আব্বুর সাথে গিয়ে নতুন জুতা কেনার অভিজ্ঞতা ও কিছু অনুভূতি।

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর মেহেরবানীতে ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি আমার নতুন জুতা কেনার অভিজ্ঞতা ও সেই সাথে কিছু অনুভূতি। আসলে মানুষের অভিজ্ঞতার শেষ নেই যেখানেই যাই না কেন কোন না কোন কিছু মানুষ শিখে থাকে। আর এজন্যই বলে থাকে শিক্ষার কোন শেষ নাই, দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত আমাদের প্রতিনিয়ত শিক্ষা অর্জন করতে হয়।

1698232021498.jpg

এ কয়েকদিন আগের কথা আমার একজোড়া জুতার প্রয়োজন তো আব্বুকে বললাম জুতা কিনে দিতে হবে। বেশ কয়েকদিন ধরেই বলছি কিন্তু আব্বু সেই সময় পাচ্ছে না। হঠাৎ করে আব্বু বলল যে চল আজকে একটু সময় আছে তোকে জুতা কিনে দিবো। আমিও অনেকটা খুশি হয়ে গেলাম। তারপর সকালে নাস্তা সেরে আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি দুইজন রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম জুতা কেনার জন্য। এরপর আব্বু বলল যে তার দোকানের আশেপাশে কিছু নতুন করে জুতার শোরুম ওপেন হয়েছে। সেগুলো হলো বাটা, ওয়াকার, লোটো এই ব্র্যান্ডের শোরুম গুলো খোলা হয়েছে এবং এখানে ডিসকাউন্ট অফার চলছে। তো আমিও বললাম যে ঠিক আছে চলো আমরা সেখানে যাই গিয়ে দেখি জুতা পছন্দ হয় কিনা।

IMG-20231025-WA0008.jpg

IMG-20231025-WA0004.jpg

তারপর আমরা একটা রিকশা নিয়ে শোরুমগুলোতে এসে পৌঁছালাম তখন ঠিক ১১ টা বেজে গেল। সত্যি বলতে শোরুম গুলো অনেক বড় এবং খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো, পরে আমরা সেখানে ঢুকলাম এবং আমার পছন্দমত জুতা খুঁজতে থাকলাম। প্রথমে আমি ঢুকলাম ওয়াকার শোরুমে সেখানে তেমন কোন পছন্দের জুতা পায়নি এবং নতুন করে কোন আকর্ষণীয় জুতা ও তাদের এখনো আসেনি। তারপর আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে চলে গেলাম লোটোর শোরুমে সেখানে গিয়ে দেখতে থাকলাম কিন্তু দুর্গা দুর্ভাগ্যবশত সেখানে ছেলেদের আইটেমে বেশি মেয়েদের শুধু কেডস আইটেম রয়েছে তাই আর সেখানে দেখাই হলো না। তারপর আমরা চলে আসলাম বাটার শোরুমে। সেখানে অনেক খোঁজাখুঁজির পর খুবই সিম্পল একজোড়া জুতা আমার পছন্দ হলো। কিন্তু সিম্পল জুতা হিসাবে দাম এটার অনেক বেশি ১৫০০ টাকা। ডিসকাউন্ট দিবে ৩০০ টাকা কিন্তু জুতার কোয়ালিটি আমার আব্বুর খুব একটা ভালো লাগেনি। তাই বাটা শোরুম থেকেও আমার আর জুতা কেনা হলো না।

IMG-20231025-WA0003.jpg

IMG-20231025-WA0001.jpg

এরপর আমরা চলে গেলাম আবার আমাদের মেইন বাজারে সেখানে আমরা আব্বু প্রথমে আমাকে নিয়ে গেল বে শোরুমে সেখানেও অনেক খোঁজাখুঁজির পর আব্বুরই এক জোড়া জোড়া পছন্দ হলো। জুতাটা আসলেই পছন্দের একটি জুতা তবে এটা অনেক উচু হিল হওয়াতে এই জুতা আমার নেওয়া হলো না কারণ আমি হিল জুতা পড়তে পারি না। এরপর আমরা চলে গেলাম আরো একটি শোরুমে শোরুমটি নতুন হয়েছে তবে শোরুমের কালেকশনগুলো আমার এতটা ভালো লেগেছে কিন্তু দাম শুনলে আপনারাও অবাক হয়ে যাবেন। জুতাগুলো খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয় এবং অনেক কোয়ালিটি সম্পন্ন জুতা ছিল। তো আসলে আমাদের সেরকম বাজেট ছিল না তাই আমরা সেখান থেকে কোনরকম দেখে চলে আসলাম। এরপর আমরা চলে গেলাম রেনডম জুতার দোকানে সেখানে গিয়ে অনেকগুলো দোকান এভাবে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম আর পছন্দ করতে থাকলাম। বেশ কিছু দোকান ঘুরতে ঘুরতে একটি দোকানে প্রায় দুই জোড়া জুতা আমার পছন্দ হয়ে যায়। তারপর দুই জোড়া থেকে বেছে এবং সেটার একটা ছবি তুলে আম্মুর কাছে পাঠিয়ে তার পছন্দ জেনে তারপর একজোড়া জুতো অবশেষে পছন্দ করেই ফেললাম।

IMG-20231025-WA0005.jpg

IMG-20231025-WA0002.jpg

এবার আসি জুতো দামাদামি করার ব্যাপারে আসলে এই ক্ষেত্রে আমার আব্বু একটু অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। কারণ আমাদের ফ্যামিলিতে সকল কিছুই তার মাধ্যমেই কিনা হয় বা তিনি আমাদের সাথে সবসময় থাকেন কোন কেনাকাটার সময় এই কারণেই দোকানদাররা খুব একটা ঠকাতে পারে না। তো বন্ধুরা যেই জুতাটা আমার পছন্দ হলো অবাক হয়ে যাবেন এটা নরমাল জুতা তারা দাম চাচ্ছিল ১২০০ টাকা। তারপর আব্বু সেই দাম শুনেই প্রথমেই বলল যে না জুতা নিবই না এমন একটা ভাব নিল যে না জুতা নিবই না চলো আমরা অন্য কোথাও দেখি এত দাম হয় না এরকম একটি সিম্পল জুতার। তখন দোকানদার বলল জি ভাই আপনি বলেন কত দিবেন তখন আব্বু দোকানদারকে ৪০০ টাকা বলল। দোকানদার বলল যে না ভাই এত কমে তো দেওয়া যাবে না, ঠিক আছে আপনি ৯০০ টাকা দিয়েন। এভাবেই দুজন দুজনের মধ্যে দামাদামি করতে করতে ৭০০ টাকায় জুতাটা কেনা হয়ে গেল। আব্বু এবং দোকানদারের যে কথাবার্তা এখান থেকে আমি অনেক কিছুই শিখতে পারলাম। আসলে বাজার করতে গেলেও এখানে কিছু অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় তো সেখানে সে হিসাবে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করা হল।

IMG-20231025-WA0006.jpg

এই ছিল আমার জুতা কেনার অনুভূতিমুলক পোস্ট। আপনাদের কার কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তো বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকবেন আমার জন্য দোয়া করবেন সকলের জন্য শুভকামনা অবিরাম।

ধন্যবাদান্ত
@isratmim


✅আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়✅


✅আমি ইসরাত জাহান মিম। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত, কারণ বাংলা আমার অহংকার। আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে কিন্তু বাবার ব্যবসার কারণে বর্তমানে অবস্থান করছি গাজীপুরে। আমি আমার পড়াশুনা এইচ এস সি পর্যন্ত করেছি এবং এখন পরবর্তী পর্যায়ের ভর্তি প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের "আমার বাংলা ব্লগ" পরিবারের একজন সদস্য এজন্য আমি অনেক উৎসাহিত ও আনন্দিত। আমি বই পড়তে পছন্দ করি, সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে বিভিন্ন নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে ও প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে। আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু করেছি ২০২০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর। স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই এটাই আমার লক্ষ্য। ✅
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আরে বাহ্ আপনি তো দেখছি বেশ ভালোই জুতার দাম করতে পারেন। অবশেষে ৭০০ টাকায় দফারফা করে নিলেন। তবে কয়েকদিন আগে আমিও বাটা শোরুম থেকে দুই জোড়া জুতা ডিসকাউন্টে কিনে ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল সেটা।

হ্যাঁ আপু একটু দামাদামি করে জুতোগুলো ৭০০ টাকায় কিনেছিলাম। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

দরদাম করতে পারা একটি আর্ট। যে কেউ তা পারে না। আংকেল বেশ ভালই দরদাম করতে পারে দেখছি ১২০০ টাকার সেন্ডেল ৭০০ টাকায় কিনে নিলেন। জুতো কেনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

ঠিকই বলেছেন আপনি অনেকে কিন্তু এরকম দরদাম করে জুতা কিনতে পারেনা। যা চায় তার দিয়ে অনেক সময় কিনে নিয়ে আসে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

জুতা কিনতে গিয়ে তো অনেক গুলো শোরুম ঘুরে ফেলেছেন। আসলে এটা ঠিক যে পছন্দ না হলে এমন ঘুরাঘুরি করতেই হয়। লোটোর শোরুমে জুতার কালেকশন এমনিতে ভালোই থাকে। যাইহোক অবশেষে রেনডম দোকানে গিয়ে জুতা পছন্দ হলো। আংকেল তো বেশ ভালোই দামাদামি করতে পারে দেখছি। আপনিও দারুণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছেন। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

এটা ঠিক যে জুতা পছন্দ না হলে এমন ঘুরাঘুরি করতেই হয়। আমার আবার জুতো সহজেই পছন্দ হয় না। সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বেশ সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপু জুতার দোকানে। আসলে আব্বুর সাথে জুতা দোকানে গিয়েছেন যেন খুব ভালো লাগলো। যাহোক অবশেষে ৭০০ টাকা দিয়ে জুতা কিনে ফেলেছেন। জুতা ক্রয় করার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আপনার মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

জুতা কেনার দারুণ একটি মুহূর্ত আজকে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার এই সুন্দর একটি পোস্ট। যেখানে আমি লক্ষ্য করে দেখলাম আপনি একাধিক জুতা চয়েজ করার চেষ্টা করেছেন। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো দারুণ মুহূর্তটা

বাবার সাথে জুতা কিনতে গিয়েই ভালো ই অভিজ্ঞতা হলো আপু।এতো দোকান দেখে শেষে যাও পছন্দ হলো। তাও আবার দাম বেশি ১২০০ টাকা।আপনার বাবা ৪০০ টাকা বললেও শেষে ৭০০ টাকায় জুতোটি কিনলেন।আসলে সবকিছুর দাম বাড়তি।জুতা সুন্দর হয়েছে।যাক জুতা কিনতে গিয়ে বেশ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন।ধন্যবাদ আপু সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

হাই হিল থেকে একটু সফট টাইপের জুতাগুলোই দেখি বেশি পরে মেয়েরা। আমার আপুকেও দেখলাম নিচু টাইপের জুতা পরতে। আপনার আব্বুর যে অনেক অভিজ্ঞতা আছে বুঝা যাচ্ছে। আমি এই দামাদামিটা করতে পারি না! ১২০০ টাকার জুতা ৭০০ টাকা দিয়ে কিনতে পেরেছেন। ভালোই হয়েছে জুতাগুলো ☘️

আপনার আব্বু তো এই দেশের মানুষ। তাই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা কেমন সেটা তিনি খুব ভালো করেই জানেন। আপনি একা গেলে কম পক্ষে ১০০০ টাকা লাগতো। অভিজ্ঞতার অনেক দাম আছে। ধন্যবাদ।