শৈশবের মজার একটি ঘটনা

in hive-129948 •  last year 

13-11-2023

২৯ কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


childhood-2503152_1280.jpg

copyright free image from pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। আসলে ভালো থাকাটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। কিন্তু মাঝে মাঝে পরিবেশ ও পরিস্থিতি আমাদের ভালো থাকতে দেয় না। তারপরও সবমিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। গ্রামে এখন ভালোই শীত পরেছে। পোস্টটি যখন লিখছি তখন কাথা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছি! বাহিরে ঘন কুয়াশা! টিনের চালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা জমেছে! ফোটায় ফোটায় নিচে পরছে। এই মুহূর্তগুলো গ্রামে বা আসলে কেউ কখনো উপভোগ করতে পারবে না। আসলে শৈশবের এ সময়টা খুব ভালো ছিল।

নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়টাতে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়ে যেত! বলতে গেলে খুব বিজি সময় থাকতো তখন। তবে ভাবতাম কখন যে পরীক্ষাগুলা শেষ হবে! পরীক্ষার প্যারা মোটেও ভালো লাগতো না আসলে। তখন শীতও পরতো খুব। রাতে চলতো ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট বানানো! পাড়ার কিছু ছেলেদের নিয়ে করা হতো। পরীক্ষার ফাকেঁ ফাকেঁ খেলা হতো ব্যাডমিন্টন! পরীক্ষা শেষ হলেই শুরু হয়ে যেত ধুম খেলাধুলা! শীতের সকালে ব্যাট নিয়ে বেরিয়ে পরা, প্রচন্ড শীতে যখন হাত পা কাপাঁকাপিঁ করতো তখন জ্যাকেটের হাতা হাত পর্যন্ত নিয়ে এসেও ব্যাট করা হতো! তবুও খেলা চলতো অবিরত। আসলে এই দিনগুলি তো এখন স্মৃতি। তবে আজকে ঐসব কথা বলবো না ।

যারা গ্রামে বড় হয়েছে তারা নিশ্চয় মুরগী পালন করেছে! বলতে গেলে গ্রামে এমন কোনো বাড়ি নেই, যার বাড়িতে কি না মুরগী ছিল না। সবার বাড়িতেই কমবেশি মুরগী পালন করা হতো। তবে মুরগীরা আবার একটু সেইফলি পালন করতে হতো। কারণ শেয়ালের ভয় ত আছেই। শেয়াল মামা দেখতে পারলে সব মুরগী শেষ! দিন দুপুরে অনেক মুরগীই শেয়াল নিয়ে চলে যেত চোখের সামনে থেকে। তো ছোটবেলায় আমার একটা কালো মুরগী ছিল। আমার আপু মুরগীটা আমাকে গিফট দিয়েছিল। আপুর মুরগীর কয়েকটা বাচ্চা হয়েছিল সেখান থেকে আমাকে কালো মুরগীটা দিয়েছিল। মুরগীটা আমি অনেক যত্নেই বড় করতেছিলাম।

আসলে মুরগী পালনের একটা সুবিধা হলো এগুলা তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায় এবং দ্রুতই ডিম পাড়ে! তো আমার মুরগী যখন বড় হয়ে গিয়েছিল কিছুদিন পরই ডিম পারতে শুরু করে। সাধারণত খাদিতে খড় দিয়ে মুরগীর ডিম পারার জন্য বানানে হতো। কিন্তু আমার মুরগীটা দেখতাম ডিম পাড়ার সময় হলে আমাদের ঘরের ভিতর দিয়ে টিনের চালের উপরে গিয়ে বসত। সেখানে যদি ডিম পাড়ে তাহলে সব শেষ। গড়িয়ে গড়িে টিনের চাল থেকে সোজা মাটিতে। কিছুদিন পর যখন আমার মুরগী আবারো টিনের চালের উপর ডিম পারতে গেল তখন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসছিল নয়নমামা! দিনটি মনে হয় শুক্রবার ছিল। মামার অফিসও সেদিন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের বাড়িতে আসলো।

মামা যখন আমাদের ঘরে প্রবেশ করতে চাইলো ঠিক তখনো মুরগীর ডিম গড়গড়িয়ে সোজা মামার মাথায়!! মামার মাথায় পরে ডিম সাথে সাথে ভেঙে যায়। মামার মাথায় ডিম পরার কাহিনী দেখে সবাই হাসতে হাসতে শেষ! নতুন পাঞ্জাবী পরে এসেছিল সেটাতেও ডিম লেগে গেল, হাহাহা! আমার মা তো তার ভাইকে মজা করে বলেই দিল, ' ডিম চুলের জন্য ভালো। তোর চুল শক্ত হবে আরও! ' আমিসহ আমরা সবাই হাসতে হাসতে শেষ! এই ঘটনাটা আজও মনে পরলে প্রচন্ড রকমের হাসি পায় আসলে! দিনটা কিভাবে চলে গেল কিন্তু ঘটনাটা ঠিকই স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেল!

যাক, আজ এই পর্যন্তই! ছোটবেলার আরও কত মজার মজার সব ঘটনা আছে। আশা করছি সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ ☘️🦋



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আসলে আপনি ঠিক বলেছেন শীতের কিছু মজা আছে যেগুলো গ্রামে ছাড়া উপভোগ করা সম্ভব নয়। আর আমি যদি শীতের মধ্যে শহরে যায় তাহলে সত্যি বলতে শীত তেমন একটা বুঝতেই পারিনা। তবে যাই হোক আপনার নয়ন মামার মাথায় ডিম পড়ার ঘটনা পড়ে কিন্তু বেশ মজা পেলাম। সত্যি বিষয়টা বেশ হাস্যকর ছিল। কারণ তিনি নতুন পাঞ্জাবি পড়ে কেমন আপনাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে গিয়েছিলেন আর সেই সময় মুরগিতে ডিম ফেলে ওনাকে স্বাগতম জানালেন। আবার আপনার আম্মু বললেন যে ডিম চুলের জন্য খুব ভালো এতে চুল শক্ত হয়। সব মিলিয়ে আপনার পোস্টটি বেশ মজার ছিল যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আসলেই ভাই, ঘটনাটি অনেক মজার ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই 🍀

ঘটনাটা বেশ মজার 😄
মুরগি আয জায়গা পেলো না ডিম পাড়ার আর পরলো সেই পরলো মামার মাথার উপর 😂
হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা করছে আপনার কাহিনী শুনে।

Posted using SteemPro Mobile

হাহাহা! ভাইয়া ঘটনাটা আরও মজার ছিল যখন ঘটেছিল। আমারই হাসি পায় মনে করলে ঘটনাটি 😁

ছোটবেলায় বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে এই ব্যাডমিন্টন খেলার একটা ধুম পড়ে যেত। আমরাও ছোটবেলায় এরকম ব্যাডমিন্টন অনেক খেলেছি।
যাইহোক মুরগি বিভিন্ন জায়গা বেছে নেয় ডিম পারার জন্য। কিন্তু ঘরের চালের উপরে জায়গাটা কেমন হয়ে গেল। ডিম পারার সময় হলেই চোখে চোখে রাখতে হয়েছে নিশ্চয়ই। আর আপনার মামার মাথায় ডিম পরার ঘটনাটি আসলেই বেশ্যকর হাস্যকর ছিল।আমারই হাসি পাচ্ছে এখন। ভালো লাগলো ভাইয়া গল্পটি পড়ে।

হাহাহা! মুরগীর এই ঘটনাটা আসলেই বেশ হাস্যকর ছিল আপু। আমার এখনও হাসি পায় মনে পরলে 😂

ছোট বেলার মজার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করলেন অনেক ভালো লাগলো পড়ে। শীতের বেলায় নভেম্বর মাস আসলে খুব জমির শীত পড়তো আগে সেটা ঠিক বলছেন। এখনকার তুলনায় আগে অনেক বেশি শীত পড়তো। তো মুরগির বিষয়টা আপনি খুব মজার করে শেয়ার করলেন হা হা হা মাথায় ডিম। আসলে সেটা বাস্তব কথা কোথায় যে মুরগি ডিম দিত সেটা আসলে ভাবা যেতনা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ হায়দার ইমতিয়াজI
আপনার শীতের সকাল এবং মুরগি ও মুরগির ডিম পাড়ার গল্পটি খুব সুন্দর লাগলো I