মাছ ধরার শৈশব স্মৃতি || জীবনের গল্প

in hive-129948 •  2 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। ভালো থাকার বিষয়টি অনেকটা যেমন মানসিক, ঠিক তেমনি অনেকটা আবার আর্থিকও। কারন বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শুধু মানসিকতা ঠিক রেখে ভালো থাকা যায় না। হ্যা, একটা সময় পরিবেশ এমনটা ছিলো মানসিকতা ঠিক থাকলে সমাজে তার মূল্যায়ন ছিলো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন, যার কারনে সঠিক মানসিকতার মানুষগুলোর দুর্গতি বেশী হয়ে থাকে। আর অঢেল সম্পদশালী মানুষগুলো সব সময়ই নেতৃত্বে থাকেন।

যাইহোক, এটা নিয়ে আমার বেশী কিছু বলার নেই, কারন আমারা নষ্ট হয়ে গেছি আর আমাদের নষ্ট মানসিকতার কারনেই সমাজটা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সমাজকে ঠিক করতে হলে আগে আমাদের ঠিক হতে হবে, আর এই আশাটা আমাদের থেকে করাটা মানেই বোকামি। আমাদের বর্তমান অবস্থা হলো বিচার যাইহোক তাল গাছটা কিন্তু আমার সেটার দাবী ছাড়তে রাজি নই। আজকে অবশ্য একটা শৈশব স্মৃতি শেয়ার করবো, বিশেষ করে মাছ ধরা নিয়ে আমার বেশ স্মৃতি রয়েছে। স্কুল জীবনে প্রচুর মাছ ধরেছি, সেটা যেমন স্থানীয় পুকুরে ঠিক তেমনি ছিলো নদীতে। আমাদের সময় নদীগুলোর পানি যথেষ্ট পরিস্কার এবং ভালো ছিলো।

fishing-8842590_1280.jpg

আমার শৈশব এবং কৈশোর দুটোই কেটেছে শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে। তাই মাছ ধরার দারুণ সুযোগ ছিলো আমার, আর তখন যেহেতু নদীগুলোর পানি এমন দূষণযুক্ত ছিলো না তাই যথেষ্ট মাছ ছিলো নদীতে। জাল দিয়ে, বড়শি ও ছিপ দিয়েও মাছ ধরা যেতো। আমাদের বাড়িতে একজন ভাড়াটিয়া ছিলেন যিনি নিজেই বাড়িতে বসে জাল বুনতেন এবং বর্ষার সিজনে নদীতে মাছ ধরতে যেতেন। বাড়িতে যখন ফিরতে তখন বেশ মাছ নিয়ে ফিরতেন, এটা এখন শুধুই কল্পনা। কারণ সেই নদী নেই, নদীর পানি নেই এবং তার সঙ্গে মাছও নেই। আমি নিজেও হাত দিয়ে অনেক চিংড়ি মাছ ধরেছিলাম নদী হতে।

যাইহোক, আমাদের এলাকায় বিশাল বড় সাইজের একটা পুকুর ছিলো, সবাই সেটাকে তিন নং পুকুর বলতো কারন এই রকম আরো দুটো পুকুর ছিলো অন্য এলাকায়। তো এই পুকুর হতে অনেক মাছ ধরেছিলাম আমি। এখানে যে পদ্ধতিতে মাছ ধরেছিলাম সেটা হলো ঠুঙ্গা পদ্ধতি। একটু বুঝিয়ে বলছি বিষয়টি, একটা বড় সাইজের ঠুঙ্গা নিতাম, বড় সাইজের মানে এই এক থেকে দেড় কেজি সাইজের পলিথিন ব্যাগ। তারপর সেটার ভিতর ভাতের মাড় দিতাম এবং তারপর পুরো পলিথিন ভরে পানি নিতাম এবং সেটা পুকুরের এক পাড়ে মাঝে একটা ইট দিয়ে বসিয়ে দিতাম। কিছুক্ষণ পর মাছ পলিথিনে ঢুকতো সেই ভাতের মাড় খাওয়ার জন্য।

কিছু সময় পর দৌড় দিয় গিয়ে সেই ঠুঙ্গা মানে পলিথিনের ব্যাগটি উপরে তুলে আনতাম মুখটা শক্ত করে ধরে। দেখা যেতো পলিথিনের ভিতর অনেকগুলো মাছ ঢুকে গিয়েছে। এটা ছিলো ঠুঙ্গা পদ্ধতিতে মাছ ধরা। তখন এভাবে মাছ ধরাটা বেশ জনপ্রিয় ছিলো। আমরা কম বেশী সবাই এই পদ্ধতিতে মাছ ধরার চেষ্টা করেছি। আমার অবশ্য মাছ ধরার রাশি ভালো ছিলো, কারন আমি যখনই ঠুঙ্গা ব্যবহার করতাম তখনই বেশ পরিমানে মাছ ধরতে পারতাম। মাছ ধরার সেই স্মৃতিগুলো সত্যি এখনো মাঝে মাঝে সামনে চলে আসে। এখন তো এলাকায় পুকুর খোঁজে পাওয়াটাই মুশকিল, মাছ ধরবো তো দূরের কথা।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @hafizullah,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

আমাদের সময় নদীগুলোর পানি যথেষ্ট পরিস্কার এবং ভালো ছিলো।

আসলেই ভাই ছোটবেলায় দেখেছি শীতলক্ষ্যা নদীর পানি একেবারে পরিষ্কার। অনেকে নৌকায় চড়ে নদী পার হওয়ার সময়, নদীর মাঝখানে গিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি পান করতো মাঝেমধ্যে। যাইহোক ছোটবেলায় আমি বেশ কয়েকবার মাছ ধরেছিলাম বড়শি দিয়ে। পোস্টটি পড়ে শৈশবের সেই স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। আপনার মাছ ধরার শৈশব স্মৃতি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

হ্যা, আমি নিজেও নদী হতে ভ্যান গাড়িতে করে পানি নিয়ে আসছি। অনেক মানুষই তখন এই পানি খাওয়ার জন্য ব্যবহার করতো। ধন্যবাদ

আমার ধারণায় তাই বলে ভাইয়া, ক্ষমতাবান লোকেরা গরিবদের পিষে মারে।যাইহোক দিনে দিনে এখন পুকুরের সংখ্যা কমে গিয়েছে।আমিও বড়শি দিয়ে ও হাত চেপে প্রচুর মাছ ধরেছি।মাছ ধরা খুবই আনন্দের, যাইহোক আপনার মাছ ধরার
ঠুঙ্গা পদ্ধতি সম্পর্কে নতুন জানলাম।খুবই ভালো লাগলো পদ্ধতিটি সম্পর্কে জেনে, ধন্যবাদ ভাইয়া।