন্য একজন আরেকজনকে মেরে ফেলার হুমকি স্বরুপ হয়েছে। স্বার্থের সঠিক মানবন্টন বর্তমান যুগে নেই। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথা তো চলমান উদাহরণ স্বরুপ। সামান্য ইউপি নির্বাচনে কত মানুষের জীবন দিতে হয়েছে সামান্যতম স্বার্থ হাসিলের জন্য যা থেকে বোঝা যায় মানুষের বিবেক বুদ্ধি কতটা লোভ পেয়েছে। বাস্তব সম্মত কিছু বিষয় তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। 😍😍

খুবই নিমর্ম যুগে বসবাস করছি আমরা, উন্নতির উচ্চ শিখরে আছি কিন্তু মানবিক দিক হতে খুবই নীচুতে রয়েছি। ধন্যবাদ

আসলেই ঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া। আজকাল স্বার্থ ব্যাপারটি অনেক বেশি কাজ করছে আমাদের মধ্যে। এইযে যেমন ধরেন আমরা আগে স্কুলের সিনিয়র আপুদের কাজ করে দিতাম, তার বদলে আপুরা আমাদের সাথে যে সুন্দর ব্যবহার, স্নেহ করতো তাই আমাদের জন্য অনেক বড় বিষয় ছিলো।কিন্তু এখন দেখেন!কিছু করতে দিতে বললে আগে বলে ট্রিট দেন!এই হলো অবস্থা। আমি বলবো না স্বার্থ চিন্তা করা খারাপ। তবে স্বার্থ কে অধিক ভাবে প্রাধান্য দেওয়াটা আসলেই খুব খারাপ।

সত্যি আপু, স্বার্থ থাকবেই এটাই সাভাবিক কিন্তু কোনভাবেই সেটাকে প্রধান্য দেয়া যাবে না। ধন্যবাদ

দুনিয়াতে আসলে এমন কোনো মানুষ নেই যে স্বার্থ চিন্তা করেনা। পার্থক্য শুধু কেউ হয়তো ব্যক্তি স্বার্থ নিয়েই থাকে আর কেউবা অপরের স্বার্থের কথাও চিন্তা করে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন ভালো মানুষ যিনি অপরের জন্য নিজের স্বার্থ ত্যাগ করেন। আমি মনে করি তিনিও স্বার্থবাদী। কারণ তার স্বার্থ হচ্ছে আত্মতুষ্টি। আমার মনে হয় নিজের ভালো লাগাই হচ্ছে সবচাইতে বড় স্বার্থ। আর যিনি অপরের ভালোলাগার কথা চিন্তা করে কাজ করেন তিনিই প্রকৃত নিঃস্বার্থ মানুষ। ধন্যবাদ আপনার চিন্তাধারাগুলো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

একদম ঠিক বলেছেন, স্বার্থ সবার মাঝেই রয়েছে, তবে সেটা হোক ভালোর জন্য। ধন্যবাদ

পৃথিবীর মানুষগুলো আজ অনেক বেশি স্বার্থপর হয়ে গেছে। নিজের স্বার্থ ছাড়া কেউ কিছু বুঝতে চাইনা। সকল কাজের জন্যই সবাই শুধু বিনিময় খুঁজে। হয়তো টাকার বিনিময় না হলে কোন কোন স্বার্থের বিনিময়ে সবাই সবার কাজে এগিয়ে আসে। নিঃস্বার্থভাবে কেউ কিছু করতে চায়না। আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক কিছু জানতে পারলাম।

একদম ঠিক বলছেন আপু, সবাই আজ নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বুঝতে চায় না, সম্পর্কগুলো আজ বড্ড বেশী অসহায় হয়েগেছে। ধন্যবাদ

ঠিক বলেছেন ভাই স্বার্থ ছাড়া দুনিয়া চলে না ।স্বার্থের কারনেই আজ সব কিছু আবোললল তাবোল হয়ে যায় ।কেউ কাউকে শ্রদ্ধ্যা করে না সম্মান করেনা । আগের দিনের মতো সেই অনুভূতি নেই যে কোন কাজে সম্পর্কের মধ্যে ।যার জন্য মানুষ আমরা আজকে ভুগতেছি নানা সমস্যায় ।এজন্য আগের দিন ফিরিয়ে আনতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্য হয়ে নি:স্বার্থভাবে কাজ করতে হবে ।ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর বিষয় করার জন্য।

আগের দিনগুলো সত্যি খুবই ভালো ছিলো, স্বার্থ দেখা হতো না তখন বরং সম্পর্কগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হতো। ধন্যবাদ

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

ভাই একটা বিষয় কি আমরা প্রতিনিয়ত স্বার্থের কাছে হেরে যাচ্ছি। হেরে যাচ্ছে মানুষের মনুষত্ব ।স্বার্থপর মানুষগুলো বরাবর তাদের ধারালো দাঁত দেখাচ্ছে । আমরা স্বার্থের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি ।বিক্রি করছে আমাদের মানবিকতা কে ।এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা যখন বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সবার ক্ষেত্রেই যেন স্বার্থের জন্য সবাইকে ভুলে যেতে পারে।স্বার্থের কাছে ভালোবাসার সম্পর্ক গুলো যেন ঠুনকো হয়ে গেছে । অযত্ন অবহেলার কারণে কাছের মানুষগুলো দূরে সরে যাচ্ছে।

পূর্বের দিনগুলো খুবই সুন্দর ছিল।যেখানে হয়তো মানুষ শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল, কিন্তু তাদের বিবেক ছিল উদারতায় ভরা।যেখানে স্বার্থ বলে কোনো শব্দ উচ্চারিত হতো না বা কারো মাথায় আসতো না।দিন বদলেছে,মানুষের মনও বদলে গেছে।তাই বর্তমান যুগে প্রত্যেক মানুষের অন্তরে অন্তরে স্বার্থ নামক বস্তুটি বাসা বেঁধেছে।আপনি ঠিক বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া।

হ্যা ভাইয়া, এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলেও বিভিন্ন স্টাফদের বিভিন্ন রকমের বকশিস দেওয়া লাগে,না দিলেও এত খারাপ আচরন করে,যা বলার মত না।অথচ তাদেরকে এসব কাজের জন্যই মালিক বেতন দিয়ে রেখেছে। আমরা মানুষরা স্বার্থ ছাড়া এখন কিছুই করি না।অথচ দেখেন সৃষ্টিকতা আমাদের কোন স্বার্থ ছাড়া দিয়েই যাচ্ছেন, দিয়েই যাচ্ছেন।