অনুভূতি:-নদীর পাড়ে বন্যার পানি দেখতে যাওয়ার মুহূর্ত।(প্রথম পর্ব)

in hive-129948 •  last month 

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি। আমি আজকে একটি লেখার পোস্ট এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অথবা কোথাও ঘুরতে গেলে ওইসব বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখতে অনেক ভালো লাগে। বেশিরভাগ সুন্দর মুহূর্ত গুলোর পোস্ট পড়তে এবং লিখতে অনেক ভালো লাগে। সব সময় চেষ্টা করি আমার সুন্দর মুহূর্তের অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। ঘুরতে গেলে নিজে মনটাও ফ্রেশ থাকে। তাই সবসময় চেষ্টা করি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার হাসিখুশির মুহূর্তটা আপনাদের মাঝেও শেয়ার করার জন্য। আশা করি আপনাদেরও পোস্টটি অনেক ভালো লাগবে।

IMG-20240824-WA0022.jpg

IMG-20240824-WA0024.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব বন্যা পরিস্থিতি এলাকা দেখতে যাওয়া। আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের বাড়ির পাশে ছোট ফেনী নদী আছে। আমাদের বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিট সময় লাগে নদীতে যেতে। তবে আল্লাহর রহমতে আমাদের বাড়ির আশেপাশে এলাকা টি এখনো নিরাপদ আছে। আমাদের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে রাস্তার ওপর সিট এলাকায় বাড়িঘর সব পানির নিচে তলিয়ে গেল। এবং তাদের গরু ছাগল ও হাঁস মুরগি সব নদীতে বিলীন হয়ে গেল। এই কারণে গতকাল দুপুর বেলা আমি বন্যা এলাকায় দেখতে গেলাম।

যদিও আমরা ৪-৫ জন লোক একসাথে ওই বন্যা এলাকা দেখতে গেলাম। আমরা এক সবাই হেঁটে ওই এলাকাতে গেলাম। যদিও এর আগের দিন রাত্রে তিনটা বাজে আমরা নদীর ধারে গেলাম পানি বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা দেখার জন্য। কারণ আমাদের বাড়ির সামনে একটি সরকারি সাকলন সেন্টার আছে। বিগত একদিন আগে রাত্রে আমাদের এই স্কুলে অনেক মানুষ আসলো রাত্রে থাকার জন্য। তবে লোকগুলোকে দেখে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। বন্যার কারণে তারা সরকারি ভবনে আসলো বাঁচার জন্য। এই কারণে দুপুরে আমরা কয়েকজন লোক গেলাম ওই এলাকা দেখার জন্য। সত্যি নদীর ধারে গিয়ে নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগলো।

IMG-20240824-WA0026.jpg

IMG-20240824-WA0023.jpg

কারণ নদীর উপরে অনেক জমি এবং ঘর বাড়ি ছিল। সবগুলো পানির নিচে ডুবে আছে। তবে আমার ফটোগ্রাফির মধ্যে যে জায়গাটি দেখা যাচ্ছে এই জায়গাটির নদীর উপরে জমি গুলো। গাছের পরে ছোট ফেনী নদী। এবং পানি বৃষ্টির সময় তেমন এইরকম বৃদ্ধি হয়নি। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর হঠাৎ করে উপরের পানি গুলো যখন নদীতে আসতেছে তখন আমাদের এই পাশে বাড়িঘর গুলো ডুবে যাচ্ছে। আমার ফটোগ্রাফির মধ্যে যেই বাড়িটি দেখা যাচ্ছে এটি রাস্তার একপাশে বাড়ি। বলতে গেলেন নদীর পাশে এই বাড়িটি। আর আমাদের বাড়িগুলো হচ্ছে রাস্তার অপর সিটি। তবে এই বাড়িটি যার তার মুখে থেকে আমি শুনেছিলাম।

রাত্রেবেলা তারা ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ করেই ভোর চারটা বাজে দেখতেছে তাদের ঘরের মধ্যে পানি। তারা তাড়াহুড়া করে মূল্যবান জিনিস এবং তার বাচ্চা দুটিকে নিয়ে ঘর থেকে তাড়াতাড়ি বাইর হলেন। এবং লোকটি বলতেছে আধা ঘন্টার মধ্যে তাদের ঘরে পানি চলে আসলো। এবং তাদের খাওয়া-দাওয়া সবগুলো ঘরের মধ্যে রয়ে গেল। এবং বলতেছে হঠাৎ করে ঘুমের মধ্যে পানি দেখে আমরা অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। এই কারণে নিজের প্রাণ নিয়ে তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে আসলাম। এই লোকটির একটি বাচ্চা আমাদের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। সত্যি বাচ্চাটিকে দেখে আমার অনেক মায়া হল। রাস্তার পাশে ঘরের দিকে তাকিয়ে বসে রইল।

এবং এলাকার লোক গুলো এদেরকে অনেক হেল্প করতেছে খাওয়া-দাওয়া দিতেছে। কিছু লোক আছে শুধু মাছ ধরার জন্য চেষ্টা করতেছে। অথচ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। কিভাবে তারা মাছ ধরবে এবং খাওয়া-দাওয়া করবে এটি নিয়ে চিন্তা। এবং কিছু দূর দুরান্ত থেকে লোক আসলো বন্যা এলাকা মাছ ধরার জন্য। এরপরে আমরা সামনে আরো কিছু বাড়িতে গেলাম দেখার জন্য। তবে বাড়ির ভিতরে কোন লোক ছিল না বাহিরে লোক গুলো দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের বসতবাড়ি নিয়ে অনেক চিন্তিত। আর নদীর পাশে লোক গুলো জীবিকা হচ্ছে কৃষিকাজ ও অন্যান্য চাষাবাদ।

সত্যি বলতে বন্যার কারণে যেমন তাদের ঘর বাড়ি বিলীন হয়ে গেল তেমনি তাদের ফসলের মাঠগুলো পানির নিচে ডুবে গেল। একটি মহিলা অনেক জোরে কান্নাকাটি করে বলতেছে। বন্যার সময় কিছু লোক এসে আমাদেরকে দেখবে। অথচ বন্যার পরে আমরা কিভাবে চলবো সেটি কেউ চিন্তা করবে না। কারণ আমাদের বসতবাড়ি এবং ফসলের মাঠ সব নষ্ট হয়ে গেছে। ওই মহিলার কথাগুলো শুনে সত্যি আমার কাছে খুব খুব খারাপ লাগলো। আসলে বন্যার উপরে কারো হাত নেই। আল্লাহ চাইলে সবাইকে রক্ষা করতে পারে। আর আমার জন্মের পর থেকে আমি কখনো দেখিনি আমাদের এলাকায় এবং আশেপাশে এরকম বন্যা হতে। আর সবাই বন্যা এলাকায় এবং মানুষের জন্য দোয়া করবেন। পরের পর্বে বন্যা এলাকার আরো বিস্তারিত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

IMG_20240824_223543.jpg

IMG-20240824-WA0019.jpg

IMG-20240824-WA0021.jpg

IMG-20240824-WA0020.jpg

IMG-20240824-WA0015.jpg

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই আপনার বাসা ফেনীতে বিষয়টা জানতে পারলাম। এছাড়া আপনার বাসার পাশে ফেনী নদীতে গিয়েছিলেন আপনারা চার-পাঁচজন। মূলত বন্যা দেখার জন্য আপনারা গিয়েছিলেন। সেই সাথে ওইখানকার কিছু তথ্য আপনার পোষ্টের মাধ্যমে পেলাম। তাছাড়া মনে হচ্ছে অনেকটাই পানি বেড়ে গিয়েছে সকল ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছে মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে। আসলে এগুলো দেখলে আর ভালো লাগেনা। যাই হোক সেখান থেকে আপনি বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফি ধারণ করে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

আসলে বন্যার পরিস্থিতি দেখলে আর ভালো লাগেনা। সুন্দর করে পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে আপনাদের এলাকায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, মানুষের ডুবে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। এমন পরিবেশ পরিস্থিতির মাঝে নিজেকে টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন। দোয়া করি দ্রুত যেন এ বন্যার পানি নেমে যায় এবং জনজীবনের বিপন্ন দূর হয়।

বর্তমান সময়ে পরিস্থিতির মাঝে নিজেকে টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন ঠিক বলেছেন ভাইয়া। অসাধারণ মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

সত্যি ভাইয়া বন্যা কবলিত মানুষদের কথাবার্তা শুনে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা ওনাদেরকে কিছু ভাবে সাহায্য করতে পারছি কিন্তু পরবর্তীতে যখন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে তখন উনাদের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে আসতে অনেক কষ্ট হবে। তবে আপনাদের এলাকাটা নিরাপদে আছে জানতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো। নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে সাবধানে থাকবেন ভাইয়া। সব সময় সবার জন্য দোয়া রইল। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

বন্যা চলে গেলে মানুষ তাদের আগের পরিস্থিতি যেতে অনেক কষ্ট হবে। বিশেষ করে ঘরবাড়ি ফসল সব নষ্ট হয়ে গেছে। ভালো থাকবেন আপু।

ভাইয়া বন্যার পানির কথা আর কি বলবো,আমরা তো সরাসরি দেখি নাই, বিভিন্ন ভিডিওতে দেখিছি, ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আপনার ব্লগের মাধ্যমে তো দেখা যায়, পানি কমই। যায়হেক দোয়া করি খুব দ্রুত যেন বন্যার পানি কমে যায়। ধন্যবাদ।

আসলে ভাইয়া কিছু কিছু জায়গা পানি অনেক অতিরিক্ত উঠেছে। হয়তোবা আমাদের আশেপাশে পানি একটু কম বন্যার। যাইহোক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য শুনে।

আপনার আজকের শেয়ার করা ব্লগটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। দেখতেছি অনেক পানি অনেক উপরে উঠে গেছে। তবে কিছু কিছু মানুষ যে মাছ ধরা নিয়ে ব্যস্ত আছে এটা শুনে খুবই খারাপ লাগলো। এমন কিছু মানুষ আছে যারা সব সময় সুবিধা ভোগ করতে ব্যস্ত। অনেক দূর দূরান্ত থেকে যেয়ে মানুষ হেল্প করছে আর তারা পাশের মানুষ হয়ে মাছ ধরা নিয়ে ব্যস্ত। যাক সবার জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি যাতে খুব তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।

আসলে কিছু মানুষ আছে তারা নিজের সুবিধাটা বেশি দেখে। বন্যার এই পরিস্থিতিতে তারা মাছ ধরার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লো। চমৎকার মন্তব্য করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।