জেনারেল রাইটিং পোস্ট
গত শুক্রবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে আমাদের এখানে। প্রথমত বৃষ্টি হওয়া দেখে বেশ আনন্দবোধ করেছিলাম। কারণ বৃষ্টি হলে আমাদের জন্য উপকার। বিভিন্ন শাক সবজির গাছ রয়েছে এদিকে পুকুর রয়েছে বেশ কিছু। আর সে পুকুরে মাছ বৃদ্ধি করার জন্য বৃষ্টির পানি একান্ত প্রয়োজন। তাই প্রথমত অবস্থায় বৃষ্টি হওয়ার সময় সবাই বলাবলি করছিলাম একটু জোরে বৃষ্টি হয়ে গেলে ভালো। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় শুক্রবার বিকেল দিকে যে বৃষ্টি শুরু হল সে বৃষ্টি যেন আর থামার চিন্তা করছে না। শুক্রবার বিকেল বেলায় বৃষ্টি হওয়ার পর সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে সজরে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর রাতে হালকা পাতলা হতে ফজরের আজানের দিক থেকে এমন অবস্থা শুরু হলো শনিবার সারাদিন বৃষ্টি। দুপুরবেলায় এক ঘন্টার জন্য বৃষ্টির বন্ধ থাকলেও বিকাল থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে, সারা রাত ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। শনিবারের দিনগত রাতে যে হারে ঝড় হল মনে হল যেন ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যাবে। চারিদিকে গাছপালা এত জোরে জোরে দুলতে রয়েছে, নারিকেল গাছ থেকে পাকা বাইগু ভেঙে এসে পড়তে থাকলো ঘরের চালে। আর সজোরে ঘরে চালে আওয়াজ হলে তো বুঝতেই পারছেন কতটা ভয় লাগে।
এদিকে রবিবার সকাল করে ঘুম ভেঙে দেখি সজোরে বৃষ্টি হচ্ছে আর ঝড় বাতাস বয়ে চলছে। শনিবার দিন দুপুর টাইমে মেঘ ঝড় থেমে গেলেও রবিবারে থামল না। ইচ্ছে মতো বৃষ্টি পরতে রয়েছে সারাদিন। একবার জোরে আসে একবার আসতে। এদিকে শুক্রবারের রাত থেকে তো কারেন্টের কোন নাম গন্ধ নেই। শনিবারের দিনে কারেন্ট আপডাউন করেছে বারবার। কিন্তু রাত হলেই কারেন্ট বন্ধ রবিবার রাত পর্যন্ত। রবিবার রাতে একটু কারেন্ট আসলো দু-তিনবার অফ হল, টোটালি ১ ঘন্টা থাকবে হয়তো। কিন্তু সারারাত কারেন্ট অফ থেকে সোমবার বিকেল চারটার পরে কারেন্ট আসে। আর এই মুহূর্তে বৃষ্টি থেমে গেছে। আকাশে মেঘ বিরাজমান। হয়তো বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা রাতে নামতে পারে।
আর এই তিন দিনে রান্না করতে গিয়ে যত প্রকার ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে আমার। দিনে ২-৩ বার করে তো ভিজে গেছি। কাপড় চোপড় সবসময়ই ভেজা রয়েছে। বড় সমস্যা হয়েছে রান্নাঘরে রান্না করতে গিয়ে। টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে অনেকবার। এদিকে চুলার পাড়ে তেমন খড়ি ছিল না। উঠানে কাঁদা বেঁধে পানি বেঁধে। রান্না ঘরের পাশে পুকুরে পানি এসে জমে গেছে। আর এই কয়দিন প্রচন্ড পরিমাণ মশা বেড়ে চলেছে। এদিকে শুনতে পারছি অনেক জায়গা মানুষের ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে বৃষ্টির আগে থেকেই। আর এমন জলাবদ্ধ অবস্থায় মশা তো বাড়বেই, ডেঙ্গু জ্বর বৃদ্ধি পেতে পারে।
এমন অবস্থায় আমাদের জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাড়ির আশেপাশে কোন জায়গায় যেন পানি জমে না থাকে। মশার বংশবিস্তার না করতে পারে। ঘরের মধ্যে অতিরিক্ত অন্ধকার ও নোংরা জাতীয় জিনিস না থাকে। ঘরের মধ্যে সব সময় কয়েল জ্বালিয়ে মশা তাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এদিকে কারেন্ট বেশি লোডশেডিং এর সমস্যা করছে তাই যখনই কারেন্ট আসুক না কেন সাথে সাথে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো চার্জ করে রেডি রাখতে হবে। বৃষ্টির জন্য চলার পথ পিছলা হয়ে থাকতে পারে তাই সাবধানতার সাথে চলতে হবে। যেন পিছলা জায়গায় পা রেখে পড়ে গিয়ে বিপদ না সৃষ্টি হয়। বাড়ির ছোট বড় বৃদ্ধ সবাইকে সজাগ রাখতে হবে যেন চলাচলের মুহূর্তে পড়ে না যায়। আর এই মুহূর্তে পরিবারের অসুস্থ মানুষদের প্রতি নজর থাকতে হবে, তারা কখন কি প্রয়োজন মনে করে, বৃষ্টির জন্য বাইরে যেতে পারছে না বা কোন কিছু আশা করে গ্রহণ করতে পারতে না; তাই সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। এছাড়াও কারেন্টের লাইন সব জায়গায় ঠিকঠাক আছে কিনা বৃষ্টির পানিতে ভিজে শর্ট সার্কিট হতে পারে এমন সম্ভাবনা আছে কিনা একটু দেখাশোনা করতে হবে। এক কথায় জনসচেতনতা বাড়াতে হবে নিজেদের সচেতন থাকতে হবে।
দোয়া করি যে সমস্ত মানুষের আজ পানিবদ্ধ হয়ে বিভ্রান্তির মুখে রয়েছেন, মহান সৃষ্টকর্তা যেন তাদেরকে দ্রুত পূর্বের মত শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে এনে দেয়। অনেকেই বৃষ্টির কবলে পড়ে পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এমনকি দুবেলা দুটো খাবার জোটাতে পারছে না তাদের সহায়তা প্রদান করতে হবে। আর এভাবেই দুর্যোগকালীন মুহূর্তটা আমরা সচেতনতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে পারি এবং বেশি কষ্টকে সচেতনতার দ্বারা দূর করে লিমিটের মধ্যে এনে পার করতে পারি। সবার মধ্যে ঘুমন্ত বিবেক জেগে উঠুক। সবার জন্য শুভকামনা রইল।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
এভাবে একটানা অনেক দিন বৃষ্টি হওয়ার পরে পুরো শহর ডুবে গেছে আপু আপনাদের এখানে। আপনাদের অবস্থা তো খারাপ। আশা করি বৃষ্টি থেমে যাবে আর বৃষ্টি না থামলে আরো পানি জমে যাবে সবার জন্য আরো কষ্ট হবে। আপনার বিস্তারিত লেখাগুলো পড়ে খুব কষ্ট হচ্ছে আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখন কিন্তু রোদ উঠে পড়েছে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু বৃষ্টির জন্য জানো জীবন একদম বিপন্ন হয়ে গেছে। আজ কয়েকটা দিন বৃষ্টির যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনি লোডশেডিং কিচ্ছু ভালো লাগছেনা। তাছাড়া একটু বাইরে বের হব তার তো কোন নামেই নেই। কেননা একাধারে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছিল এতে করে রুমের মধ্যে থাকতেও খুব খারাপ লাগছিল। সত্যিই একদম জীবনটা মনে হচ্ছে তেজপাতা হয়ে গেছে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক লোডশেডিং হলো
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আপনার এই কষ্টের কথা শুনে আমার খুব খারাপ লাগলো। যদিও নিম্নচাপের কারণে এই কয়দিন প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে তবুও কিন্তু আমরা সবাই অনেক বেশি সাবধানে থাকার চেষ্টা করব। কেননা বিভিন্ন জায়গাতে কিন্তু বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে এই বৃষ্টির কারণে। এছাড়াও এই বৃষ্টির সময় কিন্তু আমরা ডেঙ্গু মশা হইতে সব সময় সাবধান থাকব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাইয়া ঠিক বলেছেন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যদিও বৃষ্টি আমাদের জন্য সবসময় আশির্বাদ। তবে অতি বৃষ্টি কারণে জনজীবন বিপন্ন হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। আমরা দেখেছি গত কয়েকদিন বৃষ্টিতে অনেক জাগায় বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক জাগায় শহরেও পানি জমে গেছে। খুবিই খারাপ অবস্থা। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আস্তে আস্তে সব নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit