হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। ভালোবাসা এমন শব্দ যাকে ঘিরে থাকে হাজারো প্রেমিক-প্রেমিকার স্বপ্ন, আশা,ভরসা।আর সেই আশা-ভরসা যখন ভেঙে যায় তখন বেঁচে থাকা দুর্বিষহ হয়ে উঠে।আর তখন মানুষ আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজ করতেও দুবার ভাবে না। ঠিক তেমনি একটি ভালোবাসার গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করছি আজকের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
নয়ন এবং তুলি একই কলেজে পড়াশোনা করে। তুলি বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। আর নয়ন একই গ্রামের এক দিনমজুরের ছেলে। পড়াশোনায় যেমন ভালো তেমনি তার নম্র ব্যবহার। দেখতে শুনতেও অনেক সুদর্শন। অপরদিকে তুলিও কম যায় না রূপে রূপবতী এবং গুণে গুণবতী। নয়ন এবং তুলি একই ক্লাসে পড়াশোনা করে। তুলি নয়নকে অনেক পছন্দ করে।নয়ন কখনোই তুলির কথাই রাজি হয় না। নয়ন মনে করে তুলে অনেক বড়লোক বাড়ির মেয়ে তাদের মধ্যে কখনোই ভালোবাসা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না। আর এটা কখনোই কেউ মেনেও নেবে না। তার অনেক স্বপ্ন বড় হয়ে পড়াশোনা শেষ করে বড় চাকরি করে বাবার পাশে দাঁড়াবে।
যাইহোক এভাবেই চলছিল। তুলি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে গেছে নয়নকে বোঝানোর। একটা সময় গিয়ে নয়ন আর তুলিকে ফেরাতে পারেনি। তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে তাদের পড়াশোনা শেষ হয়। নয়ন চাকরির জন্য শহরে যায়। শহরে গেলে তো আর নয়ন চাকরি পাবে না। সে চাকরির জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করেই যাচ্ছিল। এর মধ্যে তার ছোটখাটো একটা কোম্পানিতে চাকরি হয়। সে গ্রামে ফিরে আসে এবং তুলির সাথে দেখা করে। গ্রামের এক লোক তাদেরকে একসাথে দেখে তুলির বাবাকে সব বলে দেয়। তুলির বাবা তাদের দুজনকেই ডেকে পাঠায়।
নয়নকে বলে তুমি শহরে গিয়ে ভালো চাকরি খোঁজো। একটা ভালো চাকরি হয়ে গেলে আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দেব। একথা শোনার পর নয়ন এবং তুলি খুবই খুশি হয়। পরের দিনে নয়ন শহরে ফিরে এবং সেই চাকরির পাশাপাশি নতুন ভালো চাকরি খোঁজার চেষ্টা করে। এভাবে বেশ কয়েক মাস কেটে যায়। হঠাৎ একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তুলি দেখে বাড়িতে অনেক আত্মীয়-স্বজন এবং বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। সে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না বাড়িতে কি অনুষ্ঠান আছে। সে তার মাকে জিজ্ঞেস করে।এরপর তার মা যেটা বলে সেটা শোনার পর কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে যায়।
আসলে এতসব সাজসজ্জার কারণ হচ্ছে তুলির বিয়ে।তুলির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।তুলি মনে মনে ভাবে বাবা তো তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিল তাহলে এমনটা কেন হচ্ছে। তার আর বুঝতে বাকি রইল না যে তার বাবা তাকে এবং নয়নকে আলাদা করার জন্য তখন তাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছিল। এখন তুলি কি করবে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না। তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন নেই যে সে নয়নকে খবর দেবে এবং নয়নের ঠিকানাও সে জানে না যে নয়নের কাছে চলে যাবে।
এভাবে সকাল থেকে বিকেল গড়ায়। বাড়ির সবাই আরো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কারণ একটু পর বরপক্ষ আসবে।তুলির মাথা কাজ করছে না। আশেপাশে অনেক লোকজন সব ভাই-বোনরা তুলিকে ঘিরে আছে। তখন তুলি বলে সবাইকে একটু বাহিরে যেতে সে একা একা থাকতে চায় কিছুক্ষণ। ঘর থেকে সবাই বেরিয়ে গেলে তুলি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।নিমিষেই বিয়েবাড়ি শোকে পরিণত হলো। আত্মীয়-স্বজন বিয়ের পরিবর্তে লাশ দাফন করল তুলির।
এর কিছুদিন পর নয়ন অনেক বড় একটা চাকরি পায়। খুশিমনে গ্রামে ফিরে তুলির সাথে দেখা করতে যায় তুলির বাড়িতে। অনেক ডাকাডাকির পরও তুলি আসে না।কি করে আসবে সে তো আর পৃথিবীতেই নেই।এরপর তুলির মা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে নয়নকে সব খুলে বলে। নয়ন তখন পাগল প্রায় হয়ে যাই। সে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না তুলির এই নির্মম ভাবে চলে যাওয়া। তুলির বাবা তার ভুল বুঝতে পারেন।নয়ন দৌড়ে তুলির কবরে যায়।অনেক কান্নাকাটি করে। বলে আমরা তো স্বপ্ন দেখেছিলাম একসাথে বাঁচবো, সংসার করবো। তুমি তো তোমার কথা রাখলে না। এপারে আমাদের মিলন হলো না। কিন্তু ওপারে আমি ঠিক বিধাতার কাছে তোমাকে চাইবো।এরপর বেশ কিছুদিন গ্রামে থেকে নয়ন তার কর্মস্থানে ফিরে যায় এবং সারা জীবন সে একাই পার করবে বলে প্রতিজ্ঞা করে।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের গল্পটি। এরকম ঘটনাগুলো সত্যিই মেনে নেওয়া খুবই কষ্টের। তবে আমি মনে করি তুলির বাবার উচিত ছিল আরো কিছুদিন অপেক্ষা করার তাহলে হয়তো অকালে তার মেয়েটাকে হারাতে হতো না। আর তুলিকেও এমন জঘন্য একটা কাজ করতে হতো না। হয়তো তার সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ হতে পারতো। যাই হোক বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লেগেছে গল্পটি জানাবেন।
সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আপু নয়ন আর তুলির প্রেমের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু কোন বাবা মা বুঝতে চায় না যে মেয়ে কিংবা ছেলে পৃথিবীতে একেবারে চলে যাওয়ার চেয়ে তারা সুখে বেঁচে থাকুক। তুলির বাবা যে ভুল করলো তার মাশুল তাকে সারাজীবন দিতে হবে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন আপু এভাবে চলে যাওয়ার থেকে তারা যদি দুজন সুখে দুখে একসাথে বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো ভালো হতো। যাইহোক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তুলি ও নয়নের গল্পটি পড়ে ভীষণ খারাপ লাগলো।প্রথম দুজনার প্রেম কাহিনি বেশ ভালো হলেও শেষ পরিনতি একদম কষ্টকর।তুলির আত্মহত্যা করেছে এটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit