আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ দুর্বলতা ]

in hive-129948 •  2 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং মোটামুটি সুস্থ আছি। যদিও ঠান্ডায় পুরো বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গেছে আমাকে। ঠান্ডা নেই নেই বলতে বলতে এখন আমার বাড়িতেই ঢেকে এনেছিলাম ঠান্ডাকে। তারপর আরকি ডান্ডা মেরে আমাকে ঠান্ডা বানিয়ে দিয়ে গেছে, হি হি হি। সত্যি মাঝের এই কয়দিন বেশ ভুগিয়েছে আমাকে। যদিও আমি নাকে কখনো ড্রপ ব্যবহার করি না কিন্তু এবার বাধ্য হয়ে করেছি। কারন এবার আর শুধু আদা চা-তে কম হয়নি বরং তার সাথে সাথে ঔষধও গেলা লাগছে।

একটা পুরাতন ডায়লগ আছে দুঃসময়ে কোন অপমান অপমান হিসেবে গ্রহণ করতে নেই অর্থাৎ গায়ে মাখতে নেই তাতে নিজেরই ক্ষতি কিংবা লস হয়। আর এই কারনেই আমি খুব একটা অপমান মনে না করে ভদ্রছেলের মতো নাকের ড্রপ ব্যবহার করেছি হি হি হি। কথার প্রসঙ্গে বললেও এটা কিন্তু বাস্তবধর্মী একটা অনুপ্রেরণার বাণী, কারন দুঃসময়ে আমাদের সামনে অনেকের মুখোশ নিদারুণভাবে উন্মোচন হয়ে যায়। পেছনে থাকা মানুষটাও তখন সামনে এসে চেঁচিয়ে কথা শুনিয়ে যায়। কারণ তখন আপনার মাথা অনেকটা নিচু থাকার মতো অবস্থায় থাকে, আর তাই তারাও সুযোগ নিতে দ্বিধাবোধ করে না।

drink-3025022_1280.jpg

আমাদের সমাজের মানুষগুলো সত্যি অনেকটা এমন, বাস্তবতা আমাদের বার বার দেখিয়ে দেয় ভালোবেসে কিংবা প্রিয় ভেবে আমরা যাদের কাছে টানি সুযোগ ও সময় মতো তারা আমাদের আঘাত করতে সামান্যও চিন্তাবোধ করে না। চিন্তাবোধ কি বলছি একটুও দেরী করে না। বরং খুব দ্রুত আঘাত করার শুভ কাজটি করে ফেলে। এই জন্য আমিও এটাকে মেনে নেই। মাঝে মাঝে আমাদের খারাপ সময়টা আসা খুবই জরুরী, আমাদের হৃদয়ের মাঝে যে বালুর বাঁধটা রয়েছে সেটা ভাঙ্গাটাও জরুরী, কারন তা না হলে আমাদের চারপাশে থাকা মানুষগুলো প্রকৃত চেহারা আমরা দেখার সুযোগ পেতাম না।

আসলে এটাই হয়তো আমাদের প্রকৃত চরিত্র, আর আবেগ কিংবা ভালোবাসা নিয়ে আমরা যেটা প্রকাশ করি সেটা মিথ্যা কিংবা অভিনয়ে ঢাকা। আমরা যা করি কিংবা যা প্রকাশ করি তার সব কিছুই স্বার্থের মায়ায় আবদ্ধ থাকে, স্বার্থবিহীন আমরা কিছুই করতে চাই না কিংবা করতে পারি না। আমরা অন্য দিকে তাদের বিপক্ষে কিছু বললে আমরা সেটাও বিশ্বাস করতে চাই না, যারা সেটা প্রকাশ করেন তাদেরকেও আমরা সন্দিহান চোখে দেখি কিংবা অবিশ্বাস করি। কারন আমরা আবেগের কাছে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়ি এবং আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের অবিশ্বাস করতে চাই না।

কিন্তু বাস্তবতা খুবই কঠিন ও নির্মম, মাঝে মাঝে দুঃসময় আকারে আমাদের সামনে এসে সবকিছু প্রকাশ করে দিয়ে যায়, আমাদের হৃদয়ের ভেতরে থাকা বিশ্বাসের আবরণটি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে যায়। আমরা যন্ত্রণায় কাতর হই, অনেকটা হতাশার অন্ধকারে লুকাতে চাই। কিন্তু দিন শেষে আমরা কি সেটা করতে পারি? একদমই পারি না বরং পুনরায় কাউকে কাউকে আবার কাছে টানি বিশ্বাস আর মায়ার আবেগে পুনরায় তাদের আপন করে নেই, ভুলে যাই কিংবা ভুলে থাকার চেষ্টা করি পুরনো সেই ক্ষতগুলোকে। মানুষ হিসেবে হয়তো এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। সুস্থতা বড় নিয়ামত।এটা আমরা তখনই বুঝি যখন আমরা অসুস্থ হই।একজন মানুষ তখন ই মানুষ চিনতে পারে যখন সে বিপদে বা কষ্টে পরে। মানুষ চেনার জন্য ঐ সময়টাই পারফেক্ট বলে আমি মনে করি।মানুষ চেনার পরে ও আমরা আমাদের দুর্বলতার জায়গা থেকে সেই মানুষের কাছে আবার নিজেকে প্রকাশ করি।

একদমই সত্য কথা সুস্থতা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা নেয়ামত। আমরা আসলে বাস্তবতা হতে কোন শিক্ষা গ্রহণ করি না, এটাও আমাদের বড় দুর্বলতা। ধন্যবাদ

এই বছর আমি জীবনে প্রথম বারের মতো নাকের ড্রপ ব্যবহার করেছি বাধ্য হয়ে। যদিও মাত্র দুই দিন ব্যবহার করেছিলাম। যাইহোক বিপদে পড়লেই মানুষ চেনা যায় ভাই। কিন্তু আমরা মানুষ চিনলেও,পরবর্তীতে তাদেরকে কাছে টেনে আনি। এটা হচ্ছে আমাদের বদঅভ্যাস। আমার মতে বিপদে পড়লে যারা আমাদের পাশে থাকে না,পরবর্তীতে তাদের ছায়া দেখা-ও ঠিক না। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আমি ভাই এই প্রথমবার ব্যবহার করলাম, অনেকটাই বাধ্য হয়ে। এটাই তো আমাদের সমস্যা, শিক্ষা নিয়েও নিজেদের সঠিক অবস্থানে রাখতে পারি না। ধন্যবাদ ভাই

আমাদের মায়া বেশি ভাই। সেজন্যই তো চাইলেও দূরে ঠেলে দিতে পারি না। আর সেই সুযোগে স্বার্থপর মানুষ গুলো বারবার আমাদেরকে আঘাত করার সুযোগ পায়।

বাস্তব জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন ভাইয়া অনেক সুন্দরভাবে।আসলেই প্রিয় মানুষগুলোই সবথেকে বেশি কষ্ট দেয় সুযোগ বুঝে।ঠিক যেন--কাঁটা ঘায়ে নুন ছিটানোর মতোই।তারপরও আমরা সেই কষ্ট ভুলে যাই আর বারেবারে দুঃখ ভোগ করতে পছন্দ করি।আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি, শুভকামনা রইলো ভাইয়া।