২য় পর্বঃ বাস জার্নির নতুন এক অভিজ্ঞতা

in hive-129948 •  2 years ago 

19-03-23

০৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


১ম পর্বের পর

IMG20230313151246.jpg

কি আর করা! বসে থাকতে হবে তিনঘন্টা। ভিতরে বসার ব্যবস্থা ছিল। অনেকেই দেখলাম বসে আছে। তবে বেশিরভাগই ছিল মহিলা। তাই আর বসার আগ্রহ হয়নি। তারা চলে গেলে তারপর বসা যাবে। আমি আর শাওন বাহিরেরই দাড়িঁয়ে ছিলাম। খেয়াল করলাম একটার একটা বাস ছেড়ে যাচ্ছে। ছেড়ে যাওয়ার আগে মাইক দিয়ে এনাউন্স করে দিচ্ছে কখন পরের বাস আসবে। আর যাত্রীরাও সবাই রেডি হয় তখন। এসি বাস অলরেডি দুইটা ছেড়ে গিয়েছিল। আরও কয়েকটা আছে। তবে সবগুলাই ফিল আপ! আমার এতোদিন বাস জার্নি সম্পর্কে ভুল ধারণা ছিল। আমি ভাবতাম শুধু বেশিরভাগই ট্রেন দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু স্টার লাইন বাস কাউন্টারে এসে বুঝতে পারলাম তার উল্টো। লং জার্নির ক্ষেত্রে সবাই বাসকেই বেছে নিয়েছে। বাস জার্নির সুবিধা তো আছেই।

ঘড়িতে তখন সাড়ে এগারোটার মতো বাজে। সকালের নাস্তা করা হয়নি এখনও। শাওনের কাছে জানতে পারি পাশে রেস্টুরেন্ট আছে ঐখানে খাওয়া যেতে পারে। দুজনে চলে যায় একটা রেস্টুরেন্টে। সকালের নাস্তা হিসেবে পরোটা নেয় দুজন। সাথে ডাল ভাজি। নাস্তা শেষ করে আবার এসে পরি কাউন্টারে। শাওনের কাছ থেকে অবশ্য জানতে পেরেছিলাম, বাস কুমিল্লা গিয়ে ২০ মিনিটের ব্রেক নিবে। তখন দুপুরের খাবারটাও খেয়ে ফেলা যাবে সেখানে। যেহেতু শাওন এর আগেও কয়েকবার স্টার লাইন বাস দিয়ে যাতায়াত করেছে।

কাউন্টারে এসে দেখি অনেক মানুষের ভীড়! একজন লোককে কেন্দ্র করে। সাথে কিছু ছেলে! ভেবেছিলাম হয়তো রাজনীতির ব্যাপার, বড় ভাইকে এগিয়ে দিতে এসেছে। কিন্তু না! পরে জানতে পারি বড় ভাই বাহিরের দেশে চলে যাবে। তাই সবাই এসেছে তাকে শেষ বিদায় জানাতে। তারপর আর দাড়িঁয়ে থাকতে মোটেও ভালো লাগছিল না। ভিতরে গিয়ে বেঞ্চে বসে পরি। হাতে সময় আছে আরও দেড় ঘন্টার মতো। ফোন বের করে স্টিমিটে কিছুক্ষণ পোস্ট পড়ার চেষ্টা করি। দাদার বুক রিভিউটা তখন পড়ছিলাম। খুব ভালো লাগছিল। আমার বাংলা ব্লগের বেশ কয়েকজনের কবিতা বইটিতে স্থান পেয়েছে। এটা অবশ্য আনন্দের বিষয় আমাদের কাছে।

IMG20230313150145.jpg

IMG20230313150130.jpg

আমি আসলে মাঝে মাঝে এই স্মার্টফোন না থাকলে কি হতো মানুষের! সময় পাস করার কোনো উপায় কি ছিল। এই যে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন ইউজ করে সময় পাস করে দেয়া যায়। কিন্তু এটা কি আদৌ আমাদের জন্য উপকার হচ্ছে। আমাদের কমিউনিকেশন এক জনের সাথে আরেকজনের কবেই যেন হারিয়ে গেছে। ফোন না থাকলে হয়তো আমাদের পরিচয় হয়ে যেত অপরিচিত কারো সাথে অথবা কথা হতো আমরা যাদের সাথে যাবো । শাওনের সাথে আমি যাচ্ছি আর দুজনই আমরা ফোন নিয়ে ব্যস্ত! আমি বেশ খানিকটা সময় স্টিমিটে পোস্ট পড়লাম। আমার ফোনের হোমপেজের ভালো লাগা বলতে বলতে গেলে স্টিমিট। সকালের শুরুটা হয় যেখানে স্টিমিট দিয়ে।

যাক, আমাদের সময়ও হয়ে গিয়েছিল! মাইক দিয়ে এনাউন্স করে দিয়েছিল। ১:৩৫ মিনিটের বাসের যাত্রী যারা ছিল সবাই রেডি থাকার জন্য। আমি আর শাওন ব্যাগ নিয়ে বাহিরে চলে যায়। বাস দেখি দাড়িঁয়ে আছে। অনেকেই বাসের বক্সে ব্যাগ রাখছে। ১:২০ মিনিটে আমরা বাসের ভিতর উঠে পরি । আমাদের সিট ছিল ২,৩ নাম্বার! যথারীতি আমাদের সিটে বসে পরি। কিন্তু বাসের ভিতরে প্রচন্ড গরম ফিল হচ্ছিল। বাহিরে রোদের তাপে অনেকক্ষন দাড়িঁয়ে ছিল এজন্য রোদের তাপটা বেশি লাগছিল। ফ্যানগুলো সব ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। যথারীতি সঠিক সময়ে বাস ছাড়লো!

বাস ছাড়ার পর মহিপাল পর্যন্ত আসতেই পরে গেল জ্যামে। বেশ কিছুক্ষণ জ্যামে বসে থাকতে হয়েছিল। বাস জার্নির এই একটাই অসুবিধা! জ্যামে পরলে খবর করিয়ে ছাড়ে। যাক জ্যাম বেশিক্ষন ছিল না! কিছুক্ষণ পর বাস ছেড়ে দিল। বাসে সিটগুলো ফ্লেক্সিবল ছিল। আপনি আরামছে বসে যেতে পারবেন। বাসের সিটটা একটু পিছন দিকে নিয়ে নিলাম। তারপর কিছুক্ষণ আরামছে ঘুম দিলাম। কিন্তু জার্নিতে কি আর ঘুমানো যায়! বাসে ঠিকই ঐ দিন ভালো ঘুম হয়েছিল। ঘুম থেকে উঠে দেখি কুমিল্লা এসে পরেছি। রাস্তার ডান পাশে লক্ষ্য করলাম ময়নামতি। কুমিল্লার বিখ্যাত স্থানটি তাহলে এখানেই! বাস থেকে যতটুকু দেখা গেল।

IMG20230313151252.jpg

তারপর বাস দেখতে দেখতে চলে এল মায়ামী রিসোর্টে। অনেকটা এরিয়া জুড়ে এলাকাটি। স্টার লাইনের আরও কয়েকটি বাস সেখানে দাড়িঁয়ে আছে। আমাদের বাসের হেল্পার বলে দিয়েছিল এখানে বাস ব্রেক নিবে ২০ মিনিট। সবাই কিছু খাবার ও ফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন। আমরা সবাই বাস থেকে নেমে পড়লাম। নেমেই দেখি মায়ামী রিসোর্ট! ভিতরে ফুড কর্ণার। এটা শুধু স্টার লাইন বাস সেবার জন্য চালু হয়েছে। যাত্রীরা এখানে এসেই হালকা নাস্তা করে নেয়। আমি আর শাওন ভিতরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। ভিতরটা অনেক সুন্দর করে সাজানো গোছানো ছিল। কয়েকটি ফাস্টফুড ও মিষ্টি মিলে তৈরি রেস্টুরেন্ট!

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w
Date13 March, 2023

চলবে,,,,



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বাস ভ্রমণ করতে গিয়ে তাহলে বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনার। কারণ বাসের জন্য যখন টিকিট কাটতে যাওয়া হয় তখন দেখা যায় বাসের মধ্যে যাত্রীর পরিমাণ কি রকম। লং জার্নির ক্ষেত্রে বাস এবং ট্রেন দুটোকেই মানুষ বেছে নেয়। কারণ আমি দুটোতেই জার্নি করেছি হিসেবে জানা আছে। এটা ঠিক বলেছেন ভাই বর্তমান সময়ে আমরা মোবাইল ব্যবহার করতে করতে বাস্তবিকভাবে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে হয়তোবা ভুলে গিয়েছি। সবাই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।যাই হোক আপনার অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো।

জি ভাইয়া! মোবাইল আমাদেরকে আমাদের কাছের মানুষগুলো থেকে অনেকটা দূরে সরিয়েও দিচ্ছে! তবে ভাইয়া আরেকবার ফেনীতে গেলে বাস দিয়েই যাবো ভাবছি। ভালোই লেগেছিল জার্নি।

আগামী বার ফেনী আসলে নক দিয়েন।

বাস জার্নির অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন পড়ে খুবই ভালো লাগলো। একদম ঠিক কথা বলেছেন মোবাইল ফোন না থাকলে আমাদের সময়টা কিভাবে কাটতো সেটাই আমি মাঝেমধ্যে চিন্তা করি। সকালে ঘুম থেকে স্টিমিট রাতে ঘুমানোর আগে স্টিমিট সময় কাটাই আমরা সবাই। আপনার বন্ধুর সাথে বাস জার্নির ভালই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আপনার এই পোস্টটি খুবই পড়ে খুবই ভালো লাগলো। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

একদম ঠিক বলেছেন আপু! আমাদের দিনটা শুরু হয় স্টিমিট দিয়ে আর শেষও স্টিমিট দিয়েই। স্টিমিটের সাথে যেন লাইফটা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।